শীতকালে বাবার সাথে খেজুরের রস খাইতে যাওয়ার অনুভূতি //পর্ব-১

in hive-129948 •  3 months ago 

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


শীতকালে প্রকৃতির পরিবেশ আমার খুবই ভালো লাগে। তাই তো শীতের পরিবেশের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। শীতকাল আসলেই পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়। কারণ শীতকালে চারদিকে পিঠার আমেজে মেতে ওঠে। তাছাড়া শীতকালে খেজুরের রসের মিষ্টি গন্ধে মন যেন আমার পাগল হয়ে যায়। বিশেষ করে শীতকালে বিভিন্ন গাছে ফুলে সৌন্দর্যময় দৃশ্য ফুটে ওঠে। তাছাড়া গ্রাম অঞ্চলের ফসলের মাঠ যেন সরিষা ফুলের সৌন্দর্যময় হলুদ বর্ণ ধারণ করে। এই দৃশ্যগুলো দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। তাই শীতের এই অনুভূতিমূলক গল্প একটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে আসলাম। আসলে ছোটবেলা আমি বাবার সাথে খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলাম।আর এই রস খাওয়ার মুহূর্ত গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। যার কারণে এখন প্রতিবছর শীতে আমি বন্ধুদের সাথে খেজুরের রস খেতে যায়, আর বাবার সাথে খেজুর রস খাওয়ার এই স্মৃতিময় গল্প মনে পড়ে, তাই আজকে আপনাদের মাঝে সেই গল্পটি শেয়ার করলাম।


father-and-son-8828819_1280.jpg


আমি তখন মাত্র হাই স্কুলে ভর্তি হয়েছি, নতুন ক্লাসে যাব সময়টা ছিল জানুয়ারি মাস। স্কুলে ভর্তি হয়েই আমি মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তোমার বাড়িতে যাওয়ার পরে আমার মামাতো ভাইরা খেজুরের রস খেতে গিয়েছিল ভোরবেলা সলঙ্গাতে। আসলে আমাদের সিরাজগঞ্জেরই সলঙ্গা থানা রয়েছে। সেখানে খেজুরের রসের পাওয়া যায়। আর খেজুরের গাছের অনেক বাগান রয়েছে সেখানে।তাই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে এই খেজুরের রস খেতে। মামা তো ভাইদের কাছে গল্প শুনে আমারও খুবই যেতে ইচ্ছা করলো, যার কারণে বাবাকে বললাম মামাতো ভাইদের সাথে আমি যাব, খেজুর রস খেতে হয়। কিন্তু যেতে হবে ভোরবেলা। বাবা আমাকে তখন একা মামাতো ভাইদের সাথে ছাড়বে না, বলল কিছুদিন পরে আমি তোমাকে সাথে নিয়ে যাবো। বাবার কথা শুনে ভালোই লাগলো। কারণ বাবার সাথে খেজুরের রস খেতে যাব এই মুহূর্তটা ভাবতেই ভালো লাগতেছিলো। তাই বাবা ছুটতে যখন বাড়ি আসলো আমি বাবার সাথে খেজুরের রস খাওয়াইতে যাওয়ার কথা বললাম।


তো বাবা বললো ঠিক আছে আমরা পরের দিন ভোরবেলা খেজুরের রস খেতে যাব। আর খেজুর রস খেতে যেতে হলে অনেক শীতের কাপড় পড়তে হয়। কারণ ভোরবেলা মোটরসাইকেল নিয়ে আমি বাবার সাথে যাব। আর ভোরবেলা প্রচন্ড কুয়াশা থাকে। যার কারণে আমি অনেকগুলো শীতের কাপড় পড়লাম, বাবাও পরলো, বাবার মোটরসাইকেল করে যাবো,তাই আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরে যাত্রা শুরু করলাম। আসলে বাবা ফজরের নামাজ পড়েই রওনা দিয়েছিলো, দেখতে পেলাম রাস্তায় অনেক মানুষই মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে তবে প্রচন্ড কুয়াশা ছিল যার কারণে আমার অনেক বেশি শীত লাগতেছে ছিলো। তারপরেও মনের ভিতর অনেক ভালো লাগতেছিল যে আমরা খেজুরের রস খেতে যাব। আসলে খেজুরের রস খাওয়ার মুহূর্তটা অনেক আনন্দের। কারণ গাছ থেকে পেড়ে গরম গরম খেজুরের রসও খাওয়া যায়। তাই আমি মনের আনন্দেই যাচ্ছিলাম বাবা আমাকে বারবার বলতেছিল তোমার কি কষ্ট হচ্ছে আমি বললাম না বাবা, তবে মাঝ পথে দেখতে পেলাম আগুন জ্বালিয়ে মোটরসাইকেল পাশে রেখে অনেকেই আগুনে তাপ নিচ্ছে।


তারপরে বাবা সেখানে মোটরসাইকেল থামালো এবং থামিয়ে আমরা আগুনে তাপ নিতে থাকলাম। তারপর সকলের সাথে গল্প করল। আসলে এখান থেকে আরও বেশি সময় লাগবে না। ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগবে। বেশি সময় লাগতো না আসলে প্রচন্ড কুয়াশা ছিল যার কারণে খুবই স্পিডে মোটরসাইকেল চালানো যাচ্ছিল না। তাই সকলেই মোটরসাইকেল আস্তে আস্তে চালাচ্ছিলো। তবে এই খেজুরের রস খাওয়ার মুহূর্ত গুলো অনেক আনন্দের, হাজারো কষ্টের মধ্যে সকলেই এই খেজুর রস খেতে যাচ্ছি।আসলে আমি তখন ছোট ছিলাম। খেজুরের রস প্রথম খেতে যাচ্ছি, তাই আমার অনুভূতিটা অনেক বেশি ছিলো। কারণ আমি অনেক আনন্দের সাথে ছিলাম আর খেজুরের রস অনেক বেশি মজা লাগবে এটাই ভাবছিলাম।


তারপরে আমি বাবাকে বললাম আর কত দেরি হবে। বাবা বললো যে এখন সময় লাগবে না। তাই আমরা আবারো মোটরসাইকেল নিয়ে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য রওনা দিলাম এবং পথের ভিতরে আরও অনেকেই একসাথে আমরা যাচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তটা অনেক বেশি ভালো লাগতেছিল। আবার কাউকে দেখতে পেলাম তারা খেজুরের রস নিয়ে মোটরসাইকেল করে বাসার দিকে রওনা দিয়েছে। দৃশ্যগুলো দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো।আর আমি ভাবতে ছিলাম কখন আমি চোখের সামনে খেজুর রস পাড়া দেখব, তো বন্ধুরা আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। আগামী পর্বে বাকি অংশটুকু শেয়ার করবে ইনশাআল্লাহ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার মত অভিজ্ঞতা সত্যি মনে রাখবার মতো। আমি দুবার খেজুরের রস খাওয়ার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। শেষবার বাঁকুড়ায় বেড়াতে গিয়েও ভোরবেলা খেজুরের রস খেয়েছিলাম। আপনার স্মৃতির গল্প শুনে সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল। শীতকাল মানে গ্রাম বাংলায় খেজুরের রস। আর তার থেকে তৈরি গুড় পাটালি এবং পুলি পিঠের সম্ভার। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।

GridArt_20241206_194224351.jpg

শীতকাল মানেই খেজুরের রস খাওয়ার এক অন্যতম সময়।আর বিশেষ করে শীতকালে গ্রাম এলাকা গুলোর মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য এক অন্যরকম আমেজ উঠে। আপনি দেখছি আপনার বাবার সাথে শীতের সকালে খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলেন, দেখে বেশ ভালো লাগলো।আর সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খেজুরের রস খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে।

শীতকাল আসলে যেন খেজুরের রস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আপনি আপনার বাবার সাথে খেজুর রস প্রথম প্রথম খেতে ভ্রমণে গিয়েছিলে সকালবেলা। এই গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আগামী পর্বে পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

শীতকাল মানে এই খেজুরের রস খেজুরের গুড় ও পিঠাপুলির উৎসবের ধুম পরে যায়।শীতকালে খেজুর রস খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনার শেয়ার করা গল্পটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আরো যদি বাবার সাথে খেজুর রস খেতে যাওয়া হয় তাহলে তো নিজের মনের ভেতর অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে। কোথায় বলতে গেলে বাবার সাথে খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা।অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার স্মৃতিচারণ গল্পটি পড়ে।