আসসালামু আলাইকুম
*সৃষ্টিকতার অশেষ রহমতে আশা করি ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি গল্প নিয়ে। আশা করি সম্পূর্ণ গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
গভীর রাতে কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে গ্রামের মেঠো পথ যেন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। তবে ভোরের প্রথম আলো ফোটার আগেই মিজানুর চাচার দিন শুরু। তার সবজি ক্ষেতের গল্পটা আলাদা। লাল শাক, মূলা, গাজর, ফুলকপি সবকিছুই যেন গল্পের বইয়ের রঙ্গিন পাতার মত। মিজানুর চাচা এগুলো খুব যত্ন সহকারে চাষ করেন। গ্রামে একবারও শীতকাল বাদ যায়নি যে চাচার সবজি সবার খাবারের পাত ভরাইনি।
তেমনই এক শীতে সকালে মা আমাকে ডাকলেন। কিরে ওঠ কতই ঘুমাবি সকাল তো হয়ে এসেছে। পড়তে যাবি না পড়ার সময় তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি অনেক কষ্টে এই শীতের সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে মসজিদে পড়তে চলে গেলাম। আমি মসজিদে পড়তে গেছি আরবি পড়ার জন্য। শীতে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে অনেক কষ্টে মসজিদে পৌঁছালাম।
পড়া শেষ করে বাড়িতে চলে আসলাম।
বাড়িতে ফিরেই দেখি মা রান্নার জন্য তোড়জোড় শুরু করছেন। আঙ্গিনায় বসে মা বললেন, এই সময়ের সবজি খেলে শরীর ভালো থাকে। আরো বললেন যে শীতের সবজি শুধু পেট নয় মন ভরিয়ে দেয়। মজা করে মাকে বললাম তাহলে আজ বেশি করে খাবো আমি। মা হাসলেন আর বললেন যে, আজ রান্না হবে ভিন্ন রকম।
এরপর সকালে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছিলাম।কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা আসলে তখন আমার কোন কাজ ছিল না তো,, কাজ বলতে ছিল শুধু পড়াশোনা আর খাওয়া দাওয়া। এখন আমার সংসার জীবন কত দায়িত্ব কত কর্তব্য সেগুলো আর নাইবা বলি আজ।
ঘুম থেকে উঠে দেখি মা দুপুরের খাবার প্রস্তুত করছেন। কিছুক্ষণ পর মা আমাকে খেতে দিলেন ধোয়া ওঠা গরম ভাত আর মুলার ঝোল সেই সাথে লাল শাক ভাজা। প্রথমে আমি শাঁক মুখে নিয়ে মুখ ভাঁজ করলাম মাকে বললাম শাক খেতে আমার একটুও ভালো লাগেনা। মা একটু হেসে বললেন খেয়ে দেখ শীতের মজাটাই এখানেই। শুধু একবার শাক মুখে দিয়েই চোখ বড় হয়ে গেল আমার। এত সুন্দর স্বাদ আগে কখনো পাইনি। মায়ে রান্নায় যেন শীতের সকাল, মিজানুর চাচার খেত, আর গ্রামের উষ্ণতা সব এক হয়ে গেছে।
প্রতিদিনের মতো সেই দিনটা বিশেষ হয়ে উঠল আমার। কালকে সকাল মানেই শুধু ঠান্ডা নয় গরম ভাত আর সবজির উষ্ণ ভালোবাসা।
গ্রামের পথে হাঁটতে হাঁটতে ঝুড়ি ভর্তি সবজির দৃশ্য মায়ের রান্না আর সেই এক লোকমা শাকের স্বাদ সব মিলিয়ে শীতকালের জন্য অপেক্ষা যেন বছরে সবচেয়ে আনন্দময় ব্যাপার হয়ে উঠেছে আমার জীবনে। আমি সেই দিনগুলো এখনো খুব মিস করি।শুধু মনে হয় সেই সময়ে যদি আবারো ফিরে যেতে পারতাম কতোই না ভালো হতো।
- যাই হোক আজ আর লিখতে চাই না, মায়ের সাথে কাটানো সময় ও শীতকালের কিছু অনুভূতি,,,মায়ের হাতে রান্না, শীতকালীন শাকসবজি সবকিছুর কথা মনে পড়ল এজন্য আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।আমার গল্পটা আপনাদের কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আপনার কাছ থেকে শীতের সকালে পড়তে যাওয়ার কথা শুনে আমার ছোটবেলার কথা মনে গেলো। আমি যখন স্কুলে পরতাম তখন ভোর বেলায় প্রাইভেট পড়তে যেতে হতো। শরতের সকালে আমাকে মা বাবা দুজন মিলে ডেকে তুলতো এবং খুব ভোরে পড়তে যেতাম।
চারপাশ কুয়াশায় ঘেরা থাকতো এবং সাইকেলে চড়ে পরতে যেতাম। এতটাই কুয়াশা পরতো যে সামনের কিছুই স্পষ্ট দেখা যেতো না। শাক সবজি খেতে আমারও ভালো লাগে না তবে মা জোর করায় খেতে হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই আপনাকে জানাবো অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য।আপনার কমেন্টের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম আপনিও আমার মত শীতের সকালে আরবি পড়তে গিয়েছেন । আসলে এই অনুভূতিগুলো ভুলে যাওয়ার মত না।
আপনার কমেন্টটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো,,, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সকালে ওঠাটা পছন্দ কাজের মধ্যে একটি কাজ সকালে উঠে হাটাহাটি না করলে আমার সারাদিনটা একদমই খারাপ যাই।
আমাদের এদিকে শাকসবজির চাষ বলতে একদমই নেই। সবাই বাজার থেকে ক্রয় করে আনে। শুনে ভালো লাগলো আপনারা আপনাদের বাড়িতে অনেক রকমের শাক-সবজি চাষ করে থাকেন টাটকা ঔষধের সবজি খান আপনারা।
ধন্যবাদ আপু এরকম পোস্ট আমাদেরকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যটি শেয়ার করার জন্য। আমার বেড়ে ওঠা গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই গ্রামে সব শাক সবজি থেকে শুরু করে যত রকম ফসল আছে চাষাবাদ করা দেখেই আসছি।
আপনার কমেন্টটি ভালো লাগলো,,, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পুরনো স্মৃতি গুলো আমাদের জীবনে হয়তো বা আর কখনো ফিরে আসবে না কিন্তু মনে পড়ে যাবে সারাটা জীবন এভাবে। শীতের সময় মায়ের হাতের রান্না অনেক ভরে ওঠে পড়াশোনা এটা একটি আনন্দ ছিলো অন্যরকম। এখন হয়তো বা সংসারের দায়িত্ব নিয়েছেন আপনি কিন্তু ভুলতে পারেন না সেই দিনের কথা গুলো কারণ তখন কোন কাজ ছিলো না আপনার। মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ আলাদা পৃথিবীর আর কোন জায়গায় এমন স্বাদ হয়তোবা আর পাওয়া যাবে না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit