হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনার সবাই কেমন আছেন? হ্যাঁ, আমি জানি আপনারা কেউ বর্তমানে ভালো নেই। ভালো না থাকারই কথা। বর্তমানে যেসব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এতে করে কোনমতে বেঁচে থাকাটাই সবথেকে ভালো থাকা হিসেবে আমি বিবেচনা করি। আজ আমি দেশের পরিস্থিতি কিংবা অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবো না। আমি কেমন আছি এবং কোন পরিস্থিতিতে আছি সেই বিষয়ে একটু কথা বলবো এবং আমার মনের অবস্থা কি রকম সেটা নিয়ে কথা বলবো। নিজের বাক স্বাধীনতা তো এতটুকু আছে তাই না...!
বেশ কয়েকদিন ধরেই দেশের পরিস্থিতি ভালো না। এতে করে আমার ব্যক্তিগতভাবে অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আমার ক্ষতি বললে ভুল হবে, দেশের প্রত্যেকটা মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। এই কয়েকদিনে দেশে প্রায় হাজার কোটি টাকার উপরে লোকশান হয়েছে। মাঝখানে কিছুদিন ইন্টারনেট ছিল না। আমরা বহির্বিশ্ব থেকে একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। এমন একটা অবস্থার মধ্যে পড়েছিলাম নিজের কাছের মানুষের সাথে যোগাযোগ করব এমন অনেক কম অবস্থা ছিল। এছাড়াও মোবাইলে ফোনে কথা বলতে গেলেও অনেক টাকা চার্জ কাটছিল। এটাও আমাদের জন্য ভোগান্তির একটা বিষয়। বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপ রয়েছে এবং অ্যাপ এর মাধ্যমে মিনিট থেকে মেগাবাইট সবকিছুই কেনা যায়। কিন্তু আমরা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি কোন সিমে নাম্বার কিভাবে দেখতে হয়, অফার কিভাবে দেখতে হয়, কিভাবে মিনিট কিনতে হয় সেই বিষয়গুলো ভুলে গেছিলাম।
অনেক ক্ষতি হয়েছিল তবে একটা লাভ আমি দেখতে পেয়েছি। যে সব মানুষেরা একে অপরের খোঁজ খবর নিত না, আন্তরিকতা ছিল না সেসব মানুষের প্রতি একটু খোজ খবর নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিকেল হলেই সবাই একত্রে বসে আড্ডা দিত, মোবাইল ফোনকে সাইডে রেখে সেই আগের সময়ের মতো সময় কাটাতো। আসলে এই বিষয়গুলো দেখতে পেয়ে অনেকটা ভালো লাগছে। যদিও আমি আমার পরিবার থেকে অনেক দূরে রয়েছি, কিন্তু তারপরও অন্যান্যদের খুশি দেখলেও কিন্তু খুশি লাগে। তবে অন্যান্যদের কথা বলতে পারব না, আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং মানসিকভাবে প্রায় অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি, না পারছি কিছু বলতে, না পারছি কোথাও যেতে। সারাদিন রুমের মধ্যেই বন্দি হয়ে রয়েছি।
এছাড়াও আমি যেই জায়গায় বর্তমানে অবস্থান করছি, এখানে আমার আশেপাশে তেমন কোন বন্ধুবান্ধব নেই। যে বন্ধু-বান্ধবের সাথে বসে দশ মিনিট একটু আড্ডা দিতে পারব। আমরা বন্ধু-বান্ধবরা সবাই এই ভার্সিটিতেই একত্র হয়ে আড্ডা দিতাম। কিন্তু বর্তমানে তো ভার্সিটি বন্ধ। তাই সেখানেও আর যাওয়া হচ্ছে না। সব মিলিয়ে একাকিত্ব জীবন যাপন করছি। আসলে এই একাকীত্ব জীবন যাপন কিন্তু অনেকটা অভিশাপের মতোই কাজ করে। এই দিকে নেটের স্পিড থাকে না। মোট কথা বলতে গেলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় সেই ইন্টারনেটের স্পিড ওঠানামা করে এবং আমি যে জায়গায় রয়েছি এখানে ইন্টারনেটের অবস্থা অনেকটাই বাজে। এর থেকে ভালো গতি আমাদের নীলফামারীতে আমাদের বাসায় রয়েছে।
গত দুদিন ইন্টারনেটের স্পিড একটু ঠিকঠাক থাকলেও আজকে থেকে আবারও সেসব গতি কমিয়ে দিয়েছে এবং মোবাইল ডাটা বর্তমানে বন্ধ হয়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে একটা হ য ব র ল জায়গার মধ্যে ফেঁসে আছি। আসলে বর্তমানে আমরা যারা রয়েছি এই জেনারেশনের কেউ ইন্টারনেট ছাড়া থাকতে পারবে না। এবং থাকা সম্ভবও না। প্রত্যেকটি কাজ রয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এবং ইন্টারনেটের বদৌলতে আমাদের অনলাইন ক্লাস হয়। এসবগুলোর লেকচার সিট ইন্টারনেটেই থাকে। এছাড়াও খেলাধুলা থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের প্রত্যেকটা জিনিস এখন অনলাইন হয়ে গেছে। টাকা পেমেন্ট করতে হলেও ইন্টারনেট লাগে। মোট কথা ইন্টারনেট ছাড়া এই জেনারেশনের মানুষ চলতে পারবে না, এই কথার সাথে সবাই একমত পোষণ করবে আশা করছি।
বাহিরে কারফিউ থাকলেও যদি ঘরে ইন্টারনেট থাকে তাহলে ঘরে বসে বসেই নতুন নতুন অনেক কিছু শেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কোর্স রয়েছে সেগুলো করা যায়। সেগুলো করারও চেষ্টা করি কিন্তু বেশ কয়েকদিন ইন্টারনেট না থাকায় সে সব থেকেও অনেকটা দূরে ছিটকে পড়েছি। এছাড়াও ইন্টারনেটের গতি সঠিক না থাকায় প্রত্যেকটি কাজে অনেক সময়ের হের ফের হয়ে যাচ্ছে। এই ধরুন আমি যে পোস্টগুলো করি সেগুলো দেখবেন বেশিরভাগই পোস্ট ইদানিং ভোর পাঁচটার সময় করছি। কারণ এই সময় ইন্টারনেট একটু ভালো থাকে, বাদ বাকি সারাদিনেই একটি কমেন্ট করা যায় না স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে ঢুকে। কত যে বিপদের মধ্যে রয়েছি, একমাত্র আল্লাহ তায়ালা এবং আমি জানি।
বিশেষ করে আমার মত যারা রয়েছেন, যারা এখনো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেননি নিজের পরিবারের বোঝা কাঁধে নিতে পারেনি, তাদের জন্য এই সময়টা সবথেকে কষ্টদায়ক। কারণ তার সামনে রয়েছে অনিশ্চিত একটা ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যতে কি হবে, কি না হবে! তারা কি নিজের পায়ে কখনো দাঁড়াতে পারবে কিনা! কিংবা সবকিছুর পরিস্থিতি কখন ঠিক হবে? এসব প্রশ্নের মধ্যে তারা হাবুডুবু খাচ্ছে। দেখুন, পরিচিতি যেমনই হোক না কেন ভোগান্তি কিন্তু আপনার আমার মত সাধারন জনগণের। এইতো গত এক মাস চলে গেল কাজ কোন কাজই করা হয়নি। বরংচ এক মাসের খাওয়া দাওয়ার খরচ, বাসা ভাড়া সবকিছু মেইনটেইন করা। এই খরচ গুলো কোথা থেকে আসবে? আমরা যদি ঠিকভাবে কাজই করতে না পারি..! এছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। গতকাল বাজার করে এনেছিলাম, খুব বেশি বাজার করতে পারিনি ৫০০ টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম, হাফ ব্যাগ ও ভর্তি করতে পারিনি। যে আলুর দাম ছিল ২৫-৩০ টাকার, সেই আলু কিনতে হয়েছে ৭০ টাকা কেজি করে, বাদবাকির কথা নাই বললাম।
দেখুন, পৃথিবীর সব মানুষেরই সমস্যা রয়েছে এবং সমস্যাও আলাদা আলাদা সমাধান হয়েছে। পৃথিবীর সব মানুষের কাছেই তার নিজের সমস্যা সব থেকে বড় সমস্যা। এখানে কারো দ্বিধাবোধ থাকতে পারে না। বর্তমানে আমি যে সমস্যার মধ্যে রয়েছি এটাই আমার জন্য সবথেকে বড় সমস্যা। একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রত্যেক দিন এই টেনশন গুলো নিজেকে গ্রাস করে ফেলছে। জানিনা কি হবে ভবিষ্যতে কিন্তু এসব আর নিতে পারছি না। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি...!
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: আর কত 😔
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলেই ভীষণ বাজে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা সকলেই। এমন পরিস্থিতিতে আজ সারা রাত ১ মিনিটের জন্যও আমি ঘুমাতে পারি নি! মানসিক ভাবে আমিও ভীষণ ই ট্রমার ভেতর আছি! আর আর্থিক ক্ষতি তো আছেই। নতুন মাস পরেছে, বাসা ভাড়ার স্লিপ দিয়ে গেছে, বেতন আদৌ কবে ঢুকবে সেটার কোন নিশ্চয়তা নেই! বাজারে সবকিছুর দামই বাড়তি! যারা জীবিকার প্রয়োজন এ ঢাকায় থাকে, একমাসের স্যালারি অনিশ্চিত হয়ে গেলে তারাও কতটা বিপদে পরে, সেটা অনুমান করা যায়। আর দিন - মজুর, নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারেরই কথা বাদ ই দিলাম!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার মত আমিও ধীরে ধীরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। বিষণ্ণতা ঘিরে ধরেছে। চারপাশের পরিস্থিতি আর জীবনের বাস্তবতা মানসিকভাবে বিষন্ন করে তুলছে। আর অন্যদিকে যদি ইন্টারনেট সেবাও খারাপ হয়ে যায় তাহলে যেন সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। সত্যি ভাইয়া পরিবারের দায়িত্ব নিতে না পারাটা অনেক বেশি কষ্টের কারণ। যেই কষ্টটা আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই আমরা কিন্তু আগে ডাটা প্যাক কিংবা মিনিট কেনার নম্বর গুলো মুখস্থ করে রাখতাম, কিন্তু এখন পুরোপুরি অ্যাপের উপর নির্ভরশীল। আর ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে, এসব কিনতে গেলে ঝামেলায় পড়তে হয়। যাইহোক সবমিলিয়ে আমরা একেবারে বাজে পরিস্থিতির মধ্যে আছি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সত্যিই অনেক টেনশন হয়। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি অপেক্ষা করছে আমাদের দেশের জনগণের জন্য। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এরকম পরিস্থিতির কারণে মন মানসিকতা অনেক বেশি খারাপ। ইন্টারনেট সংযোগের কারণে অনেক খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আমরা সবাই। ইন্টারনেট তো কিছুক্ষণ পরপরই ওঠানামা করছে। অনেক কষ্ট করে কাজ করছি। বিশেষ করে কমেন্ট করতে একটু বেশি কষ্ট হচ্ছে। তবে যাই হোক দেশের পরিস্থিতি এখন কিছুটা ভালো। বিশেষ করে এখন সবাই আনন্দে মেতে উঠেছে চারপাশে। আবারো স্বাধীন হলো আমাদের এই বাংলাদেশ। তবে এর পরবর্তীতে কি হবে এগুলোই দেখার বাকি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit