ভালোবাসা, প্রেম, ভক্তি যেটাই বলি না কেন এগুলো সময়ের উপর ভিত্তি করে হয় না। ভালোবাসা যদি সত্যিকারের হয় তবে খুব অল্প সময়েই একে অপরের প্রতি অনুভূতি জন্মে যায়। ভালোবাসা পবিত্র তবে মানুষের থেকে অন্য প্রাণীদের ভালোবাসা হয়ত একটু বেশি খাটি হয়। এদের ভালোবাসা হয় স্বার্থহীন আর মানুষের ভালোবাসা? সেটা যেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বার্থ দিয়ে মোড়ানো থাকে।
আমি বিগত একটা পোস্টে আপনাদের বলেছিলাম, আমার অনেক ভালোবাসার বিড়ালটা মারা গিয়েছে হঠাৎ করে, আর এটা সত্যি আমার জন্য অনেক খারাপ লাগার বিষয় ছিলো কারন আমি নিজে হাতে ছোট থেকে বড় করলছিলাম ওকে।
সেই বিড়ালকে হারিয়ে কষ্ট পাওয়ার পর মনে মনে ঠিক করে নিয়লছিলাম যে আর কখনও বাড়িতে বিড়াল পালন করবো না। মনের মধ্যে ভয় কাজ করতো, বাড়িতে নতুন বিড়াল আনলে যদি আবার তাকেও হারিয়ে ফেলি। তাই আমার এই সিদ্ধান্তে বেশ অনেক দিন অটল ছিলাম।
তবে ছোটবেলা থেকে বাড়িতে একটা না একটা বিড়াল সব সময়ই ছিলো তাই এখন না থাকার শূন্যতা বেশ ভালো করেই বুঝতাম। তাই ভাবলাম, না! এবার বাড়িতে একটা বিড়াল নিয়ে আসতেই হবে কোথাও থেকে।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় রাস্তায় বসে আছি। তখন চোখে পড়লো একটা জীর্ণ শীর্ণ শরীরের বিড়াল এবং তার গায়ের রং ছিলো সাদা। দেখেই মনে হচ্ছিলো ঠিক মতো খেতে পারে না, শরীরের হাড় বেরিয়ে গেছে।
তখন ভাবলাম একেই বাড়িতে নিয়ে যাবো এবং একে সুস্থ করে তুলবো। তখন বিড়ালটা ধরে বাড়িতে নিয়ে এসে আগে খেতে দিলাম তবে একটুখানি খাওয়ার পর আর খেতে পারছিলো না। তবে একটু একটু করে দিন দিন বেশ সুস্থ হয়ে ওঠে।
তবে এখন বেশ ভালো আছে এবং আমি যেখানেই যাই না কেন আমার পিছনে লেগে থাকে।
অতীত |
---|
বর্তমান |
---|
আগে যে বিড়ালটা ছিলো সে যেভাবে মনের সুখে ঘুমাতো ঠিক সেভাবেই বর্তমানে যে আছে সেও ঘুমায়। দুজনের ঘুমানোর ধরনটা অনেকটাই মিল রয়েছে। তাই যখন একে দেখি অতীতের বিড়ালের কথাও খুব মনে পড়ে।
আমি যখন যেটাই খাই না কেন তাকে দিয়েই খেতে হবে। সেদিন আমি বাদাম খাচ্ছি তখন বিড়ালও খাওয়ার জন্য বায়না করছিলো। তাই তাকেও খেতে দিয়েছিলাম। এই অল্প দিনে আমার প্রতি ওর একটা ভালোবাসা আর বিশ্বাস জন্মে গেছে।
আজ পর্যন্ত অনেক বিড়াল দেখিছি তবে কোনোটিকে বাদাম খেতে দেখিনি। এই প্রথম কোনো বিড়ালকে বাদাম খেতে দেখলাম। আপনারা কোনো বিড়ালকে বাদাম খেতে দেখেছেন কিনা সেটা জানাবেন অবশ্যই!
সত্যি বলতে মানুষের যতই উপকার করি না কেন মানুষ সেটা খুব সহজে ভুলে যায়। অন্য কারো মন মতো চলতেই পারি না। সে যতই আপন হোক না কেন তার দশটা ইচ্ছা পূরন করার পর যদি একটা কথা না রাখতে পারি তাহলে সে আগের দশটার কথা মুহুর্তে ভুলে যায়।
স্বার্থেরই এই দুনিয়ার কারো স্বার্থে ব্যঘাত ঘটলেই আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে মানুষের। তবে স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসে শুধু এই প্রাণীগুলো। মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে, সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ তাহলে এই মানুষের মনেই কেন এত হিংসা আর অশান্তি।