জীবনে অনেক ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আপনাকে যেতে হবে। সব সময় সব পরিস্থিতি আপনার অনুকুলে থাকবে, এমন ভাবাটা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। সকল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলতে হবে। তাহলেই জীবন সুন্দর। যাহোক, গতকাল একটা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলাম সেই সম্পর্কেই আজ আপনাদের বলবো।
আমার আগের ডাইরী গেমগুলোর মধ্যে বলেছিলাম ছোট ভাইয়ের ভোটার আইডি বানাতে গিয়ে কয়েকবার ঘুরে আসার কথা। কাগজপত্র জমা দিয়ে এসেছিলাম। ছবি তুলতে যাওয়ার জন্য ম্যাসেজ এসেছিল। গতকাল ছিল তার ছবি তোলার ডেট। আপনাদের সাথে আরেকটি বিষয় শেয়ার করে রাখি। যেহেতু আমার অনার্স শেষ হয়েছে তাই উচ্চ শিক্ষার জন্য আমি বাহিরের দেশে যেতে আগ্রহী। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি IELTS পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। তো গতকাল আমার একটি কোচিং এ মক টেস্টও ছিল। তাই আমি যাবো ঢাকা আর মা এবং আমার ছোট ভাই যাবে সাভার।
যেহেতু একই রাস্তায় তাই আমরা এক বাসেই উঠি। ঠিক সকাল ৭টার সময় বাস ছাড়ে। সকাল ৯ টার মধ্যে ভোটার আইডির অফিসে যেতে হবে আর আমার পরীক্ষা ১০টার সময়। সেই অনুযায়ীই বাসা থেকে অনেক সকালেই বের হয়েছি। ২০ মিনিট বাস চলার পর জ্যামে আটকে যায়। ঢাকা শহরে জ্যামটা খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার কিন্তু ঢাকা আরিচা হাইওয়ে তে কখনই জ্যাম লাগে না। যেখানে বাসটা থেমেছে সেখানে থামারই কথা না।
প্রথমে ভেবেছি কোন গাড়ির কারণে বোধহয় জ্যাম লেগেছে কিন্তু পরবর্তীতে শুনি সামনে রাস্তা আটকিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। পুলিশ আছে কিন্তু তাদের কিছু মনেই করছে না আন্দোলনকারীরা। প্রায় ১.৫ কি.মি জ্যাম সৃষ্টি হয়েছে। ভেবেছিলাম খুব দ্রুত জ্যাম ছেড়ে যাবে কিন্তু তা হলো না। প্রায় ১ ঘন্টা বসে ছিলাম। যাত্রীদের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হলো। আমরা যেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাচ্ছিলাম তেমনি অনেকেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাচ্ছিল। কেউ অসুস্থ হাসপাতালে যাবে কারও বা অফিস। তবে সবচেয়ে বেশী একজনের ব্যস্ততা ছিল। সে যাবে বিদেশ। সঠিক সময় এয়ারপোর্টে না পোঁছাতে পারলে ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে। তার জন্য মায়া হচ্ছিল খুব। এমন একটা দিনে এভাবে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার শিকার হতে হলো। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সব যাত্রীরা তাদের ভাড়া ফিরিয়ে নিয়ে চলে যেতে চাইলো।
প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপার অপেক্ষা করতে বললেও পরে যখন দেখা গেল আর কোন সম্ভবনা নেই। তখন টাকা ফিরিয়ে দিতে লাগলো। যতদূর আসছি তার ভাড়া হয় ৩০ টাকা কিন্তু সবার কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিচ্ছিল তারা। একারণে অনেকে তাদের সাথে ঝামেলাও করছিল। পরে ৫০ টাকা করে দিয়েই বাকী যা টাকা থাকে সেটি নিয়ে আমরা নেমে গেলাম বাস থেকে। অন্য কোন রাস্তাও নেই যাওয়ার। হয় বাসায় ফিরে যেতে হবে কিংবা এই জ্যাম ছোটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমরা ঠিক করলাম হেঁটে হেঁটেই সেই কোথায় আন্দোলন হচ্ছে সেখানে যাবো। তারপর কোন বাস পেলে সেখান থেকে চলে যাবো।
প্রায় ১ কি.মি যখন হেঁটে গিয়েছি ঠিক তখনই জ্যাম ছেড়ে দিলো। বাসগুলো চলা শুরু করলো। আশার আলো দেখতে পেয়ে আরেকটা বাসে উঠে পড়লাম । সবারই দেরী হয়ে গেছে। সবাই দ্রুত বাস চালাতে বললো। এমন সময় ড্রাইভার তেল পাম্পে গাড়ি ঢোকালো। তেল নাকি শেষ। যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। তেল নিতে গিয়ে আরও কিছু সময় দেরী হলো। রাস্তা তারপর ফাঁকাই ছিল। যাহোক এত কষ্টের পর আমরা যার যার গন্তব্যে পোঁছালাম।
সঠিক সময়ে না পৌঁছানোর জন্য আমার পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দিয়েছিল কোচিং থেকে। এমনিতেই সকালে কিছু খেয়ে যাইনি। তারপর ৩ ঘন্টা পরীক্ষা দিতে গিয়ে মাথায় কিছু কাজ করছিল না। যাহোক পরীক্ষা দিয়ে এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাই তারপর সেখান থেকে বাসায় আসতে আসতে প্রায় রাত ১০ টা বেজে যায়। প্রচন্ড ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ি।
কোন দাবী আদায় করার জন্য কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন? দাবী আদায়ের স্বার্থে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করাটাকে কীভাবে দেখছেন? কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
আজ এ পর্যন্তই। বাইরে যাওয়ার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে নিয়মিত পোস্ট করতে পারছি না। এ্যাংগেজমেন্টও কমে গেছে। এ মাসের ভিতরেই পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা আছে। সবাই দোয়া করবেন যেন আমি ভালো একটা রেজাল্ট করে আমার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যেতে পারি।
আপনার মত আমিও অনেকবার ভোটার আইডি বানানোর জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম।আসলে আমার ভোটার আইডি ট্রান্সপার করতে হবে। কিন্তু এতদিনেও আমি ভোটার আইডি ট্রান্সপার করতে পারিনি। এইসব কাজ করতে গেলে একটু হয়রানি হতেই হয়। আপনার সারাদিনের কাজকর্ম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমরা অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হই, সব পরিস্থিতি সামলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন, আপনার পরিস্থিতি দেখে খুব খারাপ লাগল, আপনি অনেক কষ্ট করেছেন। আন্দোলন করতে হলে অবশ্যই একটা নিয়মের মধ্যে থেকে করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষদের কষ্ট না হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Then best wishes for the exams - and the fulfilment of your dream!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you so much.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো। কেননা আপনি এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। আসলে আমরা অনেক কাজের জন্যই হয়রানি হয়ে থাকি। বিশেষ করে কাগজপত্রের ক্ষেত্রে আমরা বেশি হয়রানি হয়ে থাকি। যেমন ভোটার আইডি কার্ড ও জন্ম নিবন্ধন কাগজ বানানোর জন্য। এই কাজগুলোতে আমরা হয়রানি বেশি হয়ে থাকি। ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit