দায়িত্বের সংজ্ঞা কি? |
---|
আচ্ছা দায়িত্ব কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? কি করে বোঝা সম্ভব আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি কি না? অথবা দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা কে নির্ধারণ করে? আমাদের কি ততটুকুই দায়িত্ব নেওয়া উচিত যতটা পালনে আমরা সক্ষম? নাকি নিজের ক্ষমতার উর্ধ্বে নিজেদের পরীক্ষায় ফেলা উচিত?
- কেনো বলুন তো?
কারণ, আমরা প্রত্যেকে এটা মেনে নিয়ে আর বিশ্বাস করে চলি আমরা আমাদের জায়গায় নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চলেছি এবং আমাদের দায়িত্বের উর্ধ্বে গিয়ে প্রতিদিন সবটা করে চলেছি।
কাজেই, কোনো প্রশ্নই নেই উপরিউক্ত প্রশ্নগুলো কে উস্কে দিয়ে নিজের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রশ্ন করার!
আজকে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে উপরিউক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতেই আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
লেখা শুরুর আগেই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি কথাটা উল্লেখের অর্থ নিশ্চই সকলের কাছে পরিষ্কার? সহমত পোষণ এর আশা না রেখেই আজকের লেখাটি উপস্থাপন করছি।
(সূর্য্য আমাদের প্রতিদিন দায়িত্ব পালনের শিক্ষা দিতে যায়) |
---|
উত্তর:- দায়িত্ব শব্দের সংজ্ঞা হলো, যেটি নিজেকে ঘরে তথা বাইরে নির্ধারিত কার্যাবলী সম্পাদন করতে উদ্বুদ্ধ করে।
যেখানে, ক্লান্তি থাকলেও বিরক্তির কোনো জায়গা নেই।
উদাহরণ:-
ছেলেবেলায় আমাদের মায়েরা যখন আমাদের সকল কাজের পাশাপশি, সংসারের সকল কাজ সমাধা করতেন;
আমরা যখন নিজের পায়ে দাড়াতে শিখিনি তখন থেকে শুরু করে, স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত তার অবদান ঘরের দায়িত্ব পালনের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে আমরা নিতে পারি।
অপরদিকে, ছোটো বড় যে কোনো পদে হোক না কেনো, বাবার সেই রাত দিনের খাটনি, সংসারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে অর্থের যোগান সেটা বাইরের দায়িত্বের উদাহরণ।
সময়ের চক্র নিজের আবর্তে পরিবর্তন হতে হতে স্থান পরিবর্তন করে এক্ সময় মা, বাবাকে সন্তানের স্থানে পৌঁছে দেয় বার্ধক্যের হাত ধরে, আর সেই মুহূর্তে সন্তান পালন করে পিতা মাতার দায়িত্ব।
আমার কাছে এটাই দায়িত্বের সংজ্ঞা, সাথে উদাহরণ।
সময় পরিবর্তন হয়েছে, এখন যৌথ উদ্যোগে সন্তান মানুষ করতে মাতা পিতা সমান দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আজও।
(সকাল থেকে সন্ধ্যে বিনা অভিযোগে নিজ দায়িত্বে অবিচল কোটি কোটি মানুষ) |
---|
উত্তর:- যারা প্রকৃত দায়িত্বের সংজ্ঞা বোঝেন, তাদের কাছে সকালের ঘুম থেকে সময় মতো ওঠা থেকে শুরু করে, সারাদিনের কার্যাবলী সহ রাতে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত সকল কাজকে সুষ্ঠ ভাবে সমাধা করার সদিচ্ছা সবক্ষেত্রেই দায়িত্ব প্রযোজ্য।
উদাহরণ:- খিদে পেলে যেমন নিজেকে চেয়ে, তৈরি করে, নিজের হাতে নিয়ে, অথবা কিনে খেতে হয়, কাউকে বলে দিতে হয় না। তেমনি কাজের ক্ষেত্রেও একই বিষয় পালন করাই মনে হয় আদর্শ দায়িত্ব পালনের উদাহরণ!
(হাসিমুখে একই কাজ দীর্ঘ্য সময় ধরে বিনা অভিযোগে যারা করে চলেন- তারাই দায়িত্ব শব্দের অনুপ্রেরণা) |
---|
উত্তর:- নিজেকে প্রতিদিন প্রশ্ন করা এবং গতকালের সাথে আজকের আমি কে তুলনা করে দেখা নিজের কাজের, ধৈর্যের, ইচ্ছের উন্নতি হয়েছে না অবনতি! যদি রোজ নিজেকে আয়নায় দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে না থাকি, তাহলে প্রতিদিন একই কাজে বিরক্তি আসবে কেনো?
আমরা নিজেরাই নিজেদের দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা নির্ধারণ করে থাকি দুর্ভাগ্যবশত সত্যি!
এটা নিজেকে বুঝিয়ে, আমার দ্বারা এটা হবে, আর আমার দ্বারা ওটা সম্ভব নয়!
এক্ কথায় আমরাই আমাদের নির্দিষ্ট সীমা রেখায় আবদ্ধ করে ফেলি। কারণ, একটাই, সেটা হলো
কাজেই, দায়িত্ব পালন থেকে তার ক্ষমতা নির্ধারণ সবটাই নির্ভর করে নিজেদের ইচ্ছে শক্তির উপর।
(পুরো আকাশটাই আমার যদি জয় করার ইচ্ছে আর জেদ থাকে - অভ্যন্তরীণ মানে বোঝার দায়িত্ব থাকতে হবে।) |
---|
উত্তর:-
যদি উন্নতির সদিচ্ছা থাকে তাহলে নিজেকে সীমারেখায় আবদ্ধ করা কখনোই উচিত নয়! তবে, ঝোঁকের মাথায় অথবা লোভে পড়ে কোনো কিছুতে আকৃষ্ট হয়ে, দায়িত্ব না নেওয়াই শ্রেয়।
তাই আমার মনে হয়, যারা সক্রিয় ভাবে নিজেদের উন্নত করতে চান, তারা বহু প্রতিবন্ধকতাকে পায়ে ঠেলে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছে দেখান।
এরকম লক্ষ লক্ষ উদাহরণ আছে যেখানে ক্যান্সার আক্রান্ত একটি মেয়ে একাধিক সোনার পদক জিতে দেখিয়েছে, যেখানে শারীরিক বিকলাঙ্গতা অনেক মানুষকে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে আটকাতে পারে নি।
তারমানে, আমরাই আমাদের ক্ষমতাকে আবদ্ধ এবং প্রশস্থ করে থাকি।
ক্ষমতার উর্ধ্বে গিয়ে কিছু মানুষ ভাবতে পেরেছিলেন বলেই আজকে সকলের হাতে মোবাইল, মানুষ আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে, মহাকাশে যেতে সক্ষম হয়েছেন, ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি বিশ্বাস করি, আমরা চাইলে পৃথিবী জয় করতে পারি, আবার নিজেরাই যদি দায়িত্বকে সীমাবদ্ধ করে রাখতে চাই;
তাহলে, ঐ পুকুরের জলের শ্যাওলা বয়ে বেড়াতে হবে, যেখানে কিছু সময় বাদে জীবাণু বাসা বাঁধবে!
পরিশেষে, তাই একটাই বার্তা দিয়ে নিজের লেখায় ইতি টানতে চাই, প্রতিদিন নিজেকে প্রশ্ন করুন, গতকাল আর আজকের ব্যবধানে নিজেকে কি দায়িত্ব পালনের যোগ্য করে তুলতে পেরেছেন? কোথায় কম রয়ে গেছে? কতদূর যেতে চান?
জীবন আপনার, কাজেই সিদ্ধান্ত আপনার অন্যেকে দোষারোপ করে কোনো লাভ নেই, যতক্ষণ নিজে নিজের দুর্বলতাকে জয় করতে না পারছেন।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে দায়িত্ব অনেক বড় একটা জিনিস যেটা সবাই বোঝে না। আমরা চাইলে এই দায়িত্ব থেকে খুব সহজে পালন করতে পারি কিন্তু আমরা যদি না চায় তাহলে এই দায়িত্ব কোনদিনই ভালোভাবে পালন করা হয় না। আসলে দিদি আপনি আজকে অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা করেছেন যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit