আমার বাংলা ব্লগ

in hive-129948 •  last year 

এক অহংকারী খরগোশ ছোট গল্

আজকে আমি অর্থাৎ ছোটদের একটি রূপকথার গল্প শেয়ার করবো, গল্পটির নাম "অহংকারী খরগোশ" আশাকরি আপনারা সকলে গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং গল্পটি যদি শুনতে চান তাহলে পরে নীচে দেওয়া অডিও ফাইলে ক্লিক করে শুনতে পারেন।

সকল অভিবাবকরা তাদের শিশুদের গল্পের দ্বারা তাহাদের জীবনের সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করতে পারেন। নানান ধরনের এর মাধ্যমে তাদেরকে অনেক রকমের শিক্ষামূলক তথ্য ও নীতিমূলক জ্ঞান প্রদান করতে পারেন। তাই এই পোস্টে ছোটদের "অহংকারী খরগোশ" এর গল্পটি শেয়ার করলাম। আশাকরি গল্পটি আপনাদের সকলের খুব পছন্দ হবে।

Screenshot_20230619-210106~2.jpg

এক ছিল অহংকারী খরগোশ। দেখতে বেশ নাদুস-নুদুস। কচি কচি মুলো খেত। বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়াত। আর ধেইধেই করে নেচে নেচে গান গাইত। লাফিয়ে লাফিয়ে খুব বেগে ছুটতে পারত সে। তাই তার মনে ভারি অহংকার। অন্য খরগোশদের সে গণায় ধরত না। যাকে-তাকে সে শুধুশুধু খোচা দিত। ঘোড়াকে গিয়ে বলত, কী তোমার ঠ্যাঙের ছিরি! দাঁড়িয়ে ঘুমাতে হয়।’ গাধাকে দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ল খরগোশ, ‘গাধারে গাধা । তুই এখনো হাঁদাই রয়ে গেলি।

লম্বা গলা জিরাফকে দেখেও হাসি থামত না খরগোশের।
হাতি তোর গোদা পায়ে লাথি’, এই বলে সে হাতি বেচারাকে খেপাত।
গরু, ভেড়া, শজারু, বানর সবাই খরগোশের কথা শুনেছে।

কাউকে খরগোশ পাত্তাই দিত না। সুযোগ পেলেই খরগোশ নিজের গুনগান করত, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হত। আর তার চলনে-বলনে ফুটে উঠত অহংকার।

একদিন বনের মাথায় মেঘ কালো করে বৃষ্টি নামল। গাছে গাছে ফুটল বর্ষার ফুল। বনের পাশে শুরু হল ব্যাঙের গান। খরগোশ থাকত সেই নদীর ধারেই।

ব্যাঙের গান শুনে তার মেজাজ গেল বিগড়ে । কারা এমন বিশ্রীভাবে চিৎকার করছে? ওরা কি জানে না— খরগোশ থাকে আশেপাশেই? মূর্খদের যদি একটু বুদ্ধি থাকত!

অহংকারী খরগোশের ভারি রাগ হল । কেউ তাকে কোনোদিন অসম্মান করেনি। আর আজ সারারাত কতকগুলো পুঁচকে তাকে হেস্তনেস্ত করে ছাড়ছে। বৃষ্টির রাতে কোথায় আরাম করে ঘুমুবে তা নয়, কানের কাছে টিন পেটানো গান বাজছে!

পরদিন ঘুম ভাঙতেই খরগোশ গেল নদীর ধারে । কচি ঘাসের ডগা চিবুতে চিবুতে সে গিয়ে দাঁড়াল উঁচু একটা ঢিবির উপর। এদিক-ওদিক তাকাল। খানিকদূরেই গানের জলসা বসিয়েছে কয়েকশো ব্যাঙ। কী কোলাহল তাদের! আনন্দে তারা হাবুডুবু খাচ্ছে।

রাতে ঘুম হয়নি বলে খরগোশের মেজাজ এমনিতে তিরিক্ষি। ব্যাঙদের লাফালাফি দেখে সে আর ঠিক থাকতে পারল না। খরগোশের মনে তখন অহংকার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তার আশেপাশেই ছিল পাথরের টুকরো। তাই তুলে নিয়ে সে ছুড়ে মারতে লাগল ব্যাঙদের জলসায়।

ব্যাঙরা প্রথমে হতভম্ব। কী ব্যাপার! অনবরত কে যেন পাথরের টুকরো ছুড়ে মারছে। বেশ কয়েকটা ব্যাঙ সঙ্গে সঙ্গেই মারা গেল। ব্যাঙদের তল্লাটে হুলুস্থুল পড়ে গেল। যে যেদিকে পারল ভাগতে চাইল ।

ব্যাঙের রাজা তখন দিশেহারা। নিজেদের আবাস ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু কেন? কী তাদের অপরাধ? আমনি সবার চোখ গিয়ে পড়ল সেই ছোট্ট টিলাটার ওপর। ওখানে দু-ঠ্যাঙে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক নাদুস-নুদুস খরগোশ। এখনও তার বাঁ হাতে রয়েছে একটা লম্বা মুলো ।

ব্যাঙদের ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। এ রকম দেখতে-শুনতে সুন্দর এক খরগোশ কেন অযথা তাদের ঢিল মারছে।

ব্যাঙের রাজা আলাপ করে নিল অন্যদের সঙ্গে। খুব তাড়াতাড়ি এর একটা বিহিত করতে হবে । ইতিমধ্যে প্রায় একশো ব্যাঙ মরে গিয়েছে।

ব্যাঙের রাজা বলল, আমিই যাব খরগোশের কাছে। গিয়ে জানব কী কারণ, কী বিত্তান্ত? কেন উনি নির্মমভাবে আমাদের মারছেন।”

আরও পড়ুনঃ

মাথা নামিয়ে আস্তে আস্তে একদম টিলার সামনে এসে দাঁড়াল ব্যাঙের রাজা । খরগোশ আবার যেই একটুকরো পাথর তুলে মারতে গেছে অমনি করজোড়ে মিনতি করল ব্যাঙের রাজা, বন্ধ করুন আপনার নিষ্ঠুর পাথর-ছোড়া। কেন মারছেন আমাদের?

হো হো করে হেসে উঠল খরগোশ। এই পুঁচকে ব্যাঙ নিশ্চয়ই কিছুই জানে না তার সম্বন্ধে। খরগোশ কচি মুলোর ডগা চিবোতে চিবোতে বলল, ওহে পচা ডোবার ব্যাঙ, আমি কে জানিস?

অবাক হল ব্যাঙের রাজা। কী বোকার মতো কথা বলছে খরগোশ! বনের রাজা সিংহকেই এখন কেউ চিনতে চায় না! এই খরগোশকে চিনে তার কী লাভ।

ব্যাঙের রাজা বলল, না চিনলেও এখন চিনতে পেরেছি।’ খরগোশ ছাইরঙা লেজটা পেছনে একপাক ঘুরিয়ে নিল।

বলল, আমি হচ্ছি এই বনের সবচেয়ে সুন্দর প্রাণী। আমার নাক, চোখ, মুখ গায়ের রং– সবই সত্যি চমৎকার। আমি যত সুন্দর করে ছুটতে পারি অন্য কেউ তা পারে না। এসব ভাবলে অহংকারে আমার বুক ফুলে ওঠে। সেই আমি কিনা গতরাতে ঘুমাতে পারিনি। ঝিরঝির করে কাল বৃষ্টি পড়ছিল। ইচ্ছেমতো ঘুমাব এই ছিল ইচ্ছা। কিন্তু সারারাত্রি তোমাদের ঘ্যাঙোর ঘ্যাং, ঘ্যাঙোর ঘ্যাং-এর জন্যে ঘুম আমার আসেনি।’

ব্যাঙের রাজা বুঝল সব। কিন্তু এর একটা সুরাহা করা দরকার। খরগোশের কথায় বোঝা গেল— খুব অহংকারী সে। ব্যাঙদের এই তল্লাট থেকে ভাগিয়ে সে নিশ্চিন্ত হতে চায়।

ব্যাঙদের রাজা হাতজোড় করে বলল, খরগোশ ভাই, আমি একটু ক্ষণের জন্য অন্যদের সঙ্গে আলাপ করে আসি । তারপরেই ব্যাপারটার একটা মীমাংসা করব ? খরগোশ খুশি হল, না বেজার হল, বোঝা গেল না। ব্যাঙের রাজা ফিরে এসে সবাইকে জানাল সবকিছু। সবার মাথায় হাত।

Screenshot_20230619-210106~2.jpg

শেষে ব্যাঙ বলল, যা হোক একটা কিছু বলে আসি খরগোশকে । পরে আবার আলাপ করা যাবে। কিন্তু আমরা কিছুতেই এ তল্লাট ছাড়ব না। বর্ষা শুরুর গানও আমরা বন্ধ করতে পারি না।’

সবাই হাত তুলে বলল, তাই, তাই, আমরা সইব না এ অন্যায়।’ ব্যাঙের রাজা ফের গেল অহংকারী খরগোশের কাছে। মিনতি করেই খরগোশকে বলল, “এ নদীর তীর ছেড়ে আমাদের অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়। আর আমাদের মুখের ভাষা আমরা বন্ধ রাখতে পারব না। কী করব এখন বলুন?

লাল হয়ে গেল খরগোশের মুখ। এতবড় সাহস পুচকে ব্যাঙগুলোর! চেঁচিয়ে উঠল সে, “তোমাদের সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

টাইপ: চৌর্যবৃত্তি।
এ ধরনের পোস্ট আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি Allow করে না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।

কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493

Source: https://www.banglalovestory.in/2021/06/bengali-short-story-for-kids.html

Sorry sir next time no mistake