ঢাকা ধানমন্ডি লেক পার্কে কিছু স্মৃতি

in hive-120823 •  20 days ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম,

IMG_20250201_091630.jpg

কেমন আছেন সবাই আশা করি ভালো আছেন সবাই।আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের মাঝে একটু সময় বের করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর আনন্দই আলাদা তাই না? গতকাল শুক্রবার ছিল, তাই আমি, আমার স্বামী, আর আমাদের দুই বছরের ছোট্ট মেয়ে মিলে বিকেল তিনটার দিকে বের হলাম ঘুরতে। গন্তব্য ধানমন্ডি লেক পার্ক, যেখানে প্রকৃতির ছোঁয়া আর শহুরে কোলাহলের এক সুন্দর মিশেল পাওয়া যায়।

IMG_20250201_091701.jpg

গাড়ি থেকে নামতেই এক মনোমুগ্ধকর বাতাস আমাদের স্বাগত জানাল। চারপাশে উজ্জ্বল সবুজ গাছপালা, হালকা ঠাণ্ডা আবহাওয়া, আর পাখির কিচিরমিচির মুগ্ধ করছিল। আমার ছোট্ট মেয়ে তো দারুণ খুশি! সে ছোট ছোট পায়ে দৌড়ে বেড়াতে লাগল, একবার এদিকে, একবার ওদিকে। আমি আর আমার স্বামী হাসতে হাসতে তার দুষ্টুমি দেখছিলাম।হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম লেকের পাড়ে। পানি খুব স্বচ্ছ না তবে নৌকার সারি দেখে মন ভরে গেল। অনেক মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছে, কেউ ছবি তুলছে, কেউ গল্প করছে, আবার কেউ নৌকায় চড়ছে। আমার স্বামী মজা করে বলল, নৌকায় চড়বে? কিন্তু আমি একটু না সম্মতি জানালাম। কারন ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে আমি নৌকায় উঠতে চাই না আল্লাহ না করুক যদি কোনো বিপদ হয়।তাই নৌকা বাদ দিয়ে অন্য দিকে মনোযেোগ দিলাম।

IMG_20250201_091715.jpg

বাতাসে হালকা শীতল পরশ, পানির মৃদু ঢেউয়ের শব্দ, আর লেকের চারপাশের গাছের ছায়া সব মিলিয়ে এক অসাধারণ অনুভূতি! আমার মেয়ে খুশিতে হাততালি দিচ্ছিল। আমরা একসঙ্গে এত আনন্দ করছিলাম যে সময় কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারিনি।হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম পার্কের ভেতরের দিকে। সেখানে শিশুদের খেলার জায়গা দেখে আমার মেয়ে তো আনন্দে নাচতে লাগল! দোলনায় দোল খাওয়া, স্লাইডে চড়া সবকিছুতেই তার সীমাহীন আনন্দ। আমরাও বসে বসে তার খেলা দেখছিলাম আর পরস্পরের সঙ্গে গল্প করছিলাম।খেলাধুলার পর ক্ষুধা লেগে গেল। ধানমন্ডি লেক পার্কে এসে ফুচকা না খেলে কি হয়? তাই একটা ফুচকার দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। গরম গরম ফুচকার স্বাদই আলাদা! আমি ফুসকা খাওয়া শেষ করলাম।

IMG_20250201_091802.jpg

সময় বয়ে যাচ্ছিল, সন্ধ্যা নামছিল ধীরে ধীরে। বাতাস ঠান্ডা হয়ে আসছিল, আর লাইটের আলোয় পার্ক আরও মনোমুগ্ধকর লাগছিল। আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এইখানে অনেক ফুলের দোকান দেখে।আমার মেয়ে তো ফুলের দোকান থেকে আসতেই চাইছিল না, কিন্তু আমরা বুঝতে পারছিলাম যে ঘরে ফেরার সময় হয়ে গেছে।ধীরে ধীরে আমরা লেক পার্ক থেকে বেরিয়ে আসলাম। গাড়িতে বসে মেয়েটা ক্লান্ত হয়ে আমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম, আর মনে মনে ভাবছিলাম, এমন সুন্দর একটা দিন কাটানোর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও মাঝে মাঝে এমন কিছু মুহূর্ত কাটানো খুব দরকার, যা শুধু আমাদের নিজেদের জন্য, আমাদের পরিবারের জন্য।ঘরে ফিরেই মনে হলো, এমন সুন্দর বিকেল সত্যিই বহুদিন পর কাটালাম। ছোট্ট মেয়ের হাসি, ঘুড়াঘুড়ি পার্কের খেলা, আর মজাদার ফুচকা সব মিলিয়ে দিনটা সত্যিই মনে রাখার মতো হয়ে রইল।

IMG_20250201_091739.jpg

বাসায় ফিরে মোবাইলে তোলা ছবি গুলো দেখতে লাগলাম,আর ভাবতে লাগলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি।যাইহোক আজ এই পযর্ন্তই সবাই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো! সত্যিই, পরিবারের সাথে কাটানো ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান স্মৃতি হয়ে থাকে। ধানমন্ডি লেক পার্কের অভিজ্ঞতাও একদম চমৎকার লাগলো।
এমন সুন্দর একটি দিন কাটানো সত্যিই কতটা বিশেষ হতে পারে, তা আপনার গল্প থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ধানমন্ডি লেক পার্কের সুন্দর পরিবেশ এবং আপনার মেয়ে যখন খুশি হয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছিল, সেই দৃশ্য ভাবতে খুব ভালো লাগছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি বিষয়বস্তু নিয়ে আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

পরিবারের সাথে কাটানো সময়গুলো সত্যি প্রতিটা মুহুর্তে অনেক বেশি মিস করি আমরা। আর এই মুহুর্তগুলো সারাজীবনের স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়। আপনি পরিবারের সাথে পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন এবং সেই মুহুর্তটা তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে। এই দিনটা আপনার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আপনার লেখা পড়েই বুঝতে পারছি। ভালো থাকবেন।

আসলে অনেকবার চেষ্টা করেও জায়গাটার মধ্যে যাওয়া হয়নি তবে আজকে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ধানমন্ডি লেক এর পাড়ের পার্কের সম্পর্কে আমাদের সাথে আলোচনা করেছেন আসলে ঢাকা শহরের মানুষ যখন বন্ধি জীবন থেকে একটু ভালো থাকার জন্য বাহিরে কোথাও ঘুরতে যায় তখন তাদের কাছে ওই বাতাস স্বস্তির মনে হয় তবে আমার কাছে মনে হয় ঢাকা শহরের বাতাস একেবারেই গরম গ্রাম অঞ্চলে যেরকম বাতাস একেবারে ঠান্ডা বাতাস যখন বয়ে বেড়ায় তখন শরীর মন দুইটাই শান্ত হয়ে যায়।

আপনি আপনার হাসবেন্ড সহ সেখানে ঘুরতে গিয়েছেন অনেক মজা করেছেন ফুচকা খেয়েছেন যেটা দেখে বেশ ভালো লাগলো কিছু কিছু সময় ঘোরাঘুরি করাটা অনেক বেশি প্রয়োজন এতে করে আমাদের মন মস্তিষ্ক সব কিছুই ভালো থাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের আনন্দঘন মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।