ভ্রমণ:- "রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের উদ্দেশ্যে-১ম পর্ব"

আমরা সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ শেষ করে দুইদিন পিসিমনির বাসায় রেস্ট নিলাম। তারপর আমরা প্ল্যানিং করলাম সিলেটের রাতারগুল, সাদা পাথর, বিছানাকান্দি আর জাফলং ভ্রমণ করবো। আমরা সবাই মিলে ভ্রমণের জন্য দিন ঠিক করলাম। তারপর ভ্রমণের দিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভ্রমণের জন্য রেডি হলাম। এবারে যেহেতু অনেক লং ড্রাইভের ভ্রমণ তাই দুইটি মোটরসাইকেলে চার জনের বেশি যেতে পেরেছিলাম না। আমি আর আমার বন্ধু রাহুল এক মোটরসাইকেলে ছিলাম আরেক মোটরসাইকেল ছিল আমার দাদা আর পলাশ কাকা।

এবারের ভ্রমণে আমরা যেহেতু অনেক জায়গায় ঘুরবো এবং আমাদের ভ্রমণটা অনেক লং ড্রাইভের হবে তাই ভ্রমণের জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন সবকিছুই নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার আর আমার বন্ধু রাহুলের জন্য একটা ব্যাগ নিয়েছিলাম আর সাথে ছিল ডিএসএলআর ক্যামেরা। আবার পিসি মনির বাসা থেকে বের হয়ে বাইক আনার জন্য প্রয়াত বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বাড়িতে গেলাম। সেন মার্কেটে গ্যারেজ না থাকার কারণে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বাড়িতেই আমরা বাইক রাখতাম। ভাই বের করে আমরা আমাদের ব্যাগ পত্র মোটরসাইকেলে বেশ ভালো করে বেঁধে নেই। কারণ লং ড্রাইভের জার্নির ক্ষেত্রে হাতে বা কাঁধে ব্যাগ নেওয়া ঠিক না।

আমরা ঠিক সাড়ে ছয়টার দিকে সেন মার্কেটের সামনে থেকে বাইক নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদেরকে রাতারগুল ভ্রমণের জন্য প্রথমে যেতে হবে সিলেট বিভাগীয় শহরে। দিরাই থেকে সিলেট বিভাগীয় শহরের দ্রুত ৮০ কিলোমিটার। আর এই ৮০ কিলোমিটার পথ বাইকে নির্বিঘ্নে অতিক্রম করতে আমাদের সময় লাগবে প্রায় দুই ঘন্টা। আমরা যেদিন ভ্রমণে বের হয়েছিলাম সেদিনে সকালের পরিবেশটা ছিলো মেঘলা মেঘলা।

আমরা মোটামুটি ১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পরেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। তারপর আমরা পথের পাশে একটি দোকানে বাইক থামিয়ে সবাই রেইনকোট পড়ে নিলাম। সকালে শুরুটা মেঘলা মেঘলা হওয়ার কারণে আমরা বাসা থেকে রেইনকোট নিয়ে বের হয়েছিলাম। ‌ কারন আমরা অনুমান করেছিলাম যে, হয়তো আমাদের এই ভ্রমণে রেইনকোট প্রয়োজন হবে। আমরা সবাই রেইনকোট পড়ে বৃষ্টির ভেতরেই বাইক নিয়ে সিলেটের দিকে যাইতে থাকলাম।

তারপর কিছুদূর যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে বৃষ্টি কমে গেলো। কিন্তু আকাশটা মেঘলা মেঘলা ছিলই তাই আমরা রেইনকোট আর না খুলে এভাবেই সামনের দিকে আগাতে থাকলাম। ‌ বৃষ্টি ব্যতীত রেইনকোট পড়ে থাকলে অবশ্য ভীষণ গরম লাগে। যদিও আমাদের একটু অসুবিধা হচ্ছিল তারপরেও সময় বাঁচানোর জন্য আমরা আর কোথাও না থেমে আমাদের জার্নি অব্যাহত রাখি। হাওরের ভেতরের রাস্তা দিয়ে বাইকে করে যেতে ভীষণ ভালো লাগছিলো। অবশ্য বৃষ্টির কারণে অনেক ছবি মোবাইলে ধারণ করতে পেরেছিলাম না। তারপরেও চোখ দিয়ে হাওরের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও উপভোগ করেছিলাম।

আমরা খুব সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম তাই রাস্তাতে গাড়ি চাপ অনেক কম ছিলো। আমরা মোটামুটি দেড় ঘণ্টা বাইক জার্নি শেষে সিলেট বিভাগীয় শহরের ভেতরে ঢুকলাম। খুব তাড়াতাড়ি সিলেট শহরের ভেতরে পৌঁছাতে পেরে বেশ ভালই লাগছিলো। আর খুব সকাল হওয়ার কারণে সিলেট শহরের ভেতরে কোন যানজট ছিলো না।

তারপর আমরা সকালের নাস্তা করার জন্য একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে পরোটা, ডাল আর ডিম ভাজি অর্ডার করি। কয়েক মিনিট বসে অপেক্ষা করতে আমাদের খাবার টেবিলে দিয়ে যাওয়ার পরে আমরা খুব তাড়াতাড়ি সকালের নাস্তা সেরে নিই। চলবে.......

প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।

VOTE@bangla.witness as witness