আস্সালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আমি ভালবাসার মূল্য নিয়ে একটি কাল্পনিক অনুগল্প নিয়ে আলোচনা করিব। আশা করি আপনারা সবাই এটি উপভোগ করবেন এবং কিছু নতুন তথ্য জানতে পারবেন। ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!
আজকের পোষ্টে মাধ্যমে আমি প্রকৃত ভালবাসা পাওয়ার পরেও আমরা অনেক সময় সেটার তেমন মূল্যায়ন করিতে পারি না কারন যখন কেউ আপনাকে অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে ভালবাসবে তখন আমরা তার আগ্রহ এবং ভালবাসার সুযোগ নিয়ে তাকে অনেক সময় অবহেলা করে থাকি কিন্তু যখন সে অনেক দূরে চলে যাই তখনই বোঝা যাই মানুষটির মূল্য। প্রতিটি মুহুর্ত যেন তাকেই ছাড়া চলা যাই না কিন্তু তখন আর কিছুই করার থাকে না।
উপরের কথাগুলোকে আরও সুন্দর করে বোঝানোর জন্য আমি একটি কাল্পনিক অনুগল্প লিখেছি। এটি কোন সত্য ঘটনা নয় বরং সত্যি ভালবাসার মূল্য দিতে না পারলে তার কি পরিনতি হতে পারে তারই একটি উদাহরন মাত্র। অনেকের জীবনের সাথে এ ঘটনাটি মিলতেও পারে আবার নাও পারে। তবে আমরা যেন প্রকৃত ভালবাসার মূল্যায়ন করিতে পারি সেটার জন্য আজকের লেখাটি লিখছি। হতে পারে সেটা স্বামী ও স্ত্রীর ভালবাসা, হতে পারে মায়ের সাথে সন্তানের ভালবাসা ইত্যাদি ইত্যাদি। তো চলুন শুরু করা যাক আজকের অনুগল্প:
ভালবাসায় জড়িয়ে থাকা একটি সম্পর্কের গভীরতা তখনই বোঝা যায় যখন একজন অপরজনের জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করে। তানিয়া আর রাশেদ ছিল একে অপরের জীবনে এমনই দুজন মানুষ যারা একে অপরকে ভালবাসত। কিন্তু রাশেদ তানিয়াকে অতটা ভালবাসত না যতটা তানিয়া রাশেদকে বাসত। তানিয়া ছোট থেকেই শান্তু এবং আবেগপ্রবণ একটি মেয়ে। সে জীবনে যা কিছু করত ভালোবাসার স্পর্শে মিশিয়ে করত। কলেজের প্রথম দিনেই রাশেদের সাথে পরিচয় হয়েছিল তার। রাশেদ অনেকটা স্মার্ট আর অন্য সবার থেকে একটু আলাদা। সবাই তাকে ভালোবাসত আর তার সেই সৌন্দর্যের মায়াজালে তানিয়াও আটকা পড়েছিল। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে এক বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, আর সেই বন্ধুত্বই এক সময় রূপ নেয় ভালোবাসায়।
রাশেদের মনটা ছিল একটু ভিন্ন সে তানিয়ার মতো আবেগপ্রনণ ছিল না। সে তানিয়াকে ভালোবাসত ঠিকই, কিন্তু একই সাথে আরও অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক রেখেছিল। তানিয়া তার ভালোবাসায় ছিল নিষ্পাপ কিন্তু রাশেদ তার সেই ভালোবাসার মূল্য কখনোই দেয়নি। সময়ের সাথে সাথে তানিয়া সব বুঝতে পারে কিন্তু তার ভালোবাসা এতই গভীর ছিল যে সে রাশেদকে কিছুই বলিত না। একদিন হঠাৎ করে রাশেদ অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন ডাক্তার বলে তার একটি কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে বাঁচার জন্য তাকে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। পরিবারের সবাই এটা শুনে হতবাক আর রাশেদও সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এরই মধ্যে তানিয়া এক মুহূর্তের জন্যও তাকে ছেড়ে যায়নি। একদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে তানিয়া ডাক্তারদের কাছে গিয়ে বলল রাশেদকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার কিডনি দিতে রাজি।
রাশেদের পরিবারের সবাই তানিয়াকে বারবার বাধা দিলেও সে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। সে জানত যে রাশেদকে ছাড়া সে বাঁচতে পারবে না তখন রাশেদ কাঁদতে কাঁদতে তানিয়াকে বলল তুমি আমাকে এত ভালোবাসো আমি সেটা কখনো বুঝতে পারিনি। এরপর অপারেশন সফল হয়। রাশেদ বেঁচে যায় আর সেই দিন থেকে তানিয়া হয়ে যায় রাশেদের জীবনের একমাত্র ভালোবাসা। রাশেদ প্রতিজ্ঞা করে আর কখনো সে তানিয়াকে ছেড়ে কোথাও যাবে না শুধুমাত্র তাকেউ ভালবাসবে। তানিয়াও নতুন জীবনের আশায় রাশেদের হাত ধরে এগিয়ে চলে।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তানিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। কিডনি দেওয়ার পর থেকেই তার শরীর দুর্বল হয়ে যায়। সে হাসি খুশি থাকলেও ভিতরে ভিতরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। রাশেদও এটা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিল কিন্তু কিছুই করতে পারছিল না। একদিন হঠাৎ করে তানিয়ার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অনেক চিকিৎসার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি।
রাশেদ প্রতিদিন তানিয়ার স্মৃতিতে কাঁদত। তানিয়ার জন্য রাশেদের জীবনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। এই ছোট গল্পটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ভালোবাসার মূল্য তখনই বোঝা যায়, যখন আমরা সেটা হারিয়ে ফেলি।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তানিয়া রাশীদের এই কাহিনীটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক মনে হল। আসলে মানুষের জীবনে বিভিন্ন রকমের বিপর্যয় আসে। আর সে বিপর্যয় এমন একটা মুহূর্তের উপায় যখন কিছু করার থাকে না। সুন্দর একটা ছোট গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু এটা একটি কাল্পনিক কাহিনীমাত্র এটা নিয়ে মন খারাপের কিছুই নেই। আমি শুধুমাত্র বোঝানোর জন্য পোষ্টটি করেছি। ধন্যবাদ আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর একটা গল্প লিখেছেন। কাল্পনিক হলেও এটা বাস্তবে অসম্ভব নয়। এরকম স্যাক্রিফাইস করতে পারার ভালবাসা যেকোনো ক্ষেত্রেই হতে পারে। তবে রাশেদের প্রথম অবস্থার মত মেকি ভালবাসার মানুষও আছে ভুরিভুরি। এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন মেয়েদের সব সময় সতর্ক থাকা জরুরী কারন ভুল করে এমন ছেলের খপ্পরে পড়লেই বিপদ। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর ছিল আপনার লেখা আজকের এই অনুগল্প। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এই অনু গল্পটা পড়তে। আসলে কিছু মানুষ থাকে যারা ভালোবাসার মূল্যটা সঠিকভাবে দিতে পারেনা। একদিন সেই ভালোবাসাটা খুঁজে। রাশেদ তেমনভাবে তানিয়ার প্রতি আসক্ত ছিল না। কিন্তু তানিয়া তাকে এত বেশি ভালোবাসতো যে, শেষ পর্যন্ত রাশেদকে নিজের একটা কিডনি দিয়ে দিয়েছে। আর রাশেদ তখনই তানিয়ার ভালোবাসাটা আরো ভালোভাবে বুঝতে পারে। তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেলেও শেষ পর্যন্ত সে বাঁচতে পারেনি, এটা শুনে অনেক খারাপ লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু এটা শুধুমাত্র একটি কাহিনী মন খারাপ কিছুই নেই। একটি জিনিস উদাহরন দিয়ে বোঝানোর জন্যই লিখেছি মাত্র। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মতামত লেখার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit