।। তাল পাকার আগেই শেষ ! ।। 10% shy-fox & 5% abb-school beneficiary।।

১লা আষাঢ় /১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
১৫জুন/২০২২ইং।
রোজ-বুধবার।

নমস্কার বন্ধুরা,
আমি @amitab বাংলাদেশ থেকে, আজ ১লা আষাঢ় বর্ষাকালের শুরু।"আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষী সকল বন্ধুদের জানাই বর্ষাকালের রিমঝিম শুভেচ্ছা। আশারাখি সকলেই ভাল আছেন। আমি বিশেষ ভালো নেই, শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ। শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ হলেও বেঁচে আছি বলতে পারেন শুধু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির জন্য। আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী "তাল" এর বিচিত্র গল্প শোনানোর জন্য। আশাকরি গল্পটি সবারই ভালো লাগবে। তাহলে এবার আর দেরি নয়, চলে আসা যাক মূল কথায়।

।। তাল পাকার আগেই শেষ ! ।।

কয়েকদিন আগে বাড়ির নিকটে বাজারে গিয়েছিলাম ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে খরচা করতে। বাজারের ভিতরে ঢোকার পূর্বমুহূর্তে চৌমাথা মোড়ে লক্ষ্য করলাম বেশ কিছু লোকের গোলাকার আকৃতির একটি জটলা।

তাল ফলের চিত্র-০১

এসকল তাল কাঁচাতেই বিক্রি করা হচ্ছে

ভাবলাম কোনো মেজিসিয়ান হবে, সন্নিকটে যাইতে যাইতে জটলা একটু হালকা হয়ে গেল। গিয়ে দেখি সেখানে কাঁচা তালের আঁশ বিক্রি করা হচ্ছে। লোকজন তা বেশ মজা করে খাচ্ছে আবার কেউ পলিথিনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।

তাল ফলের চিত্র-০২

উপরের চিত্রে বিক্রেতা পলিথিনে করে কালের আঁশ দিচ্ছেন ক্রেতাকে।
বিক্রেতা একটি কাঁচা তাল ১৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। অনেকে আবার তালের একটি আঁশ (আটি) কিনে নিচ্ছে। প্রতি আটি ৫ টাকা করে। এই কাঁচা তাল দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।

তাল ফলের চিত্র-০৩

উপরের চিত্রে বিক্রেতা কাঁচা তাল কেটে আঁশ করছেন।

বাড়ির নিকটে আমাদের একটা আবাদি জমি ছিল। সেইজমির ধারেই ছিল ২টি তালের গাছ। ভাদ্র মাসে তাল কুড়ানোর লোভে তাল গাছের নিচে গিয়ে বসে থাকতাম। যেদিন যাইতাম সেদিন সারা দিনে কমপক্ষে ৫-৬টি পাকা তাল নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। আর পাকা তাল নিয়ে বাড়ি ফিরলে অত্যন্ত খুশী হত মা।

তাল ফলের চিত্র-০৪

উপরের চিত্রে কাঁচা ফল বিক্রেতা এক ক্রেতাকে পলিথিনে করে তালের আঁশ দিচ্ছেন।

কুড়ানো পাকা তাল দিয়ে মা আবার আমাদের তালের বিভিন্ন প্রকার পিঠা, তালের ঝাল মিষ্টি বড়া ও তালের ক্ষীর তৈরি করে দিতেন। বেশ মজা করে খেতাম বাড়ির সকলে। কিন্তু এখন প্রায় দু-তিন বছর হল, বাজারে পাকা তাল আর চোখেই পড়ে না।

তাল ফলের চিত্র-০৫

উপরের চিত্রে একজন মুরুব্বী ভ্যানে করে কাঁচা তাল বিক্রি করছেন।

পাকা তাল এর অভাবে দু-তিন বছর হচ্ছে, তালের পিঠা, তালের ক্ষীর, বিভিন্ন প্রকার বড়া খাওয়া হয়নি। ভাদ্র মাসের তাল এখন জ্যৈষ্ঠ মাসে কাঁচা তেল শেষ। তাহলে এখন এভাবেই কার সাথে বিক্রি করা হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের গ্রাম গঞ্জের নয় শহর-বন্দর গুলোতেও।* *কাঁচা তাল বিক্রেতারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে তাল গাছের তাল কিনে নিয়ে বাজারে নিয়ে এভাবেই বিক্রি করছে দেদারছে। কাঁচাতে তাল বিক্রির এই প্রচলনটি অব্যাহত থাকলে আগামী প্রজন্ম পাকা তাল চোখেই দেখবে না। সেই সাথে তারা জানতেও পারবেনা যে, তালের বিভিন্ন প্রকার পিঠা পায়েস, ক্ষীর ও ঝাল মিষ্টি বড়া খাওয়া যায়। এখন আমরা হয়ে গেছি ডিজিটাল পৃথিবীর ডিজিটাল মানুষ।

তাল ফলের চিত্র-০৬

উপরের চিত্রে আরেকজন কাঁচা তাল বিক্রেতাকে ক্রেতাকে দেওয়ার জন্য তালের আঁশ বের করতে দেখা যাচ্ছে।

গতানুগতিক স্বাভাবিকতার সবকিছুতেই আমরা এখনো স্বাভাবিক মানুষ। সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কারোরই নেই কোনো উদ্বেগ, পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাহন বা ধারণ করার। কেমন জানি দিনে দিনে সবাই হয়ে যাচ্ছি উল্টো মানুষ।

তাল ফলের চিত্র-০৭

উপরের চিত্রে এক যুবককে তালের আঁশ মজা করে খেতে দেখা যাচ্ছে।

বন্ধুরা, এই ছিলো আছে আমার কাঁচা তাল এর গল্প আজ এ পর্যন্তই, আবার আগামীকাল কথা হবে অন্য কিছু নিয়ে। সে পর্যন্ত সাথেই থাকুন, সুস্থ থাকুন, সবার দীর্ঘায়ু ও শুভ কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় শুভরাত্রি।।

নাম	শ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব।
User Id	@amitab
Camera	Symphony Mobile phone.
Mobile Phone Model	Z-35.
Photo Location	Bhandari.
My Address	Bhandavari Prigonj Rangpur Bangladesh.

Writing location