আমার প্রিয় বান্ধবী-সোমা

প্রিয়,
পাঠকগণ,

আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন আর আজকের দিনটা সকলে খুব ভালো কাটিয়েছেন।

আজকে আমি আপনাদের যার গল্প বলবো সে হলো আমার প্রিয় বান্ধবী। আমার ছোটো বেলা থেকে বড়ো বেলা পর্যন্ত এই একজনই সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী। যে অন্যান্য অনেক বান্ধবীদের থেকে অনেক আলাদা।

আমার মতে বন্ধুত্ব হল এক গভীর ভালোবাসার নাম। বন্ধু হল এমন একজন যার সাথে সব কথা বলা যায়। বন্ধু হল এমন একজন যার কাছে কোনো লৌকিকতা থাকে না। বন্ধুর কাছে মন খুলে সব কথা বলা যায়। সব সময় পাশে পাওয়া যায় বা যে কোনো বিপদের দিনে একটা হাত কাধের উপর থাকে এবং তার বলা একটা কথা মন ছুয়ে যায়- আমি আছি তোর সাথে। এর নামই বন্ধুত্ব।

আমি আজকে কথা বলছি আমার ছোটবেলার বান্ধবী বা আমার প্রিয় বান্ধবী তার নাম সোমা বিশ্বাস। সোমার সাথে কবে যে আমার বন্ধুত্ব হয়েছে বা কবে যে ও আমার প্রিয় বান্ধবী হয়ে উঠে সেটা ঠিক জানি না। কারন অনেক ছোটো থেকেই আমরা একজন আরেকজনকে চিনি। আমরা ছোট থেকে পাশাপাশি বাড়িতে ভাড়া থাকতাম এবং আমরা একসাথেই বড়ো হয়ে উঠেছি। তখন আমরা খুব ঝগড়া করতাম, তাও আমাদের বন্ধুত্ব সুন্দর ছিল।

আমার রাগ,আমার অভিমান সব সোমার কাছেই ছিলো। আমি ওর উপর খুব রাগ দেখাই। কিন্তু ও আমার উপর কোনো সময় রাগ দেখায় না। আসলে ও ভীষণ শান্ত স্বভাবের।আর ও আমাকে খুব ভালোবাসে। আমি জানি ও মাঝে মাঝে আমার উপর রাগ করে কিন্তু বুঝতে দেয় না।

কয়েক মাস আগে ওর মা বাবা পর পর ওকে আর ওর দাদাকে ছেড়ে চলে যান অনেক দুরে। তাই চেষ্টা করি ওর বাবা মা নেই সেটা যেন ও অনুভব না করে। কিন্তু মা বাবার কথা মনে তো পরেই।

কিছু দিন আগে একটা ছেলের সাথে ওর সাথে সম্পর্ক হয়েছিল। সেই সম্পর্কে থেকে সোমা খুব কষ্ট পায়। তখন খুব ভেঙে পড়ে সেখান থেকে আমি ওকে বার করেছি। ছেলেটিকে আমি বলেছিলাম যে- আমি যদি সোমাকে বারন করি তাহলে ও তোমার দিকে ফিরেও তাকাবে না। সেটাই হয়েছিল। ঐ ছেলের দিকে ও আর ফিরেও দেখেনি। এমনই বন্ধুত্ব আমাদের।

যেই আসুক না কেন আমাদের বন্ধুত্ব কেউ নষ্ট করতে পারবে না। আমরা প্রায় প্রতিদিন ঘুরতে যাই। এক সাথে হেটে হেটে গল্প করতে করতে কখনো কখনো চা খেতে যাই স্টেশনে। এক সাথে অনেক সময় কাটাই এবং অনেক কথা বলি। মাঝে মাঝে একটু একটু ঝগড়া করি কিন্তু কখন যে সময় কেটে যায় বুঝতেই পারি না। চা খাওয়া হয়ে গেলে যে যার বাড়ি ফিরি। আবার মাঝে মাঝে সোমা আমাদের বাড়িতে থেকে যায় একসাথে রাতে গল্প করি অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা চলে দুজনের।

আমার মাও সোমার জন্য কষ্ট পায়। এতো কম বয়সে বাবা মা দুজনকেই হারালো মেয়েটা। তাই মাঝে মাঝে আমার মা ওর প্রিয় রান্না করে ওকে খাওয়ায়। সেটা আমারও খুব ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকে এখনও আমরা একসাথে আছি। আর আশা করি আমাদের বন্ধুত্ব এমনি থাকে সারাজীবন।

আপনারা সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।