আপনারা যারা এই গল্পের এখনো প্রথম পর্বটি পড়েননি আগে প্রথম পর্বটি পড়ে আসুন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় পর্ব পড়ার চেষ্টা করুন, তবে চলুন দ্বিতীয় পর্ব শুরু করছি।
ছোট গল্প || জীবনের প্রথম ভালোবাসা (১ম পর্ব)
সেদিন মেঘ এবং তার বন্ধুরা কোন মত বাসায় চলে আসে এবং পরবর্তী দিন যখন তারা টিউশনিতে যায় তখন শুনতে পারে মেয়েগুলো নাকি তাদের নামে কমপ্লেন করেছি। কি কমপ্লেন? তারা নাকি কথা বলেনা। পরবর্তীতে ওইদিন স্যার সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং তাদের সাথে প্রথম তখন কথা বলা হয় মেঘ এবং মিম এর মাঝে।
এভাবে করে বেশ কিছুটা দিন অতিবাহিত হয়ে যায় এবং মেঘের সাথে মিমের একটি ভালো বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। যদিও তারা শুধুমাত্র টিউশনিতেই কথা বলে স্কুলে যেন কেউ কাউকে চেনেই নাই। এরকম একটা অবস্থা কিন্তু এটা কেন সেটা কেউ জানে না। মেঘ এবং মিম যে স্যারের কাছে টিউশনে পড়তো সেই স্যার আরো অনেকগুলো ক্লাসের ছাত্রদেরও প্রাইভেট পড়াতো। মাঝে মাঝে দেখা যেত তারা প্রাইভেটে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো এবং সেই সময় অন্য ব্যাচকে ছুটি দিতে হতো। তেমনি একদিন মেঘ এবং মিম আগেভাগেই কেন জানি টিউশনে চলে গিয়েছে। এখনো ১০-১৫ মিনিটের মতো বাকি ছিল। মেঘ এবং মিম টিউশন এর পাশেই একটি বড় আম গাছে রয়েছে সেই আম গাছের নিচে বসেই গল্প করছিল, তেমন কিছু না শুধুমাত্র পড়াশুনার গল্প।
মেঘ কোনদিন কোন মেয়ের সাথে এভাবে করে কথা বলে নি তাই তার মধ্যেও একটা অন্যরকম ফিলিংস চলে আসে। দেখতে দেখতেই হঠাৎ করেই মিম একটা চিৎকার দিয়ে উঠলো। মেঘ বুঝে উঠতে পারলো না কি হয়েছে। পরক্ষণে স্যার ও দৌড়ে চলে আসলো যে, কি ব্যাপার চিৎকার করলো! কেন পরবর্তীতে জানতে পারলেও মেঘের পায়ে নাকি একটি পোকা উঠছিল এবং সেই পোকাটি দেখেই সে এত চিৎকার করেছে। অথচ মেঘ বুঝতেই পারেনি তার পায়ের উপর পোকা উঠছিল, এতটাই সে মগ্ন ছিল।
মেঘ ম্যাথমেটিক্সে অনেক ভালো ছিল তাই মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ধরনের কুইজে সেই সব সময় প্রথম স্থান অধিকার করত। ফাইনাল পরীক্ষায় সব সময় সে ১০০ তে ১০০ পেতো কিন্তু ইংরেজি সাবজেক্ট এর জন্য সে প্রথম দ্বিতীয় হতে পারত না। একদিন টিউশন স্যার একটি কুইজের ব্যবস্থা করেন এবং সেই কুইজটা ছিল ম্যাথমেটিক্স এর উপরে। কুইজের সময় ছিল এক ঘন্টা কিন্তু মেঘ সেটা ২৫ মিনিটেই কমপ্লিট করে স্যারকে জমা দেয় এবং প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর সঠিক ছিল। এই দিকে মেয়েদের যে গ্যাং ছিল তারা দুটি প্রশ্ন সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারেনি। এই বিষয়গুলো দেখে তারা মেঘ এবং তার বন্ধুর উপর অনেক ক্ষেপে যায়।
বুঝেনেই তো মেয়ে মানুষরা যদি একটু কখনো কিছুতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার প্রতিপক্ষের উপর অনেকটা ক্ষেপে যায়। হাহাহা। সেই টিউশন স্যারের একটি ভালো গুণ ছিল সে প্রতিদিন কুইজ নেওয়ার পরে একটি করে কলম উপহার দিত, যে সবথেকে বেশি নাম্বার পায়। মোট কথা মেঘ প্রতিদিনই একটি একটি করে কলম জমিয়ে রাখে। একদিন মিম বলে উঠল এবার যদি তুমি ফার্স্ট হও তাহলে তোমাকে আমি একটি গিফট দিব। মেঘ ও অবাক হয়ে গেল! কখনো কোন মেয়ের কাছ থেকে মেঘ গিফট পায়নি। তাই অনেকটাই এক্সাইটেড ছিল। পরবর্তী দিনে কেমিস্ট্রির উপরে একটি কুইজ ছিল এবং সেই কুইজেও সে বরাবর প্রথম হয়।
তবে টিউশন স্যারের একটি ভালো গুন ছিল তিনি ম্যাথেমেটিকস কিংবা ফিজিক্স বা কেমিস্ট্রির বিষয়গুলোকে বানিয়ে বানিয়ে দিত অর্থাৎ বইয়ের বাইরে দিত। যার কারণে মিম এবং তার গ্যাং সেগুলোর সমাধান করতে অসুবিধা হতো। মেয়ে মানুষরা তো অনেকেই জানেন, ম্যাথমেটিক্স মুখস্ত করে হাহাহা। সেই বিষয়টি হয়েছে আর কি। তো সেদিনের মত মেঘ এবং মিম বাসায় চলে যায়। মেঘ মাঝে মাঝে ভাবতে থাকে কি গিফট দিতে পারে! নাকি সে আমার সাথে মজা করছে! যদিও পরবর্তী দিনই সে বিষয়টি জানা যায় আসলে গিফট টা কি ছিল। মেঘের কেন জানি সময় কাটছিল না। পরবর্তী দিনই প্রায় ৩০ মিনিট আগেই টিউশনিতে চলে আসে। মিম সে ঠিক সময় মত টিউশনিতে চলে আসে। এই দিকে টিউশন স্যার টিউশন পড়াচ্ছিল। এদিকে মেঘ মনে করে মিম হয়তো গিফট আমার কথা ভুলে গিয়েছে। তাই সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে টিউশন পড়তে লাগলো। এমন একসময় স্যারের ফোন আসলো স্যারের ইমারজেন্সি যেতে হবে, প্রায় ৩০ মিনিট পরে স্যার চলে গেল।
স্যারেরর বাসার বাহিরে জায়গা ছিল স্যারের বারান্দায় অর্থাৎ মেঘ ও মিমরা স্যারের বাসায় ঢুকেই সেখানে বসে টিউশন করতে পারতো। তাই স্যার চলে যাওয়াতে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। এই দিকে গতকালকের কুইজের যেসব সমস্যা ছিল সে সব সমস্যার সমাধান করে দিয়ে যেতে পারেনি। তাই মিম এবং তার গ্যাং এর মেয়েরা অনুরোধ করল বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। মেঘ সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে লাগলো। ম্যাথগুলো বোঝানোর শেষে যখন মেঘ চলে যাবে তখন মিম ব্যাগ থেকে একটি গিফট বার করল। খুব ছোট একটি গিফট। গিফট পেয়ে অনেক খুশি তবে মেঘ তারপরও কেন জানি নিতে চাচ্ছিল না। মিম অনেকটা জোড়াজড়ি করার পরে সে গিফটটা নিল এবং মিম অনুরোধ করলে এটা বাসায় যাওয়ার আগে যেন কোনভাবেই না খোলা হয়।
মেঘ খুব এক্সাইটেড ছিল। মেঘ খুব তাড়াতাড়ি সাইকেল নিয়ে বাসা ঢেকে রওনা হলো এবং তার রুমে ঢুকে যখন এসে গিফট খুলল, সেটা দেখে অনেকটাই ভয় পেয়ে গেল। কি দেখতে পেল সেটা অবশ্যই পরবর্তী পর্বে আমরা জানব। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাইকে ধন্যবাদ।
চলবে......
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ছোট গল্প || জীবনের প্রথম ভালোবাসা (দ্বিতীয় পর্ব)
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়েই গল্পটি ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছিল আমার কাছে। এই ধরনের গল্প পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। তবে অনেক মেয়েরা কিন্তু সত্যি সত্যি ম্যাথমেটিক্স মুখস্থ করে😂। আমি এমন অনেক মেয়েকে দেখেছি স্কুল লাইফে। এমন এক জায়গায় আজকের পর্বটি শেষ করলেন ভাই, কি গিফট দিলো মিম মেঘকে, সেটা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে হাহাহা। যাইহোক কি আর করার,অপেক্ষা তো করতেই হবে। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন আমাদের সাথে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit