"মোহাম্মদপুরে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ঘোরাঘুরি- ২য় পর্ব"

in hive-129948 •  last year 


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৩রা শে অক্টোবর, মঙ্গলবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

20231002_205347.jpg

কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সাথে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি আশা করি আমার এই ভালোলাগাটা আজীবন থেকে যাবে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি যে কোন জায়গা ঘুরতে বা ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি। আমরা বেশ কিছুদিন আগে যেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম এই জায়গাটির ইতিহাস অনেক বেদনাদায়ক।

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশ মেরুদণ্ডহীন করার জন্য ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সকল বুদ্ধিজীবীদের মেরে এই জায়গাটিতে গণ কবর দিতো। আমাদের বাংলাদেশের অনেক জায়গায়ই এমন বধ্যভূমি রয়েছে। তবে সবার থেকে মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারের বধ্যভূমি বেশি পরিচিত। এই বধ্যভূমিকে অনেকেই বুদ্ধিজীবী কবরস্থান বলে থাকে। কারণ এই জায়গাটিতেই সব থেকে বেশি বুদ্ধিজীবীদের গণ কবর দেয়া হয়েছে।

আসলে এ সময়ে এ সকল কথা ভাবলে গায়ের কাঁটা শিউরে ওঠে। কতটা নৃশংস নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল এ সকল বুদ্ধিজীবীদের। আমি আজকে আপনাদের সাথে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ঘুরে বেড়ানোর - ২য় পর্ব শেয়ার করবো। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

20230516_174426.jpg

তারপর আমরা বধ্যভূমির সামনের দিকে কিছুটা সময় ঘোরাঘুরি করলাম।‌ আমরা একটু লেট করে গিয়েছিলাম বলে সন্ধ্যাটাও বেশ তাড়াতাড়ি নেমে আসতেছিলো।মোহাম্মদপুরে রায়ের বাজারের বধ্যভূমির পেছনের সাইটটা কখনো দেখেছিলাম না বলে বাসা থেকে এই প্ল্যানিং করে গিয়েছিলাম যে আজকে পিছনের সাইটে গিয়ে একটু ঘোরাফেরা করবো।

20230522_095315.jpg

তারপর আমরা সবাই মিলে হেঁটে বধ্যভূমির পেছনের সাইটে গেলাম। মোহাম্মদপুরে রায়ের বাজারের বধ্যভূমি অনেক জায়গা নিয়ে। বধ্যভূমির সামনের দিকের মতো পিছনের দিকেও ছেলেপেলে খেলাধুলা করে। আর পিছনের দিকে রয়েছে বিশাল বড় কবরস্থান। এর আগে এতো বড় কবরস্থান আমি কোথাও দেখি নাই।

IMG-20230516-WA0000.jpg

তারপর আমরা কবরস্থানের ভেতর দিয়ে হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম তারপর দেখতে পেলাম যে, কবরস্থানের পাশেই একটি বড় ক্যানাল রয়েছে। আরে ক্যানাল পার হওয়ার জন্য সুন্দর লোহার ব্রিজ করা রয়েছে। এ লোহার ব্রিজের উপর কিছু সময় দাঁড়িয়ে থেকে এখানকার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করলাম।

20230604_005613.jpg

এই ক্যানালটা দেখতে আসলেই অনেক সুন্দর লাগছিলো। এই ক্যানালের দুপাশ দিয়ে সবুজ প্রকৃতিতে ভরা গাছপালা আর লতা ছিলো। আর এই ক্যানালের জল একটু কালো কালো ছিলো। আর কেনালের ওই পাশেই দেখা যাচ্ছিলো দূরের বড় বিল্ডিং। এখান থেকে আমি বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম। আসলে যেখানেই ঘুরতে যায় না কেন ফটোগ্রাফি করতে কখনো মিস করি না। তাই সেদিনও বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে রেখেছিলাম।

20230516_181820.jpg

এপাশে লোহার ব্রিজটা পার হয়ে ক্যানালের পাশ দিয়ে হাতে থাকলাম। একটু এগিয়ে সামনে দেখতে পালাম আর একটি সুন্দর হাতিরঝিলের ন্যায় আরসিসি ব্রিজ। এই বৃষ্টি দূর থেকে দেখতে একদম অসাধারণ লাগছিলো। আরে ক্যানালের পাশ দিয়ে ভৃঙ্গরাজ লান্টাটানা ফুলের ছড়াছড়ি। ফুল গুলো দেখতে এক কথায় অসাধারণ লাগছিলো।

20230516_193415.jpg

তারপর আমরা এই ব্রীজটা পার দিয়ে আবার উত্তর সাইডের কবরস্থানের ভেতর দিয়ে বধ্যভূমির গেটের দিকে এগোতে থাকলাম। তখন সূর্য প্রায় ডোবা ডোবা, চারপাশের পরিবেশ টা যেনো সুন্দর অপরূপ প্রাকৃতিতে ভরে উঠেছে। এখানকার কবরস্থানের ভেতরে রাস্তায় ল্যাম্প পোস্টর লাইট জ্বালানো হয়েছিলো না। কিন্তু সূর্য আর ল্যাম্পপোস্টের লাইটের পজিশনটা দেখে এই ফটোগ্রাফি করাটা আর মিস করি নাই।

20230516_174857.jpg

কবরস্থানের ভেতরে সাইট থেকে ফটোগ্রাফি শেষ করে বধ্যভূমির একদম সামনের দিকে চলে আসলাম। এখনো সূর্য একেবারে অস্ত্র যায়নি, কিন্তু সূর্য অস্ত্র যেতে আর দেরিও নেই কয়েক মিনিটের ভেতরেই সূর্য অস্ত্র হয়ে যাবে। বাধ্যভূমির দেওয়ালের ফাঁকা অংশের ভেতর দিয়ে লাল টকবগে সূর্য দেখা যাচ্ছিলো। এমন সুন্দর মুহূর্ত হয়তো খুব কমই পাওয়া যাবে। আমার কাছে তখন মনে হচ্ছিলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ হয়তো এভাবেই এই দেওয়ালের ফাঁকা অংশের ভেতর উজ্জল সূর্যের মতো চিরকাল থেকে যাবে। তারপর এখান থেকে এই ফটোগ্রাফিটি করে হেঁটে হেঁটে সবাই আবার বাসায় চলে আসলাম। সবাই মিলে এভাবে ঘোরাফেরা করতে পেরে সেদিনই মনের ভিতর অনেক ভালো লাগা কাজ করছিলো।

আজকে আমি মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ঘোরাঘুরির ২য় পর্ব শেষের মাধ্যমে সকল পর্ব গুলো এখানেই করলাম।



পোস্টের বিবরন

পোস্ট ধরনভ্রমণ
ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি জে-৭ প্রো
ক্যামেরা১৩ মেগাপিক্সেল
তারিখ১৩ ই মে ২০২৩
লোকেশনমোহাম্মদপুর,ঢাকা


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

গত দিন বধ্যভূমির ঘোরাঘুরির প্রথম পর্ব দেখেছি। আজকে দ্বিতীয় পর্ব দেখে বেশ আরো অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পেরেছি। অজানা অচেনা স্থান দেখতে পারলে আমার অনেক ভালো লাগে। এই থেকে অনেক কিছু ধারনা অর্জন করা সম্ভব হয়ে থাকে। দুই দিনের দুইটা পোস্ট থেকে অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারলাম।

বাধ্যভুমিতে ঘোরাঘুরির প্রথম পর্ব দেখেছেন এবং আজকে দ্বিতীয় পর্ব দেখেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো ভাই। হ্যাঁ ভাই এখান থেকে অনেক কিছু জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

বিকেলে হাটাহাটি করার জন্য জায়গাটি আমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে পিছন দিকটা অনেক নিরিবিলি ওখানে হাঁটাহাঁটি করতে বেশ মজা। আপনি সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাকে খুব ভালো লাগলো

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ বন্ধু বাধ্যভূমির পেছনের দিকটা অনেক নিরিবিলি আর শান্ত পরিবেশের। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।