"আমার কাকার সিঙ্গাপুর যাত্রা"

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ০৮ ই জানুয়ারি, রবিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমার পোস্টটি হলো আমার কাকা কয়েকদিন আগে সিঙ্গাপুর রওনা দিল তাই আমি কাকা সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিটেন্স দিয়ে থাকে প্রবাসীরা এজন্য দেশের সকল প্রবাসীদের জন্য আমাদের গর্ব হওয়া উচিত তাদেরকে সম্মান করা উচিত। আমার কাছে মনে হয় নিজের পরিবার দেশ ছেড়ে কেউই বিদেশে যেতে মন থেকে রাজি থাকে না কিন্তু কিছু কিছু পরিস্থিতির কারণে আমাদের দেশের বহু মানুষকে প্রবাস জীবন পার করতে হচ্ছে।

একজন প্রবাসীই জানে নিজের দেশ এবং পরিবারজনদেরকে ছেড়ে বাইরে থাকা কতটা কষ্টদায়ক এবং বেদনাদায়ক। আমি যখন ছোট ছিলাম নয় দশ বছর বয়স ছিল তখন আমার কাকা কাজের জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিল তখন আসলে আমি বিষয়টি সেভাবে বুঝতে পারিনি কেন যাচ্ছে! কি জন্য!যাচ্ছে কি কারনে যাচ্ছে! এখন বড় হওয়ার সাথে সাথে বিষয়গুলো অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমার কাকা প্রথম পর্যায়ে সিঙ্গাপুর গিয়ে কয়েক বছর থেকে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসে। কয়েকটা বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পরেও ভালো কাজের অভাবে এবং টানা কাজ না পেয়ে বসে থাকার জন্য সেভাবে টাকা ইনকাম করতে ব্যর্থ হয় এটা খুব হতাশা জনক।

তারপর দেশে ফিরে এসে বিয়ে করে কয়েক বছর পর একটা বাচ্চাও হয় এখন তার বয়স মাত্র দুই বছর। সবকিছু মিলিয়ে সুখী একটি সংসার। সুখী সংসার হলেও বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যেটা কাটা বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছিল সেটা নিয়ে এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই কিছুদিন আগেই আবার নতুন করে পাসপোর্ট করে সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্য নতুন করে আবার ভিসা করে।

20230108_153742.jpg

আসলে কাকা সিঙ্গাপুর যাওয়া নিয়ে বাড়ির ভেতরে অনেকেরই দ্বিমত আছে কারণ এখন বয়স হয়েছে তার উপর ছোট্ট দুই বছরের একটা বাচ্চা। এ সকল কারণে কাকা অনেক দ্বিমতের মধ্য দিয়েই সিঙ্গাপুর যেতে বাধ্য হয়। হঠাৎ করেই ফ্লাইটের ডেট হয়ে যায় তারপরে আমি বাড়ি যাই ঢাকা হতে। আমি বাড়িতে যাওয়ার পর কয়েকদিন থাকি। জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখে ফ্লাইটের ডেট হওয়ায় ৩ তারিখ খুব সকালেই আমি এবং আমার কাকা বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আসলে কাকাকে নিয়ে বাড়ি থেকে সেদিন আসতে অনেক কষ্ট লাগছিল কারণ বাড়ির সবাই কান্না করছিল।

এমনকি কাকা নিজেও অনেক কান্না করছিল ছোট বাচ্চাকে কোলে জড়িয়ে ধরে। সত্যি বলতে কেউই চায়না এভাবে ছোট বাচ্চা ফেলে রেখে বিদেশ যেতে।কিন্তু আজকাল দেশের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে নতুন করে আবার অনেককে প্রবাসে জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। যাইহোক কাকাকে নিয়ে অনেক কষ্টে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাসে করে ঢাকাতে আসলাম।

ঢাকার গাবতলীতে নেমে ৫৫০ টাকা দিয়ে সিএনজি ভাড়া করে সরাসরি হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের সামনে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে রাতে হোটেলে একটা রুম ঠিক করলাম। তারপর সেখানে রেস্ট করে বাইরে থেকে খাবার দাবার খেয়ে এবং প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনে হোটেলের রুমে রাতটা কাটালাম। কাকার সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট সকাল আটটায় হওয়ার কারণে আমরা ভোর চারটার দিকে উঠে পড়লাম কারণ ফ্লাইটের দুই তিন ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে যাওয়াটা প্রয়োজনীয়।

20230108_153820.jpg

রাত থাকতেই একটা প্রাইভেট ঠিক করলাম। সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে প্রাইভেটে করে হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের দুই নম্বর গেটের সামনে চলে গেলাম। তারপর তারপর কাকাকে সেখানে নামিয়ে বিদায় করে দিয়ে আমি সোজা আমার মেসে চলে আসলাম। মেসে আসার সময় মনটা খুবই খারাপ লাগছিল। আসলে আমার কাছে বিদেশ যাওয়াটা খুব একটা পছন্দ হয় না, আমার কাছে মনে হয় দেশে থেকে ভালো কিছু করলে সেটাই সব থেকে ভালো। কিন্তু সবার কপালে তো আর ভালো কিছু জোটে না, তাই তো সবাই সবার মত চিন্তা করে। যাইহোক সবাই কাকাকে আশীর্বাদ করবেন যাতে ভালোভাবে সিঙ্গাপুরে কর্ম করে দেশ ও পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।

পোস্টের ছবির বিবরন

ক্যামেরাম্যান@aongkon
ডিভাইসস্যামসাং জে-৭ প্রো
ক্যামেরা১৩ মেগাপিক্সেল
তারিখ০৩ জানুয়ারি
লোকেশনখোকসা,কুষ্টিয়া


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে ঠিক বলেছেন অনেকেরই প্রবাসে যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও অনেক সমস্যার কারণে যেতে হয়। আসলে পরিবার-পরিজনকে ছেড়ে থাকাটা অনেক বেশি কষ্টকর। আপনার কাকা ও তো অনেক কষ্ট করে বিদেশ থেকে আসলো। কিন্তু তারপরেও দেখেন বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে চলতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আবার অনেক কষ্ট করে চলে যেতে হল। তবে তার পরিবার যেন ভালো থাকে এটাই কামনা।

সুন্দর মতামত প্রদান করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া একজন প্রবাসী জানে পরিবার ছেড়ে অন্য দেশে থাকার কষ্ট। আসলে পরিবারকে ছেড়ে এতদূর কষ্ট করে থাকা অনেক কঠিন। পরিবারের সুখের জন্য অর্থ উপার্জন করা সত্যিই অনেক কষ্টের। যাই হোক আপনার চাচা দেশের বাইরে যাচ্ছেন উনার জন্য শুভকামনা রইল।

পোস্টটি ভালোভাবে পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

এটা ঠিক সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দিচ্ছি বিদেশিরা।এর জন্য গর্ব করা উচিত।আসলে পরিবার থেকে দূর থাকা এরচেয়ে কষ্ট কি হতে পারে।মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের পরিবারের জন্য।আমরা চিন্তা করি দেশে থাকলেই ভালো,আবার মনে হয় দেশেই থেকেই কি করবে।যাই হোক আপনার কাকার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ

হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশে ও পরিবারের জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

প্রবাসী জীবন যে কত কষ্টের তা যারা প্রবাসে থাকে একমাত্র তারাই বুঝে। নিজের আত্মীয়-স্বজন ছেলে মেয়ে মা-বাবা ভাই-বোন সবাইকে ছেড়ে তাদের একা থাকতে হয় এবং দিন কাটে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আসলে তাদেরকে নিয়ে আমাদের গর্ব করা উচিত। উনার দু বছরের সন্তান কে রেখে যেতে ওনার খুবই কষ্ট হচ্ছে বিষয় টি আমার কাছেও খুবই খারাপ লাগছে। যাইহোক আপনার কাকার সিঙ্গাপুর যাওয়ার যাত্রা শুভ হোক এবং উনার জন্য রইল শুভকামনা ।

সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য প্রদান করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আসলেই কেউ কখনো মন থেকে রাজি থাকে না প্রবাসে যাওয়ার জন্য ৷ কিন্তু পরিস্থিতি জন্য অনেকেই এখন প্রবাসে আছেন কিংবা যাচ্ছেন ৷ আপনার কাকা সন্তান পরিবার সবাইকে রেখে প্রবাস যাচ্ছে যেনে অনেক খারাপ লাগলো ৷ যাই হোক আপনার কাকার সিঙ্গাপুর যাওয়ার যাত্রা শুভ হোক এবং উনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা ।

সুন্দর মন্তব্য প্রদান করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

হয়তো যারা বিদেশে থাকে তারা উপার্জন খানিকটা ভালোই করে। তবে তার পরিবর্তে তাদের অনেক মাশুল দিতে হয়।নিজের পরিবার-পরিজন সমস্ত অনুষ্ঠান পার্বণ,খাবার-দাবার,জলবায়ু সবটাই ছেড়ে থাকতে হয়। তা বড় কষ্টের। আপনার কাকার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

হ্যাঁ দিদি আপনি ঠিকই বলেছেন যারা বিদেশ থাকে তারা উপার্জনটা ভালই করে কিন্তু এর জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মতামত প্রদানের জন্য।