"মেট্রোরেল ভ্রমণ কাহিনী- ৩য় পর্ব"

in hive-129948 •  2 years ago 


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৩০ ই এপ্রিল, রবিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।কিছুদিন আগে আমি, আমার জীবনের প্রথম মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছি আমার এক ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে। নতুন নতুন জায়গা থেকে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য জীবনে ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমি ভ্রমণ করতে খুবই পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই নতুন নতুন জায়গাতে ঘুরে বেড়ানোর প্রচন্ড অভ্যাস হয়েছে। কিন্তু এখন পড়াশোনার চাপে খুব একটা ভ্রমণ করা হয় না।তারপরও চেষ্টা করি নতুন নতুন জায়গাগুলো ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য। আমার জীবনের প্রথম মেট্রোরেলে ভ্রমণ কাহিনী আমি আপনাদের সাথে কয়েকটি পর্ব আকারে শেয়ার করব।

কভার ফটো

GridArt_20230430_205247147.jpg

কয়েকটি ছবি নিয়ে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।

ঢাকার ভিতরে প্রচন্ড যানজট নিরসন করানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নিয়েছিল অনেকদিন আগেই। মেট্রোরেল প্রকল্পের আগারগাঁও থেকে নর্থ উত্তরা পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে কারণে কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ এর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন। আর উদ্বোধনের পর থেকে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ মেট্রোরেল চলাচলের সুবিধাটা পাচ্ছে। ঢাকাতে মেট্রোরেল উদ্বোধন করার পর থেকেই ইচ্ছা ছিল মেট্রোরেলে ভ্রমণ করার।

আর কিছুদিন আগেই আমার সেই ইচ্ছাটা পূরণ করলাম। আমরা শুধুমাত্র মেট্রোরেল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন থেকে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছিলাম আবার সেখান থেকে ব্যাক এসেছিলাম। গত সপ্তাহে আমি মেট্রোরেল ভ্রমণ কাহিনীর - ১ম ও ২য় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আর আজকে আমি আপনাদের সাথে মেট্রোরেলে ভ্রমণ কাহিনী - ৩য় পর্ব শেয়ার করব।



20230403_113159.jpg

..... আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেল চোখের সামনে এসে উপস্থিত হয়ে গেল। মেট্রো রেল যখন প্লাটফর্মে ঢুকছিল তখন মনের ভিতর আলাদা একটা ফিলিংস কাজ করছিল। সবকিছু অনেকটা স্বপ্নের মত মনে হচ্ছিল কারণ এটা আমার জীবনের ছোট একটা স্বপ্ন ছিল মেট্রোরেল ভ্রমন করার স্বপ্ন। আসলে স্বপ্নগুলো ঠিক এরকমই হয় যখন খুব কাছে চলে আসে তখন নিজের কাছে অবিশ্বাস লাগে যে আমি সবকিছু ঠিক দেখছি কিনা।

20230403_113220.jpg

এমনটা হয়েছিল আমার প্রথমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গিয়ে। মেট্রোরেল স্টেশনে মেট্রোট্রেনের জন্য আমাদেরকে অবশ্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছিল। মেট্রোট্রেনে ওঠার জন্য আমরা নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়েছিলাম।

20230403_113230.jpg

যদিও আমাদেরকে প্ল্যাটফর্ম থেকে মাইকে প্রচারের মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছিল জনসাধারণের অবগতির জন্য। প্ল্যাটফর্মে মেট্রোরেইলে উঠার জন্য আলাদা আলাদা স্বয়ংক্রিয় গেট আছে। এই গেট খোলা মেট্রোট্রেন আসার পরে মেট্রোট্রেনের স্বয়ংক্রিয় গেট এবং প্ল্যাটফর্মের স্বয়ংক্রিয় গেট একই লাইনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সোজা অবস্থান করে। প্রথমে মেট্রো ট্রেনের গেইট সংগ্রহের ভাবে খুলে যায় তারপর প্ল্যাটফর্মের গেইট সংগ্রহ খুলে যায়। তারপরে সাধারন মানুষ মেট্রোরেলে উঠান আমার সুযোগ পায়।

20230403_113256.jpg

মেট্রোট্রেনের ভেতরের পরিবেশ খুবই সুন্দর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। মেট্রোরেলের ভেতরে এলইডি স্ক্রিনে ট্রেনের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়া থাকে। আর এই তথ্যগুলো অটোমেটিক আপডেট হয় এবং স্পিকার এর মাধ্যমে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষাতে স্টেশনের অবস্থান সম্পর্কে জনসাধারণের অবগত করে।

20230403_114025.jpg

যাতে সব সাধারন জনগণ খুব ভালোভাবেই তাদের অবস্থান সম্পর্কে বুঝতে পারে। মেট্রোরেলের ভেতরের প্রত্যেকটি জায়গায় লিখিতভাবে অনেক নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। মেট্রোরেলের ভেতরে উঠে আমরা দুই ভাই দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করলাম। যদিও ভিতরে অনেক সিট ফাঁকা ছিল তারপরেও দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করার আলাদা একটি মজা লাগে।

20230403_114942.jpg

প্রায় ১৫ মিনিটের ভেতরেই আমরা উত্তরা উত্তর স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। মেট্রোরেলের প্রতিটি দরজার উপরেই দুইটি করে এলইডি স্কিন আছে। এই এলইডি স্কিনে মেট্রোরেলের অবস্থান সম্পর্কেও জনসাধারণের অবগতি করে। এলইডি স্ক্রিন চার্টে অনেক নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

20230403_115007.jpg

এই নির্দেশনা গুলি ভালোভাবে মেনে চলা একজন নাগরিকের দায়িত্ব কর্তব্য। মেট্রোরেল ভ্রমণকারী সকল জনসাধারণের এই নির্দেশনা গুলি মেনে চলা জরুরি। আমরা উত্তরা উত্তর স্টেশনে নামলাম। উত্তরা উত্তর স্টেশন মেট্রোরেলের শেষ স্টেশন হওয়াতে দেখলাম বেশ ভালই লোক নেমেছে স্টেশনে।

20230403_115051.jpg

উপরের প্ল্যাটফর্ম থেকে আমরা চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে নিচে নামলাম। চলন্ত সিঁড়িতে উঠতে বেশ ভালই লাগে আমার কাছে অবশ্য অনেকেই দেখলাম চলন্ত সিঁড়িতে উঠতে ভয় পাচ্ছে। আসলে আমাদের ইউনিভার্সিটিতে চলন্ত সিঁড়ি আছে তাই প্রায় দিনই উঠতে উঠতে অভ্যাস হয়ে গেছে।

20230403_115143.jpg

চলন্ত সিঁড়ি থেকে নামার পর আমরা জরুরি বহির্গমন পথের দিকে এগিয়ে গেলাম। একটু এগিয়ে গিয়েই দেখলাম সেখানে অনেক লোক লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে আমাদের যে টিকিটগুলো দেয়া হয়েছিল সেগুলো স্বয়ংক্রিয় বুথের মাধ্যমে ফেরত নিয়ে নিচ্ছে।

20230403_115159.jpg

আমরা দুজনেই লাইন দিয়ে স্বয়ংক্রিয় বুথে কার্ড স্লটে কার্ডটি দিলাম সাথে সাথেই স্বয়ংক্রিয় বুথ কার্ড একসেপ্ট করে নিল। তারপর স্বয়ংক্রিয় বুথের পরেই একটি স্বয়ংক্রিয় গেট আছে সেটি সাথে সাথে খুলে গেল। এবার স্বয়ংক্রিয় গেটের ভেতর দিয়ে বাইরে বের হয়ে আসলাম।‌‌ তারপর....

পরবর্তী অংশ "মেট্রোরেল ভ্রমণ কাহিনী- শেষ পর্বে" আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।



পোস্টের ছবির বিবরন

ক্যামেরাম্যান@aongkon
ডিভাইসস্যামসাং জে-৭ প্রো
ক্যামেরা১৩ মেগাপিক্সেল
তারিখ০৩ রা এপ্রিল
লোকেশনঢাকা, বাংলাদেশ


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "মেট্রোরেল ভ্রমণ কাহিনী- ৩য় পর্ব" ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

মেট্রোরেল ভ্রমণে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আজকের পর্ব খুব চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। মেট্রোরেল ভ্রমণে আপনার অনুভূতি গুলো বেশ অসাধারণ।স্বয়ংক্রিয় বুথের টিকিট পেয়ে সত্যি আনন্দ উপভোগ করেছেন নিশ্চয়। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

  ·  2 years ago (edited)

মেট্রোরেল ভ্রমণের অনুভূতিগুলো অনন্য ছিল। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

মেট্রোরেলে ভ্রমণ দারুণ এক অনুভূতি। আপনি আপনার মেট্রোরেল ভ্রমণ আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক অনেক ভালো লাগলো। আমার ও ইচ্ছে হয় মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে কিন্তু বরিশালে তো আর মেট্রোরেল নাই। ধন্যবাদ ভাই।

ভাই মেট্রোরেল ভ্রমণ করার জন্য ঢাকাতে চলে আসুন। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

পড়ার চাপ হচ্ছে অনেক বড় ধরনের একটি চাপ। পড়ালেখার চাপ থাকলে কোন কিছু ভালোমতো করা যায় না আপনি ঠিক বলছেন। সুন্দর করে মেট্রোরেলে প্রথম ভ্রমণ করেছেন দেখে তো অনেক ভাল লাগলো।ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক উন্নতমানের একটি মেট্রোরেলে আপনারা ভ্রমন করতে গেছেন।

ছাত্র জীবনে পড়াশোনার চাপ ই সবচেয়ে বড় চাপ। তবে লেখাপড়ার চাপ কাটিয়ে ভ্রমণের ভেতর আলাদা একটি আনন্দ লুকিয়ে আছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

মেট্রোরেল ভ্রমণ আমার কাছ থেকে অনেক বেশি ভালো লাগে। মেট্রোরেল ভ্রমণের আপনার অনুভূতিগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো আমার কাছ থেকে। ইচ্ছে করে কখনো মেট্রোরেল ভ্রমণ করা হয়নি কিন্তু অসুস্থ মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় মেট্রোরেল ভ্রমণ হয়ে থাকে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

মনে হচ্ছে আপনার জীবনের প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমন ছিল এটি।আসলে স্বপ্ন পূরণ করার মতো প্রশান্তি আর অন্য কিছুতে খুঁজে পাওয়া যায় না।বেশ ভালো অনুভূতি ছিল আপনার, ধন্যবাদ দাদা।

হ্যাঁ দিদি মেট্রো রেল ভ্রমণ স্বপ্নের মত ছিল। তবে বড় বড় দেশগুলোতে মেট্রো রেল খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। আমাদের কাছে মেট্রো রেল ভ্রমণ অনেক বড় একটি ব্যাপার। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনাকে।

যাক ভাইয়া স্বপ্নে মেট্রোরেলে ভ্রমন করেছেন। আপনার জীবনটা ধন্য হয়ে গেল। ভিতরের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বুঝলাম মানুষের চাপ কিছুটা কম। সুযোগ করে একবার দেখে আসবো আমাদের দেশের উন্নয়নটা ধন্যবাদ ভাইয়া।

হ্যাঁ ভাই মানুষের চাপ কিছুটা কম আছে বর্তমানে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

ইন্ডিয়াতে মেট্রো রেলে বেশ কয়েকবার চড়েছি। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো ওঠা হয়নি। তাই এই ধরনের পোস্ট দেখলে মনকে আর মানাতে পারি না। যাই হোক চমৎকার একটা উপস্থাপনা উপহার দিয়েছেন ভাই। সত্যি ভীষণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চারদিকটা এবং ভেতরটা। তবে আমরা বাংলাদেশী নাগরিকরা কোন জিনিস যত্ন সহকারে ব্যবহার করি না, এটাই সবথেকে ভয়ের ব্যাপার। দেখা যাক কতদিন হবে এই প্রজেক্টটা সুন্দর ভাবে চলতে পারে । অনেক শুভেচ্ছা রইল ভাই।

হ্যাঁ দাদা ভীষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চারদিকটা। আমাদেরই দায়িত্ব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।