সেমিফাইনাল || আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া খেলা দেখার অনুভূতি

গতকাল সারাদিন অনেক ব্যস্ত ছিলাম। খেলা শুরু হওয়ার আগ প্রযন্ত কাজ করতে করতেই সময় চলে যায় অতঃপর খেলা দেখার জন্য বাইরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলনা। প্রথমদিকে ল্যাপটপের মধ্যে খেলা দেখছিলাম বিছানায় শুয়ে শুয়ে। তবে বাইরে এত ধরনের চিল্লাচিল্লি হচ্ছিল নিজেকে কোনভাবেই ঘরের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে পারলাম না। অতঃপর বেরিয়ে পড়লাম সবার সাথে খেলা দেখার উদ্দেশ্যে।

প্রথমদিকের কিছু সময় খেলাটা অনেক জমজমাট পূর্ণ হয়েছিল। বেশিরভাগ সময় ক্রোয়েশিয়ার পায়ে বল ছিল এবং তারা অনেক ভালো খেলছিলো। কিন্তু অতঃপর পেনাল্টিতে মেসি একটি গোল করে আর্জেন্টিনা দলকে লিড এনে দেয় এবং আর্জেন্টিনার জয়ের পথে একধাপ এগিয়ে যায়। এই পর্যন্ত বাসায় বসে বসে খেলা দেখছিলাম অতঃপর গোল হওয়ার পরে বাইরে বেরিয়ে পরলাম।

মাই টিভির সামনে বিশাল বড় একটি এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে এবং সেখানেই মূলত আর্জেন্টিনার সব খেলা দেখেছি। সেখানে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে ছোটখাটো বাদাম এর দোকান, চানাচুরের দোকান, পানের দোকান। মনে হচ্ছিল কোন একটি মেলায় চলে এসেছি এবং আমার দেখা গতকাল রাতে সবচেয়ে বেশি দর্শক হয়েছিল। প্রায় ১৫০০ মানুষের কাছাকাছি এবং সম্পূর্ণ রাস্তা ব্লক হয়ে গিয়েছিল যদিও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি তবে খেলার উম্মাদনার কাছে এসব কিছুই নয়।

৩৯ মিনিটের মাথায় আরো একটি গোল হয় এবং সেই গোলটি অনেক দুর্দান্ত ছিল। সেই সাথে আর্জেন্টিনা তিন গোলে এগিয়ে যায়। আর্জেন্টিনার সমর্থকের সেই ধরনের উম্মাদনার ফুটে উঠে। রাত বাজে তখন ২ টা কিন্তু সেখানকার পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছিল রাত আটটা বাজে। খেলার এতটাই নেশা ছিল বিভিন্ন ধরনের গাড়ি আশপাশ দিয়ে যাচ্ছিল তারা গাড়ি থামিয়ে সেখানে বসে বসে খেলা দেখছিল। তাহলেই বুঝুন এই ভালোবাসাটা কোনোভাবেই মূল্যায়ন করা বা অন্য কিছু দিয়ে তুলনা করা সম্ভব নয়।

হাফটাইমের পর দর্শক এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে সেখানে বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া উপস্থিত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের ভিডিও করে। যখন গোল উদযাপন হয় সেই ভিডিও গুলো তারা করে নেয়, হয়তো আজকের নিউজ দেখেছিল তবে আমি এখনো দেখা হয়নি। সবার সাথে এভাবে খেলা দেখায় এবং নিজের প্রিয় দলের জয়ে উদযাপন করাটা সত্যি অনেক ভাগ্যের একটি বিষয়। তবে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের হাতে উঠবে। মেসির এতো বছর অপেক্ষার পরিত্রান হবে বলে আমি মনে করছি।

পরবর্তী ৬৯ মিনিটের মাথায় মেসির অ্যাসিস্ট আরো একটি গোল হয় এবং সেই গোলটি অনেক দুর্দান্ত ছিল। যতগুলো ডিফেন্ডার ছিল সবাইকে কাটিয়ে মেসি অ্যাসিস্ট করে। প্রথমদিকে ক্রোয়েশিয়া যেভাবে খেলেছিল পরবর্তীতে তাদের সে রকম খেলার ধরণ দেখতে পাইনি। অনেকটা অসহায়ের মতো লেগেছে বিশেষ করে তাদের গোলকিপারকে অনেক অসহায় লাগছিল।তারপরও ক্রোয়েশিয়া অনেক ভালো খেলেছে। তাছাড়াও আমাদের আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এর প্রশংসা করতেই হবে। সেও দুর্দান্ত কয়েকটি গোলা আটকিয়েছিলো।

আর্জেন্টিনার সবাই অনেক ভালো খেলেছে এবং একটি দলনেতা কিভাবে একটি সম্পূর্ণ টিমকে গুছিয়ে নেয় সেই বিষয়টি আমরা গতকাল অনুধাবন করতে পেরেছি। যাই হোক সব মিলিয়ে গতকাল রাতে শান্তির ঘুম হয়েছে। আশা করছি আপনারা যারা আর্জেন্টিনা সমর্থক রয়েছেন তারা আর্জেন্টিনা জয় অনেক চমৎকার উদযাপন করেছে। এই ছিল আমার খেলা দেখার অনুভূতি। এখন শুধুমাত্র ফাইনাল খেলা দেখার অপেক্ষা। এখন আরেকটি মাত্র ম্যাচ রয়েছে, সেই ম্যাচটি জিততে পারলেই মেসির হাতে উঠবে বিশ্বকাপ।

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: সেমিফাইনাল || আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া খেলা দেখার অনুভূতি

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......