
source
'জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো'। উক্তিটির সাথে জড়িয়ে আছে মানুষের বাস্তব জীবন। অথচ, আপন জন্মে মানুষের নিজেরই হাত নেই! তাতে কি? সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহই বড় জিনিস! জীবনের অগ্রগামী হওয়ার পিছনে আপন ইচ্ছাই সরচেয়ে বড় শক্তি। ইতিহাসে আজকের দিনে বা আজকের তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক মানুষই। জন্মের সাথে কেউ জীবনের গন্তব্য নিয়ে আসে না। তা নিজেকেই ঠিক করে নিতে হয়। যেমন ধরুন, ১৯৭৪ সালে জন্মগ্রহণ করা তিলকারত্নে দিলশান কি জানতেন তিনি বড় হয়ে একজন নামকরা ক্রিকেটার হবেন? জানতেন না। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে নিজকে একজন ক্রিকেটার হিসেবে গড় তুলতে চেয়েছেন আর সফলও হয়েছে। চলুন ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে আকজকের দিনে জন্মগ্রহণ করা ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি সেরা একাদশ গঠনের চেষ্টা করি।

source
১. তিলকারত্নে দিলশান
২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে বাদ পড়ার পর জাতীয় দলের দরজা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল তার জন্য। তারপর সনাথ জয়াসুরিয়ার অবসরের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করে ফিরে আসেন জাতীয় দলে। মিডেল অর্ডার থেকে ওপেনার বনে যান। কিন্তু জাতীয় দলে ফিরে আবারও ব্যর্থতার স্বীকার হন তিনি। বাদ পড়েন দল থেকে। আবারও ২ বছরের অপেক্ষা। ২০০৯ সালে হঠাৎ দলে ডাক পান তিনি। ক্যারিয়ারে এমন উত্থান পতনের পরও নিজেকে নিয়ে বেশ আত্নবিশ্বাসী ছিলেন দিলশান। তাই তো এই বার আর সু্যোগ হাত ছাড়া করলেন না। পারফরম্যান্স দিয়ে ওডিআইয়ের পর, টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে ওপেনার হিসাবে নিজেকে নিয়মিত করেন দলে। বছরের মাথায় হাঁকালেন ১১ সেঞ্চুরি। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও জাতীয় দলে নিয়মিত হতে লেগেছিল ১০ বছর। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। টেস্টে ৫ হাজার, ওডিআইতে ১০ হাজার ও টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি রান করেছেন তিলকরত্নে দিলশান। আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান ১৯৭৪ সালে আজকের দিনে শ্রীলঙ্কার কালুতারায় জন্মগ্রহন করেন।

source
২. গৌতম গাম্ভির
২০০৭ থেকে ২০১১ সাল, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছিলেন ভারতের ওপেনার গৌতম গাম্ভির। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর নিজেকে ভারতের অন্যতম একজন বিচক্ষণ ক্রিকেটার হিসেবে প্রমান করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৪ অক্টোবর দিল্লিতে তার জন্ম। ভারতের হয়ে টেস্টে ৪ হাজার, ওডিআইতে ৫ হাজার ও টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ১ হাজার রান করেন তিনি।

source
৩. শান মাসুদ
পাকিস্তানি ওপেনার সাঈদ আনোয়ার সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে ইংরেজ ঘঁটিতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ব্যাট উঁছিয়ে ধরেছিলেন। এরপর কেটেছে ২৪ বছর। আর কোন পাকিস্তানি ওপেনার এর মাঝে সেঞ্চুরির দেখা পাননি। সে আক্ষেপ ঘুছিয়ে ২০২০ সালে শান মাসুদের ব্যাটে আসলো সে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি। এরই মধ্যে টানা তিন সেঞ্চুরির রেকর্ডও করেন। যেখানে তার টেস্ট সেঞ্চুরিই মোট ৪টি! এখন পর্যন্ত ২৫ টেস্ট খেলা শান মাসুদের রান প্রায় ১৩'শ। পাকিস্তানের হয়ে খেললেও মাসুদ যে একজন ভীনদেশী। ১৯৮৯ সালে কুয়েতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পাকিস্তানের অনুর্ধ্ব-১৫ দলে জায়গা করে নেন।।

source
৪. গ্লেন ম্যাক্সওয়েল
সাদা বলের একজন মারমুখী ব্যাটসম্যান। বড় বড় শট, দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী একজন তিনি। এ অসাধারণ দক্ষতার জন্যই অজিদের ওডিআই, টি-টোয়েন্টি দলের একজন নিয়মিত সদস্য বনে যান। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। এর আগে ওডিআইতেও ভারতের বিপক্ষে ২০১৩ সালে ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। এছাড়া ওডিআইতে ৫১ বলের একটি দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে তার। ১৯৮৭ সালে মেলবোর্নে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান।

source
৫. রশিদ লতিফ
পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান রশিদ লতিফ ১৯৬৮ সালের ১৪ অক্টোবর করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১১ বছরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে স্বদেশের হয়ে ৩৭টি টেস্ট ও ১৬৬টি ওডিআই ম্যাচ খেলেন। ক্রিকেট মাঠের চেয়ে বাহিরের ঘটনার জন্য তিনি বেশি আলোচিত একজন ব্যাক্তি। ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ের মতো নেক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেওয়াদের একজন তিনি। তাদের মাঝে প্রতিভার ঘাটতি ছিল না।

source
৬. অ্যাস্টন অ্যাগার
অ্যাস্টন অ্যাগার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে জন্মগ্রহণকারী এক বামহাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলার। ২০১৩ অ্যাশেজে অভিষেক টেস্টে ১১ নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে নেমে ৯৮ রানের ইনিংস খেলে সবাইকে চমকে দেন তিনি। অভিষেক স্মরনীয় হলেও জাতীয় দলে এখনও নিয়মিত হতে পারেননি অ্যাগার। আসা যাওয়ার মাঝে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে খেলেছেন ৫৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। যাতে তার উইকেট সংখ্যা ৬৫ টি।

source
৭. ডগ রিং
১৯৪৮-৫৩ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সাদা পোশাকে খেলেছেন ডগ রিং। ১৯১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন অলরাউন্ডার হলেও করো কারো মতে তিনি একজন হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান ছিলেন। যদিও ১৩ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ২২.৪২! নেই কোন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারে ৪ হাফসেঞ্চুরিতে করেছেন ৪২৬ রান। তবে বল হাতে তিনি বেশ ভালোই করেছিলেন। ২৩ ইনিংসে শিকার করেন ৩৫ উইকেট। যেখানে ১৯৫২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ৭২ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট শিকার করেন। রিং-কে স্মরণীয় করে রাখার অন্যতম আরেকটি কারন হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিল জনস্টনের সাথে ৩৮ রানের মূল্যবান জুটি গড়ার জন্য। যা অজিদের জয়ে গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

source
৮. সাঈদ আজমল
পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে ১৯৭৭ সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন তাদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার সাঈদ আজমল। ৩৫ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৮.১০ গড়ে ১৭৮ উইকেট নিজের নামের পাশে যোগ করেন তিনি। উইকেটের পাশাপাশি তার ইকনোমিক রেটও চোখ কপালে উঠার মতো (ইকোনমি রেট ২.৫৮)! ১১৩ ম্যাচের ওডিআই ক্যারিয়ারে আছে ১৮৪টি উইকেট। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ৬৪ ম্যাচে নিয়েছেন ৮৫ উইকেট। আজম একজন দুসরা স্পেশালিষ্টও।
. জ্যাক ইয়ং
১৯৪০-এর দশকে ইংল্যান্ডের হয়ে ৮ টেস্ট খেলা বামহাতি স্পিনার জ্যাক ইয়ং ১৯১২ সালে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন। জাতীয় দলের হয়ে নিজেকে ততোটা প্রমান করতে না পারলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি বরাবরই একজন লিজেন্ডারি বোলার। জাতীয় দলে ৪৪.৫২ গড়ে ১৭ উইকেট শিকারের বিপরীতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০-এর কম গড় নিয়ে ৩৪১ ম্যাচে ১৩৬১ উইকেট শিকার করেন। ইংল্যান্ডের হয়ে তার সেরা বোলিং মূহুর্তটি আসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচটিতে ৬৫ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন।

source
১০. হসন্ত ফার্নান্দো
শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার হসন্ত ফার্নান্দো ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহন করেন। ২০০২ থেকে ২০০৬ এর মধ্যে লঙ্কানদের হয়ে তিনি ২টি টেস্ট ও ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকলেও কোন ম্যচ খেলা হয়নি তার। ব্যাটিং কিংবা বোলিং যে কোন পজিশনে তিনি হতে পারেন দলের ট্রাম্প কার্ড। ফার্নান্দো ওডিআইতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দেখা পান বাংলাদেশের বিপক্ষে। ম্যাচটিতে তিনি ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন।

source
১১. জ্যাক ক্র্যাপ
ক্র্যাপ একজন ইংরেজ ক্রিকেটার। ১৯১২ সালে তার জন্ম। ইংল্যান্ডের হয়ে ৭ টেস্টে ৩ হাফসেঞ্চুরিতে ৩১৯ রান করেন তিনি। বামহাতি এই ক্রিকেটার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গ্লোচেস্টারশায়ারের হয়ে ৪৫২ ম্যাচে ২৩ হাজারের অধিক রান করেন। ১৯৬৪ সালে জ্যাক ক্র্যাপ আম্পায়ার হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করে। তার আম্পায়ারিং করা ৪ ম্যাচের সব গুলো ছিল ইংল্যান্ডের।
Great post , I don't know much about cricket Sport but I would like to learn about it
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit