বন্ধু্ত্বের অভিমান!

in hive-120823 •  3 days ago 

IMG_20240608_154801.jpg

Hello Everyone,,,

আশা করি, সকলে অনেক ভালো আছেন। বন্ধু ছাড়া কি জীবন চলে?

  • হয়ত না।

এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যার কোনো বন্ধু নেই। স্কুল জীবনে একাধিক বন্ধুর মাঝে কেউ না কেউ অবশ্যই থাকে যাকে আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড মনে করি।

যে আমাদের হাসি ঠাট্টায় সঙ্গ দেয়, এবং একই সাথে আমরা বিপদে পড়লে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে সেই তো বেস্ট ফ্রেন্ড। তবে বেস্ট ফ্রেন্ডদের মধ্যেও কিন্তু কখনও কখনও ঝগড়া হয়ে থাকে। কেউ কারো সাথে কথা বলে না, কেউ কারো মুখ দেখতে চায় না তবে সত্যি বলতে এটা ঝগড়া নয় এটা অভিমান!

যদিও এই অভিমানটা দুজনের কেউ বেশি দিন ধরে রাখতে পারে না কারন তারা তো নিজেদের ভিতর দুরত্ব দেখতে অভ্যস্ত নই।

IMG_20240608_154240.jpg

আমি যখন নতুন স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম তখন মনের ভিতর অনেক কিছুই ঘুরপাক করছিলো। আসলে নতুন জায়গায় নতুনদের সাথে মানিয়ে চলার কথা ভাবলে কিছু ভয় কাজ করতো আগে।

যদিও একই স্কুলে আমার আগের কয়েকজন বন্ধুও ভর্তি হয়েছিলো। তবে আশ্চর্যজনকভাবে কিভাবে কিভাবে জানি আমরা তিনজন সব সময় একসাথে চলা শুরু করলাম।

এই তিনজনের মধ্যে আমি একজন আর আমার সাথে কৌশিক ও আবু মুছা। কৌশিকের কথা তো আপনাদের সাথে আগেও বলেছি কিন্তু আবু মুছার কথা কখনও বলা হয় নি।

স্কুলে গেলে প্রতিদিন এক বেঞ্চে বসতাম আমরা তিনজন। কারো সাধ্য ছিলো না আমাদের তিনজনকে আলাদা বসানোর।

খেলাধুলা, টিফিন করা সবই একসাথে। তবে একদিন কৌশিকের সাথে আমার ভীষণ ঝগড়া হয়। ক্রিকেট খেলার সময় আমরা দুজন বিপরীত দলে ছিলাম তখন ওর সাথে আমার ঝগড়া হয়।

ঝগড়াটা এতই মারাত্মক আকারে হয় যে, তারপর থেকে আর ওর সাথে কথা বলতাম না আর কৌশকও আমার সাথে কথা বলতো না। আমাদের তিনজনের বন্ধুত্বে ভাঙ্গন ধরে।

সেই মুহুর্তে আবু মুছা সব সময় চেষ্টা করতো আমাদের দু'জনকে আগের মতো মিলিয়ে দিতে। একবার আমার কাছে এসে আমাকে বুঝাতো, একটু পর কৌশিকের কাছে গিয়ে ওকে বুঝাতো। তবে কোনো কাজ হতো না।

কোনো উপায় না পেয়ে একদিন আবু মুছা প্লানিং করে স্কুলের অন্য বন্ধুদের সাহায্যে আমাকে আর কৌশিককে ধরে নিয়ে একটা ক্লাস রুমে আটকে রাখে টিফিনের সময়। এই ক্লাস রুমে ক্লাস হতো না তাই অন্য কেউ তেমন আসতো না তাই ওর কাজে কোনো বাঁধাও হয় নি।

আবু মুছা আমাদের শর্ত দিলো!

IMG_20240112_201843.jpg

যতক্ষণ না আমরা একে অপরের সাথে কথা বলবো ততক্ষণ আমাদের আটকে রাখবে।

আমরা দু'জনই তো সেই মুহুর্তে রেখে আগুন। দু'জনই আবু মুছার উপর রাগ করছি তবে তাতে ওর কিছু যায় আসে না। ওর একটাই লক্ষ্য আমাদের মধ্যে আগের মতো সম্পর্ক তৈরি করা।

অনেক সময় এভাবে আটকে থাকার পর অবশেষে আমরা একে অপরের সাথে কথা বললাম এবং দুজনই হেঁসে দিলাম অজানা এক কারনে।

জীবনে এমন বন্ধু পেয়েছি যে আমার নানা সমস্যায় পাশে দাঁড়িয়েছে আবার এমনও বন্ধু পেয়েছি, যাকে আমি সাহায্য করেছি কিন্তু তার বিপরীতে সে আমাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে।

বন্ধুত্ব কোনো ধর্ম - বর্ণ বিবেচনায় হয় না। সেদিন আবু মুছা না থাকলে আমাদের কি হতো জানি না তবে অনেকেই আজকাল ধর্মে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করে যেটার ঘোর বিরোধী আমি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

@tanay123 এই একটা সম্পর্ক অনেক সম্পর্ককে হার মানতে সক্ষম যদি খাঁটি হয়!
বন্ধুত্বের কোন জাত হয়না, এটা যারা বুঝতে সক্ষম তাদের মনে আপনার লেখার শেষাংশর কথাগুলো মূল্যায়ন সম্ভব।

বাকি, এখন মানুষ সামনে এক রকম আচরণ করে, আর মনে মনে অন্য অঙ্ক কষে বেড়ায়।

এটা সম্পূর্ণ নিজস্ব মানসিকতা যেটা পরিবর্তন সম্ভব নয়, তাই আপনাদের বন্ধুত্ব অটুট রাখুন এবং থাকুক সেই কামনা করি।

আপনার বন্ধুদের মানসিকতায় যেন সময় পরিবর্তন নিয়ে নিয়ে না আসতে পারে সেই কামনা করি।

বন্ধুত্বের মধ্যে ভালোবাসা, আবেগ, সম্মান, আস্থা সবই থাকে তবে ধর্ম নিয়ে কোনো ভেদাভেদ থাকে না প্রকৃত বন্ধুত্বে। যাদের মনে ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ করার মানসিকতা রয়েছে মূলত তাদের কারনেই সমাজে এত হানাহানি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে মতামত প্রদানের জন্য। ভালো থাকবেন।

ঠিকই বলেছেন দাদা, বন্ধুত্বের কোন জাত হয় না ধর্ম হয় না, বন্ধুত্ব এমন একটি সম্পর্ক যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়! আর ছোটবেলার বন্ধুবান্ধবগুলো বা বেস্ট ফ্রেন্ড গুলো এরকমই হয়ে থাকে। আমার কাছে মনে হয় বন্ধু জিনিসটা এরকম একটা সম্পর্ক যা রক্তের বাঁধনকেও হার মানায় মাঝে মাঝে, আপনার পোস্টটি পড়ে আপনার দুইটা বেস্ট ফ্রেন্ডের নাম ও ছবি দেখতে পারলাম, আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালই লাগছে। খুব সুন্দরভাবে আপনার বন্ধুত্ব সম্পর্ক উদাহরণস্বরূপ আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন, এর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

বন্ধুত্ব সম্পর্কটা যদি খাঁটি হয় তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি থাকে না তাদেরকে আলাদা করার মতো। এবং বন্ধুত্বের মধ্যে ঝগড়া অভিমান রাগ সবকিছু থাকবে এটা স্বাভাবিক। তবে এই রাগ-অভিমান গুলো খুব বেশি দিন থাকে না। যেহেতু আপনার বন্ধুর সাথে আপনার ছোট্ট একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা বন্ধ ছিল। কিন্তু আপনার অন্য আরেকটি বন্ধু সে তার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছে আপনাদের দুজন কে মিল করিয়ে দেয়ার জন্য। বিষয়টি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে এবং এই বিষয়ে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা দেখে আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত। চিরকাল বেঁচে থাকুক আপনাদের এই বন্ধুত্ব এই দোয়া করব সব সময় ভালো এবং সুস্থ থাকবেন।