প্রিয় বাবাকে নিয়ে কিছু কথা

in hive-129948 •  last month 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আস্সালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকের পোষ্টে বাবা কে নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করার চেষ্টা করিব । ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!

বাবা কি জিনিস সেটা যখন নিজে বাবা হয়েছি তখনই বুঝতে পেরেছি। যখন ছোট ছিলাম তখন একটুও বুঝতে পারতাম না সে কিভাবে আমাদের সব চাহিদা পুরন করে আসছে। আমার বাবা আমার যাবতীয় চাহিদা চাওয়া মাত্র পুরন করে দিত তাই যত কষ্ট হোক না কেন। কিন্তু কোথা থেকে দিত কিভাবে দিত এটা আমরা কখনও চিন্তা করিতাম না। কিন্তু যখন নিজে বাবা হলাম তখনই বুঝতে পারছি যে কত কষ্ট করে বাবা আমাদের সকল চাহিদা পূরন করিত। সেই বাবাকে মনের অজান্তে কতই না কষ্ট দিয়েছি। আমার বাবা এখনও জিবীত আছে তাই সাধ্য মত তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করি।

sunset-5438430_1920.jpg

Image Source

যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন বাবার সাথে বাইরে যাওয়ার জন্য কত কিছু করিতাম। দুপুরে খেয়ে একটুও ঘুমাতাম না যদি আব্বু চলে যাই। তবুও কখন যে ঘুম এসে যাই বুঝতে পারি না। উঠে দেখি বাবা পাশে নেই কাজে চলে গেছে। এমন প্রায় সময় হত তাই একদিন বুদ্ধি করে আব্বুর সাথে আমার কোমরে একটি দড়ি বেঁধে ঘুম পড়ি। যখন আব্বু উঠবে তখন দড়িতে টান লাগবে আর আমি উঠে যাব আর আব্বুর সাথে বাইরে যেতে পারব। কিন্তু আব্বু কখন দড়ি খুলে চলে যেত টেরই পেতাম না। এত বুদ্ধিতে যখন কাজ হয় না তখন দুপুরে দুটো খেয়েই বাইরে দৌড়ে চলে যেতাম এবং অপেক্ষা করিতাম আব্বু কখন বাইরে যাবে। যেই বাইরে যাওয়ার জন্য বাহির হইত তখনই জড়িয়ে ধরিতাম আর বলিতাম আজ তোমার সাথে বাইরে যাব। আব্বু অনেক বুঝিয়ে দোকান থেকে খাবার কিনে দিয়ে বাসায় পাটিয়ে দিত। কিন্তু সব সময় এমনটি হত না। মাঝে মধ্যে আমাকে বাইরে নিয়েই যেত। কিন্তু আমি সাথে থাকলে তার ব্যবসার জন্য সমস্য হইত তারপর ও আমি যেতাম।

ai-generated-7927370_1920.jpg

Image Source

আর শুক্রবার হলে তো কথাই নেই আব্বুর সাথে বাজারে চলে যাব। কারন শুক্রবার তো আব্বু বাড়িতেই থাকত আর ঐ দিন অনেক অনেক বাজার করিত তাই আমি সাথে যেতাম বাজার করিতে। আব্বু আমাকে বলত কোন কোন মাছ পছন্দ বল সেটা কিনব। আমি বড় বড় মাছ পছন্দ করিতাম আর আব্বু সেটাই কিনে দিত। একদিন আমার সমান একটি মাছ কিনেছিল তখন আমি প্রায় তিন ফুট ৫ ইঞ্চি লম্বা ছিলাম। বাসায় এসে মাপ দিয়ে দেখি মাছটা প্রায় আমার সমানই ছিল। আরও অনেক পছন্দের বাজার করে নিয়ে আসতাম। এ ছাড়াও বিকালে বিভিন্ন স্থানে আব্বুর সাথে বেড়াতে যেতাম। সন্ধ্যা হলে অনেক গল্প হত এবং রাত্র পর্যন্ত এভাবে চলিত। শুক্রবারে আমি আব্বুর সাথে অনেক মজা করিতাম।

food-6039452_1920.jpg

Image Source

ঈদ আসলে আব্বুর সাথে মার্কেটে গিয়ে অনেক কেনা কাটা করিতাম আরও পরিবারের জন্য অনেক অনেক খরচ করিতেন কিন্তু নিজের জন্য তেমন কিছুই কেনাকাটা করিতেন না। কারন যা ইনকাম করিতেন তা আমাদের পরিবারের জন্য খরচ করিতেন নিজের জন্য তেমন কিছু রাখতেন না। শুধুমাত্র আমাদের পরিবারের জন্য অনেক অনেক পরিশ্রম করে টাকা ইনকাম করে যথাসাধ্য ব্যায় করিবার চেষ্টা করিতেন। আমার ক্লাস ওয়ান থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত পড়ালেখার যাবতয়ী খরচ আব্বু বহন করেছেন। অনেক কষ্ট করে ইনকাম করে আমার আর আমার বড় ভাইয়ের নামে ৪.৫ কাঠার মত জমি ক্রয় করে দিয়েছেন। যেখানে আমরা বর্তমানে বসবাস করিতেছি। এছাড়াও আমি এখনও কোন সমস্যায় পড়িলে তিনিই আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করে। তাই বাবার মত আর কেউ নেই যিনি আর্থিকভাবে সাহায্য করে থাকে বিনা স্বার্থে।

তাই যার যার বাবা এখনও জীবিত আছে অবশ্যয় তাকে সম্মান করিতে হইবে তাকে যথাসাধ্য দেখাশুনা করিতে হইবে। কারন তিনি জীবনে অনেক কষ্ট করেছেন আমাদের জন্য। এ জন্য আমাদের সকলেরই বাবার সাথে বাকী জীবনটা কাটানোর চেষ্টা করিতে হইবে।

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Thanks jswit.

"শুকরা বাবা! 🙏 আপনি জিন্দেবাসের মতো লোভীয়া ছিলেন না, বরং আমাদের অঙ্গপেঙ্কের উপকার করার জন্য কষ্ট সহিষ্ণুতা ও শরীর ফুলানো বাবা। 😊

আমি এখন সবাইকে জানাচ্ছি, যার যার বাবা এখনও জিভিত থাকে, অবশ্যই সেই মোটাগলা পরিচিত মনুষ্যদের নখেমুখে হারিয়ে যাওকের উদ্দেশ্যে বীজ সংগ্রহের আনন্দ, তা নিমনুষ্য! 🙏

বেটাদের চিন্তা করতে পারেন, 'সেই জালভারা আছে?' উত্তর হল, সেখানে ৪.৫ কাঠার মতো ধন-ময়! 🤑

এটি সবার অঙ্গ-পেঙ্কের উদ্দেশ্যে ১,৫০০ ইন্ডিজমের আলোর তরঙ্গ! 🌟

অথচ বংসারি হৃদুপমা, ক্ষণ-ক্ষনে ইন্ডিজমের আলোতে নভোর অন্বেষণ করে। 🌊

সারি, যারা এখন গ্রহণ ও পাটিশ করছে, তাদের নিজেদেরেই বুঝুন। 🙄

Thank you.