আজকে আমি সকাল বেলা শহর থেকে গ্রামে যাচ্ছিলাম। আসলে গ্রামে যাওয়ার কারণ হলো আমার গ্রামের বন্ধুরা রাত থেকে বারবার আমাকে কল দিয়েছিল, গ্রামে তারা পিকনিকের আয়োজন করেছে। তারা মূলত ফুটবল খেলার আয়োজন করেছিল, আর এই ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে তারা ছোট একটা পিকনিকের আয়োজন করেছে। সেখানে আমাকে উপস্থিত থাকার জন্যই আমাকে বারবার অনুরোধ করছিল। তাই আমি আমার মামার মোটরসাইকেল নিয়ে শহর থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আর গ্রামের যাওয়ার মুহূর্ত রাস্তার ভিতরে একটি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। আর মানবতার সেবায় সেই দুর্ঘটনা থেকে একটি প্রাণ বেঁচে যায়। যার কারণে এই দৃশ্যটি আমি নিজের চোখে দাঁড়িয়ে দেখতে পেয়েছি, তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে আসলাম।

আসলে আমি যখন মোটরসাইকেল নিয়ে শহরের রাস্তা পার হয়ে গ্রামের রাস্তার ভিতরে প্রবেশ করেছি, তখন আমার সামনে একটি মোটরসাইকেল ছিল।সেটা ছিলো বড় মোটরসাইকেল, আর সেই মোটরসাইকেলে দুইজন মানুষ ছিল। তারা আমাকে ওভারটেক করে আগে চলে গেল, আমি আসলে আস্তে আস্তে মোটরসাইকেল সাবধানতার সাথে চালিয়ে থাকি। কিন্তু তারা অনেক জড়ে চালিয়েছে এবং তারা সামনের চাকার উপরে ভর দিয়ে পেছনের চাকা উপরে ওঠার ব্যবস্থা করেছিল, যখনই এই ব্যবস্থাটা করেছে, তখনই সামনে একটি বাচ্চা এসে যায়। আর সেই বাচ্চা মোটরসাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তার পাশের পুকুরের নিচে পড়ে যায়।

আর এই দুর্ঘটনা ঘটে আমাদের গ্রামের শুরুতেই, যার কারণে এই দুর্ঘটনার দেখেই আমি তাড়াতাড়ি মোটরসাইকেল থামিয়ে, সেই বাচ্চাকে তোলার জন্য পুকুর পাড়ে চলে যায় এবং আমার সাথে সাথে আরো কয়েকজন চলে আসে। আর তারাও এই বাচ্চাটিকে উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসে। আর একটু দেরি হলেই বাচ্চাটি পানিতে ডুবে যেত, আসলে এমনিতেই ছোট বাচ্চাটি মোটরসাইকেল এর সাথে ধাক্কা লেগে হাত কেটে গেছে, তারপরে পানিতে পড়ে গেছে। বাচ্চাটিকে উপরে উঠিয়ে নিয়েছি, আর হঠাৎ করে কিছু মানুষ এসে কিছু শোনার আগেই, বারবার বলছে মোটরসাইকেল ওয়ালাকে মারো এবং তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দাও।আরে ভাই আগে জানবি যে কার সাথে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, কেউ না জেনে এসে আমাকে দোষ দিচ্ছে। ওখানকার একজন মাস্টার ছিল, সে বলল যে বেশি লাফালাফি করো না, কি হয়েছে সেটা শোনার আগেই মোটরসাইকেল ওয়ালাকে ধরো মারো, কি হয়েছে তুমি কি জানো।

তখন তারা চুপ হয়ে গেল, সেই মাস্টারি বলল যে এই ছেলেটা ছিল বলেই বাচ্চাটি এখনো বেঁচে রয়েছে। এই ছেলেটি আগে এসে পুকুর থেকে বাচ্চাটিকে তুলেছে, যারা এই বাচ্চাটিকে আঘাত করে পুকুরে ফেলে দিয়েছে, তারা তো এখানে নেই। তারা তো চলে গেছে, আসলে কিছু জানার আগেই তোমরা দোষ দিয়ে থাকো। তখন আমি বললাম ঠিক আছে চাচার সমস্যা নেই, তারা হয়তো জানে না। তখন বলল যে জানেনা আগে তো জানতে হবে। তারপরে চাচাকে বললাম, বাচ্চাটিকে পাশের কোন হসপিটালে নিয়ে যান। তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। এমনিতেই বাচ্চার অবস্থা অনেকটাই ভালো ছিল, আসলে বাচ্চাটির হাত একটু কেটে গিয়েছিলো, যার কারণে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য সেখানকার মানুষ একটি ভ্যান ঠিক করে হাসপাতালে নিয়ে গেল।

আমরা যারা মোটরসাইকেল চালিয়ে থাকি, তাদের অনেক সাবধানের সাথে মোটরসাইকেল চালাতে হবে। রাস্তাঘাটে মোটরসাইকেল নিয়ে ভাব দেখিয়ে এইরকম দুর্ঘটনা ঘটানো যাবেনা। তারা তো চলে গেছে কিন্তু এই বাচ্চাটি যদি আরো বড় ধরনের আঘাত লাগতো, বাচ্চাটি যদি মারা যেত। তাহলে এই পরিবারটার কি অবস্থাটা নাই হত। তাই বাচ্চাটিকে একটু সাহায্য করতে পেরে, বাচ্চাটি এখন ভালো আছে জানতে পেরে অনেকটাই ভালো লাগছে। আর নিজে সাহায্য করাতে মনের ভিতরে অনেকটাই যেন শান্তি লাগছে। তাই আমাদের সমাজের সকলকে সচেতনতার সাথে গাড়ি চালাতে হবে এবং অন্যের বিপদে এগিয়ে আসতে হবে। নিজে যদি এগিয়ে আসি, ও ছোট্ট একটা সাহায্য করি,তাহলে অন্যের অনেক বড় উপকার হবে। তাই সহযোগিতার হাত আমাদের বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।🖤✨।