আসসালামু আলাইকুম
- প্রিয় বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আমার মেয়ের শখের কবুতর লালন পালন এবং এই পাখির সাথে কিছু সুন্দর মুহূর্ত। চলুন তাহলে শুরু করি আজকের কবুতর নিয়ে সুন্দর একটি গল্প।
আমার দুটি শখের কবুতর পাখি আছে। আমি তাদের নাম কি রেখেছি জানেন? শুনে অবাক হবেন, শুনুন তাহলে আমি তাদের প্রথম দিন দেখেই নাম রেখেছি মিঠু আর মিমি।আমার মেয়ে তো অনেক ছোট সে কাকি বলে ডাকে। আমি কখনো ভাবি নি যে আমি কবুতর পাখির লালন পালন করব। কিন্তু এখন আমার জীবনের প্রতিটি দিন যেন এই পাখি দুটি সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
শহরের ব্যস্ততম এলাকায় বাস করি, তবে এই কবুতর দুটি আমাদের ঘরকে শান্তি ও আনন্দে পূর্ণ করে রেখেছে।কবুতর লালন পালন করার পিছনে একটা সুন্দর গল্প আছে। চলুন তাহলে গল্পটা বলেই ফেলি আমার এই ছোট্ট বাচ্চাটা একদিন আমার ছোট ভাইয়ের সাথে ফোনে ভিডিও কলে কথা বলছিল। হঠাৎ আমার ভাই আমার মেয়েকে এই পাখিগুলো দেখায়। আর সাথে সাথে আমার এই ছোট্ট মেয়েটা মামা মামা বলে ফোনের মাধ্যমেই পাখির দিকে হাত এগিয়ে দেয়।
আমার ভাই সাথে সাথেই বলে আমি পাখি দুটো পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি। আমার আদরের ভাগ্নি হাত দিয়ে দেখাইছে বলে কথা।আমি আমার ভাইকে অনেকবার নিষেধ করেছি যে, আমি কখনো কবুতর লালন পালন করিনি আমি এখানে শহরে কবুতর লালন পালন করতে পারবো না । কে শুনে কার কথা তার ভাগ্নি চাইছে বলে কথা। আমার ভাই সোজা না করে দিয়েছে যে তোমাকে কবুতর দুটো লালন পালন করতেই হবে আমার ভাগ্নির জন্য। তো কি আর করার বাধ্য হয়ে মেনে নিলাম।
আমার ভাই সেই গ্রাম থেকে আমার শাশুড়ির মাধ্যমে এই কবুতর দুইটি পাঠিয়েছে।আপনারা শুনে অবাক হবেন আমার শাশুড়ি এই কবুতর দুইটা নিয়ে কত অসুবিধায় পড়েছে রাস্তার ভিতর গাড়ির ভিতর। কি আর করার হাজারো অসুবিধার মাঝেও এই কবুতর দুইটা আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছে আমার শাশুড়ি।শাশুড়ি আম্মাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমার ছোট্ট বাচ্চা তারপর থেকে এই কবুতর দুইটাকে অনেক অনেক ভালোবাসে।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার এই ছোট্ট মেয়েটা কবুতরের কাছে যায়। পাখিগুলো যখন একে অপরকে ঠেলা দিয়ে খেলে তখন আমার এই মেয়েটা এত বেশি খুশি হয়,খুশিতে বারবার লাফিয়ে লাফিয়ে ওঠে। আমার এই ছোট্ট মেয়েটা পাখির খাবারের গাপলা টা আমার কাছে নিয়ে এসে দেয় পাখিকে খাবার দেওয়ার জন্য। আমার মেয়েটা যখনই কান্না করে যে কোন কিছু নিয়ে বায়না করে তখনই আমি সাথে সাথে এই কবুতর দুটির কাছে নিয়ে আসি। এবং ও সাথে সাথেই ভালো হয়ে যায়।
যত দিন যায় পাখিগুলোর সাথে আমার মেয়ের বন্ধুত্ব গভীর হয়। আমার হাজবেন্ড ও পাখি দুটির ভীষণ ভক্ত। যদিও সে সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকে বাসায় যখনই ফিরে আসে তখনই এই মিঠু মিমির সামনে চলে আসে। আমার হাজবেন্ড প্রতিদিন মিঠু মিমিকে গোসল করাইয়া দেয়। গোসল করানোর পর পরে আমরা বেলকনিতে নিয়ে এসে রাখি ওদের। আবার কখনো কখনো খাবার দেয় পানি দেয়। সব মিলিয়ে কবুতর দুটো আমাদের জীবনকে এক নতুন রঙ্গে সাজিয়েছে।
সকালে যখন ঘর পরিষ্কার করি আমি তখন মিঠু ও মিমি জানালার ধারে বসে থাকে,যেন তারা আমাদের সকালে শুরুতে অংশ নেয়। মিঠু ও মিমির এই শান্ত থাকার অভ্যাস আমার দিনকে আরো সুন্দর করে তোলে। আমি যখন রান্না করতে ব্যস্ত থাকি তখন মিষ্টি শব্দে একে অপরের সাথে কথা বলে ওরা দুজন। আবার মাঝে মাঝে দেখি আমার মেয়েটা ওদের সাথে কথা বলছে খেলছে হাসছে আমার দেখে ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আবার খারাপ লাগে ওদের জন্য কারণ ওরা একটা পিঞ্জিরার ভিতর বন্দী থাকে।খুব ইচ্ছে করে ওদের ছেড়ে দিতে কিন্তু আমার মেয়েটা ওদের ছাড়া এক মুহূর্তও ভালো থাকতে পারবে না।
সত্যি বলতে কবুতর পাখি পালন আমার এই ছোট্ট পরিবারের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আমাদের এই ছোট্ট সংসারের যান্ত্রিক জীবনে মাঝে মাঝে একটু কষ্টকর হলেও মিঠু মিমি আমাদের সব দুঃখ ভুলিয়ে দেয়। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর মুহূর্ত গুলো যেন এক টুকরো শান্তির অনুভূতি দেয়। আমার যখন অনেক বেশি মন খারাপ লাগে আমি অনেকটা সময় ওদের সাথে কাটাই বসে থাকি ওদের সাথে গল্প করি হাসি ওদের কথা বোঝার চেষ্টা করি।
- যাইহোক আজ এই পর্যন্তই, শুধু এটুকুই বলতে চাই,, সত্যিই কবিতর পাখি দুটি আমাদের জীবনের এক অমূল্য উপহার।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ
প্রথমে বলি পায়রার জুড়ি দুটি ভারী মিষ্টি, আর সম্পর্কের পরিভাষা এমনটাই হয় একসাথে চলতে চলতে একটা পারস্পারিক আকর্ষণ তৈরি হয়েই যায়।
তবে সব লেখার মাঝে উপরিউক্ত কথাগুলো আমিও বিশ্বাস করি বন্যেরা বনেই সুন্দর!
ভেবে দেখুন সেই কোরোনার সময় যখন আমরা চাইলেও ঘরের বাইরে লকডাউন এর বাড়ির বাইরে যেতে পারছিলাম না।
বন্দী জীবন বোধহয় কারোর কাম্য নয়, পার্থক্য আমরা নিজেদের অভিব্যক্তি, অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারি, আর এরা সেটা পারে না!
যদি পারতো, তাহলে হয়তো বলতো, শুধু একদিনের জন্য স্থান পরিবর্তন করে আমাদের অনুভূতি অনুভব করে জান!
ভাগ্নির প্রতি মামার ভালবাসা কতখানি, পাশাপশি দিদিমার লাস্ট করে নাতনির জন্য উপহার বয়ে আনার প্রয়াস বুঝিয়ে দেয়, সম্পর্কের বাঁধন অনেক কিছুর উর্ধ্বে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই জানাই দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার এত ব্যস্ততার মাঝেও আমার এই পোস্টটি পরিদর্শন করার জন্য এবং সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য।
সবগুলো কথাই আমার খুব ভালো লেগেছে । আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন এই যে আমরা কোরোনার ভিতর বন্দী জীবন কাটাইছি কতই না খারাপ লাগছে।আর সেখানে কিনা সব সময় পাখিগুলো একটা খাঁচার ভিতর বন্দি থাকে।
খারাপ লাগলেও উপায় নাই কারন আমার খুব ইচ্ছা করে মাঝে মাঝে ওদের ছেড়ে দেই, কিন্তু আমার মেয়েটা ওদের ছাড়া এক মুহূর্ত ভালো থাকতে পারবে না। মেয়ের কথা ভেবে ওদের আর ছেড়ে দেওয়া হয় না।
আপনার কথাটা অনেক অনেক ভালো লেগেছে যে বন্যারা বনেই সুন্দর। আমার পাখিদের প্রতি এক অদ্ভুত ভালোবাসা কাজ করে তাই মায়ায় পড়ে ছেড়ে দেওয়া হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Congratulations, your post has been curated by @dsc-r2cornell. You can use the tag #R2cornell. Also, find us on Discord
Felicitaciones, su publicación ha sido votada por @ dsc-r2cornell. Puedes usar el tag #R2cornell. También, nos puedes encontrar en Discord
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাগ্নি বলে কথা আপনার ছোট্ট মেয়েটি মোবাইলের মধ্যে কবুতর দুই টি দেখে হাত বাড়িয়ে ছিলো। আপনার ভাই সেইটা দেখে আপনার শাশুড়ির মাধ্যমে কবুতর পাঠিয়ে দিয়েছে। মামার ভালোবাসা ভাগ্নির প্রতি অনেক বেশি। তাইতো সে আপনার শাশুড়ির মাধ্যমে কবুতর দুইটি পাঠিয়ে দিয়েছেন। আসলে রাস্তার মধ্য কবুতর নিয়ে আসা অনেক কষ্টের একটি বিষয়। তবুও আপনার শাশুড়ি কষ্ট স্বীকার করে হলেও আপনাদের কাছে কবুতর দুইটি নিয়ে এসেছে দেখে অনেক ভালো লাগলো।
আসলে পশু প্রাণী মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসে। খাঁচায় বন্দি তাদের জীবন নয় তারা নীল আকাশে উড়ে উড়ে বেড়াবে এটাই তাদের জীবন। অনেক সময় মনে না চাইলেও অনেক কিছু করতে হয়। আপনার মেয়ে এখনো ছোট সে হয়তো বা বড়ো হয়ে এই জিনিস গুলো বুঝতে পারবে ঠিক আপনার মতো। যাইহোক সুন্দর একটি লেখা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যটি করার জন্য। আসলেই কবুতর দুটি মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়ানোর জন্যই তো সৃষ্টি, খাঁচায় বন্দি তাদের প্রকৃত জীবন নয়।
কিন্তু তবুও অমানবিক কাজ আমাকে করতে হচ্ছে আমার মেয়ের জন্য, পাখি দুটোকে খাঁচায় বন্দী রেখে। কি করব বলুন মায়ায় পড়ে গেছি আমরা।
আমার এই ছোট্ট মেয়েটা হয়তো এখন বুঝতেছেনা কিন্তু একদিন ও ঠিক বুঝবে যে বন্যরা বনেই সুন্দর। আপনার কমেন্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার কাছে অনেক কবুতর আছে আমিও কবুতর পালতে অনেক ভালোবাসি। এই কবুতরের নামগুলি হচ্ছে সিরাজী কবুতর
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের বাড়ি তেও কবুতর রয়েছে তবে সেটা প্রথমে শখের বশে কিনেছিল কিন্তু এখন অনেকটাই বাণিজ্যিকভাবেই লালন পালন করছে। বাড়িতে চার থেকে পাঁচ জোড়া কবুতর থাকলে মাংসের চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয় । আপনার মেয়ে অনেক পছন্দ করে কবুতর এই জন্যই কবুতর কিনছেন জেনে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। একদম ঠিক বলেছেন যে বাড়িতে যত বেশি কবুতর থাকবে তত বেশি চাহিদা বাড়বে মাংসের। কিন্তু আমি কবুতর বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসিনি আমার ছোট ভাই দিয়েছে তার ভাগ্নিকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit