(দিদির মেয়েকে কোলে নিয়ে আমার মা)
প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন।
স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আজকে আমি প্রথম আমার মায়ের সম্পর্কে লিখতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের আমার লেখা পড়তে ভালো লাগবে।
"মা" শব্দের সঠিক অর্থ বলে বোঝানো কঠিন ।কিন্তু মা পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ বলে আমার মনে হয়। আমার মায়ের নাম রীতা বিশ্বাস। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি মা খুব রাগি। কথায় কথায় বকা দেওয়া, ভুল কিছু করলে চাপকে পিঠ লাল করে দেওয়া আর বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে সেই মা কখন যে বন্ধু হয়ে উঠলো বুঝতেই পারিনি। এখন মা আর আমার মধ্যে কোনো লুকোচুরি নেই। কোথাও কিছু খারাপ হলে বা কোথাও কিছু ভালো হলে আমি সবার আগে মা কে এসে বলি।
সারাদিন মায়ের সাথে সময় ভালোই কাটে। ঘরের কাজে অল্প অল্প সাহায্য করি আর একসাথে অনেক গল্প করি। মাঝে মধ্যে একটু ঝগড়াও করি। কিন্তু ঝগড়া করার পর মা রাগ করে থাকে কিন্তু আমি রাগ করে থাকতে পারি না। "মা" বলে চিৎকার করি, তখন একটু কথা শোনায়, তারপরে আবার রাগ কমে যায়।
মা নিজের পুরো জীবনটাই খরচ করে ফেলেছে আমাকে মানুষ করতে। নিজের কোনো স্বপ্ন,কোনো চাহিদা মেটাতে কোনো দিন দেখিনি। সত্যি বলতে আমার সব থেকে কাছের এবং আমার জীবনের সব থেকে প্রিয় মানুষ আমার মা। হয়তো সবার কাছেই সবার মা এমনই হয়।
আমারা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বড়ো হয়েছি। মা বাবার কষ্ট হলেও যতোটা পরেছে আমার চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছে। যদিও কোনো দিন কোনো কিছুর জন্য বায়না করিনি। জানি সেটা মা বাবা পূরন করতে পরবে না ভেবে আর বলা হয়ে ওঠেনি। ছোট থেকেই দেখেছি মা ব সময় বলতো - "আমাদের কিছু থাকবে না আমরা খাবো না,তাও লোকের কাছে কোনোদিন কিছু চাইবি না"।
মা আমার জীবনের প্রথম শিক্ষিকা। প্রথম দিন স্কুলে যাওয়া সময় মায়ের প্রথম শিক্ষা হল -"কারো সাথে ঝগড়া বা মারামারি করবে না। কারো জিনিস ধরবে না এবং কারো টিফিন চাইবে না, কিন্তু তোমার কাছে কেউ যদি কিছু চায় তুমি দিয়ে দেবে, কাউকে না বলবে না"। এই মায়ের এবং আমার স্কুল জীবন শুরু হলো। মানে মা সকালে কোনো রকমে বাবাকে রান্না করে দিতো। বাবা খেয়ে কাজে যেত এবং খাবার নিয়ে যেতো। আর মা আমাকে সকালে রেডি করিয়ে একসাথে এক থালায় ভাত ও তরকারি মেখে নিজে খেতো এবং আমাকে খাইয়ে দিতো। তারপর আমার স্কুল ব্যগটা মা মায়ের কাধে নিয়ে আমাকে এক হাতে আর এক হাতে বাজারের ব্যগটা ধরে, সে যে কী জোরে হাটতো বলে বোঝানো যাবে না।
আমি তো আর মায়ের সাথে হেটে পারতাম না। আমি ছোটো ছিলাম, তাই আমি মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে দৌড়োতাম। আমাকে স্কুলে ছেড়ে মা বাজার করে বাড়ি গিয়ে, মাছ কেটে, সবজি কেটে, রান্না করে , নিজে স্নান করে, ঘরের পূজো দিয়ে, আমাকে স্কুল থেকে আনতে যেতো। তারপর আমরা একসাথে বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া করতাম। আমাকে রেখে কোনো দিন মা খায় না। আমি ফিরবো তারপর একসাথে খাবো। এই ভাবে কেটে গেলো স্কুল।
তারপর আসলো কলেজ জীবন। আবারও এক কথা করো সাথে ঝামেলা বা ঝগড়া করবে না কিন্তু যেটা নতুন ভাবে শেখানো তা হলো -"যেখানে অন্যায় দেখবে সেখানে প্রতিবাদ করবে। কেউ সাহায্য চাইলে না বলবে না।" বড়ো হয়েছি বলে মা আর কলেজ পর্যন্ত যায়নি। আমাকে দিয়ে আসা আর নিয়ে আসা আর হতো না। তখন বন্ধুদের সাথে আসা যাওয়া হতো। কিন্তু পরীক্ষার সময় মায়ের যেতেই হবে, কারণ আমার কেন জানিনা মনে হতো,যে মা না গেলে পরীক্ষা ভালো হয় না। পরীক্ষা দিতে মা নিয়ে যেতো কিন্তু আমি পরীক্ষার হলে চলে গেলেও মা বাড়ি যেতো না। স্কুলের বাইরে বসে থাকতো, কারন আমার যদি কিছু দরকার হয়,তখন কে দেবে বা কোনো সময় শরীর খারাপ হলে কে দেখবে।
আমি যখন প্রতি দিন কলেজ সেরে বাড়ি যেতাম গিয়ে দেখতাম, আমার মা না খেয়ে বসে আছে। আমি ফ্রেশ হয়ে নিলে তারপর একসাথে খাওয়া দাওয়া করতাম। এইভাবেই চলতে থাকে তারপর কলেজ শেষ করে কাজে ঢুকলাম বাড়ি কাছেই একটা শপিংমলে কাজ করতে শুরু করলাম। সেখানেও মা প্রথমদিন বলেছিল -" তুমি তোমার মতো কাজ করবে কারো সাথে বেশি মিশতে যাবে না। তুমি তোমার মতো করে থাকবে।" সেখানেও মা দুপুরে খাবার দিতে যেতো। তারপর বাড়ি এসে মা খেতো। সব সময় মা এটাই করতো এখনও সেটাই করে।
(মন্দিরে পূজা দিতে গিয়েছিলাম মায়ের সাথে)
যে কোনো পরিস্তিতিতে মা আমার পাশে থাকে এবং ভুল করলে শাসনও করে আর বকাবকি তো তার সাথে ফ্রি। আসলে মায়ের অবদান বলে শেষ করা সম্ভব হয় না। শুধু এটুকু বলতে পারি বুঝতে শেখার পর থেকে আমি চেষ্টা করি যাতে আমার কারনে আমার মা কষ্ট না পায়। কারণ মা আমাকে কখনো কষ্ট পেতে দেয়নি।
আর ভগবান যেন আমার মায়ের পাশাপাশি পৃথিবীর সকল মায়েদের ভালো রাখেন। কারন মাকে ছেড়ে বেচে থাকা ভীষন কষ্টের।
আমার লেখা আপনাদের কেমন লাগলো নিশ্চয়ই জানাবেন। ভালো থাকবেন আপনারা সকলে। শুভ রাত্রি।
খুব ভালো লিখেছিস @swetab97। এইভাবেই একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হবে। আর মামীর কথা আলাদা করে কিছুই বলার নেই। তুই সবটাই জানিস। মা মারা যাওয়ার পর মামী আমার কাছে দ্বিতীয় মা হয়ে উঠেছে। মামী ভালো থাকুক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@sampabiswas ধন্যবাদ দিদি। আমি জানি তুই মাকে খুব ভালোবাসিস, ঠিক পিসির মতো। মা ও তোকে খুব ভালোবাসে। মন খারাপ করিস না,পিসি সবসময় তোর সাথে আছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি জানিরে বোন মামী আমাকে অনেক ভালো বাসে। আমিও বিশ্বাস করি, মা আমার সাথে আছে। ভালো থাক @swetab97 ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
*Mother is God's best gift to us.
We would like to appreciate your presence and activities towards the community. Our community also like to inspire you to participate in the engagement by visiting others post and make insightful comments .
Regards
@sampabiswas(Moderator)
Incredible India
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
We would love to welcome you in our community, there is no language barrier so you can definitely write in your mother tongue Bengali. We would love to see your comments on others posts.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ @meraindia । আমি অন্যের পোস্ট পড়ে নিশ্চয়ই জানাবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পৃথিবীর সবচাইতে মূল্যবান সম্পর্ক হলো মা এবং সন্তানের। খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে, আশাকরি এইভাবেই ভবিষ্যতেও কাজ করে যাবে। অন্যের লেখাতে নিজের মতামত জানানো একটা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে আশাকরি অন্যের পোস্টে তোমার মতামত চোখে পড়বে ভবিষ্যতে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ম্যাম @sduttaskitchen । আমি ভালো করে কাজ করার চেষ্টা করবো। আর অবশ্যই অন্যের পোস্ট সম্পর্কে নিজের মতামত জানাবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমে তোমাকে জানাই শুভেচ্ছা। এখানে লেখার ইচ্ছে প্রকাশ এর থেকেও মাতৃ ভাষায় লেখার সিদ্ধান্ত নেবার জন্য। ইংরেজ চলে গেছে কিছু লেজ রেখে গেছে অবশ্য মাঝে কিছুদিন ওই লেজ ধরে আমিও বেশ টানাটানি করেছি, তারপর হাপিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।
মজা করলাম, ভালো ভাবে কাজ করে যাও কিন্তু প্রত্যাশা নিয়ে নয়। অনেক আশীর্বাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসংখ্য ধন্যবাদ @pulook স্যার। আপনার কথা নিশ্চয়ই মনে রাখবো। নিজের সবটুকু দিয়ে কাজটা ভালোভাবে করবো। এইভাবেই আর্শীবাদ করবেন। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit