স্বার্থের দুনিয়া!

in hive-120823 •  last month 

এই দুনিয়াটা বড়ই আশ্চর্যজনক। কখন যে কার মন কি চায় সেটা বলা মুশকিল। পরিস্থিতি বদলানোর সাথে সাথে আপন মানুষগুলোও যেন বড্ড অচেনা মনে হয়। আপন মানুষগুলো রূপ বদলে ফেলে। তখন মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে কাদের আপন ভাবতাম এতদিন? তাহলে কি সেই মানুষগুলো মুখোশ পরে ছিলো এতদিন!

IMG_20240924_002206_992.jpg

হয়ত তাই। না হলে এত দিন পর কেন তাদের অচেনা মনে হবে। কিন্তু কেন?

কেন তারা পরিস্থিতির সাথে সাথে নিজের আসল রূপ টা না দেখিয়ে মুখোশ পরে ছিলো। যদি এত দিন তারা তাদের প্রকৃত রূপটা দেখাতো তাহলে আর অচেনা মনে হত না।

এতদিন তো সবাই ঠিকই ছিলো, কতই না আপন সেজে থাকার অভিনয় করে গিয়েছে। ছোট্টবেলা থেকে সবার অনেক আদরে বড়ো হয়েছি। সেই তখন থেকে যাদের ছত্রছায়া বড় হয়েছি সেই প্রিয় মানুষগুলোর মধ্যে অনেককেই আজ প্রথমবার দেখছি এমন মনে হচ্ছে।

সময় ও পরিস্থিতি হলো মানুষের প্রকৃত বন্ধু কারন পরিস্থিতি আমাদের প্রকৃত আপনজন চিনতে সাহায্য করে। কে আমাদের আপন আর কে আপন হওয়ার মুখোশ পরে আছে সেটা পরিস্থিতি আমাদের খুব ভালো ভাবে বুঝিয়ে দেয়।

IMG_20240924_002204_281.jpg

স্বার্থ এমন একটা জিনিস যেটা না দেখা যায় আর না ছোয়া যায় তবে স্বার্থের কারনে যদি আপন মুখ গুলোর হাসি বদলে যায় তাহলে সেটা অনুভবই করা যায় শুধুমাত্র।

যখন জীবনের সকল পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকবে অর্থাৎ সুখের সময় সবাই পাশে থাকে। সবাই সুখের ভাগিদার হতে চাইবে এবং এমন একটা ভান করবে যেন তারা সুখের ন্যায় দুঃখের সময়ও একইভাবে পাশে থাকবে।

IMG_20240924_002202_755.jpg

তবে যখন সূর্যাস্তের ন্যায় জীবনের সুখের মুহুর্তগুলো অস্তনিত হয় তখন সেই আপন মানুষগুলোর মুখটা অচেনা মনে হয়। সুখের ভাগ সকলে নিলেও দুঃখের ভাগিদার হতে চায় না অধিকাংশ মানুষই। স্বার্থ ছাড়া সারাজীবন যদি কেউ পাশে থাকে তারা হলো বাবা- মা।

আমাদের আশেপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের আপনি কোনোভাবেই তুষ্ট করতে পারবেন না। আপনি যদি তাদের ৯ টা ইচ্ছা রাখেন আর ১ টা ইচ্ছে পূরণ না করতে পারেন তাহলে তার কাছে আপনি হয়ে যাবেন সব থেকে খারাপ মানুষ।

এটাই হলো স্বার্থবাদী মানুষের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য।

আর এই প্রকৃতির মানুষগুলোকে খুশি করার ব্যর্থ চেষ্টা করা আমরাই হলো পৃথিবীর সব থেকে বোকা!

IMG_20240924_002141_552.jpg

আমি যতই এই মানুষগুলোকে সাহায্য করার বা খুশি রাখার চেষ্টা করি না কেন তাদের মন ভরবে না কিছুতেই। এই মানুষগুলো মিষ্টি কথায় মন ভোলাতে খুব বেশি পারদর্শী হয়ে থাকে।

আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার কোনো শত্রু নেই। তবে আমি আমার শত্রুর সাথেও ভালো ব্যবহার করি কারন হতে পারে সে আমাকে শত্রু মনে করে। তবে শত্রুর প্রতি আমার ভালো ব্যবহারের কারনে শত্রুও আমার অনেক বড় বন্ধু হতে পারে কোনো একদিন, এটাই মনে করি আমি!

কেউ যদি আমাকে হিংসা করে বা আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাহলে সেই প্রতিশোধ নিতে আমিও যদি তার সাথে এমন করি তাহলে এই একে অপরের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিযোগিতা কোনো দিন থামবে না। তাই একজন নিরব থাকাই ভালো।

[ ছবিগুলো পূর্বেও পোস্টের মধ্যে ব্যবহার করেছি ]

END
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আশেপাশের মানুষগুলিকে আরো ভালোভাবে চিনতে পারে। সেটা পরিবারেরই হোক কিংবা পরিবারের বাইরের মানুষই হোক। মুখোশে ঢাকা পারে মানুষ দেখতে দেখতে ভয় লাগে। কে আসল কাছের মানুষ আর কে যে মুখোশ পারে চেনা দায়। চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার পোস্টটি সত্যিই বাস্তব ধারণার গুলোর সাথে মিলে যাচ্ছে । আমরা যাদের আদার, ভালোবাসা পেয়ে বড় হয়েছি, আজ স্বার্থের জন্য তারাই মনে হচ্ছে অচেনা মানুষ ।

প্রতিনিয়ত আয়নায় মানুষের সুন্দর প্রতি ছবি দেখে , সেই আয়নাতে যদি তাদের ভিতরের আসল প্রতি ছবি দেখা যেত তাহলে তারা নিজেরাই ভয় পেয়ে যেত। এত সুন্দর রূপের মাঝেও কিছু ভয়ঙ্কর চরিত্র লুকিয়ে থাকে ।যেগুলো বাহিরে প্রকাশ পায় না ।

আমাদের সবথেকে বেশি ক্ষতি হয় নিজের আপন মানুষ থেকে। স্বার্থ এমনই ,যা পরম বন্ধুকে পরম শত্রুতে পরিণত করেতে পারে।

অপরিচিত কারো কাছ থেকে আঘাত পেলে কষ্ট লাগে না কিন্তু নিজের পরিচিত চেনা মানুষ গুলোর কাজ থেকে আঘাত পেলে , সে আঘাত কখনো ভুলে থাকা যায় না ।
আপনার পরবর্তী পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ।

মানুষ স্বার্থের জন্য সব কিছু করতে পারে। অন্য মানুষ বিশ্বাস ভাঙ্গলে যতটা না কষ্ট লাগে তার থেকেও কয়েক গুন বেশি কষ্ট লাগে আপন মানুষ যখন নিজের অবস্থার পরিবর্তন করে। স্বার্থের জন্য আপন মানুষও ছেড়ে যেতে একবার ভাবে না। ভালো থাকবেন।