কে বলে সম্পর্ক কেবলমাত্র নামের স্তম্ভ দ্বারা গঠিত হয়? কে বলে রক্তের সম্পর্ক ছাড়া, অন্য সম্পর্কে গভীরতা কম?
কে বলে আপন মানে সেই সম্পর্কে একটা নাম থাকতেই হবে?
এরকম সম্পর্ক নিয়ে নাক উঁচু করা মানুষদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই একটা সম্পর্ক, না সেখানে আছে রক্তের সম্পর্কের গন্ধ, আর না আছে কোনো সেই অর্থে নাম!
পরিচয় পথ চলতে গিয়ে কিন্তু একসাথে পাড়ি দিয়েছি ছয় বছরের বেশি!
আমি যেমনি অনেক নিয়েছি, তেমনি সামনের মানুষটা মুখ বুজে চোখে জল নিয়ে সহ্য করেছে আমার কাজের জায়গার তেজ, শৃঙ্খলা একটু নড়ে গেলে সেই ভয়ঙ্কর আমার আমিকে!
কখনো ভেঙে পড়েছে আর পারছি না বলে, আবার কখনও নিজের ভুল বুঝে আগ বাড়িয়ে এসেছে, জড়িয়ে ধরে বলেছে ভুল হয়ে গেছে!
এটা কি রক্তের সম্পর্কের চাইতে কোনো অংশে কম? যেখানে, কাজের বাইরেও কখন যে একজন আরেকজনের ব্যাক্তিগত পরিধিতে প্রবেশ করে ফেলেছি, হয়তো নিজেরাই জানিনা।
তবে, প্রথম থেকে তার মধ্যে একটা জ্যোতি আমি লক্ষ্য করেছিলাম, যেটা জ্বালানো ছিল আমার উদ্দেশ্য!
আজকে হয়তো সে বোঝে আমি এতগুলো বছর যা কিছু বকাবকি করে থাকি না কেনো, তার ভালোর জন্য।
কখনো সহকর্মী, কখনও শিক্ষিকা, কখোনো সহকর্মী, আবার কখনও দিদি আবার কখনও মায়ের ভূমিকা পালন করেছি, কারণ, আমার মনে হয়, সম্পর্কের রূপ পরিবর্তিত বয়সে নয়, অভিজ্ঞতার নিরিখে সৃষ্টি!
আর, এই নামগুলো সামাজিক পরিচিতি প্রদান করে মাত্র, এর বাইরে এগুলো ছাড়াও আমরা চাইলে নিঃস্বার্থ ভাবে অন্যের পাশে দাঁড়াতে পারি, তারজন্য সম্পর্কে বিশেষ নামের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমার মনে হয় না!
আজকের প্রাপ্তির তালিকায় থাকা উপহার! |
---|
যদিও, আমার জন্মদিন চলে গেছে সেই ৮ তারিখে, তবে আমি ব্যস্ত থাকার কারণে, তাকে আসতে মানা করেছিলাম।
এক্ জায়গায় কাজ করলে এটাই সুবিধা, সে জানে দায়িত্বের প্রতি আমার ভালবাসা সর্বাগ্রে।
আজকে, যথারীতি তিনি বেলা বারোটার পর এসেছিলেন আমার ফ্ল্যাটে।
আশাকরি এতক্ষণে বুঝে গেছেন কার কথা বলছি? হ্যাঁ! ঠিক ধরেছেন @sampabiswas
এর কথা বলছি।
হয়তো, অতিবাহিত সময় সুদীর্ঘ ছিল না, এখন সম্পা আবার নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাবার পর, বিকেলের চা পর্ব সেরে লিখতে বসেছি।
আমার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসের সাথে, নিয়ে এসেছিল, কমলা লেবু, পেয়ারা! আমি ফল খেতে ভালবাসি।
আচ্ছা, এরপর মিও আমোরে থেকে দুটো রেড ভেলভেট কেক আর দুটো ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক, এই দুটো আমার প্রিয়।
নিজে যদিও বেরোবার আগে শুধু একটা ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক খেয়েছে, বাকি সব আমার।
কি মজা!
দুপুরের খাবারে ছিল মিক্সড নুডলস, মিক্সড ফ্রাইড রাইস আর চিলি চিকেন! সম্পা ছবি তুলেছে, আমার আর ছবি তোলা হয়নি।
এরপর দুটো হুইস্কি কিনে দিয়েছে আমাকে, আমি পছন্দ করেছি ব্র্যান্ড!
দেখুন, কেউ আবার লেখা পড়তে গিয়ে নাক উঁচু করবেন না দয়া করে!
হ্যাঁ! আমি ড্রিংক করি। তবে খুব কম, এবং বিশেষ বিশেষ সময়।
যাইহোক, এরপর ওকে দেখলাম আমার কিউরেশান স্প্রেডশীট, আমার কমিউনিটির কিউরেশন রিপোর্ট এর ডেটা, বূমিং এর স্প্রেডশীট ইত্যাদি!
পরিষ্কার দরাজ কণ্ঠে জানিয়ে দিলো, এসব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, কাজেই আমার পক্ষে এগুলো করা সম্ভব নয়!
সেই যদি কোনো কাজ দেবার পর তোমাকেই বারংবার আমাকে ডাকতে হয়, তুমি বিরক্ত হবে, তার চাইতে তুমি করো কাজগুলি বুঝলে!
আমি শুধু একবার তাকালাম হ্যাবলা কান্তের মত! কি বলবো? কিছুই বলার নেই!
এ মেয়ে কিছু ব্যাপারে একেবারে পরিষ্কার, যেটা বলবে হবে না, মানে বুঝে নাও ওখানে জোর করে লাভ নেই, তবে আমি জানি, ওর মধ্যে সেই যোগ্যতা আছে;
যে সম্পা চাইলেই অবলীলায় ধরে ফেলবে, কিন্তু ওই কিছু বিষয়ে ওর নির্ভরশীলতা রয়েই গেছে।
আমি এ বছর সম্পা কে কিছুই দিতে পারিনি ওর জন্মদিনে, তবে এখানেই মজার বিষয় হলো, আমারা এসব নিয়ে বিশেষ হিসেব নিকেষ কখনও করিনা।
এই জায়গাটা কবে তৈরি হয়েছে, হয়তো আমরা কেউই বলতে পারব না, তবে যারা সম্পর্কের পরিভাষার অন্য গন্ধ এবং মানে খোঁজেন তাদের জন্য আজকের এই লেখাটি।
কাউকে দাদা বলে রাখি পরিয়ে পরে বিয়ে করতে দেখেছি, আবার কাউকে আদর করে ডার্লিং বলেও সম্মান অব্যাহত রাখতে দেখেছি, সবটাই মনের ব্যাপার।
ওই যে কথায় আছে, কৃষ্ণ কেমন?
উত্তর, যে দেখে যেমন!
কারোর, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে এখানে আমি উপস্থিত হই নি, তবে কিছু মানুষের মানসিক সংকীর্ণতা দেখলে ভাবী, এদের জীবনের পুরো উপার্জন আসলে শূন্য!
যাক আজকে কিছু সময় আমার অনেক মাস্ বাদে একসাথে কাটিয়েছি এটাই বড় ব্যাপার, আমাকে বাইরে যেতে বলেছিল, কিন্তু শরীরের পরিস্থিতি ভালো নয় বলে ঘরে বসেই আনন্দের আদান প্রদান করেছি।
মন খারাপের মাঝে আমার ভালোলাগার কথা মাথায় রেখে কিছু সময় আর উপহারের জন্য অনেক আদর! |
---|
কোলাহলে চাইতে নিরালায় বসে, অনেক না বলা জমে থাকা কথা আমার একে অপরের সাথে ভাগ করে নিয়ে থাকি, আর এটা অনেক বছর ধরে।
সেই সময় আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড, তখন আমার ফাজলামি করা ছাড়া অন্য কিছুই করার থাকে না, যেমন কাজের জায়গায় আমি অবিচল ভাবে দাড়িয়ে থাকি শৃঙ্খলার হাত ধরে, তেমনি উল্টো পথে হাঁটি ব্যাক্তিগত পরিসরে।
মহারানী গুছিয়ে বসে কেক এর ছবি তুলতে ব্যস্ত, আর আমি ওনার🤩 |
---|
একটা ছবি যাবার আগে কেক খাবার সময় তুলে নিয়েছি, সাথে বললাম এটা প্রমাণ তুই কতদিন বাদে বাদে এখানে আশীষ তার! হাহাহা!
আজকাল প্রমাণ ছাড়া মুখের কথা কেউ বিশ্বাস করে না! কখন যে সময় পার হয়ে যায়, নিজেরাই বলি দু চারটে কথা বলতে না বলতেই যাবার সময় হয়ে যায়!
দেখুন রতন টাটার সাথে যে ছেলেটি তাঁর কাঁধে হাত রেখে বন্ধুর মত দাঁড়িয়ে আছে, সেই শান্তনু,
রতন টাটার না সম্পর্কে কেউ হয়, আর না বয়েসের কোনো মিল আছে তাদের! তবুও কত আত্মিক সম্পর্ক, সমবয়সী আচরণ, এটা দেখেও যারা শিখতে পারেন না, সম্পর্ক আসলে কিসের ভিত্তিতে নির্ভর করে, তারা সংকীর্ণ মনস্কতা নিয়ে আজও বেঁচে আছেন।
সেইদিক থেকে সম্পা আর আমি এক অভিমত পোষণ করি, কারণ আমাদের কারোর মনে হয় না, সম্পর্ক কোনো বয়স, নাম কিংবা রক্তের নিরিখে সৃষ্টি হয়।
আজকের লেখাটি রইলো তোর জন্য সম্পা! অনেক কথা শুনতে হয় তোকে, আগামীতেও শুনতে হবে কখনও কাজের জায়গায় আবার প্রয়োজনে ব্যাক্তিগত জীবনেও তবে, সবটাই তোর ভালোর জন্য, আশাকরি সেটা তুইও বুঝিস।
এই সম্পর্ককে নামের বাঁধন মুক্ত রাখি, আমার আচরণ অনুযায়ী সেই মুহূর্তে একটা যথাযত নাম দিয়ে দিবি, তাহলেই হবে, কি বলিস?
তোর সবচাইতে ভালো দিক যেটার জন্য এই সম্পর্ক অব্যাহত আছে, সেটা হলো তোর সততা, মিথ্যে না বলা!
অনেক অপছন্দের বিষয় থাকলেও দুটি বিষয় সব দোষকে ছাপিয়ে গেছে!
আমার ব্যাক্তিগত পরিসরে খুব বেশি মানুষের প্রবেশের অনুমতি নেই, কারণ তাদের বিশ্বাস ধরে রাখার ক্ষমতা নেই। আসলে উপাধি অন্য তো তাই!