"জীবনের গল্প: প্রচন্ড চেষ্টায় উঠে দাঁড়ানো-অন্তিম পর্ব"

in hive-129948 •  last year 


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৩ রা ডিসেম্বর, রবিবার,২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



আমি আছি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো। প্রতিটি মানুষই প্রচন্ড চেষ্টার মাধ্যমে জীবনে অনেক কিছুই লাভ করতে পারে। যে ব্যক্তি কোন ধরনের চেষ্টাই করেনা সে ব্যক্তি কখনোই সফল হতে পারে না। প্রতিটি সফল মানুষকে তার প্রচন্ড চেষ্টায় তাকে সফল করেছে। আজকে আমার জেনারেল রাইটিং পোস্টটি হলো "জীবনের গল্প: প্রচন্ড চেষ্টায় উঠে দাঁড়ানোর-অন্তিম পর্ব"। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

Pixabay

তারপর বিধু আঙ্কেল আবার ডাক্তার দেখানোর জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে যায়। তবে এবারে বিধু আঙ্কেল নার্ভ অ্যান্ড প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়। কারণটা হলো বিধু আঙ্কেল একদমই উঠে দাঁড়াতে পারতো না কোমরের নিচের অংশ থেকে তার কোন শক্তি ছিল না। ডাক্তার সাহেব বিধু আঙ্কেলকে বলেন যে, এখন আপনার একমাত্র উপায় আছে রেডিও থেরাপি আর ব্যায়ামের মাধ্যমে ভালো হওয়া।

আর তাই আপনি যদি ভালো রেডিও থেরাপি নিতে চান তাহলে ঢাকাতে গিয়ে নিতে পারেন। তারপর এই ডাক্তার মহাশয় কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রেসক্রিপশনে লিখে দিলেন আর বললেন যে খুব দ্রুত রেডিও থেরাপি নেয়ার জন্য। আবার বিধু আঙ্কেল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল থেকে বাড়িতে চলে আসলেল।‌ বাড়িতে আসার কয়েক দিন পরেই রেডিও থেরাপি নেয়ার জন্য ঢাকার একটি রেডিও থেরাপি বিশেষত্ব হাসপাতালে আসেন।

এখানে এসে রেডিওথেরাপি নেওয়ার পর থেকেই বিধু আঙ্কেলের শারীরিক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। এভাবে প্রতিদিন বিধু আঙ্কেলের রেডিও থেরাপি চলতে থাকে। আবার শুধু যে রেডিও থেরাপি তা নয় কিন্তু সাথে সাথে বেশ কয়েক রকমের ব্যায়াম করতে হতো। বিধু আঙ্কেল ঢাকার এই হাসপাতালে প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে রেডিওথেরাপি নেয়। এখানে চিকিৎসার টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ না হয়ে এই রেডিওথেরাপি নেওয়া বন্ধ করে আবার বাড়িতে চলে আসেন বিধু আঙ্কেল।

কারণ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়াটা বেশ ব্যয় বহুল হয়। আর একজন গরিব মানুষের জন্য তো অনেক কঠিন ব্যাপার। তবে বিধু আঙ্কেল ঢাকা থেকে এক মাস রেডিওথেরাপি নেয়ার পরে বেশ ভালোই‌ দুটি লাঠিতে ভর করে হাঁটতে পারতো। তারপর বাড়িতে আসার পর ডাক্তারের শিখিয়ে দেওয়া ব্যায়ামগুলো বিধু আঙ্কেল প্রতিনিয়ত করতে থাকে। আমি যখনই তাদের বাড়ি যেতাম দেখতাম যে সে ব্যায়াম করছে।

আর আমি তাদের বাড়িতে প্রতি দিন এগিয়ে শুনতাম যে, আংকেল আপনার কি উন্নতি হচ্ছে! আঙ্কেল বলতে যে আগে থেকে অনেকটা ভালো হয়ে গেছি। আর ডাক্তার নাকি বলেছে যে এভাবে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করতে থাকলে একদিন লাঠি ছাড়া বিধু আঙ্কেল হাঁটতে পারবে।‌ তাই তো এতো পরিশ্রম করে প্রতিদিন ব্যায়াম করে সব সময়। এভাবে কয়েক মাস ব্যায়াম করার পরে দেখি যে বিধু আঙ্কেল একটি লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আমাদের বাড়ির পাশে একটি বড় পুকুরের পার আছে আর সব সময় হাঁটার জন্য বিধু কাকা এই পুকুরের পাড় আর আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তা ব্যবহার করতো। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কোন বিশ্রাম ছিল না শুধু খাওয়া দাওয়া আর ব্যায়াম করা। কারণটা তাকে যে উঠে দাঁড়াতেই হবে কারণ তার পরিবার তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। এভাবে আরও কয়েক মাস যাওয়ার পরে দেখি বিধু আঙ্কেল লাঠি বাদই হাঁটছে।

আমি তো প্রথমে দেখেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কারণটা এক সময় বিধবাঙ্কেলের যে অবস্থা ছিল কেউই কল্পনা করতে পারেনি যে, এভাবে লাঠি বাদে বিধু আঙ্কেল হেঁটে ফেরাতে পারবে। ‌ এমনকি আমি বিধু আঙ্কেলের কাছে থেকেও শুনেছিলাম যে, আপনি যখন বিছানাতে একদম পড়ে গিয়েছিলেন তখন কি কল্পনা করতে পেরেছিলেন যে আপনি লাঠি বাদে হাঁটতে পারবেন! বিধু আঙ্কেল বলেছিলো যে, না আমি কখনোই কল্পনা করতে পারিনি যে এভাবে হাঁটতে পারবো।

আসলে মানুষ ইচ্ছা করলে অনেক কঠিন কিছু কে সহজ করে তুলতে পারে। বিধু আঙ্কেলের মত মানুষ কঠিন পরিশ্রম আর মনোবলের মাধ্যমে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াতে পেরেছে। এরকম কঠিন চেষ্টা আসলে কখনো এ বিফলে যায় না। যে সকল ব্যক্তি কঠিন প্রচেষ্টা করে তাদেরকে সব সময় সৃষ্টিকর্তা সহায় হন।‌

আজকে আমি জীবনের গল্প: প্রচন্ড চেষ্টায় উঠে দাঁড়ানো গল্পটি অন্তিম পর্বের মাধ্যমে এখানেই শেষ করছি।



পোস্টের বিবরন

পোস্ট ধরনজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
তারিখ২৮ শে নভেম্বর ২০২৩
লোকেশনমোহাম্মদপুর,ঢাকা


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

দাদা আমি ডাক্তার আর ঔষুধ কোন কিছুই বিশ্বাস করি না। আসলে সব কিছুর মালিক উপর ওয়ালা। এই যেমন আপনার গল্পের বৃদ্ধ চাচা দেখেন তো কেমন সুস্থ্য হয়ে যাচেছ দিনে দিনে। আর এসব রোগীর চিকিৎসাও অনেক ব্যয় বহুল। দোয়া রইল উনার জন্য। আল্লাহ যেন উনাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন।

সবকিছুর মূলেই তো সৃষ্টিকর্তা রয়েছে তাই তার উপরেই আমাদেরকে বিশ্বাস রাখতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে সব সময় পাশে থাকার জন্য।

সত্যিই মানুষ চেষ্টা করলে কি না করতে পারে, এই যে বিধু আঙ্কেল উনি নিজের মনের জোরে এখন লাঠি ছাড়া হেঁটে বেড়াচ্ছেন। সত্যিই এটা তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি, তবে তিনি কাজটি করতে পেরেছেন একমাত্র তার মানসিক শক্তির বলে। আপনার আজকের এ লিখনিটি অনেকের কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে তাই আপনার পোস্টটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। কিন্তু আপনার কিছু কিছু জায়গায় বানানের ভুল ছিল দয়া করে একটু দেখবেন।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ ভাই নিজের মানসিক কঠিন চেষ্টার ফলে আজ তিনি হেঁটে বেড়াতে পারছেন।সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।