হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। আজ আমি একটা মানুষের কথা আপনার সাথে শেয়ার করব । সে আমার ছোট বেলার ভালো বন্ধু। তিনি হচ্ছেন আমার সেতাউর বন্ধু । যারা আমার ব্লগ রেগুলার পড়ে তারা অনেকেই জানে আমাদের বিভিন্ন পিকনিকের মধ্যে এই ধরনের বন্ধু ব্যক্তিটি কমন থাকে।
মন-মানসিকতার দিক থেকে তিনি খুবই সাদাসিধা। তিনি আবার অত্যন্ত মেধাবী। অনেক কিছু একসাথে ম্যানেজ করতে পারে। কিন্তু তার ভাগ্যটাই খারাপ। অস্বচ্ছল পরিবারের কারণে সে পড়া লেখা শেষ করতে পারেনি ৷ শেষমেষ আর না পেরে সিদ্ধান্ত নিলেন দেশের বাইরে যাওয়ার। যেভাবেই হোক বিদেশে গিয়ে কাজ করে তারতার পরিবারকে স্বচ্ছল করতে হবে। তাছাড়া আর উপায় নেই। কারণ তার ঊপরে পরিবারের ভার রয়েছে। আর প্রচুর টেনশন থাকে সবসময়।
১১/০৯/২০২২ওনার ফ্লাইট ছিল। বিদায় দিয়ে আসতে হলো সেদিন। বাড়িতে যখন আমি থাকি প্রত্যেকদিন বিকেলে বাজারে যাই। বাজারে গেলে প্রথমে আমাদের সকলেরই তার কথা মনে পরে। যাইহোক বাস্তবতা অত্যন্ত কঠিন।সেদিন উনাকে বিদায় জানিয়ে ফেরার সময় মনে হচ্ছিল এবার থেকে বাড়ি গেলে বিকাল বেলা আর বাজারে বসতে ইচ্ছে করবে না হয়তো।
যেদিন ওনাকে বিদায় দিয়ে আসলাম সেদিন ছিল বৃষ্টি ভেজা ঠান্ডা একটা দিন। আমার সাথে আরও কয়েকটি ছোট ভাই ছিলো। সবাই একসাথে গিয়েছিলাম বিদায় জানাতে। বাস আগারগাঁ থেকে উত্তরা নর্থ পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ওখান থেকে লেগুনা এরপর বাসে চড়ে বিমানবন্দরে যাই। বিমানবন্দরে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় বসে ছিলাম তার জন্য। সে অন্য এক জায়গায় কাজে ছিল, সেখান থেকে আসতে একটু দেরি হচ্ছিল।
বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের নিচে বসে বৃষ্টি দেখছিলাম। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঠান্ডা পরিবেশ। বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেতা্সউর বন্ধু আসলো। টার্মিনালের উপরে গেলাম আমরা। সেখানে গিয়ে তার সাথে দেখা হলো। মানুষটা অনেক চাপা মনের। যাওয়ার সময় যে তার মন খারাপ, কষ্ট হচ্ছে সেটা যেন বুঝতেই দিতে চাচ্ছে না। একসাথে দু একটা সেলফি উঠলাম। ভেবেছিলাম তাকে একবার বুকে জড়িয়ে ধরবো। কিন্তু কেন জানি হয়ে উঠলো না। উনি একটু তাড়াহুড়া করেই ভিতরে ঢুকে গেলেন। একভাবে তাকিয়ে রইলাম। এই মানুষটার সাথে আবার কবে দেখা হবে জানা নেই।
যখন ফিরে আসছিলাম তখন শুধু একটা জিনিস মাথার মধ্যে বারবার কল্পনায় আসছিল।সেটা হচ্ছে চার পাঁচ বছর পর উনি আবার ফিরে আসবেন, তখন আমরা সবাই অনেক বড় পরিসরে পিকনিক করব। আবার বাজারে আড্ডা হবে নিয়মিত। ছাতা মাথায় দিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আর নানান কল্পনায় মগ্ন আছি। বৃষ্টি গুলো মুক্তোর দানার মত ঝরে পড়ছে আমার চারিপাশে।
আপনার বন্ধুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। যেহেতু আপনাদের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে, আপনারা একে অপরকে মিস করবেন সেটা বুঝতেই পারছি। তবে শুভকামনা রইলো, যেন আপনার আশা সত্যি হয়। তিন- চার -পাঁচ বছর পরে যখন আবার ফেরত আসবে, বিশাল বড় করে নিশ্চয়ই পিকনিক করবেন আবারো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit