ছোট্ট ফটোগ্রাফার

in hive-120823 •  14 days ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম,

কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। যেহেতু আমি এই প্ল্যাটফর্মে আমার প্রতিদিনের কিছু মুহূর্ত ভাগ করে নিই, আজও আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব আমার একটি সুন্দর স্মৃতি। সন্তানদের ছোট ছোট কাণ্ডকারখানা আমাদের জীবনে আনন্দের বিশেষ মুহূর্ত তৈরি করে। আজকের গল্প আমার ছোট্ট মেয়েকে ঘিরে, তার বাবার সঙ্গী হয়ে নতুন কিছু শেখার আনন্দ নিয়ে।

IMG_20250207_092419.jpg

গতকাল বিকেলে আমার স্বামী অফিস থেকে ফিরে এলেন হাতে একটা ক্যামেরা নিয়ে। অফিসের কাজে ব্যবহারের জন্য আনা হলেও আমার মেয়ের চোখে সেটি যেন এক নতুন বিস্ময়। আমার স্বামীর হাতে ক্যামেরাটা দেখা মাত্রই আমার মেয়ের চোখ দুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ছোট্ট ছোট্ট হাতে ক্যামেরাটা ধরার চেষ্টা করতে লাগল, যেন এটা একটা জাদুর বাক্স, যা সবকিছু বন্দি করে রাখতে পারে।আমার স্বামী খুব সুন্দর ভাবে আমার মেয়েকে ক্যামেরা ধরা শিখাচ্ছিল যে এভাবে ক্যামেরা ধরতে হয়,কিন্তু আমার মেয়ে কিছুতেই বুঝতেছিল না আসলে ও একাই ধরতে চাইছিল কিন্তু এত ভারী ক্যামেরা তো আরো ধরতে পারবে না এক হাতে। কি এক অবস্থা ছবি তুলতেও দিচ্ছে না আবার ধরতেও দিচ্ছে না ক্যামেরাটা। একবারই একটা অসুবিধায় পড়ে গেলাম আমরা। যাইহোক ক্যামেরা কোনো রকম ভাবে মেয়ের হাত থেকে নিয়ে কয়েকটা ছবি তুললাম আমি।

IMG_20250207_092342.jpg

আমরা ঠিক করলাম একটু বাইরে যাব, বাইকে করে শহরটা ঘুরে দেখব। মেয়েকে নিয়ে বাইরে গেলে তার আনন্দ দেখে সত্যিই ভালো লাগে। সে বাইকের শব্দে খুশি হয়, বাতাসের ছোঁয়া গালে লাগলে হাত ছুঁড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। আমি তাকে শক্ত করে ধরে বসিয়ে দিলাম, আর আমার স্বামী বাইক স্টার্ট দিলেন। আমরা তিনজন মিলে বেরিয়ে পড়লাম ছোট্ট এক সফরে।
রাস্তার পাশে বাতাসে দুলতে থাকা গাছগুলো, বিকেলের নরম রোদ, মানুষের ব্যস্ততা সব মিলিয়ে পরিবেশটা বেশ সুন্দর লাগছিল। হঠাৎ আমার স্বামী ক্যামেরা বের করলেন, কিছু ছবি তুলবেন বলে। কিন্তু তখনই আমাদের ছোট্ট কন্যা নিজের ছোট্ট হাত দিয়ে আবারো ক্যামেরাটা ধরতে চাইলো। তার ছোট্ট আঙুলগুলো বোতাম চেপে ছবি তুলতে চাইল, যেন তিনিও ফটোগ্রাফার!

IMG_20250207_092250.jpg

আমার স্বামী একটু হেসে ক্যামেরাটা তার হাতে দিলেন, অবশ্যই আমাদের তত্ত্বাবধানে। মেয়ে তো মহা আনন্দিত! ক্যামেরার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বোতাম চাপতে লাগল। যদিও বেশিরভাগ ছবিই অস্পষ্ট হলো, তবু তার চেষ্টা দেখে আমরা মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তার প্রথম ক্যামেরা ধরে ছবি তোলার চেষ্টা, তা যেমন হাস্যকর, তেমনই ভালো লাগার!এরপর আমরা পার্কের দিকে গেলাম। সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটলাম, ছবি তুললাম, এবং মেয়ে নিজের মতো করে ঘোরাঘুরি করল। মাঝে মাঝে আবার বাবার হাত থেকে ক্যামেরা নেওয়ার চেষ্টা করছিল, যেন এটা এখন তার নিজস্ব খেলনা।আমি হাসলাম, ভাবলাম, হয়তো ভবিষ্যতে ও ভালো ফটোগ্রাফারও হতে পারে।এভাবেই এক সুন্দর বিকেল কাটলো আমাদের। একদিকে বাইকে ঘোরা, অন্যদিকে আমাদের ছোট্ট মেয়ের ক্যামেরার প্রতি কৌতূহল সব মিলিয়ে দিনটা বিশেষ হয়ে উঠল। সন্তানদের প্রতিটা ছোট ছোট আনন্দময় মুহূর্ত আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ। জীবন আসলে এরকমই ছোট ছোট খুশিগুলোকে ধরে রাখার নাম।

IMG_20250207_092456.jpg

আপনাদের পরিবারেও নিশ্চয়ই এমন সুন্দর মুহূর্ত আসে? তাহলে সেই মধুর স্মৃতিগুলো উপভোগ করুন এবং ভালোবাসায় আগলে রাখুন। আলহামদুলিল্লাহ, ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তই তো একদিন বড় হয়ে স্মৃতির আকাশে তারা হয়ে জ্বলবে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

এটা খুবই চমৎকার অভিজ্ঞতা! জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলো ছোট-ছোট আনন্দে লুকিয়ে থাকে, এবং আপনি সেই মুহূর্তগুলো খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন আমাদের সাথে। আশা করি আপনার ছোট্ট মেয়ে একদিন সত্যিই একজন চমৎকার ফটোগ্রাফার হবে। এত সুন্দর একটি বিষয়বস্ত নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।

বাচ্চারা যে কোন নতুন জিনিসের প্রতি অনেক বেশি কৌতহল হয়ে থাকে এবং এমনটাই আজকে আপনার পোষ্টের মধ্যে উপলব্ধি করতে পারলাম, অফিসিয়াল কাজের ক্যামেরা আনা হলেও এটা আপনার বাবুর প্রিয় একটা জিনিস হয়ে উঠেছে মনে হচ্ছে। কৌতুহলী ছোট অবুঝমন বারবার ক্যামেরাটা নিতে যাচ্ছে নিজের কাছে সবমিলিয়ে খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের এই চমৎকার অনুভূতিগুলো।

আসলে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র দেখে ছোট বাচ্চার অনেক বেশি খুশি হয় আগ্রহ প্রকাশ করে সেটা ধরার জন্য আপনার মেয়ের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে আপনার যেহেতু বাইকে করে পুরো শহরটা ঘুরে দেখবেন তাই ক্যামেরার সাথে নিয়ে নিয়েছেন নিজেদের স্মৃতিগুলো ধরে রাখার জন্য এটা খুবই ভালো একটা মাধ্যম অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

এই ফটোগ্রাফারকে আমার এত বেশি পছন্দ হয়েছে যে, সম্ভব হলে ওনাকে দিয়ে নিজের এক কপি ছবি তোলাতাম 😊। আপনি যে ছবিগুলো শেয়ার করেছেন তাতে তার ছবি তোলার প্রতি, ক্যামেরার প্রতি, যে আগ্রহ, যে কৌতূহল তা একেবারে সুস্পষ্ট। ক্যামেরা নিয়ে আপনার মেয়ের এই কৌতূহল দেখে আপনারাও বেশ উপভোগ করেছেন মুহুর্ত গুলো। তারপর আবার পার্কেও বেশ সুন্দর কিছুটা সময় কাটিয়েছেন তিনজন মিলে। আসলে জীবনের এই মুহূর্ত গুলোই বোধহয় আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়। ভালো থাকবেন।

সত্যি আপু আপনি চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

এটা সত্যি যে ছোট বাচ্চাদের কিছু কিছু কান্ড অনেক বেশি আনন্দ দেয়।। অফিসের ব্যবহৃত ক্যামেরা ভাইয়া নিয়ে এসেছে আর মেয়েদেরকে অনেক বেশি আনন্দিত সেই সাথে ছবি তোলার চেষ্টা।।

বিকাল মুহূর্তে সবাই মিলে একসাথে কিছুটা সময় অতিবাহিত আসলে ভালোবাসার মানুষদের সাথে সময় অতিবাহিত করতে অনেক বেশি ভালো লাগে।।