"আমার সারাদিনের কিছু মুহুর্ত"
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং সকলেরই আজকের দিনটি বেশ ভালো কেটেছে। বেশ অনেকদিন হলো আমার দিনযাপনের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয় না। তাই ভাবলাম আজকের দিনটি আমি কিভাবে কাটিয়েছি, সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক। চলুন তাহলে শুরু করি, -
"সকালবেলা"
যদিও গুড ফ্রাইডের কারনে আজ সরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ সব বন্ধ, তবে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করার সূত্রে শুভর অফিস আজ খোলাই ছিলো। এই কারণে রুটিনমাফিক সকাল বেলায় ফোনের অ্যালার্মের শব্দেই ঘুম ভাঙলো।
যথারীতি বিছানা ছেড়ে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, নিচে নামছি, এমন সময় সিঁড়ি থেকেই দেখি পিকলু বারান্দাতে শুয়ে আছে। এই গরমকালে ও প্রতিদিনই এরকম করবে। ঘরের ভিতরে দরজা বন্ধ থাকায়, ওর বেশি গরম লাগে, তাই ভোররাত্রের দিকে শ্বশুর মশাই দরজা খুলে দিলে ও বারান্দাতে এসেই শুয়ে থাকে।
সিঁড়ি দিয়ে আমাকে নামতে দেখেই, আমার দিকে এগিয়ে এসে বেশ কিছুক্ষণ তিনি আদিখ্যেতা করলেন। কিন্তু আমার রান্নার দেরি হয়ে যাচ্ছে বলে, খুব বেশি সময় কাটানো হলো না ওর সাথে।
যথারীতি রান্না ঘরে গিয়ে, ভাত বসিয়ে দিয়ে, চা বসিয়ে দিলাম। পাশাপাশি শশুর মশাই ও শাশুড়ি মায়ের রুটি ও তৈরি করে নিলাম। এরপর শুভকে চা দিয়ে এসে, এক এক করে রান্নাবান্না শুরু করলাম। রান্না যখন শেষ, তখন শুভ ফোন করলো।
প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ট্যাংকিতে জল না থাকার কারণে, মোটর চালানোর জন্য ফোন করেছে। তবে ফোনটা তুলে বুঝতে পারলাম, সকাল থেকে আমার এত পরিশ্রম সম্পূর্ণটাই বৃথা, কারণ সে আজ অফিসে যাবে না। সেই মুহূর্তের জন্য মাথাটা প্রচন্ড গরম হলেও, নিজেকে সামলে নিলাম।
এরপর চলে গেলাম ফুল তুলতে। কারন আজ শাশুড়ি মা তখনও ঘুম থেকে ওঠেননি। ফুলগুলো তুলে এসে আমি ফোন হাতে নিয়ে, কমিউনিটির কাজে বসলাম। এরপর শুভ ফ্রেশ হয়ে নিচে এলে ওকে ডিম ভাজা ও রুটি দিলাম। ততক্ষণে অবশ্য শাশুড়ি মা ও শ্বশুর মশাইয়ের ব্রেকফাস্ট হয়ে গিয়েছিলো। আমার এত রাগ হয়েছিল যে, আজ সকালে আমি আর ব্রেকফাস্ট করিনি।
"দুপুরবেলা"
কমিউনিটিতে যে কটি আন ভেরিফাইড পোস্ট ছিলো, সেগুলো ভেরিফাই করে নিলাম। তারপর ঘরের টুকটাক কাজ সেরে চলে গেলাম স্নান করতে। স্নান সেরে আমি ঠাকুর পূজা দিয়ে নিলাম।
ততক্ষণে শাশুড়ি মা বাকি রান্না করে ফেলেছিলেন, তাই প্রথমে শ্বশুর মশাইকে লাঞ্চ দিয়ে, আমি পিকলুকেও লাঞ্চ করিয়ে দিলাম। এরপর শুভ ও শাশুড়ি মা স্নান করে নিলে, আমি, শাশুড়ি মা ও শুভ একসাথে লাঞ্চ করে নিলাম।
ননদের হাজবেন্ডের শরীর এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি এবং শ্বশুর মশাইয়ের শরীর খারাপ থাকার কারণে শাশুড়ি মা বাড়িতে চলে এসেছেন। তাই খাবার টেবিলে বসেই তিনি বলছিলেন যদি বিকেলে একবার ননদের বাড়িতে গিয়ে, ননদের হাজবেন্ডকে দেখে আসি, তাহলে ভালো হয়।
ইচ্ছে যদিও এতটুকুও ছিল না। কিন্তু না বললেই সমস্যা। শুভও দেখলাম যেতে রাজি হয়ে গেলো। আমি যদিও তখন আমার মতামত কিছুই জানাই নি। লাঞ্চ শেষ করে ওঠে প্রত্যেক দিনের মতন আমি কমিউনিটির কাজ করতে বসলাম। আর পিকলু যথারীতি আমার ঘরে চলে এলো এবং ঘুমিয়ে পরলো।
"সন্ধ্যাবেলা"
সন্ধ্যাবেলায় আমি সন্ধ্যা দিতে গেলাম। হঠাৎ করেই পিকলুর চিৎকার শুনে দৌড়ে গেটের সামনে গিয়ে দেখি, গেটের বাইরে দুটো বিড়াল বসে আছে এবং তাদেরকে দেখে পিকলু চিৎকার করছে। তবে দুঃখের বিষয় পিকলুকে দেখে বিড়াল দুটি একটুও ভয় পাচ্ছে না। তারপর পিকলু কে ঘরের ভিতরে নিয়ে গেলাম এবং সন্ধ্যা পূজা শেষ করলাম।
সন্ধ্যা বেলায় কমিউনিটির বেশ কিছু কাজ থাকে সেগুলোই করছিলাম, তখনই শুভ ফোন করে জানালো ননদের বাড়িতে যেতে হলে আমি যেন রেডি হয়ে নেই। ইচ্ছা না থাকলেও অনেক সময় সংসারের শান্তি বজায় রাখার জন্য, আমাদের প্রত্যেকেই অনেক কাজ করতে হয়। তাই কিছুটা কাজ গুছিয়ে রেখে, রেডি হয়ে নিলাম ননদের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
"রাত্রিবেলা"
সেখানে পৌঁছে কথাবার্তা বলতেই অনেকটা লেট হলো, ততক্ষণে কমিউনিটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডিসকার্ডে সকলে একত্রিত হয়েছেন, তাই আমি আলাদা রুমে দিয়ে কিছুক্ষণ ডিসকর্ডে কথা বলে নিলাম। তারপর নিচে এসে দেখলাম, ননদ ততক্ষণে প্লেটে চাউমিন দিয়ে দিয়েছে। তাই চাউমিন খেলাম এবং তার সাথে এক গ্লাস মেরিন্ডা।
এখন যেহেতু আইপিএল খেলা চলছে, তাই শুভ এবং ননদের হাজব্যান্ড খেলা দেখতেই ব্যস্ত ছিলো। তাই আমি ও ননদ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম, তারপর আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
বাড়ি আসার পর শুভ বলল ও রাতে আর কিছুই খাবে না। আর আমারও তেমন খিদে ছিল না। তাই শশুর মশাইয়ের ও পিকলুর জন্য রুটি করলাম এবং যা ভাত ছিল আমার শাশুড়ি মায়ের হয়ে যাবে, তাই শাশুড়ি মায়ের জন্য ভাত গরম করলাম।
রুটি করে পিকলুকে ডিনার করিয়ে দিলাম। বাকি শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মা ডিনার করছিলেন, তখন আমি রুমে এসে নিজের পোস্ট রেডি করতে বসলাম। এরপর কমিউনিটিতে পোস্ট থাকলে, সেগুলো ভেরিফাই করে আমি শুতে যাবো।
এভাবেই আজকের দিনটি কাটালাম। কিছুটা কাজের ব্যস্ততা, আবার সন্ধ্যের পর কিছুটা সময় ননদের বাড়িতে গিয়ে গল্প করে কাটানোর মধ্য দিয়ে, আজকের দিনটি পার করলাম। সকলে ভালো থাকবেন। আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। শুভরাত্রি।
We support quality posts anywhere and with any tags.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ @solaymann আমার লেখাকে সাপোর্ট করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সর্বপ্রথম আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সারা দিনের কার্যক্রম গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য, এবং আপনার পোস্টটি পড়ে এতো টুকু বুঝতে পারলাম আপনি সারাদিনে সংসারের কাজের পাশে যখনই সময় পান তখনই আপনি কমিউনিটির জন্য কাজ করে যান হাতের কাজ শেষ মোবাইল হাতে নিয়ে কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য তৈরি হয়ে যান।
আপনার আজকের কার্যক্রম দেখে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে এবং আশা করি আপনার ননদের হাসবেন্ড এবং শ্বশুরমশাই আরো সুস্থ হয়ে যাবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আমরা যারা গৃহবধূ, তাদের জীবনে সংসারের কাজের দায়িত্ব গুলো যেন না চাইতেই চলে আসে। তাই সেগুলো পালন করতেই হয়। আর এই প্ল্যাটফর্ম আমার ভালোলাগার জায়গা। তাই এই কারনেই কাজের ফাঁকে মোবাইল হাতে নিয়ে ভালোলাগার কাজ করে থাকি। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার গতকাল সারাদিনের কার্যাবলী সমূহ আলোচনা করেছেন।
কিছুটা কাজের ব্যস্ততা, আবার সন্ধ্যের পর কিছুটা সময় ননদের বাড়িতে গিয়ে গল্প করে কাটানোর মধ্য দিয়ে আপনার দিনটি অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু আপনি যে সকাল বেলা অনেক রেগে গিয়েছিলেন, সেই রাগ কখন থামলো সেটা কিন্তু বলেন নি দিদি।
যাই হোক, আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে সর্বদা সুস্থ রাখুক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
😊 ভালো প্রশ্ন করেছেন, রাগ থামলো কখন, সেটা আসলেই মনে নেই এখন। তবে ভালো লাগলো আপনি আমার পোস্টটি এতো মন দিয়ে পড়েছেন দেখে। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সারাদিনের অনেক ব্যস্ততম সময় পার করেছেন। সকাল থেকেই বেশীরভাগ সময় ছোটাছোটিতে গেছে। আপনার পোষা প্রাণী পিকলুকে দেখে ভালো লাগলো। পোষা প্রাণী আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের বাসায় একজন আছে নাম তার টুকটুক (বিড়াল)। আপনার দিনলিপি পড়ে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ, আপনি একটি পোস্টে আপনার পোষ্যকে নিয়ে নিজের অনুভূতি শেয়ার করেছিলেন। যাদের বাড়িতে পোষ্য আছে তারা আসলে এদের প্রতি সকলের অনুভূতি আরও ভালো ভাবে অনুভব করতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সকালবেলা এত কষ্ট করার পর যখন জানতে পারলেন, দাদা আজকে অফিসে যাবে না। তখন মেজাজ খারাপ হবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। উনি যদি আগে বলে দিত, তাহলে হয়তো বা আপনার কষ্ট খুব কম হতো। যাই হোক পিকলু বাবুকে দেখতে কিন্তু অসাধারণ লাগছে। কিভাবে চেয়ে আছে দেখেই মনে হচ্ছে কোলে নিয়ে বসে থাকি।
কালকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ডিসকর্ড এর মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। যার কারণে অনেকটা সময় বেয় হয়েছে। চাউমিন দেখতে অনেক বেশি লোভনীয় দেখাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যদি আগে বলে দিতো আর কিছু না হোক একটু বেলা পর্যন্ত ঘুমাতে পারতাম। খুব সত্যি কথা বলতে এখন এই ঘুমটাই সব থেকে বেশি মিস করি। কমিউনিটির কাজের কারণে অনেক রাত পর্যন্ত জাগতে হয়, আবার সংসারের কাজের জন্য বেশ সকালে উঠতে হয়। সবটা মিলিয়ে কষ্ট করার পরেও যদি অফিসে না যায়, তখন সত্যিই রাগ হয়। পিকলু সত্যিই অসাধারণ।।যদি কখনো সুযোগ হয় নিশ্চয়ই ওকে কোলে নিতে পারবেন। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক সুন্দর করে আপনার দিনলিপি তুলে ধরেছেন। অত্যন্ত কর্মমুখর একটি দিন কেটেছে। পোস্ট করে বোঝা গেল সারাদিন খুবই ব্যস্ত ছিলেন। গত কিছুদিন বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা থাকলেও এখন বেশ গরম পড়তে শুরু করেছে। আপনার দিনলিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য রইল শুভকামনা, ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখনকার গরম দেখে, সামনের দিনগুলোর কথা ভাবতেই ভয় করছে। সাংসারিক ব্যস্ততা প্রতিদিনই থাকে, তার সাথে থাকে কমিউনিটির দায়িত্ব, সবটা মিলিয়েই বলতে পারেন প্রতিটি দিনই একটি কর্মব্যস্তময় দিন কাটাই। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে,আজ আপনি অনেক কাজ করেছেন, খুব মজা মজার, খাবার রান্না করেছেন, তবে সকালের নাস্তা টা করতে পারেন নি।।।
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কাজ ছাড়া একটা দিনও কাটাতে পারি না এটাই আফসোস। মাঝে মধ্যে পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু উপায় নেই। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বর্তমানে সামান্য গরমে যা অবস্থা আরো গরমের পরিমাণ বেড়ে গেলে যে কি অবস্থা হবে। আপনার দুপুরের রান্না করা খাবার দেখে মনে হলো খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। আসলে সংসারের কাজে এরকম ছোটখাটো বিষয় রাগ উঠে থাকে। যেরকমটা আপনারও হয়েছিল।
ধন্যবাদ সারাদিনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit