ভ্রমণ: মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে ঘুরতে যাওয়া।

in hive-129948 •  2 months ago 
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ইংঃ।

রোজ শনিবার ।


কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও আমি আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। প্রতিনিয়ত আপনাদের মাঝে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হতে পেরে অনেক ভালো লাগে। কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম কালীগঞ্জে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে। কিছু দিন আগেই আপনাদের সাথে মিলে চিনি তৈরির ভিডিও গ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আমি এর আগে অনক বার এই সুগার মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম।

1000015448.jpg

আমরা বিকালের একটু আগে আগেই মিলের ভেরর গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর দেখলাম আমার মত অনেক লোক আছে তারা গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আমি গেইট ম্যানের সাথে কথা বললাম তিনি আমাকে বলেন আপনি একটু অপেক্ষা করেন ভেতর থেকে দুই জন লোক বের হলে আপনাদের ঢুকতে দেব। আসলেই একসাথে অনেক জন মানুষ মিলের ভেতরে ঢোকার এর আগে পারমিশন ছিল কিন্তু কোন একটা কারণবশত হয়তোবা এই নিয়মটা পরিবর্তন করা হয়েছে। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কয়েকজন লোক মিলের ভেতর থেকে বের হলো এরপর আমরা ঢুকতে পারলাম। ভেতরে ঢোকার পর আমরা সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেখলাম। ভেতরে শুধু আখ আর আখ, প্রচুর পরিমাণে মিলের ভিতরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তাছাড়া তাছাড়া বিভিন্ন রকম গাড়ি করে একের পর এক আখ চলে আসছে। আমরা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে চিনি তৈরি হয় সেই বিষয়টা ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমার সাথে আপনাদের আপুও ছিলো। সে নাকি মিলে গিয়েছে অনেক ছোট বেলায়। বড় হয়ে সে মিল দেখতে যেতে পারে নাই। কিন্তু মিল তাদের বাড়ির কাছেই। এই জন্যই বোধহয় কথায় বলে বাড়ির কাছের মানুষ ট্রেন ফেল করে। তাজে দেখানোর জন্যই মূলত আমার মিলে যাওয়া। কারন আমার মিল দেখতে যাওয়ার কোন ইচ্ছায় ছিলো না।

তবে মিলের ভেতর ঘুরতে বেশ ভালোই লাগে। সব থেকে ভালো লাগে যখন মিলের ভেতর প্রবেশ করে চিনি তৈরির প্রসেসিংটা দেখতে পারি। ভাবতে অবাক লাগে এই যে একসাথে আটি ধরে আখ মেশিনের ভেতর যায় আর অন্য দিক থেকে ছোট ছোট টুকরো হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত যেতে যেতে এমন অবস্থা হয় যে আখের ভেতর এক ফোটা রস থাকে না।

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

1000015449.jpg

এখানে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসে এই সুগার মিল ভ্রমণ করতে। সুগার মিলে গিয়ে গরম চিনি খাওয়ার মজাটাই আলাদা। এর সুন্দর ঘ্রান বের হয় তা বলে বুঝানো যাবে না। মিলের ভেতর অনেক উচ্চ স্বারে শব্দ হয়। সব থেকে ভাবার বিষয় এই যে মূহুর্তের মধ্যে সদ্য কাঁচা রস জ্বাল হয়ে গুড়ে পরিনত হয় এর পর আরেকটি ধাপে গিয়ে চিনিতে রুপান্তর হয়। তবে সব গুড় দিয়ে চিনি হয় না। মেশিনের মাধ্যমে চিটা গুড় বের করে দেওয়া হয়। ছবিতে আপনারা বড় বড় সাদা রঙের যে কন্টেইনার গুলা দেখছেন এই গুলার ভেতর সাধারণ আখের রস জ্বাল দেওয়া হয়। মিলে আখ আসার প্রায় ২-৩ মাস আগে থেকে বয়লারে আগুন জ্বালানো হয়। এখানে অনেক বড় বড় মটর/যন্ত্রপাতি চালানো হয় কিন্তু এখানে বাহিরের বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ করা হয় না। এত শক্তিশালী মটর আছে যা এই সকল বিদ্যুৎ দিয়ে চালানো সম্ভব নয়৷ তাই এই সকল যন্ত্রপাতি চালানো জন্য৷ এখানে স্টিম ব্যাহার করা হয়। বায়বীয় শক্তি দ্বারা এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। আখের রস জ্বাল করা থেকে শুরু করে সব জায়গায় এই বয়লারের আগুন ব্যাবহার করা হয়।

1000015443.jpg

এখানে দুই ধরনের চিনি তৈরি করা হয়, সাদা চিনি আর লাল চিনি। তবে লাল রঙের চিনির ঘ্রাণ অনেক সুন্দর। আর সাদা চিনিতে কেমিক্যাল মিশিয়ে সাদা রঙের করা হয়ে থাকে। তবে সাদা চিনি দেখতে সুন্দর হলেও খেতে তেমন একটা স্বাস্থ্যকর নয়। আর এর মিষ্টিত্বের পরিমান খুবই কম। অন্যদিকে লাল রঙের চিনি খেতে প্রচুর মিষ্টি আর এতে ক্ষতিকর কোন কেমিক্যাল নেয়।

1000015450.jpg

সমাপ্ত


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটিতে ঘুরে দেখার জন্য। আশা করছি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টের মাধ্যমে। আল্লাহ হাফেজ।


পোস্টের বিষয়ভ্রমণ
পোস্টকারীমোঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যালাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


Logo.png

Banner.png

1000006184.png

1000006183.png

1000008781.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

1000015461.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আপুকে নিয়ে মোবারকগঞ্জ সুগার মিল ভ্রমণ করেছেন। আর এই নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে চিনি কিভাবে তৈরি হয়। আর সুগার মিল থেকে সরাসরি চিনি দেখেতে পেয়ে দারুণ লাগলো। আর সাদা ও লাল চিনি নিয়েও জানতে পারলাম। আজ আপনার মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে ঘুরতে যাওয়ার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে নিতে পেরেছি।

আপুকে নিয়ে ভ্রমণ করতে গিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া এভাবে সরাসরি কখনো চিনি তৈরি করা দেখিনি।আপনার পোস্ট এট মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। নিশ্চয় অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

মোবারকগঞ্জ সুগার মিল ভ্রমণ করে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে সুগার মিলের সরাসরি চিনি দেখে দারুণ লাগলো এবং সাদা চিনি ও লাল চিনি সম্পর্কে জানতে পেরেও ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আমারও ইচ্ছা করে যখন আমি এই সকল জায়গাগুলোর পাশে দিয়ে যাই তখন এখানে প্রবেশ করার৷ তবে বিভিন্ন কারণে সেখানে প্রবেশ করা হয় না৷ তবে আজকে যেভাবে আপনি এখানে সুগার মিলে প্রবেশ করেছেন এবং এখানে ভ্রমণ করার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা দেখে খুব ভালই লাগছে। এখানে ভাবি সহ আপনি খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালোই লাগছে৷

লাল চিনি খেতে পারলে ভালো। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ লাল চিনি খেতে চায় না। যাইহোক সুগার মিলে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন দেখছি। বেশ ভালো লাগলো সুগার মিলের ভিতরের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।