|
---|
Hello,
Everyone,
বন্ধুবিহীন জীবন বোধহয় আমাদের কারোরই নয়। আর এমনটা কখনো হয় বলেও জানা নেই। সংখ্যা বেশি বা কম হতে পারে, অভিজ্ঞতা ভালো বা মন্দ হতে পারে, তবে বন্ধুত্ব আমাদের প্রত্যেকের জীবনের এমন একটি অনুভূতি, যা আমরা প্রত্যেকেই অনুভব করে থাকি।
তবে প্রকৃত বন্ধুত্বের সংজ্ঞা বোধহয় অনেকেরই অজানা। এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের সাথে আমাদের নিজস্ব সম্পর্কের কোনো না কোনো কারণ, বা নাম আছে। তবে যে সম্পর্কের নাম আমাদের প্রত্যেকের জীবনে সমান সেটি হল বন্ধুত্ব।
তবে প্রকৃত বন্ধুত্ব, ভালোবাসা বা অনুভূতির মূল্যায়ন করতে পারা মানুষের সংখ্যা আজকাল প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এর মূল্যায়ন যদি শিখতে হয়, তাহলে তা কোনো মানুষের কাছ থেকে নয়, শিখতে হয় সেই সকল প্রাণীর কাছ থেকে যারা বিনা কোনো স্বার্থে মানুষকে ভালোবাসে।
উপরে শেয়ার করা আমার ছবি গুলো দেখে আশা করি সকলে বুঝেছেন হঠাৎ করে কেন আমি এই প্রসঙ্গে কথা বলছি। আমার জীবনে পিকলু আসার পর থেকে এই বোধহয় এতোগুলো দিন আমি ওর থেকে দূরে আছি।
পূর্বেও একবার একটা ভিন্ন ঘটনার কারণে আমি পিকলুর থেকে বেশ কিছুদিন দূরে ছিলাম। তবে যখন ওর কাছে ফিরেছিলাম, আমাকে দেখে ওর সেই ছুটে আসা, আমার কোলে উঠে ওর সেই দীর্ঘশ্বাস, আমাকে বুঝিয়েছিল ও ঠিক কতখানি মিস করেছে আমাকে।
তবে আমরা মানুষেরা বড্ড স্বার্থপর। প্রয়োজন ব্যতীত আমরা মানুষের প্রিয়জন কখনো হয়ে উঠতে পারি না। আর ঠিক এই কারণেই সম্পর্ক ভাঙ্গে, ভালোবাসার প্রতি অবিশ্বাস জন্মায়, আর অনুভূতিগুলো কেমন যেন মূল্যহীন হয়ে যায়। তবে পিকলুর মতন প্রাণীরা সম্পর্কের মূল্যায়ন করতে জানে, ভালবাসতে জানে।
গত পোস্টে আপনাদের জানিয়েছি আমি পিকলুকে বড্ড মিস করছি। তবে যবে থেকে এই হসপিটালের যাতায়াত করছি এই নতুন মুখ গুলোর সাথে পরিচিত হয়েছি। গোটা হসপিটাল জুড়ে কি সুন্দর ছুটে বেড়ায়। এরা যেন এই গোটা হসপিটালের দায়িত্বে রয়েছে। ওরা সব সময় মানুষের কাছাকাছি গিয়ে গন্ধ শোঁকে, চেয়ারের নীচে গিয়ে বসে থাকে, আবার কখনো কখনো দু তিনজন মিলে খেলা করতে শুরু করে।
হসপিটালের বাইরে বসে থেকে বিগত অনেকগুলো দিন ধরে ওদের দেখে সময় পার হয়েছে। হসপিটাল চত্বরে বসে খাওয়া মানা বলে সকলে এদিক ওদিক লুকিয়ে খায়। তবে গেটম্যানদের চোখ এড়ানো গেলেও, এনাদের চোখ কিংবা বলা ভালো চোখের থেকেও নাক এড়ানোটা বেশি কঠিন।
আপনি যেখানেই খাবেন না কেন, কি অদ্ভুতভাবে এনাদের মধ্যে থেকে কেউ না কেউ ঠিক গন্ধ শুঁকে শুঁকে আপনার কাছে পৌঁছে যাবে। আর এমন ভাবে আপনার সামনে বসবে, আপনি তাদেরকে না দিয়ে খেতেও পারবেন না।
যেহেতু বিগত বেশ কিছুদিন এখানে রয়েছি, তাই তাদের সাথে পরিচিতি মোটামুটি ভালোই হয়েছে। এখন ডাকলে কাছে চলে আসে, বসতে বললে কি সুন্দরভাবে বসে পড়ে, আর যদি কিছু খেতে দেওয়া হয় তাহলে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে, সেখানেই শুয়ে বিশ্রামও করে।
এদেরকে দেখেই খানিক পিকলুকে ভুলে থাকি, আবার এদেরকে দেখলে কখনো কখনো পিকলুকে দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করে। ওর শরীরটা বেশ অনেকদিন ধরেই খারাপ। আর যেহেতু আমরা এখানেই পড়ে আছি, তাই ওকে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া হচ্ছে না। সত্যিই জানিনা কতদিন পিকলু আমার সাথে থাকবে।
তবে যেভাবে বর্তমান সময় কাটাচ্ছি, যে অনুভূতি মনের মধ্যে বারংবার আসা-যাওয়া করছে, তাতে কেন জানি না পিকলুকে হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা অনুভব করি। আসলে আমি আমার জীবন পিকলুকে ছাড়া অনুভব করতে পারিনা। ওই বাড়িতে আমি আছি, অথচ আমার পিছন পিছন পিকলু ঘুরছে না, এই ভাবনাটাই আমাকে ভিতর থেকে নিঃস্ব করে।
তাই এমনটাই যখন বাস্তবে হবে তখন আদেও আমার জীবন কেমন হবে এটা ভাবতে পারি না। অনেকেরই হয়তো মনে হবে মানুষের থেকেও কুকুরের প্রতি বেশি ভালোবাসা। একদমই তাই, সত্যিই মানুষের থেকে ওদের প্রতি ভালোবাসা ব্যয় করা ভালো, অন্ততপক্ষে তা মূল্যায়িত হয়।
কুকুরেরা মানুষের মত বেইমান হয় না। ভালোবাসার বদলে ওরা শুধু ভালোবাসাই দিতে জানে। মানুষ তো ভালোবাসা নিয়ে তার কদরও করতে পারে না, বিনিময়ে ভালোবাসা ফেরত দেওয়াতো দূরের কথা।
যাইহোক এই তিনজন আমার বর্তমান দিনযাপনের সঙ্গী। এখান থেকে ফিরে গেলে ওদের সাথে হয়তো আর দেখা হবে না। তবে ওদেরকে নিয়ে এই লেখাটা থেকে যাবে আজীবন। যখনই মন চাইবে একবার ওদের ছবিগুলো দেখতে পারবো, এটা ভেবেই ওদের ছবি দিয়ে এমন একটা পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হলো।
ধীরে ধীরে ওরা বড় হবে, হয়তো ওদের সাথে এমন ভাবে আর সাক্ষাৎ হবে না কিংবা হয়তো হবে। অনেকদিন বাদে দেখলে ওরা আমাকে চিনতে পারবে কিনা তাও জানিনা। তবে এই কঠিন সময়ে ওরা কিন্তু আমার দিন যাপনের সঙ্গী হয়েছে। তাই ওদেরকে ভোলা যাবে না কখনোই। বিশেষ করে ওদের সাথে কাটানো এই মুহূর্তগুলো, যেগুলো ক্যামেরাবন্দি হওয়ার সাথে সাথে মনের মনিকোঠায় জমা হয়েছে।
আপনাদের কেমন লাগলো আমার এই নতুন বন্ধুদের অবশ্যই জানাবেন। পাশাপাশি আমার পিকলুর জন্যেও একটু প্রার্থনা করবেন, যাতে ও সুস্থ থাকে, অন্তত আমার সাথে থাকে। কারণ ওকে ঘিরে আমার জীবনের অনেক খানি ব্যপ্তি। তাই ও না থাকলে ঐ শূন্যস্থান আরও বেশি কষ্ট দেবে আমায়। ভালো থাকবেন সকলে।
প্রথমে আপনাকে বলব এত সুন্দর একটি বিষয়বস্তু নিয়ে আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । স্বার্থবিহীন ভালোবাসা শুধু পশু প্রাণী থেকেই পাওয়া যায় বর্তমান দিনে! আপনার পোস্টটি পরে জানতে পারলাম আপনার পিকলুর কথাগুলো মনে পড়েছে।
আপনার উপরের এই কথাগুলো ১০০% ই বাস্তব! মানুষের প্রয়োজন ছাড়া কেউ কাউকে ভালোবাসো না, কাছেও আসে না। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালই লাগলো। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। অনেকদিন বাদে পিকলুর কাছে ফিরে খুব ভালো লাগছে। যদিও ওর শরীরটা খুব খারাপ তবে আমি থাকলে ও যেন খানিকটা মানসিক দিক থেকে শান্তি পায়, ঠিক যেমনটা আমিও পাই ওর সাথে থেকে। আমার সাথে ওর এই যে অবর্ণনীয় সম্পর্ক, তার আসল নাম বোধহয় নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তবে কখনো যে ওর সাথে আমার সম্পর্কটা এতো গভীর হবে, আমি ভাবিনি। কারণ আমাদের বাড়িতে ওর আশা নিয়ে সব থেকে বেশি আপত্তি আমারই ছিলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার গল্পটি খুবই হৃদয়স্পর্শী। পিকলুর প্রতি আপনার ভালোবাসা সত্যিই অসাধারণ এবং তা সত্যি বন্ধুদের প্রতি অমূল্য ভালোবাসার উদাহরণ। আপনার নতুন বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, তাদের সঙ্গেই কষ্টের মুহূর্তগুলো ভাগ করা, সবকিছুই খুব মর্মস্পর্শী। আশা করি পিকলু দ্রুত সুস্থ হয়ে আপনার পাশে থাকবে। এই মুহূর্তগুলো আপনি চিরকাল মনে রাখবেন, এবং আমি প্রার্থনা করি আপনার প্রিয় পিকলু সুস্থ ও আপনার সাথে থাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার প্রার্থনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। সত্যি বলতে এই মুহূর্তে চিকিৎসার পাশাপাশি বোধহয় আপনাদের এই প্রার্থনা পিকলুর জন্য অনেক বেশি জরুরী। মাঝখানে অনেক দিন আমি বাড়িতে না থাকাতে ওর খাওয়া দাওয়া ঠিক ছিল না, এমনকি নিয়মিতভাবে ওষুধ খাওয়া হয়নি। ফলত আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে যাদের সাথে বেশিরভাগ সময় কাটতো তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলো এরা, যাদেরকে দেখে সত্যিই পিকলুকে অনেক বেশি মিস করতাম। ওদের সাথে বন্ডিংটা বেশ ভালো গড়ে উঠেছিলো। এখন বাড়িতে ফিরে এসেছি, পিকলু সাথে থাকলেও ওদের কথা মাঝেমধ্যেই মনে পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you for your support @wirngo ma'am. 🙏
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit