প্রথম ভালবাসা।(পর্ব-২)

in hive-129948 •  2 years ago 
আস-সালামু আলাইকুম

প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,

আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।

daisies-gf65051016_1920.jpg

সোর্স

বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও খুব ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার লেখা প্রথম ভালবাসা গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। আশা করি দ্বিতীয় পর্বটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। তো চলুন আর বেশি দেরি না করে মূল গল্পে ফেরা যাক।

তারপর পাঁচ থেকে ছয় মাস যে কিভাবে কেটে গেল কিছু বুঝতেই পারলাম না যাই হোক দিনগুলো খুব ভালোই কাটছিল। এভাবে আমি আর‌ সুমাইয়া ‌স্কুলে যেতাম তোর প্রতিদিন ওর সাথে টিফিন টাইমে গল্প করতাম। তো এভাবেই সময়গুলো যেতে থাকে। একদিন আমরা ভাবি স্কুল ফাঁকি দিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাব। কিন্তু সেদিন আমাদের ক্লাসে প্রিন্সিপাল স্যার এসেছিল। আর আমাদের ভুল হচ্ছে আমরা ক্লাসে ব্যাগ রেখে গিয়েছিলাম। কারণ যেহেতু আমরা স্কুলের পড়ি তাই ব্যাগ নিয়ে তো যখন তখন বের হতে দিবে না। তো প্রিন্সিপাল স্যার সবাইকে জিজ্ঞাসা করল এই ব্যাগগুলো কার। অনেকেই বলতে চাইনি তবে জোরাজোরিতে কয়েকজন বলে দিয়েছিল যে ব্যাগগুলো আমাদের।

কয়েকজন আবার এক্সট্রা বাড়িয়ে বাড়িয়েও বলেছিল যে ওরা মাঝে মাঝে এরকম কাজ করে। তো যাই হোক তারপর আমাদের পরিবারকে ডাকা হলো তারপর আমাদের মা বাবাকে সব কথা খুলে বলল। তো শেষে প্রিন্সিপাল স্যার বলল ওরা যদি একসাথে থাকে তো ভবিষ্যতেও এরকমটা করার চান্স আছে। তারপরে প্রিন্সিপাল স্যার এটা বলার পর বলল তাই আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে যেকোনো একজনকে আমি টিসি দিয়ে দিব। তারপর প্রিন্সিপাল স্যার আরো বললো ক্লাসের ছেলেমেয়েদের কাছে জানতে পারলাম পারভেজের দোষ বেশি। তাই আমি পারভেজকে টিসি দিব। তো এরপর স্যার তার কথামতো আমাকে টিসি দিয়ে দেয়। যদিও বা আমার মা-বাবা প্রিন্সিপাল স্যার কে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু প্রিন্সিপাল স্যার কোন কথাই শুনেন নি।

তো শেষে প্রিন্সিপাল স্যার আরো বলল এরা যদি থাকে তাহলে আরও ছেলেপেলে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জন্য আমি পারভেজ কে টিসি দিলাম। আর সুমাইয়া কে আমি রাখলাম এই স্কুলে । তারপরে স্যার বলল যে আপনারা সবাই এবার বাড়ি ফিরে যান। তারপরে বাড়িতে এসে আমার আম্মু আমাকে অনেক বকাঝকা করল এবং আব্বু আমাকে একটু মারধর করল। তারপর আমি দরজা আটকে দিয়ে অনেকক্ষণ কান্না করলাম। কিন্তু মার খেয়ে আমার কান্না আসেনি আমার কান্না এই কারণে আসছিল সুমাইয়ার কি হবে সুমাইয়ার সাথে আমি দেখা করতে পারবো তো এই কারণে কান্না আসছিল। পরে আমাকে অন্য স্কুলে আব্বু ভর্তি করলো তারপরে আমি সুমাইয়ার সাথে অনেক দেখা করার চেষ্টা করছি কিন্তু পারি নাই ।

আমি ওকে ফেসবুকে মেসেঞ্জারে সব জায়গায় নক দিছি কিন্তু পায় নাই তারপরে আমি ওকে নাম্বারে ফোন দিছি সিম বন্ধ বলছে। পরে আমার মাথা আর কাজ করে না আমি ভাবছিলাম আমি কি করবো কি করবো তারপরে আমার মনে হলো যে আমার একটা তো বান্ধবী ছিল। যার নাম শারমিন। তারপরের দিন শারমিনের সাথে দেখা করলাম এবং শারমিনকে জিজ্ঞাসা করলাম সুমাইয়া এখন কোন জায়গায় থাকে ওকে? তো আমি আর দেখিনি। আমার আর ওর সাথে কোনো কথাই হয় না একদম টানা ৩ থেকে ৪ মাস। শারমিন বলল যে তুই জানিস না ও চলে গেছে ওদের গ্রামের বাড়ি ও গ্রামের বাড়িতে এখন পড়ালেখা করছে আর ওর ফোনটা ওর বাবা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলছে। কথাটা শুনে আমার খুব খারাপ লাগলো । চোখে আমার পানি চলে আসে কিন্তু কিছু করার নাই । তারপরও আমি হাল ছাড়ি নাই আমি তাও সুমাইয়ার গ্রামের বাড়ি কোথায় খোঁজার অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু পায় নাই। এটাই ছিল মনে হয় আমার নিয়তি । তারপরে আমি ভাবলাম আমি আর কোনো রিলেশনে জড়াবো না তার পর থেকে পড়াশোনা শুরু করি কিন্তু এমন কোন দিন নাই যে সুমাইয়ার কথা আমি ভাবি নাই। পরে আমার কেন জানি মনে হল যে আমার এ জায়গায় থাকলে আমার পড়াশোনা হবে না খালি আমি ওর কথায় ভাববো তাই জন্য আমি আব্বুকে বলি যে আব্বু আমাকে দূরে কথাও পাঠিয়ে দাও।

তারপরে আব্বু আমার মামার কাছে পাঠিয়ে দিল। তো আমার মামার বাড়ি নলসিটিতে। তো তারপর থেকে আমি নল সিটিতে আমি মামার কাছেই থাকতে শুরু করি। তারপরে এভাবে দেখতে দেখতে দু বছর হয়ে গেল তারপর আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে খুব ভালো রেজাল্টে উত্তীর্ণ হই । তারপর আমার আব্বু বলল যে তুই বাড়িতে চলে আয় তোকে ছাড়া বাড়ি শূন্য শূন্য লাগে। তো বাবার কথা শোনার পরে আমি ভাবলাম এবার বাড়ি ফিরে যাব। কারণ আমিও সেই আসছি এছাড়া আমি পরে একবারও বাড়ি যাইনি । আব্বু বলল যে তুই এদিকে এসে এখানকার একটা কলেজে ভর্তি হইস। তো তখন আমি মামার কাছে গিয়ে বললাম এবার আমি বাড়ি ফিরে যাব। তো প্রথম তো মামা আমাকে যেতে দিতে চাচ্ছিল না। কিন্তু আমি বললাম অনেক দিন তো থাকা হলো এবার বাড়ি যাওয়া উচিত। তো যাই হোক আর আমি অপেক্ষা না করে কিছুদিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসলাম...

চলবে,,,

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই স্কুল থেকে পালিয়ে বড় ভুল করেছিলেন, স্কুল থেকে যদি না পালাতেন তাহলে হয়তো আপনাকে টিসি দিয়ে বের করে দিত না। সুমাইয়ার সাথে দেখা এবং সম্পর্কটা থাকতো। দীর্ঘদিন সুমাইয়াকে খুঁজেও ফেলেন না। এরপর আপনার মামার বাড়িতে দুই বছর থেকে পড়াশোনা করেছেন এবং ভালো রেজাল্ট করেছেন শুনে ভালো লাগলো। বাবার কথা শুনে আবার বাড়িতে ফিরে আসলেন শুনেও ভালো লাগলো। কিন্তু দুই বছর বাড়িতে আসলেন না এ টি শুনে খারাপ লেগেছিল। পরবর্তীতে কি সুমাইয়ার সাথে দেখা হয়েছে তা জানার অপেক্ষায় রইলাম?

ধন্যবাদ ভাইয়া আমার দুঃখটা বোঝার জন্য আর আপনার এত সুন্দর মন্তব্যটি প্রদান করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

আপনার প্রথম ভালোবাসার প্রথম পর্বটা আমি পড়েছিলাম। আপনাকে টিসি দিয়ে দিয়েছে শুনে সত্যি খুব খারাপ লাগলো। যাইহোক এরপর আপনি আপনার মামার কাছে থেকে খুব ভালো পড়াশোনা করে এসএসসি তে ভালো রেজাল্ট করেছেন। সুমাইয়া গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় আপনার সাথে কোন যোগাযোগ দেখা করতে পারেনি শুনে খারাপ লেগেছিল। তার পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মন্তব্যটি প্রদান করার জন্য

পারভেজ আর সুমাইয়ার যদি স্কুলে ব্যাগ রেখে না যেতো তাহলে এই সমস্যায় পড়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না। আপনাদের প্রথম ভুল এটি হয়েছিল। অনেকদিন পর্যন্ত সুমাইয়াকে খোঁজাখুঁজি করে ফেলেন না এবং পরবর্তীতে শুনলেন সুমাইয়া বাবা সুমাইয়ার মোবাইল ভেঙে ফেলেছে শুনলেন। পরবর্তীতে আপনার মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছেন এবং ভালো রেজাল্ট করেছেন। আশা করি পরবর্তী পর্ব পড়লে আরো ভালো লাগবে।

ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মন্তব্যটি প্রদান করার জন্য