হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৯ই ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমি আছি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি বেশ কিছুদিন হলো আমার আঙ্গুলের কারণে শারীরিক সমস্যায় ভুগছি। কয়েকদিন করে হাসপাতাল আর ডাক্তারের কাছে বেশ ভালই দৌড়েছি। একদিকে ইউনিভার্সিটি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আর অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা দুটোই বেশ চাপের ভেতরে রেখেছে আমাকে। তবে ডাক্তারের কথা মতো অপারেশনটা করিয়ে এখন একটু সুস্থ আছি। আমার যে আঙ্গুলটাতে সমস্যা হয়েছে সেই আঙ্গুল দিয়েই লিখতে হয়, এই বিষয়টা আমার জন্য বেশ টেনশনের ছিলো। আমি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে কয়েকদিন করে গিয়েছিলাম আমার আঙ্গুলের সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখাতে। আমরা জানি যে, সমস্যা বুঝে ডাক্তার সবসময়ই প্রেসক্রিপশন ও সঠিক পরামর্শ প্রদান করে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে রোগী এবং রোগের অবস্থা বুঝে তাদেরকেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী দিয়ে মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল থেকে প্রথম দিন গিয়ে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখিয়ে সাত দিনের ঔষধ নিয়ে এসেছিলাম। আর প্রেসক্রিপশনে লিখে দিয়েছিল যে, একদিন পরপর আমাকে সেখানে গিয়ে ড্রেসিং করাতে হবে। আমি বাসায় এসে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খেতে থাকলাম কিন্তু আমার আঙ্গুলের ব্যথা কোন মতোই আর কমেনা। তারপরেও আমি দুইদিন ভীষণ কষ্ট করলাম এটা ভেবে যে, একদিন পরে ড্রেসিং করতে যাবো তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
তারপর একদিন পরে আবার আমার বন্ধু রাহুলকে সাথে নিয়ে ড্রেসিং করানোর জন্য সার্জারি ড্রেসিংরুমের সামনে গেলাম। সকালবেলা সেখানে গিয়ে দেখলাম বেশ লম্বা সিরিয়াল পড়েছে। আসলে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এমন লম্বা সিরিয়াল পড়বে এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। তারপর সিরিয়ালে কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে ভেতরে ঢুকলাম ড্রেসিং করানোর জন্য। তারপর যারা ড্রেসিং করে তারা আমার আঙ্গুলের ব্যান্ডেজ খুলেই বললো যে, অবস্থা ভালো না আপনি আবারও ডাক্তার দেখান হয়তো অপারেশন করা লাগবে।
আমি তো এই অপারেশন করানোর কথাটা শুনে বেশ হতাশ হয়ে পড়লাম। কারণ আমি ভাবছিলাম যে আজকে ড্রেসিং করানের পরে হয়তো সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে। তারপর তাড়াতাড়ি করে আবার চলে আসলাম ডাক্তারের চেম্বারের সামনে। তারপর ডাক্তারের সামনে এসে দেখলাম যে, তিনি চেম্বারে নেই। অনেক সময় সিরিয়াল দিয়ে অপেক্ষা করার পরে ডাক্তার আসলেন। তারপর আমার টিকিটটা নিয়ে কয়েকজনের পরে ভিতরে ঢুকলাম।
তারপর আমার হাতের আঙ্গুলটা দেখানোর পর ডাক্তার রোগের অবাক হয়ে গেলো। আর আমি বললাম যে, আজকে ড্রেসিং করাতে আসছিলাম ড্রেসিং রুম থেকে বললো যে আবার ডাক্তার দেখাতে হয়তো অপারেশন করা লাগবে। তখন ডাক্তার বলল যে, আঙ্গুলের অবস্থা তো খুব একটা ভালো না আপনি ইমারজেন্সি ওটিতে গিয়ে অপারেশন করিয়ে নেন। আর আমার প্রেসক্রিপশনের উপরে ডাক্তার অপারেশন করার জন্য আর্জেন্ট লিখে দিলো। অপারেশনের কথার শোনার পর এমনিতেই শরীরে ভয় ঢুকে গিয়েছিলো।
তারপর তাড়াতাড়ি প্রেসক্রিপশনটা নিয়ে ইমারজেন্সি ওটির সামনে চলে আসলাম। তারপর সেখানে প্রেসক্রিপশনটা জমা দেওয়ার পরে তারা বললো যে, রক্তের রিপোর্ট ছাড়া ডাক্তার স্যার অপারেশন করবেন না। আমি তো এই কথা শোনার পর আরও বেশি টেনশনে পড়ে গেলাম, কারণ আগের ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে লিখে দিয়েছে আর্জেন্ট অপারেশন করাতে হবে। আর আগের ডাক্তার স্যার আমাকে এটাও বলেছিলো যে দুপুর হয়ে গেছে আর হয়তো বেশি সময় যে স্যার অপারেশন করে সেই স্যার থাকবে না। ইমারজেন্সি ওটিতে যে সার্জারি ডাক্তার অপারেশন করছিল সেই স্যার আমার প্রেসক্রিপশনের উপর রক্তের তিনটি টেস্টের নাম লিখে দেয়।
আমি গিয়েছিলাম ড্রেসিং করানোর উদ্দেশ্য কিন্তু হঠাৎ করে ডাক্তার সাহেবের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে অপারেশনের জন্য সব রিপোর্ট করাতে হবে বিষয়টা বেশ টেনশনের ছিলো। আসলে রোগ বুঝে ডাক্তার সাহেব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ প্রথমে যখন ডাক্তার দেখিয়েছিলাম তখন রোগটা দেখে মনে হচ্ছিল যে, হয়তো ওষুধেই সেরে যাবে অপারেশন করানো লাগবে না। তারপর তাড়াতাড়ি রিপোর্ট করানোর জন্য টাকা জমা দিতে রিপোর্টের ক্যাশ কাউন্টারে গেলাম। প্রথমে খুব তাড়াতাড়ি তিনটি রিপোর্টের ভিতরে রক্তের দুটি রিপোর্ট পেয়ে গেলাম। এই দুইটি রিপোর্টটি নেগেটিভ ছিলো এটা বেশ ভালো খবর ছিলো আমার জন্য।
তারপর তৃতীয় রিপোর্টটি করাতে একটু দেরি হলে বন্ধু রাহুলকে সাথে নিয়ে দুইটি রিপোর্ট নিয়ে আবার ইমার্জেন্সি ওটির সামনে চলে আসি। আমি ভেবেছিলাম যে, ডাক্তার সাহেবকে হয়তো দুটি রক্তের রিপোর্ট দেখালে অপারেশন করে দিতে পারে। কারণ এই দুটি রিপোর্টই ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু ইমারজেন্সি ওটির সামনে এসে তো আবার রীতিমতো হতাশ হয়ে গেলাম জানতে পারলাম যে ডাক্তার সাহেব চলে গেছেন আজকে আর অপারেশন করবেন না আবার কালকে সকাল আটটা থেকে অপারেশন করা শুরু করবে। তারপর আবার রক্তের তৃতীয় রিপোর্টটি নেওয়ার জন্য রিপোর্ট কাউন্টারে গেলে সেখান থেকে জানাই যে, বিকাল ৫ টার আগে এর রিপোর্ট দেয়া কোনমতে সম্ভব হবে না।
তারপর কোন উপায় না পেয়ে আমরা আবার বাসায় চলে আসি সিদ্ধান্ত নিই যে, কালকে সকালে আটটার দিকে গিয়ে অপারেশন করাবো। কিন্তু বাসায় আসার পরে সবসময় মাথার ভিতর একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে, আঙ্গুলের অবস্থাটা বেশ খারাপ ছিলো সেই কারণেই ডাক্তার সাহেব প্রেসক্রিপশন এর উপরে আর্জেন্ট অপারেশন করতে বলেছিলো কিন্তু আজকে সেটা তো আর সম্ভব হলো না এই রিপোর্টের কারণে। আর আমার আঙ্গুলের ভেতরের যন্ত্রণাটাও ছিলো ভীষণ এমন যন্ত্রণা আগে কখনো সহ্য করেনি আমি। আমি বাসায় আসার পর শুধুই অপেক্ষা করছিলাম যে, কালকে সকাল আটটা কখন হবে। আর আমি এই অপারেশনটা করিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবো।
পোস্টের ছবির বিবরন
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪ |
---|---|
ক্যামেরা | ১০৮ মেগাপিক্সেল |
তারিখ | ৪ ই ডিসেম্বর ২০২৩ |
লোকেশন | ঢাকা |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিষয়টি সামান্য ছিল কিন্তু সামান্য বিষয়ে এত বড় হয়ে দাঁড়াবে সেটা আপনি বুঝতেই পারেননি। আসলে এই ধরনের সমস্যা আমার একবার হয়েছিল যেটা যন্ত্রণা দেয় ।আমি ভালই বুঝতে পেরেছিলাম আপনিও সেটা ভালই সহ্য করেছেন । ছোট্ট বিষয় হলেও অনেক বেশি কষ্ট দেয়। যাইহোক, অপারেশনের মাধ্যমে বেঁচে গিয়েছেন এটাই আলহামদুলিল্লাহ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ বন্ধু সমস্যাটা অনেক ছোট হলেও যন্ত্রণাটা অনেক বেশি পরিমাণে ছিলো। এর আগে তোমার হয়েছিল বলে তুমি বিষয়টা বেশি অনুধাবন করতে পেরেছো। অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দাদা আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ কষ্ট পেলাম। আমি তো বেশ কাছেই ছিলাম একবার আমাকে নক করতে তো পারতেন? তাহলে হয়তো একটু সহজ হয়ে যেত। যাক পরে কি হলো জানাবেন আশা করি। আর আপনার দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করি। ভালো থাকবেন। তবে এত কাছে এসে পরিচিত লোক থাকতে একটিবার নক দিলেই হয়তো আপনার ভোগান্তি কমাতে সহায়তা করতে পারতাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আসলে এই জায়গাটি থেকে অপারেশন যদি করাতাম তাহলে অবশ্যই আপনাকে নক দিতাম। পরবর্তীতে আবার কোন দরকার হলে অবশ্যই আপনাকে স্মরণ করব। সুন্দর মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব খারাপ লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। আসলে হাতের ব্যাপার।আপনি ভেবেছিলেন ড্রেসিং করলেই আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন।কিন্তু ডাক্তার দেখার পর ইমিডিয়েট অপারেশন করতে বললেন।কিন্তু তিনটি টেস্টের জন্য আটকে গেলেন।যদিও টেস্টের দুটো রিপোর্ট পেয়েছিলেন।একটির জন্য আটকে রইলেন।আশাকরি দিনটি আপনার খুব তাড়াতাড়ি ই কেটে যাক।কষ্টের দিন সহজে ফুরায় না।দোয়া করি আল্লাহ সুস্থতা দান করুন,আমিন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে দিনটি অনেক কষ্টে কেটেছিলো আপু। অবস্থাটা বেশ আশঙ্কাজনক হয়ে গিয়েছিল বলে অপারেশন করানোটা খুবই দরকার ছিলো। সুন্দর মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit