কিছুদিন আগে আমার এক ফেসবুক ফ্রেন্ডের একটা পোস্ট চোখে পড়েছিলো সেখানে সে অনেক কিছুর সাথে সাথে এটাও লিখেছিলেন যে ,
নিজেদের বাচ্চাদের ছবি বা ভিডিও অনলাইনে দিতে কি আপনাদের ভয় করে না ? নাকি বিষয়গুলি আপনারা জানেনই না ?
তার এই লেখাটা আমার নজর কাড়ে। আমিই জানতাম সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশ সেটা নিজেদেরই হোক বাচ্চাদেরই হোক ,বিষয়টা ভয়ানক হতে পারে। তবে এই বিষয়ে খুব বেশি কিছু জানতাম না।
কিন্তু ওই পোস্টটা দেখার পরে বিভিন্ন অনলাইন পোস্ট থেকে এই বিষয়ে আমি আরো একটু ভালো ভাবে জানার চেষ্টা করি এবং যে জিনিসগুলি আমি জানতে পেরেছি আজকে আপনাদের কাছে সেই বিষয়গুলির শেয়ার করবো।
আমার খুব কাছের নতুন বাবা মা হওয়া আত্মীয়-স্বজনদের অনেকের মাঝেই একটা ট্রেন্ড চোখে পরতেছিলো যে , বাচ্চা জন্মের কিছুদিনের মাঝেই তাদের নামে কিংবা আদরের কোনো নামে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা আইডি ওপেন করে এবং তাতে তাদের বিভিন্ন সময়ের কিংবা বিশেষ বিশেষ দিনের ছবি শেয়ার করে তাদের সেই সব স্মৃতি ধরে রাখার একটা চেষ্টা করে।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাবা মায়েরা ছবি বাধাই করে রাখতেন কিন্তু এখন সেই অবস্থা পাল্টে গিয়েছে। সবার হাতেই স্মার্ট ফোন থাকে আর এই ফোন দিয়ে ছবি তোলে ফেলা যায় যখন তখন।
যার কারণে বাবা-মায়েরা সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের শিশুদের হাসি ,কান্না ,বা বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর ভিডিও প্রকাশ করে থাকেন।এতে লাইক কমেন্টও বেশি পাওয়া যায় । আর এটা যে শুধু আমাদের দেশেই এমনও না বরং বলা যায় এটা সারা পৃথিবী জুড়েই মহামারী আকার ধারণ করেছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে,
একেকজন বাবা-মা প্রতিবছর অনলাইনে তাদের শিশু সন্তানের গড়ে দুইশ’ ছবি পোস্ট করেন।
আর এই হিসেব অনুযায়ী পাঁচ বছরের আগেই একটি শিশুর প্রায় হাজারখানেক ছবি অনলাইনে পোস্ট হয়ে যায়।আপাতদৃষ্টিতে এই এগুলি একেবারেই নিরীহ কাজ । কিন্তু আপনার এই নিরীহ কাজটিই আপনার সন্তানকে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
কিংবা আপনি হয়তোবা তার কোনো ছবিই দিলেন না , হাতে লেখা একটা কিছু কিংবা তার আঁকা কোনো ছবি দিয়ে আপনি ক্যাপশন দিলেন যে ,আমার বাচ্চাটা বড়ো হয়ে যাচ্ছে। আজকে সে তিন বছরে পা দিলো। আপনার অজান্তেই তার তথ্য দিয়ে দিলেন আপনি।
অনেকেই আছেন বাচ্চা স্কুলে ভর্তি হলো দিলো ছবি ,দুইএকজনকে স্কুলের আইডি কার্ড সহ ছবিও দিতে দেখেছি । আপনার কাছে বিষয়টি কাছের মানুষদের কাছে শেয়ার করে আনন্দ নেয়ার হলেও তাকে আপনি চরম ঝুঁকির মাঝে ফেলে দিলেন।
এমন কোনো ছবি কখনোই সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন না যাতে আপনার অথবা আপনার পরিবারের কোনো তথ্য প্রকাশ প্রায়।
অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট হাতে পেলে খুশি হয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে থাকেন। এগুলি খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। কারণ আপনার এবং আপনার সন্তানের এইসব তথ্য স্টকারদের রাডারে চলে আসবে খুব সহজেই।
এই ছবি ও তথ্য দিয়ে যে কেউ ফেক আইডি খুলে বসতে পারে । আপনার সন্তানের পরিচয় চুরি হতে পারে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন পরিচয় চুরি কি ?এর মানে হলো ,কারও নাম–পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণামূলক কাজে ব্যবহার করা।
এইসব তথ্য দিয়ে খোলা ফেইক আইডি ভবিষ্যতে সেই অ্যাকাউন্ট পরিচালনাকারীর অপরাধমূলক সমস্ত কাজকর্মের জন্য দায়ী হতে পারে আপনার সন্তান।
এছাড়াও এসব ছবির মাধ্যমে সরাসরি কিংবা ডিজিটাল কিডন্যাপ পর্যন্ত হতে পারে আপনার সন্তান। ডিজিটাল কিডন্যাপ হচ্ছে বিভিন্ন ছবি ও তথ্য ব্যবহার করে অন্য কারও সন্তানকে নিজের বলে দাবি বা প্রচার করা।
লেখাটি বেশ বড়ো হয়ে যাচ্ছে তাই বাকি অংশটুকু পরবর্তী পোস্টে প্রকাশ করবো।
অবশ্যই আপনার কথাগুলো ঠিক আছে বাচ্চাদের ছবি কিংবা পারিবারিক এমন কিছু আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া উচিত না যাতে আমাদের ফ্যামিলির ক্ষতি হয়। আপনার এই কথাটার সাথে আমি একমত। এবং আমরা অনেকে খুশি হয়ে জন্মদিন কিংবা নিজে কোন বিশেষ কিছু দিনের ছবি ও আপলোড করে থাকি এটা আমাদের অবশ্যই একজনের ঠিক হয়না।
যাই হোক আপনার এই পোস্টটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে অনেক সুন্দর হয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন এবং সেই সাথে আমার লেখা আপনার কাছে জেনে আমারো খুবই ভালো লাগলো।এত সুন্দর করে আপনার মন্তব্য এর মাধ্যমে আপনার বক্তব্য তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।আশাকরি আপনিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও তথ্য শেয়ার করার সময় সচেতন থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছবি প্রকাশের থেকে আমার কাছে আরেকটা বিষয় এখন বেশি ভয়ের মনে হয়। অনেক বাবা মা ছোট বাচ্চাদের দিয়ে কন্টেন্ট বানাচ্ছে, এবং তা ভাইরাল হচ্ছে। কিছুদিন আগে একটা হিন্দি মুভিতে এই বিষয়টা তুলে ধরেছিল। বাচ্চাদের কেন, আমাদের সবারই ছবি ব্যাবহারে সতর্ক থাকতে হবে,। ধন্যবাদ সময়োপযোগী একতি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা খুবই ভয়ংকর একটা বিষয়। কারন এখন আমরা যা ভাবছি তার চেয়ে আরও অনেকগুন বেশি এগিয়ে আমাদের প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে এসব কন্টেন্ট দিয়ে কোথায় নিয়ে যাবে আমাদের সন্তান বা আমাদের সেটা চিন্তা করলেও ভয়,হয়।
আমার আরেকটু বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে এ বিষয়টা নিয়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন।নিজের সন্তানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ক্ষতিকর কিছু দিক আছে তা বেশিরভাগ মানুষই জানেনা।তাই আপনার এই টপিকটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আরো একটা নতুন শব্দ সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম।সেটা হচ্ছে ডিজিটাল কিডন্যাপ। আমরা কেউ চাইবো না যে আমাদের সন্তান নিয়ে মানুষ প্রতারণা করুক।তাই সবার।উচিত সচেতনতা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ও তথ্য দেয়াটা আসলেই খুব ভয়ংকর। এটা যে কতটা বিপদে ফেলতে পারে মানুষকে। এখন যতটা বিপদে ফেলবে ভবিষ্যতে আরো বিপদে ফেলবে মানুষকে। এই বিষয়টা নিয়ে পরবর্তী কোন এক সময় আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে রয়েছে আমার।
শুধু সন্তানের ছবিই না নিজের ছবির বিষয়েও সচেতন হওয়া প্রয়োজন ভবিষ্যতে বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit