নমস্কার,
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি ঈশ্বরের কৃপায়।
তবে আমার মামাতো ভাই লিখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরেছে। লিখন নেভি কলেজ এর এইচ এস সি ১ম বর্ষের ছাত্র।লিখনকে দেখতে গিয়েছিলাম কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সে বিষয়ে কিছু বলতে যাচ্ছি।
হাসপাতালের বেডে লিখন
হঠাৎ একদিন জ্বর হলো। একদিনের জ্বরেই লিখন দুর্বল হয়ে পড়ে। খাওয়া-দাওয়া রুচি একদমই ছিল না। আমি শুনে পরে মামার বাসাই যেয়ে মামিকে বললাম ডেঙ্গু টেস্ট করার কথা। মামি বলল যে দেখি আর এক দিন। এভাবে ২ দিন যাওয়ার পর লিখন আমাকে বলল যে দাদা আমার সারাশরীর অনেক বেথা করতেছে। পরে মামিকে আবার বললাম টেস্ট এর কথা৷
পরের দিন মামি লিখন এর ডেঙ্গু টেস্টের জন্য ব্লাডের স্যাম্পল দিয়ে আসলো। রিপোর্ট আসলো ডেঙ্গু পজেটিভ এবং ব্লাদে প্লাটিলেট ১ লক্ষ ৭৬ হাজার।
এ অবস্থায় লিখনকে বাসায় রেস্ট নেওয়ার কথা বলা হল এবং বেশি বেশি তরল খাবার খেতে বলা হলো। কিন্তু লিখন কোন খাবার এ খেতে পারছিলো না।
পরের দিন আবার প্লাটিলেট নেমে আসলো ১ লক্ষ ২ হাজার এ। সবাই একটু চিন্তায় পরে গেলাম যে প্লাটিলেট আস্তে আস্তে কমছে বাড়ছে না।
পরের দিন আবার কমে ৮২ হাজার এ আসছে। কিন্তু হঠাৎ করে রক্ত বমি করা শুরু করেছে। আমরা সবায় অফিস এ ছিলাম পরে মামির অফিস বাসার কাছাকাছি ছিলো। পরে সংগে সংগে মামি এসে লিখন কে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এ ভর্তি করলেন।
আমি অফিস থেকে তারাতাড়ি করে হাসপাতালে যাই। নিচে যে মামীকে ফোন দিলাম যে কোন ফ্লোরে আসতে হবে আর কোন পাশের লিফটে আসতে হবে। মামি বলল অন্তু (আমার ছোট ভাই) নিচে আছে দেখো। পরে অন্তুকে খোঁজার জন্য এপাশ ওপাশ তাকাচ্ছিলাম এরমধ্যে হঠাৎ সামনে দেখি লিখন দাঁড়িয়ে। বললাম তুই নিচে কেন? বলল তোমাকে নিতে আসছি। আসলে ওর বন্ধুদের সংগে নিচে নেমেছে হাটার জন্য।
পরে ওর সংগে ওপরে উঠলাম। উপরে লিখিন এর বেডে মামি বসেছিল মামির সঙ্গে কথা বললাম এবং রিপোর্টগুলো দেখলাম। পুরুষ বিভাগ হওয়ায় রাতে মামি থাকতে পারবেন না। মামাকে থাকতে হবে। পরে মামার সব কিছু রেডি করে দিয়ে এবং রাতের খাবার কিনে দিলাম।
হাসপাতালে ক্যান্টিন টা অনেক বড় এবং অনেক সুন্দর কিন্তু রাত আটটার পর ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যায়। অনেক অনুরোধ করে একজনের খাবার পার্সেল নিলাম। মামাকে ওখানে রেখে মামিকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসার কাছে এসে মামির জন্য রাতের খাবার কিনে নিয়ে মামিকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম।
পরের জন্য টেস্ট করিয়ে দেখা হল প্লাটিলেট কমে ৭৬ হাজারে চলে আসছে। কিন্তু লিখন এখন শারীরিকভাবে সুস্থ। প্রতিদিন ইঞ্জেশন এবং স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। যার কারনে দুর্বলতা টা নেই। কিছুক্ষন পর আমাকে বলছে যে দাদা আমিতো সুস্থই আছি স্যালাইন টা শেষ হইলে চলো বাসাই যেয়ে ঘুম পেরে আবার বিকেল এ আসবো। পরে আমি বকা দিয়ে বললাম ঘুমা এখন। ওইদিনও ওখানেই থাকতে হল।
পরের দিন টেস্ট এর রিপোর্ট আগের চেয়ে ভালো। প্লাটলেট বেড়ে ৭৯ হাজার হয়েছে। তখন সবায় একটু স্থির হলাম। কিন্তু লিখন আর তাহলে থাকতে চাচ্ছে না। সে নিজে নিজেই জুনিয়র ডক্টরের সঙ্গে কথা বলেছে যে আমাকে ২ ঘন্টার জন্য ছুটি দেন আমার একটা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরে ডক্টর সেটা মামাকে বলে দিছে। মামা আবার আমাকে ফোন দিয়ে বললো যে তোর ভাই এসব করতেছে। পরে আমি ফোন দিয়ে লিখন কে বোঝালাম। পরে আর যায় নি।
পরের দিন লিখন কে রিলিজ দিয়ে দিলে তাকে বাসায় নিয়ে রেস্ট এ থাকতে বলি।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কিছু ছবিঃ
এটাই ছিলো আমার আজকের আয়োজন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
বিষয় | লিখনকে দেখতে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে |
---|---|
ফটো ক্রেডিট | @amitroy |
ডিভাইস | রেডমি নোট ৮প্রো |
লোকেশন | কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে, ঢাকা |
এটা সত্যিই একটা খারাপ সংবাদ ছিল। এখন তো জ্বর আসলে সবাই দুর্বল হয়ে পড়তেছে। আমাদের বাড়ির পাশে বেশ কয়েকজনের জ্বর এসেছে, কারোরই ডেঙ্গু পজেটিভ নয় কিন্তু সবাই অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। সাবধান থাকতে হবে আর সতর্ক থাকতে হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যা একদম ঠিক বলেছেন ঋতু পরিবর্তনের জন্য এখন অনেকেরই জ্বর হচ্ছে। আর ভাইরাস জ্বর হওয়ার কারণে সবাই শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়তেছে। কিন্তু এর মাঝে ডেঙ্গুর প্রকোপও অনেক বেড়েছে। ডেঙ্গু নাকি ভাইরাস জ্বর সহজে বোঝা যায় না কি হয়েছে। তবে আমাদের সবারই অনেক সাবধানে থাকতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মামাতো ভাই বোধ হয় খুব ইঞ্জয় করে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস গুলো, তাই তো জুনিয়র ডাক্তারদের ম্যানেজ করতে চেয়েছিলো বিতর্ক প্রতিযোগিতার জন্য.. যা হোক, অবশেষে অবস্থা ভালোর দিকে জেনে ভালো লাগলো। কারণ রক্তবমি হওয়াটা তো খুব বেশি ভালো না...
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সে এখন অনেকটা ভালো আছে। আর বলবেন না সে অনেক বেশি চালাক। আর অনেক ছোট থেকে সে ডিবেট করে। এখন পর্যন্ত অনেকগুলো বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। পড়ালেখার চেয়ে অনেক মজা পায় সে এসব করে। যার কারণে ডিবেট এর জন্য এত্ত কিছু করছে সে। তবে অবশেষে আমার কথায় সে আর যায় নাই। তবে লিখনকে আমি অনেক সাপোর্ট করি এসব এর জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে বলার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit