জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || নক্ষত্র

in hive-129948 •  last month 
নক্ষত্র

1000022038.jpg

Source

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আপনাদের সামনে একটু ব্যতিক্রমধর্মীর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব। প্রতি সপ্তাহে একটি করে মহাজাগতিক বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে নক্ষত্র জন্ম এবং মৃত্যুর বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো, তবে চলুন শুরু করা যাক।

আমরা পৃথিবীতে যা কিছু দেখতে পাই তা সবকিছু জন্ম নিয়েছিল বা সৃষ্টি হয়েছিল এবং সবকিছুর ধ্বংস অনিবার্য। এই বিষয়গুলো আমরা সকলেই জানি কিন্তু আমাদের মহাকাশে যেসব বিষয়বস্তু রয়েছে তাদেরও কিন্তু ধ্বংস অনিবার্য। এক কথায় এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু রয়েছে সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে তার নির্দিষ্ট সময়ে ধ্বংস হওয়ার জন্য। আমাদের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সূচনা কিভাবে হয়েছিল সে নিয়ে এখনও দ্বিমত ঘোষণা আছে বেশ কিছু বিজ্ঞানীদের মাঝে। তবে বেশিরভাগ বিজ্ঞানীরা বিগ ব্যাং থিওরিকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে এবং এর পরেই আমাদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সূচনা হয়। বর্তমানে আমাদের অবজারভেবল ইউনিভার্স এ প্রায় ২০০ সেক্সট্রিলিয়ন নক্ষত্র থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যদি নক্ষত্র না থাকতো তাহলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কখনো উজ্জ্বল দেখা যেত না। তখন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড একদম কালো অন্ধকারে ছেয়ে থাকতো কিন্তু অনেকেই এই বিষয়টা নিয়ে একটু চিন্তায় থাকেন। এই বিশাল বিশাল নক্ষত্র এগুলো কিভাবে সৃষ্টি হয়? কিংবা এদের ধ্বংস কিভাবে হয় এবং এর ধ্বংসের ফলে মহাবিশ্বে কি ধরনের বিষয়বস্তু দেখতে পাওয়া যায়? সেসব বিষয়ে আজ সংক্ষিপ্ত ভাবে একটু বলার চেষ্টা করব।

1000022039.jpg

Source

আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন সূর্য কিংবা বিভিন্ন ধরনের নক্ষত্র কিন্তু আগুন নয় বরঞ্চ একটি নিউক্লিয়ার চেইন রিএকশন এর ফলে উজ্জ্বল দেখায় এবং তা প্রবাহ করে। এখানে সূর্যর কণাগুলো হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়ামে কনভার্ট হয় এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে আরও অন্যান্য এলিমেন্টেরও সূচনা হয়। একটি নক্ষত্রের ভিতর বেশকিছু বিষয়বস্তু লক্ষ্য করা যায় যেমন তার গ্রাভিটি যা সব সময় তার এলিমেন্টগুলোকে সূর্যের কেন্দ্র দিকে ধাবিত করে এবং অপরদিকে নিউক্লিয়ার ফিকশনেরর ফলে এলিমেন্ট সূর্যপৃষ্ট থেকে বেরিয়ে যেতে চায়। যার কারণে দুইটা শক্তি একসাথে হয়ে একটি আবদ্ধ বল সৃষ্টি করে। এখান থেকেই প্রচুর পরিমাণে তাপের সৃষ্টি হয়। প্রতিটি নক্ষত্র তে সবসময় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়ে নিউক্লিয়ার ফ্রিকশন ঘটায়। মাঝে মাঝে এটা কার্বন এবং অন্যান্য এলিমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে। যখন কার্বন প্রোডিউস করা শুরু করে নিউট্রিয়ার ফ্রিকশন এর মাধ্যমে তখন থেকেই সেই সূর্য মৃত্যু পথে এগিয়ে যায়।

যখন একটি নক্ষত্রের মাঝে সব ধরনের হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যায় তখন সেই সূর্য কিংবা নক্ষত্র তার আকারের তুলনায় প্রায় ৫০০ গুন পর্যন্ত বড় হতে পারে এবং এটার রেট জাইন্টে পরিণত হয়। সূর্যের আকারের উপর নির্ভর করে সূর্য পরবর্তীতে কি রূপান্তরিত হবে সেটা নির্ভর হয়। যেমন আমাদের সূর্য থেকে 20 গুণ বড় হলে সেটা ব্ল্যাক হলে পরিণত হবে কিংবা আর আমাদের সূর্য থেকে ১২ থেকে ১৫ গুণ হলে সেটা নিউট্রন স্টারে পরিণত হবে। একটি নক্ষত্র তার মৃত্যুকালে সুপার নোভা বিস্ফোরণ ঘটায় যা মহাবিশ্বে এখনো অনেক দুর্লভ একটি বিষয়। এই মহা বিস্ফোরণ এত বড় হয় যেটা লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূর থেকেই খালি চোখে দেখা সম্ভব।

এইতো গেল একটা নক্ষত্রের শেষ পরিণতি। কিন্তু একটা নক্ষত্র কিভাবে জন্ম নেয় সে বিষয়ে এখন একটু ছোট করে বলার চেষ্টা করছি। উদাহরণস্বরূপ আমাদের সৌরজগৎ কে নিতে পারি। আনুমানিক আজ থেকে 4.6 বিলিয়ন বছর আগে আমাদের এই সৌরজগৎ সৃষ্টি হয়েছিল। সৌরজগৎ সৃষ্টির পিছনে মহাকাশের বিভিন্ন এলিমেন্ট, গ্যাস এবং ধুলাবালি যখন এক জায়গায় একত্রিত হয় তখন সেই জায়গায় প্রচন্ড পরিমাণে হিট জমা হতে থাকে এবং এই প্রক্রিয়াটি লক্ষ লক্ষ বছর হয়ে থাকে। পরবর্তীতে যখন গ্রাভেটিক্যাল ফোর্স তৈরি হয় এবং এই যেখানে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে সেখানে হাইড্রোজেনের পরিমাণ বেশি হওয়ার পরে সেটা নিউক্লিয়ার ফ্রিক্শন শুরু হয়ে যায়। এভাবে করেই একটি নক্ষত্রের জম্ন হয়। এই যে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস এবং ধুলার কথা বললাম এগুলো কিন্তু নেবুলা নামে পরিচিত।

1000022040.jpg

Source

আমরা পৃথিবী থেকে সূর্যকে একটু হলদে রংয়ের দেখি। তাই আগুনের সাথে সমঞ্জস্যপূর্ণ ভেবে আমরা মনে করি সূর্য হয়তো জ্বলছে। কিন্তু সূর্য আসলেও হলদে রঙের নয়। যখন আমরা আমাদের বায়ুমণ্ডল থেকে বের হয়ে দেখব তখন সূর্যকে একদম সাদা ধবধবে দেখা যাবে।এই বায়ুমণ্ডলের কারণে বিভিন্ন গ্রহ থেকে সূর্যকে বিভিন্ন রংয়ের দেখায়। আজকের আমার এই ইনফরমেটিভ পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে এবং মহাকাশের বিষয়বস্তু নিয়ে আপনারা কিরকম আগ্রহী তার বিচার বিবেচনা করেই পরবর্তী পোস্ট আপনাদের সামনে নিয়ে হাজির হব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্য জানাতে পারেন, ধন্যবাদ।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2021-06-28_11-13-39.jpg

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || নক্ষত্র

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দূর থেকে দেখে আমরা মনে করি সূর্য হলুদ রঙের। তবে আজকে আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম সূর্য আসলে হলুদ রঙের নয় সাদা রঙের। এই ধরনের তথ্যবহুল পোস্টগুলো পড়তে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আশা করছি আবারো নতুন কোন পর্ব নিয়ে হাজির হবেন ভাইয়া।

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।

সূর্যের রঙ যে সাদা তা আমি একটি বই তে পড়েছিলাম। তবে সত্যিই বলতে কি তোমার এই পোস্টগুলো পড়তে দারুণ লাগে। মহাবিশ্ব সম্পর্কে রহস্যের শেষ নেই৷ তার কিছু কিছু সহজ ভাষায় গল্পের মতো তুলে ধরো, পড়তে তো ভালোই লাগে আর অনেক কিছু জানতেও পারি। তোমার আগ্রহের গ্রাউন্ডটা খুব ভালো। আসলে জীবনটাই বিজ্ঞান ভিন্ন কিছু না। রাসায়নিক এলিমেন্টগুলো সঠিক না হলে মানুষ কি আর মানুষের মতো দেখতে হত? এইটেই কি কম।আশ্চর্যের! পরের ব্লগের জন্য অপেক্ষা করব৷

ধন্যবাদ আপনাকে।