মামা হওয়ার অনুভূতি

in hive-120823 •  3 months ago 

বন্ধুরা অনেকদিন পর আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম। ঈদ শুরু হওয়া থেকে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে থাকার কারণে নিয়মিত পোস্ট ও এনগেজমেন্ট করতে পারিনি, এখন থেকে আবারও নিয়মিত পোস্ট ও এনগেজমেন্ট করব।

IMG_20240620_162059.jpg

আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি মামা হওয়ার অনুভূতি। অনেক কল্পনা জল্পনার পর সৃষ্টিকর্তার রহমতে পরশুদিন রাতে নতুন ভাগ্নার আগমন ঘটেছে। একটা শিশু পৃথিবীতে আসার জন্য তার মায়ের অনেক যুদ্ধ করতে হয় আর এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া মানেই সার্থকতা।

ঈদের পরের দিন থেকে বাসায় ছিলাম না, মামাতো বোনের বিয়ে ও বন্ধুর বিয়ে নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম। কোন বিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে শেষ করতে পারেনি বৃষ্টির যন্ত্রনায়। আর ঈদের পর থেকেই বিয়ের এক ধুম পড়ে গেছে, একই দিনে তিন বন্ধুর বিয়ে ছিল আর সবাই দাওয়াত করেছে। তাদের মাঝখান থেকে এক বন্ধুর বিয়েতে গিয়েছিলাম আমাদের বাসা থেকে একটু দূরে। আর বন্ধুর বিয়ে থেকে রাতেই বাসায় চলে আসি যেহেতু বাসার কাছে ভেবেছিলাম সকালে উঠে আবার যাব।

কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি বোনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, এদিকে বৃষ্টি হচ্ছে আর ভাইয়া বাসায় ছিল না। পড়ে ভাইয়াকে ফোন করি আর ভাইয়া রওনা হয় বাসায় আসার উদ্দেশ্যে। এদিকে আম্বুলেন্স কে ফোন করি, পরে ভাইয়া বাসায় চলে আসে পরে আমরা সবকিছু গুছিয়ে ১১ টার পরে রওনা হই রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।

IMG_20240620_162647.jpg

ঠিক ১.৪০ মিনিটে ক্লিনিকে পৌঁছায় আর যাওয়ার পর আমরা ডাক্তার আজিজা বেগম লুসিকে দেখায় আর সে বলে আজকে রাতেই সিজার করাতে হবে। যেহেতু সিজার করাবে, আনুষঙ্গিক কিছু কাজ থাকে সেগুলো দুই ভাই দৌড়াদৌড়ি করে করি । বোনের যেহেতু টিউমার হয়েছে সেটা তো অপারেশন করবে সিজার করার সাথে সাথে।

IMG_20240620_162033.jpg
IMG_20240620_162003.jpg

ডাক্তার বলেছিল রাত ১১ টার পরে সিজার করাবে, ঠিক এগারোটার আগ মুহূর্তে বোনকে নিয়ে যায় আর আমি ভাইয়া ও ভাবিও সেখানে যেয়ে বাইরে অপেক্ষা করতে থাকি। কিছু সময় পরেই, বাচ্চা নিয়ে আসে দেখে এতটা প্রশান্তির লাগছিল যেটা বলার মত না। একটা মা একটা বাচ্চার মুখ দেখার জন্য কতই না কষ্ট করে থাকে সেটা আমি আমার বোনকে দেখে বুঝেছি।

IMG_20240621_091513.jpg

সৃষ্টিকর্তা রহমতে বাচ্চা একদম সুস্থ রয়েছে, বাচ্চাকে দেখার জন্য আমরা একজন শিশু বিশেষজ্ঞ নিয়ে রেখেছিলাম। আর বাঁচা হওয়ার সাথে সাথে শিশু ডাক্তার দেখে আর বলে কোন সমস্যা নেই। আমরা ভেবেছিলাম টিউমারটা থাকার জন্য বাঁচার কোন সমস্যা হবে, সৃষ্টিকর্তার রহমতে কোন সমস্যা হয়নি। আর টিউমার অপারেশন একসাথে করার কথা ছিল কিন্তু করতে পারেনি বোনের কিছু সমস্যা থাকার জন্য। যদি টিউমার অপারেশন করে তাহলে অনেক রক্ত ক্ষরণ হবে যার ফলে রোগীর অনেক বড় বিপদ হতে পারে আর এই জন্য টিউমার অপারেশন পরেনি, আর সেটা ওষুধের মাধ্যমে বা পরবর্তীতে অপারেশন করার কথা বলে।

ডাক্তার বলেছে ওটা নিয়ে সমস্যা হবে না। আর বাচ্চার মা এমনি সুস্থ আছে, কথাবার্তা ও হাঁটাচলা করতে পারে আসতে আসতে। আশা করি সৃষ্টিকর্তা সকল সমস্যা দূর করে দেবে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

জেনে খুশি হলাম আপনি মামা হয়েছে, আসলে মামা হওয়া আনন্দটা কতটা যে বেশি সেটা হয়তো বলে বোঝানো যায় না। যারা মামা হয়েছে তারাই জানে যে ভাগিনা প্রতি মামার কতটা টান। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি মামা হয়েছেন সে বিষয়টা আমাদের মধ্যে শেয়ার করার জন্য।

একদম ভাই মামা হওয়ার মধ্যে অন্যরকম এক আনন্দ লুকিয়ে আছে যারাই আনন্দ উপভোগ করেছে তারাই বুঝতে পারবে মামার আনন্দটা। ধন্যবাদ মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য ভালো থাকবেন।।

পৃথিবীর কিছু জিনিস সত্যিই আসলে অনেক বেশি প্রশান্তি দিয়ে থাকে। যেমন আজকে আপনি মামা হওয়ার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আসলে এই অনুভূতিগুলো এতটাই মিষ্টি হয়ে যে, প্রকাশ করার পরেও মনের মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ ভালোলাগা থেকে যায়।

আপনার বোনের টিউমার আছে, এটা আমি আরো আগে আপনার পোস্টে পড়েছিলাম। একসাথে অপারেশন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু আপনার বোনের কিছু সমস্যার কারণে এখন হয়নি। আশা করি সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে এবং আপনার বোনের টিউমার, খুব দ্রুত আপনারা অপারেশন করতে পারবেন না। তবে বর্তমান সময়ে বাচ্চা এবং মা ভালো আছে জানতে পেরে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ মামা হওয়ার অনুভূতি আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

আপনি একদম সঠিক বলেছেন পৃথিবীতে কিছু কিছু জিনিস এত বেশি আনন্দ দেয় যে এটা সব সময় মনে থাকে। আর হ্যাঁ টিউমারটা অপারেশন করা হয়নি ডাক্তার বলেছে ওষুধের মাধ্যমে এটা ঠিক হবে আর না হলেও পরবর্তীতে অপারেশন করতে হবে।।

এই আনন্দ গুলো আমাদের মনে চিরজীবন স্মৃতির মাধ্যমে থেকে যায়। এগুলো আমরা কখনোই ভুলে থাকতে পারি না। দোয়া করি আল্লাহ তাআলার কাছে। ওষুধের মাধ্যমে যেন আপনার বোনের টিউমারের সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। আমার কাছে মনে হয়, অপারেশন করার চাইতে টিউমার ওষুধের মাধ্যমে সমাধান হয়ে গেলে, বেশি ভালো হবে।

উত্তম আপু এই আনন্দগুলো সারা জীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে।। আমরা চাই পশুদের মাধ্যমে যেন বোনের টিউমারটা ভালো হয়ে যায়।। আসলেই আমরা বোনকে নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত ছিলাম জানিনা সৃষ্টিকর্তা কখনো কি দেখেছে আশা করি সবকিছু সমাধান হবে।।

ভরসা রাখুন একজনের উপর তার ওপর ছাড়া আর কিছুই। এবং তার ওপর ভরসা করা ঠিক নয়। অবশ্যই তিনি সবকিছু ঠিক করে দেবেন এবং চেষ্টা করুন, ঔষধের মাধ্যমে যদি সমস্যা সমাধান করা যায়। তাহলে দ্বিতীয়বার আর অপারেশনের কোন প্রয়োজন হবে না। দোয়া করি আপনার বোন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক, এবং আপনাদের পরিবারের যে সমস্যা গুলো রয়েছে সেগুলো সমাধান হয়ে যায়।

একদম সৃষ্টিকর্তা চাইলে সবকিছুই সম্ভব তাই তার কাছেই আরজি জানাতে হবে তিনি যেন সবকিছু সমাধান করে দেয়।। একটা মানুষ অপারেশন করলে তার অনেক ক্ষতি হয় তাই সৃষ্টিকর্তা যেন ওষুধের মাধ্যমে এটা সমাধান ঘটায়।

অবশ্যই সবকিছু ঠিক হবে শুধুমাত্র একটু সময় প্রয়োজন, আর ধৈর্যের মাধ্যমে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহতালা চাইলে সকল সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। আমাদের জন্য তিনি এমন কিছুই করেননি, যেটা আমাদের ক্ষতি হবে। তবে আমরা তার পথে না চলে আমরা নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই ডেকে নিয়ে আসি। তাই ধৈর্য ধারণ করে এগিয়ে যান ইনশাল্লাহ ভালো কিছু হবে।

সবকিছুর জন্যই সময় দরকার আর সময়মতো সবকিছুই ঠিকঠাক হয়ে যাবে তার জন্য প্রতিটা মানুষের ধৈর্যের প্রয়োজন আপনি ঠিকই বলেছেন ধৈর্যের মাধ্যমে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হবে।।

Loading...

TEAM 7

Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.

Curated by : @sduttaskitchen

অনেক অনেক অভিনন্দন রইল। নতুন মামা আর আনন্দ যে কি সেটা আমি আমার ভাইদের দিকে টের পেয়েছি। আপনার বোনের টিউমার ছিল সেটা আগে থেকেই জানতাম। কিছু কোন সমস্যা না হয় যে বাচ্চা হয়ে গেছে এজন্য আল্লাহর কাছে লাখ শুকরিয়া।
এমন আনন্দময় একটা মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবসময় শুভকামনা রইল আপনার জন্য

মামা হওয়ার মধ্যে সব সময় একটা আলাদা আনন্দ থাকে সত্যি আমি অনেক আনন্দিত।। টিউমার অপারেশন করা হয়নি কিছু সমস্যা থাকার কারণে আশা করি এটা আরো সমাধান হয়ে যাবে।। ধন্যবাদ মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য ভালো থাকবেন।।

পৃথিবীতে সন্তান জন্ম দেওয়ার পিছনে একজন মা'কে অনেক যুদ্ধ করতে হয়।এদিকে বিয়ের আমেজ অপর দিকে আপনার বোনের প্রসব বেদনা।আপনি এম্বুল্যান্স করে আপনার বোনকে ডক্টরস ক্লিনিকে নিয়ে যান।সেখানে ডক্টর সিজার করার কথা বলে।আপনার বোনের টিউমার ছিলো সেটিও অপেরাশন হয়েছে।যাই হোক সুস্থ ভাবেই বাচ্চাটি পৃথিবীতে এসেছে।

একদম ভাই একটি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য একজন মাকে অনেক যুদ্ধ করতে হয়।। ঈদের দিন থেকেই সবকিছু মিলিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ মামা হয়ে সব ব্যস্ততা ও কষ্ট হলে অনেক আনন্দে আছে।।

প্রথমেই আপনাকে মামা হওয়ার অভিনন্দন জানাই। আশা করি সবাই সুস্থ আছে। আজ আপনি আমাদের সাথে আপনার জীবনের নতুন একটু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আপনি ঠিকই বলেছেন একটা শিশুকে সুস্থভাবে জন্ম দেওয়ার জন্য মা অনেক কষ্ট সহ্য করে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিলো তারপরও সব কিছু সুন্দরভাবে ম্যানেজ করেছেন। বেশি কিছু বলবো না একটাই কথা বলবো সকলকে নিয়ে ভালো থাকবেন।

অনেক আনন্দিত ভাই সুস্থ বাচ্চা দেখে, অনেক কষ্টের পরই একজন মা একটি সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন।। এখন পর্যন্ত সকলে সুস্থ আছে অবশ্যই দোয়া করবেন ভাই আর ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।