কালী প্রতিমা নিরঞ্জন

in hive-120823 •  15 days ago 

নমস্কার সকলকে ,সকলেই কেমন আছেন ?আশা করি সকলে ভালো আছেন। সুস্থ আছেন ।আজকে আমি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।

IMG_20241103_223007.jpg

ফোনের ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

দেখতে দেখতে মায়ের পূজা শেষ হয়ে গেল। মনটা সত্যিই খুব খারাপ। প্রথম থেকেই মায়ের মূর্তি তৈরি করা থেকে শুরু করে মায়ের বিসর্জন পুরোটাতেই এ বছরে আমি অংশগ্রহণ করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর পরে মায়ের পুজোতে থাকতে পেরে নিজের খুব ভালো লাগছিল। কিন্তু দিনগুলো যেন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। মায়ের মূর্তি তৈরি করতে কত পরিশ্রম দিনরাত জেগে শিল্পীরা কাজ করেন। আবার বিসর্জনে এক মুহূর্তেই সবটা যেন শেষ হয়ে যায় চোখের সামনে। বিসর্জনের দিন নদীর পাড় থেকে আসতে একদম ইচ্ছে করে না। মায়ের বিসর্জন যত সময়ে এগিয়ে আসে সকলেরই মনটা খারাপ হয়ে যায়।

IMG20241102201840.jpg

আমি মায়ের মুখ দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই আপনাদের মধ্যে শেয়ার করে নিয়েছি। কিভাবে মূর্তি বানানো হয় ।এছাড়াও অন্যান্য সবকিছুই আপনাদের মধ্যে তুলে ধরেছি। আমি আমার নিজের গ্রামের পাড়ার পূজো ছেড়ে কৃষ্ণনগরের পাড়ার পুজোতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কারণ মা আগুনেশ্বরী যেখানে পুজো করা হয় সেই পরিবেশটা আমার খুবই পছন্দের। মায়ের বিসর্জনের দিন সকালবেলা থেকে শুরু করে সমস্ত কাজে আমি পাড়ার বড়দের হাতে হাতে সাহায্য করেছিলাম। সন্ধ্যাবেলাতে ঠাকুর বের করা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু রেডি করে দিয়েছিলাম। আমাদের পূজোতে সমস্ত রকম বাজনা করা হয়েছিল। আমরা সন্ধ্যা পর মাকে নিরঞ্জনের পথে রওনা দিয়েছিলাম।

IMG_20241103_225414.jpg

ফোনের ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

মাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রাসের চাকার গাড়িতে। রাসের চাকার গাড়িতে মাকে নিয়ে যেতে খুবই সুবিধা হয়। পাড়ার সকল বোন, দিদি, কাকিমা ,জেঠিমা সকলেই মায়ের নিরঞ্জনের জন্য খুবই আনন্দ সহকারে অংশগ্রহণ করেছিল। সকলের উদ্বেগ দেখে আমারও খুব ভালো লেগেছে। আমাদের মাকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর কদমতলা ঘাটে। সেখানে আমাদের কৃষ্ণনগরের সব ঠাকুর বিসর্জন দেওয়া হয়। অনেকটা পথই হেঁটে যেতে হয়। তবে মায়ের সাথে যেতে যেতে ওইটুকু পথ কিছুই মনে হয় না। আমরা খুব তাড়াতাড়ি মাকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম কদমতলা ঘাটে। এখানে সমস্ত মায়ের অলংকার আস্তে আস্তে খোলা হল। এরপরেই কদমতলা ঘাটে কৃষ্ণনগর পৌরসভা লোকজন সকলে মিলে আমাদের মা আগুনেশ্বরী কে নিয়ে নদীর ঘাটের দিকে রওনা দিয়েছিল।

তারা সকলে মিলে আমাদের প্রতিমাকে বিসর্জন দিয়েছিল। নদীর জলে বিসর্জন দেওয়ার সাথে সাথে পৌরসভার কর্মীরা প্রতিমা টি তুলে এক পাশে রেখে দেয়। না হলে কৃষ্ণনগরে প্রচুর প্রতিমা সেগুলো সব নদীর জলে বিসর্জন দিলে নদী এমনিই বুজে যাবে। সকলে মিলে মায়ের বিসর্জনের পর রওনা দিয়েছিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। তখন রাত প্রায় এগারোটা বেজে গেছে। যে প্রতিমা গুলি গাড়িতে অর্থাৎ রাসের চাকা বা লরি, ট্যাক্টটরে যাবে এই প্রতিমাগুলি একটু তাড়াতাড়ি বিসর্জন হয়ে যায়। কিন্তু যেসব প্রতিমা গুলো কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় এগুলো একটু রাত করেই নিয়ে যাওয়া হয়।

ইচ্ছে ছিল আমাদের প্রতিমার বিসর্জন দিয়ে আসার পর আবার রাতের বেলায় দুজনে মিলে ঠাকুর দেখতে বেরোবো। যেহেতু সারারাত ধরে ঠাকুর বিসর্জন হয়। কিন্তু আমাদের প্রতিমা বিসর্জনের পর আর একদম ইচ্ছে করল না রাতের বেলায় ঠাকুর দেখতে যাওয়ার। রাতের বেলায় ঠাকুর দেখতে বের হতে পারিনি।


আজ এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী আবার নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

Loading...

সত্যি বলতে ঈশ্বরের একটি রূপ হিসেবে আরাধ্য মায়ের এই আগমন আমাদের জন্য প্রত্যাশিত এবং অনেক আনন্দের। মা'কে যে পুজো সমাপ্তির পরে বিসর্জন দিতে হবে আমার তো এটা মাথাতেই থাকে। কিন্তু হ্যাঁ এটাও একটা বিষয় যে আসা যাওয়ার মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে। তারই একটা বার্তা আমরা এই পুজো থেকে উপলব্ধি করতে পারি। আমি মোবাইলে একটা ভিডিও দেখেছিলাম বামাকালির বিসর্জনের মূহুর্ত। আপনার লেখাতে উপস্থাপিত একটি দৃশ্য অনুরূপই মনে হলো।

আমাদের এখানে একটাই পুজো হয় যে কারণে সারারাত মায়ের বিসর্জন এবং ঠাকুর দেখার সুযোগ হয় না। তবে হ্যাঁ প্রত্যাশা আছে ভারতে গিয়ে এভাবে সারারাত ঠাকুর দেখবো। কি আছে জীবনে? যদি জীবনটা উপভোগই না করতে পারি। পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম।