"একজন রিক্সাওয়ালার গল্প"

in hive-129948 •  2 months ago 


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ১ লা অক্টোবর, মঙ্গলবার, ২০২৪ খ্রিঃ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

1000127533.jpg

Pixabay



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে কয়েকদিন ধরে সার্ভার প্রবলেম থাকার কারণে পোস্ট বা কমেন্ট করতে বেশ অসুবিধার শিকার হতে হচ্ছে। যদিও আমরা আশা করছি এই সার্ভার সমস্যাটি খুব দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে। কারণ আমরা এর আগেও দেখেছি অনেকবার স্টিমিট সার্ভারে সমস্যা হয়েছিল আবার খুব দ্রুতই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। আমি কিছুদিন আগে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই পোস্ট করতাম কিন্তু বর্তমানে রাতে পোস্ট করার অভ্যাস হয়ে গেছে। আর রাতেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে সার্ভার বর্তমানে ডাউন থাকছে। আর এই কারণে কাজ করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। এজন্য আজকে থেকে রাতে পোস্ট না করে দিনেই পোস্ট পোস্ট করবো ভেবেছি। আমি আশা করছি খুব দ্রুতই স্টিমিটে সার্ভার ডাউন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে, আমি ঢাকাতে থেকে লেখাপড়া করি। প্রায় দিনই কোন না কোন কাজে বাইরে যেতে হয়। গতকালকে একটু প্রয়োজনীয় কাজে বসুন্ধরা শপিংমলে গিয়েছিলাম। বসুন্ধরা শপিং মল যেহেতু আমাদের মোহাম্মদপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তাই বেশিরভাগ সময়ে রিকশাতে করেই যাওয়া হয়। কারণ মোহাম্মদপুর থেকে বসুন্ধরা শপিংমলে যাওয়ার কোন বাস নেই। আমাদের মোহাম্মদপুর থেকে দিনের বেলায় বসুন্ধরা শপিংমলে যেতে রিকশা ভাড়া লাগে ১০০ টাকা।

গতকালকে যাওয়ার সময় ১০০ টাকা দিয়ে রিক্সা ভাড়া করে বসুন্ধরা শপিং মলে গেলাম। তারপর প্রয়োজনীয় কাজ সেরে আবার আরেকটি রিকশা ভাড়া করতে গেলাম। আমি পরপর দুইজন রিক্সাওয়ালার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম মোহাম্মদপুর যেতে কত টাকা নিবেন? আমার কাছে একজন রিকশাওয়ালা বললো ১৫০ টাকা আর একজন বলল ১৬০ টাকা। সত্যি কথা বলতে তাদের এই বেশি ভাড়ার কথা শুনে আমি খুব বিরক্ত হলাম। কারণ অরিজিনাল যেটা ভাড়া সেটা থেকেও দেড়গুন ভাড়া বেশি চাচ্ছিলো।

যাইহোক আমি এইসব রিকশাওয়ালাদেরকে কিছু না বলে একটু সামনের দিকে হেঁটে গিয়ে আরেকজন রিক্সায়াওলার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম মোহাম্মদপুর যেতে কত টাকা নিবেন ? উনি আমাকে কোন কিছু না ভেবেই বলল যে, ১০০ টাকা নিবো। আমি তখন বললাম যাচ্ছে ঠিক আছে তাহলে চলুন। তারপর এই রিক্সাওয়ালা মামার রিক্সায় উঠে ভাবতে থাকলাম যে, সবাই আসলে একরকম হয় না। আগের রিক্সাওয়ালা দুটো আমার কাছে অনেক বেশি টাকা চেয়েছিল কিন্তু এই রিক্সাওয়ালা ন্যায্য যেটা ভাড়া সেটাই চেয়েছে।

এই বিষয়টা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিলো। তারপর আমি রিক্সাওয়ালা মামার সাথে গল্প করতে থাকলাম। এই রিক্সাওয়ালা মামার ফ্যামিলি সম্পর্কে জেনে সত্যি আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এই রিক্সাওয়ালার মামার বাড়ি দিনাজপুরে নিজের বলতে মাত্র দশ শতাংশ জমি আছে। রিক্সাওয়ালা মামার বাড়িতে আছে তার স্ত্রী ও ছয় কন্যা। যদিও এদের ভেতর এক কন্যার বিয়ে হয়েছে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের সাথে। আর তিনটি মেয়ে লেখাপড়া করে আর দুইটি মেয়ে বাড়িতে কাজকর্ম করে।

এই রিক্সাওয়ালা মামা ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে যে, টাকা ইনকাম করে পরিবারকে দিতে আর নিজের থাকা খাওয়াতেই সব শেষ হয়ে যায়। কারণ এই রিক্সাগুলো মালিকের কাছ থেকে প্রতিদিন ১৩০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নিতে হয়। তার উপর প্রতিদিন তিন বেলা খাবার খাইতে গেলে তাদের ৫০০ টাকা করে খরচ হয়। আরো নিজের থাকার খরচ ও হাত খরচ রয়েছে এগুলো হিসাব করলে দেখা যায় দিনশেষে খুব কম টাকায় কাছে থাকে।

প্রতিদিন এই রিক্সাওয়ালা মামা হয়তো ১ হাজার থেকে ১৫ শ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করে। কিন্তু তার থাকা খাওয়ার খরচ প্রতিদিন ৫০০ টাকারও অধিক হয়। আর নিজের বড় একটি পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে যায়। এই রিক্সাওয়ালা মামার এমন দুরবস্থার কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লেগেছিল। তবে একটা ভালো সংবাদ ছিল যে, এই রিক্সাওয়ালা মামা বড় মেয়েটা বিয়ে দিয়েছে একটা মাদ্রাসা শিক্ষকের সাথে।

এসব কথাগুলো শোনার পর আমি রিকশাওয়ালা মামাকে বললাম যে, আপনার বড় জামাইয়ের মতোই ভালো পাত্র দেখে অন্যান্য মেয়ে গুলি আস্তে আস্তে বিয়ে দিয়ে দিন। যাইহোক এসব গল্প করতে করতে আমার বাসার পাশে চলে আসলাম। তারপর রিকশা থেকে নেমে রিক্সায়ালা মামাকে ন্যায্য ভাড়া থেকে আরও ২০ টাকা বেশি দিয়ে মোট ১২০ টাকা দিলাম। রিক্সাওয়ালাদের জীবনটা সত্যিই অনেক কঠিন।



পোস্টের ছবির বিবরন

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
ক্যামেরা১০৮ মেগাপিক্সেল
তারিখ১লা অক্টোবর ২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশনমোহাম্মদপুর,ঢাকা


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

রিক্সাওয়ালার জীবন কাহিনীটা জেনে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। আজকে যদি রিক্সাওয়ালার ছয়টি মেয়ে না হয়ে এর মধ্যে কয়েকটি ছেলে সন্তান হতো তাহলে হয়তো বা তার কষ্ট একটু কম হতো। রিকশা চালিয়ে তার পরিবারের খরচ সামলানো সত্যি অনেক মুশকিল । আমাদের দেশে এরকম অনেক মানুষ আছে যারা দিনমজুর কাজ করে তার পরেও অনেক অভাব।

এটা সত্যি বলেছেন এই রিক্সাওয়ালা যদি এতগুলো মেয়ের মাঝেও একটি ছেলে থাকতো তাহলে খুব ভালো হতো। অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ‌।

সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে উনার ছয়টা কন্যা এজন্য তার অধিক পরিশ্রম করা লাগে এবং উপার্জন করতে হয়। শহরে চলাচল করলে দেখা যায় অনেকেই ভাড়া বেশি ধরেন কিন্তু উনার ভিতরে নেয়নীতি রয়েছে এত কষ্টের মাঝেও এটা জেনে খুব ভালো লাগলো।

সত্যি বলতে ওনার ন্যায় নীতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। সুন্দর মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।