![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আচ্ছা, আমাদের মতো নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সব বাবা রাই কি এমন হয়? এতটা কষ্ট সহ্য করেও তাদের ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি কি এইভাবেই লেগে থাকে?
আপনারাও কি এমন ভাবেই আপনাদের বাবাকে লড়তে দেখেছেন? যেভাবে আমি ছোটোবেলা থেকে আমার বাবাকে লড়তে দেখেছি।
আমি ছোটো বেলা থেকেই নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠেছি। যেখানে আমার বাবাকে জন্ম থেকেই আমি দেখেছি শুধু আমাদেরকে ভালো রাখতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। নিজের কথা কখনোই ভাবতে দেখিনি।
তিনি কখনোই কোনো কিছুর চাপ আমাদের অনুভব করতে দেননি। সেটা আর্থিক হোক বা মানসিক। সবটাই নিজের উপর নিয়েছেন।
নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় পাননি কখনোই। বাবার যখন চার বছর বয়েস তখন তিনি তার বাবাকে হারান। বলতে পারেন লড়াই করার অভ্যাস তখন থেকেই তার তৈরি হয়ে গিয়েছিল।
ঠাকুরমা আমার বাবাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন, কারন তখনকার সময়ে একা একজন বিধবা মহিলার পক্ষে একটি বাচ্চাকে নিয়ে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া কিন্তু সহজ ছিলো না।
![]() |
---|
যাইহোক, সেই ছোট্টবেলা থেকেই নিজের বাবাকে ছাড়া, মা কে নিয়ে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার লড়াই লড়ছে বাবা। কয়েক বছর বাদে আমাদের ভালো রাখতে শুরু করেছেন অন্য লড়াই। তবে আজকে বাবা মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।
গত পরশুদিন দুপুরে হঠাৎ করে আমার দিদির ফোন এলো। অসময়ে ওর ফোন দেখেই মনটা অশান্ত হয়ে উঠলো। আসলে ঠাকুরমার এখন এতোটাই বয়েস হয়েছে, যে এমন আচমকা ফোন এলে মনে শুধু দুশ্চিন্তা উঁকি দেয়।
কিন্তু ফোনটা ধরেই আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেলো। শুনলাম ঠাকুরমা নয় বাবার ভীষন শরীর খারাপ। বেশ অনেকদিন ধরেই শরীর খারাপ কিন্তু বাবা আমাদের কিছুই জানায়নি। কারন তার ধারণা আমরা শশুর বাড়িতে আছি। আমাদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেটাই তার মূল ভাবনা।
মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও তার ভাবনা মেয়েদের যেন শশুর বাড়িতে কোনো কষ্ট না হয়। এটাই বোধহয় বাবাদের ভাবনা হয়। হয়তো সন্তানদের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ তাদের থাকে না। কিন্তু তাদের নিয়ে ভাবনা কোনোভাবেই কম হয় না।
![]() |
---|
গতকাল থেকে বাবা অনেক কষ্ট পেয়েছে বললে ভুল হবে। কষ্টটা অনেক দিন ধরেই পাচ্ছিলো। কিন্তু সহ্য করার ক্ষমতা এতোটাই বেশি, যে সহ্য করার কারনে তিনি নিজের অজান্তেই নিজের কতটা ক্ষতি করছেন সেটা,নিজেও বুঝতে পারেননি।
যাইহোক, সবকিছুর পরে তার ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েছে। কতো কতো টেস্ট, কতো কতো ঔষধ সবকিছুর মাঝে বাবার বেঁচে থাকার লড়াই চলছে।
আমার দিদি যেহেতু ঐ হসপিটালের সিস্টার ইন চার্জ তাই ভর্তি করার ক্ষেত্রে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি। আর চিকিৎসাও শুরু হয়েছে তাড়াতাড়ি। তাই বাবা কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।
দুটো ব্ল্যাড টেস্টের রিপোর্ট বেশ খারাপ ইঙ্গিত দিয়েছে। ডক্টর সিটি স্ক্যান করতে চাইলেও গতকাল করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি কারন,অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়া বাবা একদমই থাকতে পারছে না। তাই হয়তো আজ হলেও হতে পারে।
বাকি কি হবে, কি হতে চলছে কিছুই জানিনা। বলতে পারেন কিছু ভাবতে পারছি না। মা মারা যাওয়ার পর থেকে আমাদের মাথার উপর ছাদ মানেই বাবা। বাবা আছে এটাই একটা বড় সাহস। কারন ছোটোবেলা থেকে এই একটি মানুষের ছত্রছায়ায় নিশ্চিন্তে বড়ো হয়েছি।
মা কে যখন কষ্ট পেতে দেখতাম, সেটা তখন যতটা কষ্টদায়ক ছিল, বাবার জন্যেও ঠিক ততটাই কষ্ট হচ্ছে। কিংবা বলতে পারেন তার থেকেও বেশি। কারন আমরা সকলেই জানি আমাদের মায়েরা সবসময় কষ্ট সহ্য করে। কিন্তু বাবারাও যে এতোটা কষ্ট সহ্য করতে পারে, সেটা আমার সত্যিই জানা ছিলো না।
আমরা আমাদের মতো করে সবোর্চ্চ চেষ্টা দিয়ে বাবাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছি। বাকিটা ঈশ্বরের হাতে। আমি বিশ্বাস করি তিনি আমাদের জন্য সেটাই করেন যা আমাদের ভালোর জন্যে হয়। হয়তো আমরা প্রথমে সেটা বুঝতে পারি না।
![]() |
---|
আমি নিজেকে অনেক ভাবে, অনেক কিছু বোঝাচ্ছি। সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি করছি, বাবার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।
মাঝে দুদিন আমি কমিউনিটিতে অ্যাকটিভ থাকতে পারিনি। আর হয়তো কয়েকদিন সেভাবে পারবো না। তাই আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সবাই আমার বাবার জন্য একটু প্রার্থনা করবেন।
সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আপনাদের সকলের আজকের দিনটা খুব ভালো কাটুক।
দিদি চিন্তা করো না।তোমার বাবা খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে উঠবেন।❤️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাবা মানে সন্তানের জন্য এক একটা বট গাছ আর সেই বাবা যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সন্তানের খারাপ লাগে এটাই স্বাভাবিক।
তবে দিদি চিন্তা করবেন না, আল্লাহতালা খুব তাড়াতাড়ি আপনার বাবুকে সুস্থ করে আপনাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে, ইনশাল্লাহ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit