"দিপাবলীর উপহার"

in hive-120823 •  9 days ago 
IMG_20241109_234320.jpg

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি খুব ভালো কেটেছে। আমার দিনটি আজ কোথা দিয়ে পার হয়েছে, সত্যি কথা বলতে বুঝতেই পারিনি।

বাড়িতে থাকলে সময় পার হতে চায় না, সব সময় একটা মন খারাপ ঘিরে থাকে আমাকে। গত বেশ কয়েকদিন ধরে এইরকম পরিস্থিতিতে থাকতে থাকতে নিজেকে মানসিকভাবে আরও বেশি ক্লান্ত মনে হচ্ছিলো। তবে যেমনটা গতকালের পোস্টে আপনারা পড়েছেন, আমি দিদি বাড়িতে আছি। তাই তিতলি ও তাতানের সাথে আজকের দিনটি কিভাবে পার করলাম সত্যিই বুঝতে পারলাম না।

সারাদিন ওদের পেছনে ছুটো ছুটি করতে করতে, ওদের ঝগড়া থামাতে থামাতে, ওদেরকে বোঝাতে বোঝাতেই দিন কেটে গেল। আজ দাদার বেশ কতগুলো টেস্ট হয়েছে। সেই কারণে দিদি সকাল থেকে হসপিটালেই ছিলো। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়িতে ফিরেছে।

আগামী কাল দাদার বাঁ পাশের কান এবং চোখের পরীক্ষা রয়েছে। যেহেতু ব্রেনের বাঁ সাইটে দাদার অপারেশন হবে, তাই তার আগে সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20241109_233256.jpg
"দিদির অফিস থেকে পাওয়া দীপাবলীর উপহার"
IMG_20241109_233144.jpg
"ড্রাই ফ্রুটস ও চকলেট"

আজ দিদি বাড়িতে ফিরে ব্যাগ থেকে একটা গিফট বের করলো। ওর ওয়ার্ডের সকল মেয়েরা যারা ওর আন্ডারে কাজ করে, তারা দিপাবলী উপলক্ষে সব ম্যাডামদের দীপাবলীর গিফ্ট হিসেবে দিয়েছে।

IMG_20241109_233313.jpg
"চকলেটটা হাতে পেয়ে মনখারাপ হয়ে গেলো তাতানের"
IMG_20241109_233232.jpg
"চকলেটটা নিতে ভীষণ আগ্ৰহী"

গিফটটা দেখে তিতলি, তাতান দুজনেই আনন্দিত হয়ে পড়লো। বিশেষত উপরের চকলেটটা দেখে তাতান অনেক বেশি খুশি হয়েছিল। তবে দুঃখের বিষয় চকলেটটা ছিল ফ্রুট এন্ড নাট চকলেট, যেটা ওর একদমই পছন্দ নয়। তাই চকলেটটা হাতে নিতেই বেচারার মন খারাপ হয়ে গেলো।

IMG_20241109_233438.jpg
"কিসমিস"
IMG_20241109_233423.jpg
"কাজুবাদাম"
IMG_20241109_233403.jpg
"আমন্ড"
IMG_20241109_233347.jpg
"পেস্তা"

প্যাকিংটা সত্যিই সুন্দর ছিলো। ভিতরে চার রকমের ড্রাই ফ্রুটস ছিলো। যার মধ্যে ছিলো পেস্তা, কাজুবাদাম, আমন্ড এবং কিসমিস। চৌকো যে বাক্সের মধ্যে এই প্যাকেট গুলোকে গুছিয়ে রাখা ছিলো, সেই বাক্সটাই অনেক বেশি সুন্দর ছিলো দেখতে।

IMG_20241109_233329.jpg
"বাক্সের নিচের দিকে এই ছোটো ছোটো টুকরো কাগজ ব্যবহার করে প্যাকেটটা সাজানো ছিলো"

আর প্যাকেট গুলোকে উপরের দিকে সাজানোর জন্য ভেতরে বেশ কিছু টুকরো টুকরো কাগজ ছিলো, যেগুলো দিয়ে এই প্যাকেটগুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে, উপর থেকে প্লাস্টিক দিয়ে আটকানো ছিল।

পেস্তা খেতে তিতলি খুব পছন্দ করে। তবে এই প্যাকেটের মধ্যে যে পেস্তা গুলো ছিলো সেটা একটু নোনতা স্বাদের ছিলো। পরে অবশ্য দিদি বলল এগুলো নাকি রোস্টেড পেস্তা। তাতানের পছন্দের ছিলো কাজুবাদাম এবং কিসমিস। আমন্ড খেতে দুজনের কেউই পছন্দ করেনা।

IMG_20241109_233210.jpg
"আনন্দ সহকারে প্যাকেট খোলার মুহুর্ত"

যাইহোক গিফটটা দেখতেই তিতলি কাঁচি নিয়ে এসে ওটা আনবক্স করতে শুরু করলো। দুজনেই বেশ খুশি ছিল তাই সেই মুহূর্তগুলোকে আমি একটু ক্যামেরাবন্দি করার চেষ্টা করেছি। সত্যি কথা বলতে সব প্যাকেট থেকে একটু একটু করে সবকিছুই টেস্ট করেছি, তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজেরও সব থেকে কাজু বাদাম বেশি পছন্দের।

ক্যাডবেরিটা যদিও ফ্রিজে রাখা রয়েছে, ওটা থেকে ভাগ বসানো এখনও বাকি আছে। সত্যি বলতে ওই চকলেটটা তাতানের পছন্দ নয় বলেই, এখনও সেটা ফ্রিজে আছে। যদি এটা ওর ফেভারিট চকলেটের মধ্যে একটা হতো, তাহলে আজ রাতেই ওটা শেষ হয়ে যেতো।

IMG_20241109_233517.jpg
"মাঝে প্লাস্টিকের ফুলটি দিয়ে সাজিয়েছে"
IMG_20241109_233458.jpg
"সবকিছু ফেলে শুধু প্যাকেটগুলো সাজানোর চেষ্টা করছে তিতলি"
IMG_20241109_233535.jpg
"তাতানের অপছন্দের ফ্রুট অ্যান্ড নাট চকলেট দিয়ে সাজালেও বেশ ভালো লাগছে দেখতে"

যাইহোক কথা প্রসঙ্গে জানলাম এই গিফটটা মেয়েরা দিদিকে দুদিন আগেই দিয়েছিলো, কিন্তু এতো ব্যস্ততার মাঝে আর বাড়িতে আনতে পারেনি। ওর রুমে লকারের মধ্যেই রাখা ছিলো, আজ কোনো একটা প্রয়োজনে লকার খুলতেই চোখে পড়েছে, তাই ব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়ে এসেছে।

1672344690977_010726.jpg

আসলে একজন মানুষের এতদিক সামলাতে গেলে সমস্ত কিছু সব সময় মাথায় রাখা সম্ভব নয়। যেমনটা আপনাদের গতকালকের পোস্টে জানিয়েছিলাম, আজ সকাল সাড়ে ছটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে, প্রায় রাত সাড়ে আটটার পর বাড়িতে ফিরলো, এরপর একটা মানুষের আর কত দিকে খেয়াল রাখা সম্ভব বলুন তো।

আগামীকাল রবিবার। তাই একটু বেলার দিকে হসপিটালে যাবে। যাতে দাদার জন্য বাড়ি থেকে কিছু খাবার তৈরি করে নিয়ে যেতে পারে। তবে সোমবার থেকে আবার শুরু হবে সেই ভোর বেলায় হসপিটালে যাওয়া। এর মধ্যে কবে অপারেশনের ডেট পড়বে জানিনা। সেদিন থেকে আবার শুরু হবে অন্য চিন্তা, অন্য লড়াই।

গত দেড় বছর ধরে দিদি যে লড়াইটা লড়ে চলেছে, সত্যিই জানি না ওর জায়গায় আমি নিজে থাকলে এই লড়াইটা কতখানি শক্ত থেকে লড়তে পারতাম। যাইহোক ঈশ্বরের পরীক্ষা নেওয়া ওর জীবনে যেন এখানেই শেষ হয়, এটুকু প্রার্থনা করি।

কারণ দাদাকে যেভাবে মৃত্যু মুখ থেকে ফিরে আসতে হয়েছে, এ পরীক্ষা শুধু দাদার হতে পারে না। এই পরীক্ষা আমার দিদিরা ছিলো। কারণ প্রতিদিন যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও সেবা দিয়ে একটু একটু করে বাচ্চার মতন দাদাকে সুস্থ করে তুলেছে, তার প্রতিদানে ঈশ্বর যেন ওর আগামী জীবনটা অনেক বেশি সহজ ও সুন্দর করে, এটুকুই চাওয়া।

যাইহোক টেনশনের মাঝেও কিছু সুন্দর মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করলাম, আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

TEAM 1

Congratulations! Your post has been upvoted through @steemcurator03. Good post here should be.. ---
![image.png]()
######
Curated by : @jyoti-thelight

Thank you for your support @jyoti-thelight. 🙏

সর্ব প্রথম সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনার জামাই বাবুর অপারেশন যেনো সুন্দর ভাবে হয়ে যায় এবং সে যেনো খুবই দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।

আপনার দিদির আন্ডারে যে সকল মেয়েরা কাজ করে তারা আপনার দিদিকে গিফট দিয়েছে দীপা বলীর উপলক্ষে। গিফট দেখে বোঝা যাচ্ছে যেগুলো দিয়েছে সব গুলো উপকারিতা জিনিস এগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা রাখে।

যাই হোক সুন্দর একটি মুহূর্ত তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ এবং গিফট পেতে সবাই পছন্দ করে এবং তার আনন্দ সামনে থেকে না দেখলে বোঝা যায় না যাইহোক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার জামাইবাবুর জন্যে প্রার্থনা করার জন্য। ব্রেন অপরেশন শুনলেই আসলে ভয় পেয়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। আর এর পূর্বে যেহেতু একবার এই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, তাই ভয়টা একটু বেশিই মনে রয়েছে আমাদের। একথা ঠিক বলছেন, যে উপহারে পাওয়া সবকটি জিনিস আমাদের শরীরের জন্যে সত্যিই অনেক উপকারী। মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।