স্মৃতির পাতায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ

in hive-129948 •  3 days ago 
স্মৃতির পাতায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ

IMG_20220605_130407.jpg

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। এইতো আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তালার অশেষ রহমতে আগের তুলনায় একটু ভালো আছি। আজ হঠাৎ করেই কেন যেন রাঙ্গামাটি ভ্রমণের কথা মনে পড়ে গেল। তাই চিন্তা করলাম এটা নিয়েই বিস্তারিত বিষয়বস্তু আপনাদের সাথে শেয়ার করি, তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।

২০২৩ এবং ২০২৪ সালে মূলত তেমন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি তবে ২০২২ সালে আমরা কক্সবাজার ট্যুর দিয়েছিলাম এবং রাঙ্গামাটি ট্যুর দিয়েছিলাম। সেখানে অনেক নতুন নতুন জিনিস অনুধাবন করেছি এবং আবিষ্কার করেছি। আসলে খুব বেশি একটা ঘুরতে যাওয়া হয় না তবে যেখানে ঘুরতে যাওয়া হয় একটু সময় নিয়ে ঘুরতে যাই। কারণ সেখানে কার পরিবেশগুলো অনেকটাই এক্সপ্লোর করার সময় থাকে। বিশেষ করে আমরা সাতদিনের ট্যুরে গিয়ে ছিলাম এবং প্রথম ৪ দিনেই আমরা কক্সবাজারে ছিলাম। পরবর্তীতে কক্সবাজার থেকে আমরা রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।

আজ ল্যাপটপে এমনি কাজ করছিলাম তখন কেন জানি সেই আগের ফাইলগুলো ওপেন করলাম। ওপেন করার পরেই সেই দৃশ্যগুলো যখন চোখে ভাসলো তখন সত্যিই অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই রাঙ্গামাটির সৌন্দর্যের কাছে। বিশাল বড় বড় পাহাড় তার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে চমৎকার নদী। এ ছাড়াও রয়েছে সেই চমৎকার ঝরনা সবমিলিয়ে অসাধারণ একটি পরিবেশ এক্সপ্লোর করেছিলাম। সেই সাথে আরেকটি বিষয় না বললেই নয় সেটা হচ্ছে পাহাড়ি ফল। পাহাড়ি ফল আমাদের সচরাচর ফলের তুলনায় অনেকটাই বেশি সুস্বাদু হয়।

IMG_20220601_131719.jpg

রাঙ্গামাটির একদম ভেতর পর্যন্ত আমরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। যার পরেই একদম মায়ানমারের বর্ডার ছিল। যেহেতু আমাদের অনেক পরিচিত মানুষ সেখানে ছিল এবং সেই ফরেস্ট গার্ডের সাথে কথা বলেই আমরা সেসব জায়গা পর্যন্ত গিয়েছিলাম অর্থাৎ সেসব জায়গায় সাধারণ মানুষদের যাওয়া আসা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। শুধুমাত্র আদিবাসীরাই সেখানে বসবাস করত। কিন্তু আমাদের সেই সুযোগ হয়েছিল। রাঙ্গামাটিতে দুদিন ছিলাম এবং দুদিনে অনেক বেশি এনজয় করেছিলাম আমরা। বিশেষ করে স্পিডবোটে করে একদম রাঙ্গামাটির ভিতর পর্যন্ত গিয়েছিলাম চারিপাশে বড় বড় পাহাড় এবং নদী ছিল সেই নদীর বুক চিরেই এই জায়গাগুলো ঘুরে দেখেছি। এই অনুভূতিগুলো কখনোই আসলে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুন্দরভাবে ভাষায় ফুটিয়ে তোলাটা আমার পক্ষে একটু কষ্টকর হচ্ছে।

তবে রাঙ্গামাটি অবস্থানরত প্রথম দিনেই আমরা গিয়েছিলাম ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে। প্রায় দূরদূরান্ত থেকে অনেক পর্যটক আসে এবং সেই জায়গাগুলো দেখার জন্য। পরবর্তীতে সেখানে পাহাড়ে উঠেছি এবং বিভিন্ন ধরনের ফটোশুট করার চেষ্টা করেছিলাম। পাহাড় গুলো খুব বেশি বড় না হলেও অনেকটা খাড়া ছিল যার কারণে পাহাড়ের উপর উড়তেও বেশ সমস্যা পোহাতে হয়েছিল এবং পাহাড়ের উচ্চতা থেকে ছবিগুলো অসাধারণ লাগছিল। তার মধ্যে বেশ কিছু ছবি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি যেন আপনারাও এই বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারেন।

IMG_20220605_130505.jpg

IMG_20220601_131612.jpg

IMG_20220601_133258.jpg

IMG_20220601_133412.jpg

একদিন পুরোটাই চলে গিয়েছিল সেখানকার ঝুলন্ত ব্রিজ এবং আশেপাশের পাহাড় দেখার জন্য। পরবর্তীতে সেখানে যাওয়ার যে রাস্তাটা ছিল সেটাও পাহাড়ের মধ্য দিয়ে এঁকে বেঁধে যাচ্ছিল। সেই সময়টাও অনেক বেশি এনজয় করেছি। আসলে আমরা যারা উত্তরবঙ্গে বসবাস করি কিংবা ঢাকায় আশেপাশে থাকি তাদের কাছে এই বিষয়গুলো অত্যন্ত আনন্দময় হয়ে থাকে। কারণ আমাদের এই দিকে এত পাহাড় নেই। পরবর্তী দিন বেরিয়েছিলাম আমরা রাঙ্গামাটির শেষ প্রান্তে যাওয়ার জন্য এবং সেখানেই নাকি একটি বড় মাজার রয়েছে এবং এই মাজারকে ঘিরে নাকি বেশ কিছু ধরনের গুজব রয়েছে। আসলে সেটা গুজব নাকি সত্যি সেই বিষয়টি তো আরো গবেষণা করা হয়নি তবে চিন্তা ভাবনা করছি সেই বিষয়ে একটু সার্চ করে দেখব আসলে এর আসল ঘটনা কি। কিন্তু তারপরও দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে অনুভূতিটা সেটা আসলেই ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

স্পিডবোটে যাওয়ার সময় বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছি যেগুলো ইতিমধ্যে আপনারা দেখতে পারছেন। তবে আজ কেন জানি কোথাও ঘুরতে যেতে খুব বেশি মন চাচ্ছে। কিন্তু সময় কিংবা সুযোগ কোনটাই হাতে নেই। তাই অতীতের স্মৃতি গুলো দেখে একটু মন ভালো করার চেষ্টা করছি আর কি। যাই হোক আজকের মত এখানেই শেষ করছি আপনারা যদি কেউ রাঙ্গামাটি যেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টে লিখতে পারেন, ধন্যবাদ সবাইকে।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2021-06-28_11-13-39.jpg

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: স্মৃতির পাতায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ব্যস্ততা পেছনে রেখে আবারো কোথাও ঘুরে আসতে পারেন ভাইয়া। নতুন কোথাও ভ্রমন করলে ভালো লাগবে। পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়লে কিংবা ছবিগুলো দেখলে আবারো ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে। পাহাড়ি ঝর্ণা দেখে মুগ্ধ হলাম ভাইয়া। আপনার ফটোগ্রাফিগুলো অসাধারণ হয়েছে।

ঠিক বলেছেন ভাই মাঝে মাঝে যখন পুরনো ফাইলগুলো খেতে দেখি তখন সে সব জায়গাগুলোতে আবার ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে।

রাঙামাটি আসলেই খুব সুন্দর জায়গা। বিশেষ করে ঝুলন্ত ব্রিজ, কাপ্তাই লেক এবং পলওয়েল পার্ক দারুণ লেগেছিল। তাছাড়া শুভলং ঝর্ণা মোটামুটি সুন্দর। কিন্তু বিলাইছড়ি তে একটা সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে। তবে আমরা সেখানে যাওয়ার সময় পাইনি। সবমিলিয়ে রাঙামাটিতে গিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছিলাম। আপনি দারুণভাবে রাঙামাটি ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করেছেন। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে প্রথমে আমি একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ব্রিজটি খুব সুন্দর ভাবে দোলে। যদিও কিছুক্ষণ পর আবার সাহস এসেছিল মনে। ঝুলন্ত ব্রিজের আশেপাশের দোকানগুলোতেই ছোট ছোট আনারস পাওয়া যেত। অতুলনীয় সেই স্বাদ। আমার নানা ধরনের চকলেট ও পাওয়া যেত। আমি তো অনেকগুলো চকলেট কিনেছিলাম সেখান থেকে। তবে রাঙ্গামাটির অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছিল সিয়াম।💞

রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে আমি একটুও ভয় পাইনি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, সেই ব্রিজটা বেশ ভালোভাবেই তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্রের ভিতরে থাকা যে ঝুলন্ত ব্রিজ, সেটাতে উঠে আমি ভয় পেয়েছিলাম একটু। কারণ একেবারে দুর্বলভাবে তৈরি করা হয়েছে সেই ব্রিজটা।

আসলে আমি একটু ভীতু টাইপের তো। খুব সহজে ভয় পেয়ে যাই। যেমন এখনো তেলাপোকা দেখলে ভীষণ ভয় পাই। হা হা হা,,তবে রাঙামাটিতে আমরা যখন স্পিডবোর্ডে একেবারে ভেতরের দিকে যাচ্ছিলাম। চারিদিকে উঁচু উঁচু পাহাড় আর ঝর্ণা দেখে অনেকটা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম। দারুন উপভোগ্য ছিল সময় গুলো। 💞

হ্যাঁ সিয়াম ভাইয়ের পোস্ট পড়ে জানতে পেরেছিলাম আপনারা স্পিডবোটে চড়েছিলেন। কিন্তু আমরা মাঝারি সাইজের ফাইবার বোট ভাড়া নিয়েছিলাম সারাদিন ঘুরাঘুরি করার জন্য।

ও আচ্ছা!!

ভাইয়া, অসাধারণ ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন! রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য আর আপনার অনুভূতি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। প্রতিটি বাক্যে মনে হচ্ছিল আমিও সেই পরিবেশে ছিলাম। ঝুলন্ত ব্রিজ, পাহাড়ি ফল আর স্পিডবোটে ঘুরার অভিজ্ঞতা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ফটোগ্রাফি এবং ভ্রমণ বর্ণনা ছিলো অসাধারণ । আপনার লেখার মাধ্যমে রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য যেন চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া, এমন সুন্দর ভ্রমণকাহিনী শেয়ার করার জন্য। আশা করি ভবিষ্যতে আরও অনেক সুন্দর ভ্রমণের গল্প শেয়ার করবেন।

[@redwanhossain]

হ্যা, অনেক ভালো সময় কাটিয়েছিলাম, ধন্যবাদ।

  ·  3 days ago (edited)

রাঙামাটিতে ঘুরতে যাওয়া আমার ও‌‌ অনেকদিনের স্বপ্ন। কিন্তু বেশ কয়েকটি কারণে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। আপনি ২০২২ সালের রাঙ্গামাটি ঘুরতে যাওয়ার কিছু মধুর স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।আর বিশেষ করে আপনি রাঙ্গামাটির বেশ কয়েকটি সৌন্দর্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে।

এখন ও অনেক ইচ্ছে করে সে সব জায়গায় ঘুরতে যাই।

রাঙ্গামাটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটি পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো। যদি কখনো সুযোগ হয় রাঙামাটি যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রাঙ্গামাটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটি আমাদের মাঝে এত চমৎকার ভাবে তুলে ধরার জন্য।

ধন্যবাদ শিপু।

পুরনো টুর সত্যিই খুব নস্টালজিক হয়। পুরনো ছবিগুলো যেন স্মৃতিকে বয়ে নিয়ে আসে ভীষণ কাছে। রাঙ্গামাটি ভ্রমণের বৃত্তান্ত যেভাবে লিখেছ তা যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। ভীষণ ভালো লাগলো পোস্টটি। স্পিড বোটে চড়ার অভিজ্ঞতা সত্যিই অন্যরকম হয়। আমাদের চারপাশে কত জানা অজানা জায়গা থাকে যা হয়তো সময়ের অভাবে দেখাই হয়ে ওঠে না।।

এবার বাংলাদেশে আসলে এক সাথে ঘুরতে যাবো।

আবার সেই স্মৃতিময় সময় গুলো মনে পড়ে গেল। আমরা দারুণভাবে উপভোগ করেছিলাম রাঙ্গামাটি ভ্রমণটি। পাহাড় ঝর্ণা পাহাড়ের লোকজন। পাহাড়ের ফল মূল সবকিছুতেই যেন অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করেছিল। সেই ঝুলন্ত ব্রিজ। তবে পাহাড়ি কলা এবং লিচুগুলো এখনো আমার জিভে লেগে আছে তার স্বাদ। সুন্দর স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলো মনে করিয়ে দেয়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
💞