"তীব্র দাবদাহের বিরুপ প্রভাব"

in hive-129948 •  8 months ago  (edited)


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৩ রা মে, শুক্রবার, ২০২৪ খ্রিঃ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

1000083482.jpg

Pixabay



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। কয়েকদিন আগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। গ্রামে এসে প্রকৃতির মাঝে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করছি। গ্রামীন প্রকৃতি আমার কাছে সব সময় অনেক বেশি ভালোলাগে। তবে তীব্র দাবদাহের কারণে গ্রামীণ প্রকৃতিও কঠিন সংকটে আছে। বর্তমানে আমাদের দেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভীষণ দাবদাহ চলছে। আর এই দাবদাহের কারণে সব কিছু শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। এই তীব্র দাবদাহের বিরুপ প্রভাব নিয়ে আমি আপনাদের সাথে কিছু আলোচনা করবো।



আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতি কখনো সদয় আবার কখনো নির্দয় হয়ে যায়। তবে প্রকৃতির সদয় কিংবা নির্দয় হওয়ার পেছনেও থাকে প্রাণী জগতের ভীষণ ভূমিকা। আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব তাই আমাদের ভূমিকাটা থাকে সবথেকে বেশি। বর্তমানে মানুষ হিসাবে মনে হয় আমরা প্রকৃতিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করছি না। কারণ প্রকৃতিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে প্রকৃতি কখনো নির্দয় হয় না কাউকে নিরাশ করে না।

মানুষ বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই প্রকৃতিকে ব্যবহার করবে কিন্তু অতিরিক্ত আয়েশ অতিরিক্ত বিনোদন বা সুবিধার জন্য যদি প্রকৃতিকে মিস ব্যবহার করা হয় তাহলে প্রকৃতি নির্দয় হবেই হবে। তাই আমাদের সবার উচিত প্রকৃতিকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করা। তাহলেই আমরা প্রকৃতির থেকে সুন্দর আচরণ পাবো। আর প্রকৃতি সুন্দর হলেই আমরা মানুষ বা প্রাণী জগৎ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারবো।

বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত সহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। এই তীব্র দাবদাহের কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর প্রভাব। যদিও বিজ্ঞানীরা এল নিনোর প্রভাব অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে। আমাদের মানবজাতি বা প্রাণীজগতের কারণেই বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। এই বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাতে অনেক বছর সময় লেগে যায়।

এটা সাধারণভাবে আমরা খুব অল্প সময়ে উপলব্ধি করতে পারব না। তবে আমার কাছেও মনে হয় বৈশ্বিক জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলেই বর্তমানে তীব্র দাবদাহ চলছে। আবার কিছুদিন আগে দুবাইয়ের মত মরুভূমির শহরেও প্রচন্ড বৃষ্টির ফলে বন্যা হয়েছে এর সব কিছুই বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাব। এক কথায় যেখানে যেটা হওয়ার কোন দরকার নেই বা প্রয়োজন নেই সেখানে সেটা হচ্ছে।

বর্তমানে তীব্র দাবদাহের কারণে শহুরে জীবন যেমন বিপর্যস্ত হয়েছে তেমনি গ্রামীণ জীবন ও ভীষণ বিপর্যস্ত হয়েছে। কয়েকদিন আগেও যখন ঢাকা শহরে ছিলাম তখন ভাবতাম যে, তীব্র দাবদাহের কারণে শহরের মানুষ হয়ে বেশি কষ্টে থাকে। তবে শহর থেকে গ্রামে আসার পরে এই ধ্যান ধারণাটা পাল্টে গেছে। গ্রামে এসে দেখতে পাচ্ছি গ্রামীণ জনজীবনও ভীষণ কষ্টে আছে।

এই তীব্র দাবদাহের কারণে বর্তমানে মানুষের রোগ ভীষণ পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ‌ বর্তমানে জন্ডিস হিট স্টক সহ বিভিন্ন রোগ হচ্ছে। তীব্র দাবদাহের কারণে হিট স্টকে এই কয়দিনে বাংলাদেশে অনেক লোকের মৃত্যু হয়েছে। আর এইসব কারণেই সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকদিন বন্ধ ছিলো। তীব্র দাবদাহ শিক্ষার উপরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে, যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের ৯০% মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষিকাজ করে থাকেন। আর এই তীব্র দাবদাহের কারণে তাদের কৃষিকাজে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। কারণ মাঠে যে কোনো ফসল উৎপাদনের জন্য জল ভীষণ জরুরি। তীব্র দাবদাহের কারণে মাঠঘাট শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। কৃষকের সবুজ ফসলের ক্ষেত জলের জন্য অপেক্ষা করছে।

কৃষকের ফসলের ক্ষতি মানে আমাদের সবার ক্ষতি। কৃষকের ফসল যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে ফসলের উৎপাদন কমে যাবে আর উৎপাদন যখনই কমে যায় তখনই দাম বাড়তে থাকে। বর্তমানে আমাদের দেশের সবকিছুর দাম এমনিতেই উচ্চ মূল্যে রয়েছে তার পরেও যদি আরো অমূল্য বৃদ্ধি পায় তাহলে আমাদের সবার জন্যই ক্ষতি হবে।

বর্তমানে গ্রামে আসার পরে লক্ষ্য করছি যে, গ্রামীন টিউবয়েল গুলো পানি শূন্য হয়ে গিয়েছে। খুবই অল্প সংখ্যক গভীর টিউবওয়েল আছে যেগুলো থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন গ্রামের একশটা টিউবয়েলের উপর জরিপ চালালে দেখা যাবে ৯০ টি টিউবয়েলে পানি ওঠে না।

গ্রামীণ মাঠঘাট এমনিতেই শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে তারপরে যদি টিউবয়েলে পানি না উঠে তাহলে গ্রামীণ জনজীবন কতটা বিপর্যস্ত তা একটু ভেবে দেখুন। বাড়িতে আসার পরে হঠাৎ করে পানি পিপাসা পেলেও মন মতো পানি খেতে পারছি না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পানির ব্যবহার ব্যাপক।

তীব্র দাবদাহ প্রাণিজগতের ওপর ভীষণ বাজেভাবে প্রভাব ফেলছে। হয়তো এটা খুব দ্রুত সমাধান হবে না তবে আস্তে আস্তে আমাদের নিজেদেরকেই সমাধান করতে হবে। আমাদের উচিত প্রকৃতিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা তাহলে এই প্রকৃতি আবার সুন্দর হয়ে উঠবে। আমাদের উচিত বেশি বেশি পরিমাণ বৃক্ষরোপণ করা এবং বৃক্ষ নিধন বন্ধ করা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের খবর অনুযায়ী বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের এই দিকেও বৃষ্টি শুরু হবে। সবাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেনো আবহাওয়ার এই বিরূপ প্রভাব থেকে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে রক্ষা করেন।



পোস্টের বিবরন

পোস্ট ধরনজেনারেল রাইটিং
তারিখ৩ রা মে ২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশনকুষ্টিয়া


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রচন্ড তাপদাহের জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে মানুষ।
মানুষ যদি নৃশংসভাবে প্রকৃতিকে নিধান না করতো। গাছপালা কেটে নগর গড়ে না তুলতো তাহলে হয়তো আমাদের এই প্রচন্ড তাপদাহের কষ্ট সহ্য করতে হতো না।
মানুষ গাছ কেটে ইমারত নির্মাণ করছে সেই ইমারত ঠান্ডা করার জন্য এসি ব্যবহার করছে।
প্রকৃতি ধ্বংসের পিছনে পুরোটাই মানুষের হাত রয়েছে।

হ্যাঁ তুমি ঠিকই বলেছ প্রকৃতি ধ্বংসের পিছনে পুরোটাই মানুষের হাত রয়েছে। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

image.png

আমি মনে করি বর্তমান পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে সবুজ প্রকৃতি নিধন।মানুষ নিজেদের ভূমি দখলের উদ্দেশ্যে ও ঘরবাড়ি করার উদ্দেশ্যে গাছপালা কেটে সব নিধন করে ফেলছে। এর ফলে আজকে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বেশ দারুন একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ধন্যবাদ।

আসলে ভাই এর পেছনে অনেক কিছুই দায়ী আছে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

জি ভাই আমিও মনে করি এর পেছনে অনেক কিছুই দায়ী আছে।