দীঘা বহু কলকাতাবাসীদের ছুটি কাটানোর সবচাইতে কাছের এবং পছন্দের স্থান।

in hive-120823 •  last year 
20230526_213723_0000.png

প্রিয় বন্ধুরা,
আজকেও আমার আপনাদের মাঝে আসা বেশকিছু ছবি নিয়ে, তবে আজকে কলকাতার খুব কাছাকাছি দীঘার বেশ কিছু ছবি নিয়ে হাজির হয়েছি।

এখানে উপস্থিত কলকাতাবাসী জায়গাটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তবে যারা জানেন না তাদের সাথে খানিক জায়গাটি সম্পর্কে তথ্য আদান প্রদানের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছি।

দীঘা কলকাতার সবচাইতে কাছের সমুদ্র সৈকতের নিকটে অবস্থিত একটি স্থান। আমি বহুবার দীঘায় বেড়াতে গিয়েছি, এবং দীঘার আগে অবস্থিত মন্দারমনিতেও দুবার গিয়েছি।

যদিও আমার বর্তমান দীঘার চাইতে মন্দারমনি বেশি পছন্দের, কারণ এখন দীঘায় পর্যটকের আধিক্য এতোটাই বেড়ে গেছে যে, সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করবার উপায় নেই।

তাই বলে মন্দারমনিতে কম মানুষ যান এটা ভাবার কোনো কারণ নেই, কিন্তু তুলনামূলক ভাবে এখনও কম, তার কারণ দীঘার তুলনায় মন্দারমনি দর্শনের খরচ প্রায় দ্বিগুণ, কাজেই অনেকেই আর্থিক কারণে দীঘা ঘুরতে যাওয়া বেছে নিয়ে থাকেন।

দুটো জায়গায় পর্যটক সমুদ্র দর্শনে গিয়ে থাকলেও দীঘায় যেকোনো হোটেল থেকে কিছুটা হেঁটে আপনাকে সমুদ্র সৈকতে পৌঁছতে হবে, আর মন্দারমনিতে সমস্ত রিসোর্ট সমুদ্র সৈকতের গায়ে তৈরি।



দীঘার যাত্রা সহ সমুদ্র সৈকতের বেশ কিছু ছবি:-

IMG-20230525-WA0031.jpg

IMG-20230525-WA0027.jpg

IMG-20230525-WA0025.jpg

IMG-20230525-WA0026.jpg

IMG-20230525-WA0038.jpg

IMG-20230525-WA0040.jpg

তাছাড়া দীঘার সমুদ্র প্রায় সময় অশান্ত থাকে কিন্তু অপরপক্ষে মন্দারমনির সমুদ্র শান্ত।

যাইহোক দীঘার কথায় জানিয়ে রাখি এখন পুরনো দীঘা এবং নতুন দীঘা নামকরণ করে একটি জায়গাকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও বহু বছর আগে এমনটা ছিল না।

আমি প্রথম দীঘায় যখন যাই তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি, পরিবার সহ প্রতিবেশীরা মিলে দুদিনের জন্য যাত্রা করা হয়েছিল, তবে তারপরও বহুবার গেছি।

ব্লু-ভিউ আর সী-হক আমার থাকা দীঘার সেরা হোটেল, কারণ এটি সমুদ্রের কাছে এবং সমুদ্রের দিকের যদি থাকার কামরা পাওয়া যায়, সন্ধ্যে বেলায় অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করা যায় হোটেলে বসেই।

হাজার স্মৃতির জায়গা এই দীঘা, তাদের মধ্যে একটি ঘটনা বলি, একবার ঘুরতে গিয়ে যেহেতু মাছ খেতে ভালোবাসি, তাই বেশ কয়েকটা চিংড়ি মাছের পাকোড়া খেয়েছিলাম সন্ধ্যে বেলায় ঘুরতে বেড়িয়ে।

তারপর শুরু হলো ঘুম, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওই পাকোড়া গুলোতে নির্ঘাত নেশার কোনো বস্তু ছিল, কারণ ওগুলো খাবার পরে, সেই যে ঘুমানো আমার শুরু হলো, কিছুতেই সেই ঘুম কাটানো সম্ভব হচ্ছিল না।

দুদিন আমি শুধু ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, চেষ্টা করছি নিজেকে জাগিয়ে রাখার কিন্তু কোনো মতেই সেটা সম্ভবপর হচ্ছিল না, আমি আজও সেই অনুভূতি ভুলিনি।

বেশ কিছু হোটেল সহ তার আশেপাশের দীঘার ছবি:-

IMG-20230525-WA0037.jpg

IMG-20230525-WA0034.jpg

IMG-20230525-WA0035.jpg

IMG-20230525-WA0032.jpg

IMG-20230525-WA0033.jpg

IMG-20230525-WA0024.jpg

IMG-20230525-WA0023.jpg

তারপর থেকে যতবার গিয়েছি দীঘায় কোনোদিন আর রাস্তায় বিক্রিত কোনো খাবার আমি খাই নি। কান ধরেছিলাম ওই বারের পর থেকে, সমস্যা হলো যে হোটেল গুলোর নাম করলাম এটি দীঘার অন্যতম বড়ো হোটেলে সামিল;
কাজেই যেকোনো খাবারের দাম যেমন অধিক সাথে টাক্স এর জ্বালায় নাজেহাল।

তাই ওই বিকল্প ব্যবস্থা মাথায় এসেছিল, তবে সেই খাবারের পরিণতি দেখে বুঝেছিলাম কেনো "সস্তার তিন অবস্থা" এই প্রবাদটি আবিষ্কৃত হয়েছিল।

সত্যি বলতে দীঘার সাথে ভালোর পাশাপশি এত মন্দ স্মৃতি আছে সম্পর্কের নিরিখে, তাই অনেক সময় লিখতে গিয়েও আটকে গেছি; কারণ মাঝ পথে হাতছাড়া হয়ে গেছে অনেক সম্পর্ক।

তারা আজ আর কেউ নেই এই ধরায়। এখন অবশিষ্ট আছে কেবল আমরা দুই বোন, দিদিকে নিয়ে কত মজার ঘটনা আজও সজীব।

যে বাসে করে প্রথমবার দীঘায় যাচ্ছিলাম, সেই বাসেই আমাদের গার্লস স্কুলের পাশের বয়েস স্কুলের একটি ছেলেও যাচ্ছিল, কোনো এক প্রতিবেশীর আত্মীয় হিসেবে।

(আমার দিদি শাসন ও ভালোবাসার মিশ্রণ)

এমনিতে আমি স্বভাবে চঞ্চল আর আমার দিদি একেবারেই শান্ত স্বভাবের, তাই নজর থাকে সব বিষয়, আর ওই বয়সে আমার খেলা ছাড়া মাথায় সত্যি কিছু থাকতো না।

তার আগের বছর মা গত হয়েছিলেন কাজেই সেই অর্থে তার অনুপস্থিতিতে মানসিকতা অন্য কিছু ভাবার মতো ছিল না, আমার দিদি সেই সময় আমাকে আগলে রাখতো।

ছেলেটির নাম মনে আছে এখনও, দিদি আমাকে বলেছিল ছেলেটা থেকে দূরে থাকবি, আমি বললাম কেনো? আমি তো চিনি ছেলেটাকে আমাদের পাশের স্কুলে পড়ে।

দিদি বললো ছেলেটা তোকে পছন্দ করে, আর সেই জন্য বলছি আমার কাছেই থাকবি, সত্যি বিষয়টি তখন বুঝিনি, এবং আমাকে একটি আপেল বীজের মালা উপহার দিয়েছিল, এখনও মনে আছে।

রাতের দীঘা সহ রইলো কিছু জনপ্রিয় খাবারের ছবি:-

IMG-20230525-WA0039.jpg

IMG-20230525-WA0028.jpg

IMG-20230525-WA0029.jpg

IMG_20230526_213841.jpg

IMG_20230526_213857.jpg

IMG_20230526_220455.jpg

সবার সামনেই দিয়েছিল, তাই আমিও বেশ খুশি মনেই নিয়েছিলাম, উপহার কার না ভালো লাগে! যাইহোক দিদি চোখ গরম করেছিল, কিন্তু অতগুলো মানুষের মাঝে বকতে পারেনি।

বেশকিছু বছর বাদে দিদির কথার সত্যতা বুঝেছিলাম। এরকম বহু স্মৃতি ধরা রয়েছে দীঘার সাথে।

যার কিছু ভাবলে আজ হাসি পায় কিন্তু বেশিরভাগ সময় চোখের কোনটা চিকচিক করে ওঠে।

আশাকরি বর্তমান দীঘার ছবিগুলো আপনাদের ভালো লাগবে, জানাতে ভুলবেন না। মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো লেখা শেষের মুহূর্তে, সময় চলে গেলে পড়ে থাকে কেবল স্মৃতি আর অভিজ্ঞতা।

I9Ws6mn5yoT8JYcTf1.gif
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@xpilar.witness

We are the hope!

Que fotos tan bellas muestras en tu exelente publicación, que suerte que tú hermana te abrió los ojos con ese hombre que no te convenía.

Muchas bendiciones 🙏 para ti mi querida amiga.

"সস্তার তিন অবস্থা" এই প্রবাদটি আবিষ্কৃত হয়েছিল।

আপনার এই প্রবাদের কথা পড়তে গিয়ে! আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল! একবার আমার বাবা বাজারে গিয়েছিল! এবং সেখানে গিয়ে দেখলেন অল্প টাকায় অনেক কলা পাওয়া যেত! উনি অনেক কলা কিনে নিয়ে আসলো! কিন্তু বাড়িতে আসার পর দেখলো! সবগুলো কলা নষ্ট হয়ে গেছে। আর এই জন্যই হয়তো বা বলে সস্তার তিন অবস্থা।

দিদি বললো ছেলেটা তোকে পছন্দ করে, আর সেই জন্য বলছি আমার কাছেই থাকবি, সত্যি বিষয়টি তখন বুঝিনি, এবং আমাকে একটি আপেল বীজের মালা উপহার দিয়েছিল, এখনও মনে আছে।

একটা কথা কি জানেন তো? বড় ভাই বোন সব সময় ছোটদের কে আগলে রাখার চেষ্টা করে! তাই আপনার দিদি আপনাকে,, ওই ছেলের কাছে এবং ওই ছেলের সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে বলেছিল! কারণ উনি চায় আপনি সব সময় ভালো থাকুন।

দীঘা সম্পর্কে আপনার পোষ্টের ফটোগ্রাফি এবং পোস্ট পড়ে! যখন শেষের দিকে আসলাম! তখন আপনি যে খাবারগুলোর ফটোগ্রাফি আপনি শেয়ার করেছেন,, আমাদের সাথে! সেগুলো দেখে আসলে মাথা কাজ করছিল না।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,, দীঘা সম্পর্কে এত সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি! আপনি দীঘায় ঘুরতে গিয়েছেন! সেই অভিজ্ঞতাটা আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল,,, ভালো থাকবেন।