"আমার‌‌ ঠাকুর মায়ের পছন্দের রেসিপি"

in hive-120823 •  12 days ago 
IMG_20250125_085954.jpg
"তেতোর ঝোলের‌ রেসিপি"

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

আগামীকাল একাদশী। তাই নিয়ম অনুসারে আজ আমি নিরামিষ খেয়েছি, যেহেতু আজ সংকল্প। বাড়িতে সকলের জন্য আমিষ রান্না হলেও, নিজের জন্য আজ বেগুন ভাজার সাথে সাথে আলু-উচ্ছে দিয়ে একটি নিরামিষ তরকারি রান্না করেছি। ভাবলাম আজ সেই সাধারণ রেসিপিটিই আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

প্রসঙ্গত জানাই এই তরকারিটা গরমকালে খেতেই বেশি ভালো লাগে। তবে অনেকদিন হয়ে গেছে এটি খাওয়া হয়নি, তার ওপর আজ আবার নিরামিষ ছিলো। তাই হঠাৎ ইচ্ছে করলো আমার ঠাকুরমা ও বাবার খুব প্রিয় এই রেসিপিটি রান্না করি ও আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

রেসিপিটি অত্যন্ত সাধারণ। কোনো মশলা ছাড়াই খুব সাধারণ ভাবে রান্না করা এই রেসিপিটির স্বাদ গরমকালে সব থেকে বেশি পাওয়া, যেহেতু গরমের সময় প্রায় সকলেই আমরা তেতো জাতীয় খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করি।

1672344690977_010726.jpg

যাইহোক চলুন প্রথমে রেসিপিতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি, -

"প্রয়োজনীয় উপকরণ"

নংউপকরণপরিমাণ
১.আলু৩ টো(ছোটো সাইজের)
২.উচ্ছে২ টো
৩.কাঁচালঙ্কা২ টো
৪.রাঁধুনি½ চা চামচ(ফোরণের জন্য)
৫.সরষের তেল৩ চা চামচ
৬.লবনস্বাদ অনুযায়ী
৭.হলুদ গুঁড়ো১ চা চামচ

1672344690977_010726.jpg

"তৈরি করার পদ্ধতি"

উপরোক্ত সামান্য কিছু উপকরণের সাহায্যে রেসিপিটি তৈরি করা হয়ে যাবে। আসুন এবার আপনাদের সাথে রেসিপিটির ধাপগুলো শেয়ার করি।

IMG_20250124_192507.jpg

IMG_20250124_192452.jpg

প্রথমে আলু গুলোকে একটু পাতলা করে কেটে নিতে হবে। ঠিক যেমনটা আপনারা ছবিতে দেখতে পারছেন। আসলে আমাদের বাড়িতে এই তরকারিটির জন্যে এইভাবে আলু কাটতে দেখতাম বলে, সেটাই বোধহয় আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। তার পাশাপাশি উচ্ছেগুলোকেও টুকরো করে কেটে নিলাম। আমি একটু বড় টুকরো করেছি যাতে তরকারির সাথে একেবারে মিশে না যায়, কারণ তেতো আমার খুব একটা পছন্দ নয়।

1737775560596.png

IMG_20250124_115618.jpg

IMG_20250124_120320.jpg

এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে তার মধ্যে আমি প্রথমে উচ্ছে গুলোকে ভেজে নিয়েছি। আমি উচ্ছেগুলোকে একটু বেশি কড়া করে ভেজেছি, যাতে ওর মধ্যকার তেতো ভাব অনেকটা কমে যায়। তবে আপনারা যারা তেঁতো খেতে পছন্দ করেন, তারা উচ্ছেটা একটু কম ভাজবেন, তাতে তরকারির স্বাদটা একটু বেশি ভালো পাওয়া যায়।

1737775560596.png

IMG_20250124_120410.jpg

IMG_20250124_192530.jpg

ভেজে নেওয়া উচ্ছে গুলো একটি পাত্রে নামিয়ে নিয়ে, ওই তেলের মধ্যে রাধুনী ও কাঁচা লঙ্কা ফোরণ দিয়ে নিলাম। এই তরকারির ক্ষেত্রে কিন্তু অবশ্যই ফোরণে আপনারা রাঁধুনি ব্যবহার করবেন, তবেই তরকারির স্বাদ এবং গন্ধ সুন্দর হবে।

1737775560596.png

IMG_20250124_120457.jpg

IMG_20250124_120419.jpg

IMG_20250124_120504.jpg

IMG_20250124_121118.jpg

এরপর আগে থেকে কেটে ধুয়ে রাখা আলুগুলো দিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ ভালোভাবে ভেজে নিলাম। তারপর পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়ো দিয়ে এপাশ-ওপাশ করে নাড়িয়ে, প্রয়োজনীয় জল দিয়ে দিলাম। এরপর অপেক্ষা করতে হবে আলুগুলো সিদ্ধ হওয়ার।

1737775560596.png

IMG_20250124_121853.jpg

IMG_20250124_125242.jpg

আলুগুলো সেদ্ধ হলে কয়েকটা আলু আপনারা ভেঙে দিতে পারেন, তাতে ঝোলটা একটু গাঢ় হবে। এরপর আগের থেকে ভেজে তুলে রাখা উচ্ছেগুলো দিয়ে একটুখানি ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আলু উচ্ছে দিয়ে তৈরি তেতোর ঝোল।

1737775560596.png

আমার ঠাকুমা আমার হাতের এই রান্নাটি খেতে খুব পছন্দ করতেন। গরমকালে এই রান্নাটি প্রতিদিন আমাদের তৈরি হতো। তবে শ্বশুরবাড়ির কেউ এই রান্নাটি তেমন একটা পছন্দ করে না, তাই আমার যেদিন খুব ইচ্ছে করে আমি নিজের মত অল্প একটু তৈরি করে নিই।

নিজের সব ভালো লাগাই ধীরে ধীরে যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে, তাই আজ অনেকদিন বাদে শীতকালেই তেতোর ঝোল রান্না করলাম। খুব সাধারণ ভাবে, কম উপকরণ ও কম সময়ে তৈরি করা এই রেসিপিটি অনেক অমূল্য স্মৃতি বহন করে আমার জীবনে।

তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আর যারা তেতো খেতে পছন্দ করেন, একবার অবশ্যই তৈরি করে দেখতে পারেন, আশাকরি মন্দ লাগবে না। ভালো থাকবেন সকলে।

"পোস্টটি গতকাল রাতে লেখা"

1737773973212.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

1000028899.png

Thank you for your support @shiftitamanna ma'am🙏.

এত সুন্দর একটা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার রেসিপিটি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে পরিবেশন করেছেন। যা দেখে অনেক ভালো লাগলো, আপনার ঠাকুরমা ও বাবার খুব প্রিয় এই রেসিপিটি, এই বিষয়টি জেনে খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন!

গরমকালে অবশ্যই একবার বাড়িতে তৈরি করতে বলবেন। খাওয়ার পর ফিডব্যাক দেবেন। আমার ঠাকুমা নিরামিষ খেতেন, আর এমন সাধারণ ধরনের খাবার খেতেই অভ্যস্ত ছিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্যে। ভালো থাকবেন।

Loading...

সত্যিই রেসিপিটি খুবই সাধারন কিন্তু মনের মধ্যে অনেক স্মৃতি রেখে গেছে। আপনার ঠাকুরমার পছন্দের খাবারের সাথে নিজের ভালোবাসার সংযোগ সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। গরমকালে এই রান্নাটি খাওয়ার আনন্দ অনেকটাই আলাদা। আপনার স্মৃতির সাথে শেয়ার করা রেসিপিটি আমারও ভালো লাগলো। আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো। শুভকামনা রইলো।

খুব সত্যি বলতে একসময় এই ধরনের খাবার পছন্দ করতাম না। তবে বয়স যত বাড়ছে ততই যেন হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর স্মৃতি ধরে রাখার প্রচেষ্টা বাড়ছে। আর এমন করতে করতে এই ধরনের রান্নার প্রতি ভালোবাসা জন্মেছে। এখন তো একার জন্যেও মাঝে মাঝে এই রান্না করি। জীবন সত্যিই অদ্ভুত। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।

আসলে আমার দাদি এই খাবারটা তৈরি করতে মাঝে মাঝে আমি দেখতাম তবে কখনো খেয়ে দেখার চেষ্টা করিনি উনি বলতে অনেক মজা হয়ে থাকে তবে আজকে আপনার রেসিপি দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে খাবারটা অনেক দারুন একদিন অবশ্যই আপনার রেসিপি ফলো করে তৈরি করার চেষ্টা করব অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার রঞ্জন প্রণালী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।