অনাকাঙ্ক্ষিত সকাল!

in hive-120823 •  15 days ago 

Hello Everyone,,,

প্রতিটা দিনেই মানুষ নতুন কিছু শেখে, বলতে গেলে সৃষ্টিকর্তাই তাকে শেখায়। এমন কোনো দিন নেই যেদিন আমরা সামান্য কোনো শিক্ষা পাই না আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার থেকে।

খুব সামান্য কোনো কিছু থেকেও অনেক বড় শিক্ষা নেওয়া সম্ভব যদি কিনা কারো শেখার ইচ্ছে থাকে।

আমরা সাধারণত ভুল করে শিখি হয়ত বা অন্য কারো কার্যকলাপ দেখে শিখি। একটা কথা আছে শিক্ষার কোনো শেষ নেই।

সব সময় যে ছোটরা ভুল করবে আর সেটা থেকে শিক্ষা নিবে এমনটা না, বড়রাও মাঝে মাঝে অনেক বড় ভুল করে এবং সেটার থেকে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

IMG_20240619_161410.jpg

ছোটদের ভুলের পরিনাম হয়ে থাকে সামান্য পরিসরে তবে বড়দের ভুলগুলোর ফলাফল হতে পারে মারাত্মক ভয়ংকর যেটা কখনও কখনও কারো জীবন নাশের কারনও হতে পারে।

অন্যের ভুলের পরিনাম যেমন আমাদের উপর পড়ে তার তাই অন্যের ভুল দেখে আমাদের সকলেরই শেখার আছে। আজ সকাল হতে না হতেই এমন একটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হবে সেটা কল্পনাও করিনি।

আজ রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি তার একটাই কারন অতিরিক্ত গরম । রাতের বেলায় পোস্ট লেখা শেষ করে ২.৩০ মিনিট নাগাদ ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত রাত ৩ টা নাগাদ কারেন্ট চলে যায়। অপেক্ষায় আছি কখন কারেন্ট আসবে কিন্তু রাতের ভিতর আর কারেন্ট আসলো না। জানি না কেন এমন হলো।

IMG_20240619_095306.jpg

গরম যেন গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিলো এজন্য ঘুমাতেই পারিনি। সকালেও কারেন্ট আসলো না তাই বাধ্য হয়ে ৭ টা নাগাদ উঠে ফ্রেশ হয়ে রাস্তায় হাঁটতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। যদিও আজ সকাল থেকে ধূসর মেঘে আকাশ ছেয়ে গিয়েছে, বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অনেক দিন পর বৃষ্টি হবে, চারপাশ একটু শীতল হবে এটা কল্পনা করতেই ভালো লাগছিলো।

যাই হোক রাস্তায় হাঁটতে গিয়েছি এবং এদিন ওদিক কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করে আমাদের বাড়ি আসার রাস্তার সামনে দাড়িয়ে আছি।

IMG_20240619_113349.jpg

আমার ডান দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটা ভ্যান গাড়ি আসছে। গাড়ির একপাশে একটা মহিলা তার ছোট্ট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে আছে। বাচ্চাটার বয়স সবেমাত্র কয়েক মাস হবে আর অন্য পাশে একটা মেয়ে বসে আছে হয়ত স্কুলে যাচ্ছিলো।

আর আমার বাম দিক দিয়ে একটা ছোট ছেলে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে আসছিলো। ছেলেটা আমার থেকে বেশ খানিকটা দুরে ছিলো।

ভ্যানটা আমাকে ক্রস করে সামনে দিকে চলে গেলো। গাড়িটা খুব বেশি জোরে চালাচ্ছিলো না, তখন হঠাৎ করে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া বাচ্চাটা গাড়ির সামনে চলে আসে।

তখন এমন একটা পরিস্থিতি সামনে আসে যে, গাড়ি সোজা চালালে ঐ বাচ্চাটার গায়ের উপর দিয়ে চলে যাবে।

ঐ বাচ্চার যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য গাড়ির ড্রাইভার ব্রেক অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয় এবং গাড়ি ও গাড়িতে থাকা লোকজনসহ রাস্তার পাশের খালের মধ্যে গিয়ে পড়ে।

IMG_20240619_115411_677.jpg

খালে হাঁটু পর্যন্ত জল ছিলো। শুধুমাত্র ঐ ছেলেটাকে রক্ষার কথা ভেবে গাড়ি সহ খালে গিয়ে পড়েছে। সামান্য একটু হলেই পাশে পুতে রাখা বাঁশের সাথে মহিলার কোলে থাকা বাচ্চার আঘাত লাগলো। তবে সেই মহিলার হাতে আঘাত লেগে তার হাতের শাখা ভেঙে গিয়েছে এবং গাড়ি চালকের হাত কেটে গিয়েছেন।

যাক সৃষ্টিকর্তার কৃপায় কারো বড় ধরনের ক্ষতি হয় নি। এখন প্রশ্ন হলো- এই দুর্ঘটনার পিছনে দোষটা কার?

রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া ছোট বাচ্চাকে তো দোষ দেওয়া যায় না কারন ওর তো এখনও ভালো- মন্দ, উচিত - অনুচিত এর বিচার করার মতো জ্ঞান হয়নি।

আমি মনে করি দোষ হলো- ছোট ছেলেটার পরিবারের কারন বাড়িতে এমন ছোট বাচ্চারা থাকলে তাদের উপর সব সময় নজর রাখা উচিত, যেন তারা নিজে নিজে রাস্তায় চলে না আসে।

কিন্তু এক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন হয়ত খেয়াল করেনি এজন্য বাচ্চাটা রাস্তায় চলে এসেছিলো আর তারপর সেটা হওয়ার সেটাই হলো।

ঈশ্বর সহায়তা করেছে বলে বড় ধরনের ক্ষতি হয় নি তবে যদি এখানে কোনো বড় আকারে দুর্ঘটনা ঘটে যেত তাহলে এর জবাবদিহিতা কে করতো।

ঈশ্বর হয়ত সকলে শিক্ষা দেওয়ার জন্যেই মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতির সামনে দাড় করায় আমাদের। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে অন্তত বুঝতে পেরেছে যে বাচ্চাদের উপর সব সময় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। সবাই যদি এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয় তাহলে এই বিষয়ে নিজেরা আরও বেশি সচেতন হবে আশা করি।

END
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

ঠিক বলেছেন ভাই শিক্ষার কোন শেষ নাই ছোটরা বড়দের কাছে শিখতে পারে এবং বড়রা উৎসরুদের কাছে অনেক কিছু শিখতে পারে শুধু ছোটদেরই ভুল হবে সেটা একদমই অসম্ভব বড় দলে ভুল হবে মানুষ বলতে কি শিক্ষা নেই আবার দেখতে দেখতে শিক্ষা নেই। এটা ঠিক বলেছেন প্রতিদিন কিছু না কিছু সবাই শিখতেছে।

আসুন সত্যি কথা আল্লাহতালা সামনে এরকম পরিস্থিতি তৈরি করে ওইখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি।

ধন্যবাদ ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন

শিক্ষার কোনো শেষ নেই, আমরা আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার থেকে অনেক শিক্ষা নিতে পারি। ভুল সব সময় ছোটরা করে না বড়রাও করে। মানুষ মাত্রই ভুল করে আর এই ভুলগুলো থেকে আমাদের সকলের শেখা উচিত। আজ যে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটা সত্যিই খুব ভয়াবহ হতে পারতো তবে ভাগ্যের জোরে বেচে গিয়েছে সবাই। আসলে বাচ্চাদের এমন একা রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া ঠিক না। ভালো থাকবেন।

বাচ্চাদেরকে ছোটবেলা থেকেই অনেক কিছুরই শিক্ষা দিতে হয়। এর মধ্যে অনেক জরুরি ব্যাপার হলো রাস্তাঘাটে কিভাবে চলতে হবে। আর বাচ্চা যদি এতটাই ছোট হয় যে এই জিনিসগুলো এখনো বুঝতে পারে না তাহলে সে বাচ্চাকে চোখে চোখে রাখা উচিত।

এ ধরনের ঘটনায় অনেক সময় বড় দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। তাই সকলেরই সচেতন হওয়া উত্তম। আপনার ব্যতিক্রম ধর্মী লেখাটি পড়ে ভালো লেগেছে।

হ্যা এটা ঠিক যে বাচ্চাদের সব সময় কিছু না কিছু শেখানো উচিত। আপনি ঠিকই বলেছেন ছোট বাচ্চাদের রাস্তা পার হওয়ার বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া উচিত কারন এটা অনেক বেশি জরুরি। তবে আজকের এই বাচ্চাটার বোঝার মতো এখনও হয় নি তাই ওকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এমন ছোট বাচ্চাদের রাস্তায় একা ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, সব সময় ওদের উপর নজর রাখা উচিত। ভালো থাকবেন।

রাত্রে বেলা লোডশেডিং এর কথা একবারই বলবেন না। আসলে ঘুমানোর সময় যদি কারেন্ট না থাকে, তাহলে অতিরিক্ত গরমে ঘুম আসে না। এটা আমারও মাঝে মাঝে হয়ে থাকে, তাই সকালবেলা উঠেই আমি ঠান্ডা হওয়ার মধ্যে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করি। যার কারণে মোটামুটি আমার কাছে একটু ভালো লাগে।

আজকে যেই ঘটনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আমিও আপনার সাথে একমত পোষণ করছি। কেননা এই ধরনের ছোট বাচ্চাদেরকে রাস্তার মধ্যে ছেড়ে দেওয়াটা একেবারেই উচিত নয়। যে কোন মুহূর্তে যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই অবশ্যই পরিবার থেকে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

আপনার শেয়ার করা ঘটনা থেকে আমাদের সবার অবশ্যই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, এবং নিজেদের যদি ছোট বাচ্চা থাকে অবশ্যই তাদেরকে অনেক বেশি সতর্কতার সাথে রাখতে হবে। আমি ভ্যান চালককে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবো, কেননা তিনি একটা বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও কষ্ট পেয়েছে, এবং ভ্যানে থাকা মানুষ গুলোকে ও কষ্ট দিয়েছে। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

রাতে যদি ঘুমানোর সময় কারেন্ট না থাকে তাহলে অনেক বেশি বিরক্তিকর লাগে। আজ আমার সাথে এটাও হয়েছে৷ সারা রাত কারেন্ট ছিলো না তাই ঘুমাতে পারে নি।

আজ সকাল অনেক বড় শিক্ষার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে। বাচ্চাদের এমন একা ছেড়ে দেিয়া কখনওই উচিত নয় এটা অনেক বড় দুর্ঘটনার কারন হতে পারে। হ্যা ঠিক বলেছেন শ ভ্যান চালককে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হবে কারন ওনার বুদ্ধির জন্যই বাচ্চার কোনো ক্ষতি হয় নি। ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে দূর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না।তবে আমাদের সব সময় একটা কথা ভাবা উচিত, একটি দূর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না।তাই পথ চলার সময় সতর্ক হয়ে চলতে হবে।আপনার চোখের সামনে সকাল সকাল এমন একটা ঘটনা ঘটে গেছে।নিশ্চয়ই একটা খারাপ অনুভূতি হয়েছিলো আপনার।তাছাড়া আগের রাতে ঘুমাননাই।এতে আপনার এমনিতেই খারাপ লাগার কথা।তার উপর এই ঘটনা।ধন্যবাদ আপনাকে এই রকম একটা এক্সপেরিয়েন্স আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

একদমই তাই বিপদ বলে কয়ে আসে না তাই আমাদের সকলের সাবধানে চলা উচিত সব সময়। একটা ভুলের কারনে ঘটো যেতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা আর এর কারনে জীবনে অনেক বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সকাল সকাল এমন একটা ঘটনার সাক্ষী হবো সেটা আশা করি নি। সকালে উঠে প্রতিদিনের মতোই হাঁটতে গিয়েছিলাম তবে দিনের শুরুটা এমন অবস্থার মধ্যে দিয়েই হলো। ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন।

আপনার সাথে আমি সহমত পোষণ করছি ভাই। আসলেই শিক্ষার কোন শেষ নেই।
হয়তো কোন কাজ করার ক্ষেত্রে ভুল করার মাধ্যমে মানুষ শিখে নয় তো কাউকে দেখে শিখে।
একজন ছোট বাচ্চার নিজের পরিবার হলো সবথেকে বড় শিক্ষক। তবে আলহামদুলিল্লাহ আপনার পোস্ট পড়ে যা জানতে পারলাম তেমন বড় ক্ষতি হয়নি।

সুন্দর একটি বিষয়বস্তু নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

সারাজীবন ধরে মানুষ শেখে। বারবার ভুল করার মাধ্যমেও মানুষ শিখতে পারে আবার অন্যের কাজ করা দেখেও শেখে। বাচ্চাদের এখন থেকে রাস্তা পারাপার বা এমন অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে না হলে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভালো থাকবেন।