একটি বিষণ্ণতাময় দিন

in hive-120823 •  3 months ago  (edited)

আজকাল হুটহাট মন খারাপ হয়ে যায়। আজকেও একি অবস্থা। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাইরের আবহাওয়া বেশি ভাল না। মেঘ থেকে থেকে ডেকে উঠছে। তিন চারদিন ধরে আবহাওয়ার একি অবস্থা । কিন্তু আজকে একটু বেশিই খারাপ। ইচ্ছে হচ্ছে আর একটু শুয়ে থাকি। কিন্তু তা করলে তো হবে না, সংসার জীবন বলে কথা। ইচ্ছে না থাকার সত্বেও কাজ করতে হয়। তাই ভাবলাম ছাদে গিয়ে একটু মনটা রিফ্রেস করে আসি। আজকে গাছে ফুলগুলো খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে যেন আরও বেশি প্রানবন্ত দেখাচ্ছিল।

PXL_20240630_032253190~2.jpg

PXL_20240630_032005098~2.jpg

PXL_20240630_032332892~2.jpg

কিন্তু একটু দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই আবার বৃষ্টি পড়া শুরু করল। তাই আবার মন খারাপ নিয়ে ঘরে চলে এলাম। এসে নিত্য দিনের কাজ শুরু করে দিলাম। কিন্তু কোন কাজেই মন বসাতে পারলাম না। তাই জানালার পাশের চেয়ারটায় বসে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে অতীতের জীবনের কথা ভেবে আফসোস করতে থাকলাম। আহ! কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো। এমন বৃষ্টিমুখর দিনে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ইচ্ছেমতো যতক্ষণ খুশি ঘুমাতে পারতাম। কোন কাজের চাপ নেই, কারো কথা শোনার ভয় নেই। মনমর্জির মালিক নিজেই ছিলাম। আচমকা হুশ ফিরলো ছেলের কান্নার শব্দে। ছেলে ঘুম থেকে উঠে গেছে। আবার ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। সব কাজকর্ম শেষ করে একটু বিছানায় গা মিলিয়ে দিলাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। কিছু খেতেও ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে হচ্ছে না বললে ভুল হবে কেননা খিদে পেয়েছে কিন্তু আলসেমির কারণে খেতে ইচ্ছে করছে না। আজকে যদি মা কাছে থাকতো তাহলে জোর করে নিজ হাতে খাইয়ে দিত। খুব মিস করি মায়ের হাতের খাওয়া। কি সুন্দর, এক থালা ভাত মার বকা শুনতে শুনতে কখন যে খেয়ে ফেলতাম টেরই পেতাম না। ভাত খাচ্ছি না যেন মনে হতো অমৃত খাচ্ছি। আর এখন একটু খেলেই আর খেতে ইচ্ছে করে না। এইসব ভাবতে ভাবতে নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে এলো। তাড়াতাড়ি করে চোখের জল মুছলাম, কেউ দেখে ফেললে আবার হাজারটা কৈফিয়ৎ দিতে হবে। আচ্ছা বিবাহিত মেয়েদের জীবনটা এমন কেন? নিজের ইচ্ছের কোন দাম নেই। অন্যের ইচ্ছেমতো চলতে হয়। নিজের খুশি বিসর্জন দিয়ে অন্যদের কিভাবে খুশি রাখা যায় এটাই মনে হয় বিবাহিত মেয়েদের জীবনের ধর্ম।

যাই হোক, নিজেকে আবার কাজে ব্যস্ত করে ফেললাম। যাতে মন খারাপের কথা ভুলে যেতে পারি। সারাদিনের কাজকর্ম শেষ করে বিকেলে একটু ছাদে গিয়েছিলাম। আজকের সারাদিনের আবহাওয়া একই রকম ছিল। মনে হচ্ছে বিষন্নতা প্রকৃতিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। বৃষ্টি তখনও গুড়ি গুড়ি পড়ছিল।

PXL_20240630_125244378~2.jpg

PXL_20240630_125347775.MP~3.jpg

তবুও দাঁড়িয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ। সন্ধ্যা হওয়ার আগে ঘরে চলে এলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমেই আপনাকে আমাদের কমিউনিটিতে স্বাগত জানাই। যদিও নেটওয়ার্কের কারনে আপনার সাথে ভালো ভাবে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে জেনে ভালো লাগলো, আমাদের একজন পুরোনো সদস্যর মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্ম তথা এই কমিউনিটির বিষয়ে জানতে পেরে, আপনি এখানে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

আপনার লেখনী বেশ ভালো। তবে ছোটো ছোটো প্যারাগ্রাফে লেখার চেষ্টা করবেন। বর্ষামুখর দিন কখনো কখনো ভালোলাগা বয়ে আনলেও, কখনো কখনো আবার অজানা কারনেই মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।আপনার তোলা ছবিগুলো খুব ভালো, শুধু ছবিগুলো তোলার সময় কিভাবে তুলতে হয় জেনে নিয়ে, যদি পোস্টে ব্যবহার করেন, তাহলে পোস্টের সৌন্দর্য্য আরও ভালো হবে।

সবশেষে বলবো, যে নিয়মগুলো আপনাকে বলা হয়েছে সেগুলো খেয়াল রাখবেন। অবশ্যই ডিসকর্ডে অ্যাক্টিভ থাকবেন। আর ক্লিয়ার ডাউট চ্যানেলে গিয়ে হ্যাশট্যাগ বিষয়ক প্রয়োজনীয় পোস্ট পড়ে নেবেন। ভালো থাকবেন।

আপনার দিনটা আসলে অনেক সুন্দর ছিল পরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আপনি এত সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যেটা দেখতে আসলে অসাধারণ ছিল।

কমিউনিটিতে আপনাকে স্বাগতম। আপনার লেখনির পাশাপাশি ছবির হাতের প্রশংসা না করে পারছি না। ছবিগুলো দুর্দান্ত হয়েছে। বর্ষাকাল চলছে তাই ঘনঘন বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। আমিও সময় পেলে প্রায় প্রায় ছাদে চলে যাই। ছাদের সময় কাটাতে আমার খুবই ভালো লাগে। অতীতের কথা মনে পড়ে খানিক সময় আপনি বিষন্ন হয়েছিলেন। আসলে সময় এরকমই। দেখতে দেখতে পার হয়ে যায়। আর যে সময় একবার চলে যায় তা কখনো ফিরে আসে না। আমাদের জন্য রেখে যায় শুধু স্মৃতি। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। কমিউনিটিতে আপনার যাত্রা শুভ হোক সেই কামনা করি।