আজকাল আমার খাদ্য তালিকা সর্ম্পূণ বিপরীত মুখী! ইংরিজিতে একটা কথা আছে, প্রাতঃরাশ করতে হয়, রাজার মত, মধ্যাহ্নভোজ করতে হয় রাজপুত্রের মত, আর সান্ধ্যভোজন করতে হয় ভিখিরির মতন!
এখনকার ব্যস্ত জীবনে অনেক কিছুই নিয়ম মাফিক করে হয়ে ওঠা হয় না, ফলস্বরূপ আমরা আমাদের আগের প্রজন্মের চাইতে তাড়াতাড়ি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছি।
আগের মানুষ উপার্জন করতেন, এখনও মানুষ উপার্জন করেন, তবে পার্থক্য হলো তারা শত কষ্টের মাঝেও দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি দিন অতিবাহিত করতেন যথাযথ নিয়মানুসারে।
অন্ততঃপক্ষে আমার শৈশব কেটেছে সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত যথাযত নিয়মের মধ্যে দিয়েই, অবশ্যই যতদিন মা ছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে যখন আয় তথা ব্যয় নিজের কাঁধের উপর তখন তার খানিক চাপ শরীরের উপরে পড়বে না, এমনটা তো সম্ভব নয়!
কারণ, ওই বাংলার প্রবাদের মতন জুতো সেলাই থেকে চন্ডি পাঠ সবটাই নিজে হাতে সম্পন্ন করতে হয়।
আপনারা অনেক সময় নিজেদের দৈনন্দিন রুটিন লেখেন ডাইরির মাধ্যমে, আজকে আমি এখানে বর্তমানে যেভাবে আমার গোটা দিনের খাবার খেয়ে থাকি, সেটাই খানিক তুলে ধরার প্রয়াস করছি। তাহলে অনেকেই হয়তো বুঝবেন, একলা চলাটা যতটা বাইরে থেকে দেখে সহজ মনে হয়, ততটাও নয়!
তাহলে শুরু করি? আপনাদের জানাই আজকে নিজের খাদ্য তালিকায় কারা বর্তমানে অধিষ্ঠান করে আছে!
প্রথমত, আমার প্রাতঃরাশ বন্ধ হয়ে গেছে বহু বছর!
বিগত মাস চারেক আমার তালিকায় নেই কোনো মধ্যাহ্ন ভোজন!
রাত কখনো একটা আবার কখন আড়াইটার সময়(যেমন গতকাল) আমি সান্ধ্যভোজন করি!
(আমার দৈনন্দিন প্রাতঃরাশ এবং মধ্যাহ্ন ভোজ) |
---|
সঙ্গে আমার দৈনন্দিন ওষুধ সেবন চলে অবশ্য!
বিষয়টা হলো, আমাকে বাজার করে দেবার, অথবা রান্না করে দেবার কেউ নেই।
অনেকেই বলবেন একটা রান্নার লোক, ঘরের কাজের লোক রেখে নিলেই তো হয়!
অবশ্যই, কিন্তু সে গিয়ে তো আর বাজার করে আনবে না! কাজেই সেই যদি বেরোতেই হয়, তাহলে একার জন্য রান্না করার লোক রাখার যুক্তি নেই।
পাশাপশি বর্তমান আমার কাজ কেবলমাত্র স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে, সারাদিন বসে কাজ করার পর, একটু যদি শরীর নাড়াচাড়া না করি, তাহলে সেটাও স্বাস্থ্যের পক্ষে হিতকর নয়!
এরকম, অনেক কারণবশতঃ আমি লোক রাখিনা, সব কাজ একা হাতেই সম্পন্ন করি।
আচ্ছা, তাহলে আমি কি কি খাই এবার তার কিয়দংশ আপনাদের সাথে আজকে ভাগ করে নিলে হয়তো বুঝবেন, একলা চলাটাও মাঝেমধ্যে অনেক বেশি কষ্টকর।
(রান্নার সময় বাঁচাতে এরাও আমার সঙ্গী) |
---|
আমি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুধু চিয়া দানা ভেজানো জল খেয়ে থাকি, সঙ্গে সকালে একবার আর বিকেলে একবার গ্রীন টি।
মানে এই জল আমার প্রাতঃরাশ তথা মধ্যাহ্ন ভোজ দুয়ের কাজ করছে, বিগত কিছু মাস ধরে।
|
---|
এরপর, রাতের বেলায়, আমি যেমন আজকে ঠিক করেছি মুগ ডালের চিলা তৈরি করবো;
গতকাল সময় পাই নি, কাজেই ম্যাগী আমার ভরসা ছিল।
কিছু ছবি তুলে রেখেছিলাম, তৈরির সময়, সেগুলোই আপনাদের সঙ্গে আজ ভাগ করে নিচ্ছি।
সাধারণত, আমি বেসন দিয়ে চিলা তৈরি করে থাকি, কিন্তু এটা মুগ ডাল দিয়েও করা যায়।
আরেকদিন এই চিলা তৈরির পদ্ধতি ভাগ করে নেবো আপনাদের সাথে।
ও! বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম, আজ সকালে বাজার যেতে হয়েছিল, ভোর চারটের পর ঘুমিয়েও।
তখন মুগ ডাল কিনে এনেছিলাম, বেসনের কথা ভুলে গেছিলাম, সমস্যা হয়, যখন একসাথে মাথায় অনেক কিছু চলে, আর আমি বোধহয় একটু বেশি কাজ পাগল মানুষ!
বিশেষনটা নিজেকেই নিজে দিচ্ছি! কারণ এই প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও চাকরি জীবনে আমার অফিস কামাই বাতিক ছিল না, যত বড় সমস্যায় পড়ি না কেনো অফিসে ঠিক পৌঁছে যেতাম, এই অভ্যেসটা বোধহয় আমার বাবার কাছ থেকে পাওয়া।
যাইহোক, আজকের দিনে ফ্ল্যাটের মিটিং ছিল ওই সাড়ে সাতটার সময়, সেখানেও বেশ খানিক সময় ব্যয় হয়েছে।
ফিরে আসার খানিক পরেই খাবার জল দিয়ে গেছে ছেলেটি, যদিও ওবেলা আসার কথা ছিল, কিন্তু এই বৃষ্টির দিনে সময় মেনে চলা কঠিন, তাই আর বেশি কিছু বলিনি।
কখনো কখনো বড্ড অসহায় বোধ করি! আমিও মানুষ এটা যেনো নিজের অজান্তে কবেই ভুলতে বসেছি, আমি বর্তমানে একটা যন্ত্র যার প্রতি কারোর মায়া, মমতা দেখানোর নেই, দরকারের সময় ডাক পরে, দরকার মিটে গেলেই আর কেউ খবর রাখে না!
আমিও সেই সকল যন্ত্রের মতই, যারা বিকল হয়ে গেলে আস্তাকুঁড়ে তেই নিক্ষিপ্ত হয়ে যাবো একদিন!
তবে, এই বেশ ভালো, মায়ার চাইতে এখন আমি ত্যাগে বিশ্বাসী, সত্যি তো কিছুই হাতে করে নিয়ে আসিনি, আর সাথে নিয়েও যাবো না।
কত দীন দুঃখী মানুষ এক্ এক্ দিন একবেলাও খেয়ে পান না, সেখানে কিছু মানুষ নিজের শারীরিক গঠন ঠিক রাখতে হয় প্রচুর খাবার ফেলে দেন! অর্থ থাকলেও অনেক কিছুই খেতে পারেন না!
একদিকে থাকলেও খেতে না পারা, আরেক দিকে অন্যজন ফেলে দেওয়া খাবার কুড়িয়ে পেট ভরায়!
আমি কথাগুলো অফিসেও বলতাম, যখন আমি কেবলমাত্র সারাদিন ব্ল্যাক কফি খেয়ে থাকতাম।
এই পরিস্থিতি আমার বর্তমান খাদ্যাভাসের, আমার ক্ষেত্রে সময়ের অভাবে তৈরি সম্ভব হয় না।
এই ছিল আমার জীবনযাত্রায় নতুন খাদ্যাভাস এর বিস্তারিত ঘটনা।
এখন ঘড়িতে রাত ১টা বেজে ১৪ মিনিট, আজ তাই সমাপ্তির রেখা টেনে বিদায় নিলাম।
আসলে আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া তবে অনেকেই হয়তোবা অবহেলায় দিন পার করে আর তার ফলাফল একদিন তাকে ভোগ করতে হয়।
যাই হোক আপনার খাবার তালিকায় পরিবর্তন দেখে ভালো লাগলো কাঠ বাদাম কাজু বাদাম সহ আরো যেগুলো উপাদান একসাথে মিস করে থাকতেন এটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
দিদি অনেক দুঃখ লাগলো আপনার একাকী জীবনে এই কথাগুলো পড়ে মনে হল যে আপনাকে যদি একবেলা রান্না করে খেতে পেতে পারতাম তাহলে মনের শান্তি পেতাম। আমার রান্না হয়তোবা ততটাও মজার না তবুও চেষ্টা করে দেখতে পারি।,😁😁
দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ নিজের খাবার তালিকা পরিবর্তন সম্পর্কে আমাদের কাছে উপস্থাপনা করার জন্য । আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একলা জীবন থেকে দোকলা জীবনে পদার্পণ করার জন্য একজন দায়িত্ববান ওগো খুজে দিতে হবে। বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে এভাবে আর কতদিন থাকবে দিদি! নাকি বলেন ভাই!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক ভাই, আপনার সাথে আমি সহমত পোষণ করছি তবে একজন দায়িত্ববান মানুষ খুঁজতে হলে দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে তো প্রয়োজন যে তাকে এই সাহায্য করবে। দিদি মুখ ফুটে তো অনেকবার বলছে 🤭🤭 এবার কিন্তু আমাদের একটু চিন্তা করা উচিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক ঠিক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বলছি, আপনার ডিকশনারিতে বিয়ের সঠিক বয়েসের সীমা ঠিক কত বছর পর্যন্ত লেখা আছে?
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
৩০ পূর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। তবে ৩০ পেরিলেও করা যায়সিরিয়াসলি নেবেন না দিদি
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আচ্ছা! এমনিতে জানিনা আপনার ধারণা অনুযায়ী আমি বর্তমানে বয়েসের কোন জায়গায় বা লগ্নে দাঁড়িয়ে আছি! যদিও জিজ্ঞাসা করলেও বলবো না। ঠিক যেমন আপনার মাসিক আয় আপনি লুকিয়ে রেখেছেন!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম ঠিক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Keep yourself healthy.. 👍🏻
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Single life is full of many challenges. There are many ups and downs in life and only those who go through or have gone through challenges know this. Right now your life is at the same stage and I do not want to give you any advice but remember one thing, if you ever need me, you can definitely remember me, consider me as your younger brother and call me anytime. Right now you are doing Steemit full time and we all know the value of the market. Focus on your eating and drinking habits and keep moving your body properly.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you @suboohi for this encouraging support 😊🙏
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
It's so touching, it skipped a bit of my heart. Take care.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit