শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর শিক্ষক হলো এই মেরুদণ্ডের ভিত্তি। প্রত্যেকেই জন্মের পর থেকে শিক্ষকের কাছ থেকে নিজের পুঁথিগত বিদ্যার্জন শুরু করেন। আমাদের জীবনের শিক্ষার হাতে খড়ি হয় পরিবার থেকে আর তারপরের ধাপগুলো অতিবাহিত হয় শিক্ষকের হাত ধরে।
Source |
---|
শিক্ষা যে শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ে মধ্যে সীমাবদ্ধ তেমন টা নয়। আমাদের স্বভাব, নৈতিকতা সবই শিক্ষার মধ্যে অন্তর্গত। আচরণগত ও নৈতিকতার শিক্ষা শুধু পরিবার থেকে নয় বরং সমগ্র শিক্ষা জীবন থেকে অর্থাৎ শিক্ষকের কাছ থেকে পেয়ে থাকি।
তবে কষ্ট লাগে, খারাপ লাগে যখন আমরা সেই শিক্ষককে উপযুক্ত সম্মান দিতে পারি না। তাদের প্রাপ্য সম্মান না দিলে তাতে তাদের সম্মান কমে যায় না বরং সেটা আমাদেরই অপূর্ণ জ্ঞানের পরিচয় বহন করে।
সর্বপ্রথম আমার শিক্ষা জীবন যার কাছে শুরু হয়েছিলো, সে আজ নেই আমাদের মাঝে। অনেক আগেই সকলকে ছেড়ে চলে গেছে।
তবে পরবর্তীতে যাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছি, সব সময় চেষ্টা করি তাদের সম্মান দেওয়া। তাদের অসম্মান হোক এমন কোনো ব্যবহার তাদের সাথে করি না।
Source |
---|
রাস্তা - ঘাটে যেখানেই তাদের সাথে দেখা হোক না কেন তাদের প্রণাম করে তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেই। হয়ত তাদের কাছ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে তবে তাদের আশীর্বাদ সারাজীবন কাজে লাগবে চলার পথে।
আমি মনে করি, তাদের যদি কোনো কারনে অসম্মান করা হয় তাহলে তাদের দেওয়া শিক্ষা আমার কোনো কাজেই আসবে না আর তাছাড়া তারা তো আমাকে এই শিক্ষা দেয় নি কখনও!
তবে দেখতে খারাপ লাগে এবং ভাবতে অবাক লাগে, এখনকার সময়ে অনেক বাবা মা ই শিক্ষকদের উচিত সম্মান দেওয়ার শিক্ষা দিতে পারেন না তার সন্তানকে।
এখন সচারাচর একটা বিষয় চোখে পড়ে, স্কুলে যদি শিক্ষকরা ছেলে মেয়েকে শাসন করে তাহলে তাদের বাবা মা আবার সেই শিক্ষকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে যে কেন তাদের সন্তানের গায়ে হাত তোলা হলো বা শাসন করা হলো?
আদৌও কোন শিক্ষা লাভের জন্য এই বাবা মা তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠায় জানি না। হয়ত তারা মনে করেন, শিক্ষা কেবল পাঠ্য বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
Source |
---|
আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন স্কুলে ভর্তি করিয়ে, বাবা - মা শিক্ষকদের বলেছিলো - আপনাদের হাতে তুলে দিলাম আপনারা যেটা ভালো মনে করেন করবেন কখনও কৈফিয়ত চাইতে আসবো না।
তাই পড়া না হলে বা অন্য কারনে স্যার যদি কখনও শাসন করতো তাহলে বাড়ি এসে সেটা বলার সাহস পাই নি কারন আমি জানতাম বাড়িতে যদি বলি তাহলে বাবার কাছে আবারও বকা শুনতে হবে।
আমার বাবা সরাসরি আমাকে বলতো- যদি কোনোদিন স্যার আমাকে বকাবকি করে বা মারে সেটার জন্য আমি নিজেই দায়ি। আমি নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ করেছি আর পড়া করিনি এজন্যই স্যার আমাকে মেরেছে তাই সেই কথা বাড়িতে বলে কোনো লাভ নেই।
ছোটবেলায় পড়া না করার কারনে তো স্কুলে অনেক মার খেয়েছি তবে যেদিন মার খেতাম সেদিন বাড়িতে ঢুকতে ভয় পেতাম কারন যদি স্যার বাবাকে বলে দেয় তাহলে বাড়িতে এসে আবারও বকা শুনবো।
তবে এখন? এখন পড়া না করে গেলে স্যাররা যদি শাসন করে তাহলে বাবা মা সন্তানকে শাসন না করে উল্টো স্যারের উপরই রাগারাগি করে।
স্কুল- কলেজে গেলে হয়ত পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করা যায় তবে প্রকৃত মানুষের মতো মানুষ হওয়া যায় না। প্রকৃত মানুষ হতে হলে পারিবারিক শিক্ষা প্রয়োজন।
বাবা-মায়ের পরে স্থান যদি কাউকে দিতে হয় আমি মনে করি শিক্ষক কে দেওয়া উচিত। শিক্ষক আমরা পরিবার থেকে যে শিক্ষা পায় না সেই শিক্ষা দিয়ে থাকে। এক জন শিক্ষক চান তার ছাত্র-ছাত্রী সব সময় মানুষের মতো মানুষ হবে। সম্মানের সাথে বাঁচবে শিক্ষক সব সময় ভালো পথে চলতে শেখান। কিন্তু কেউ সেই শিক্ষা ধরে রাখতে পারে আবার কেউ সেই শিক্ষা ধরে রাখতে পারে না। তবে শিক্ষকের সম্মান সব সময় মাথার উপরে রাখা উচিত বলে আমার মনে হয়। যাইহোক অনেক সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদমই তাই, বাবা মায়ের স্থান হলো শিক্ষকের। শিক্ষক পরিশ্রম করে চেষ্টা করেন আমাদের মানুষের মতো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক শেখান কিভাবে মানুষের সাথে ব্যবহার করতে হবে অর্থাৎ নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে থাকেন। তাই সব সময় শিক্ষকের সামনে নিজের মাথা নত রাখা উচিত। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit