প্রথম দেখা........

in hive-129948 •  2 years ago 

প্রথম দেখা

hand-1549399_960_720.jpg

image source

রিলেশনের প্রায় তিন মাস। আজও আমাদের দেখা হয়নি, ভাবতে পারেন হয়তো ছবিতে হলেও দেখা মিলেছে সে ভালবাসার মানুষটার। কিন্তু না, এতগুলো দিন ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলার পরেও এখনো কেউ কাউকে দেখেনি, বিষয়টা আসলে ইন্টারেস্টিং তাই না? মাসটা ছিল ফেব্রুয়ারি, কিছুদিন আগে থেকেই দেখা করার কথা হচ্ছিল আমাদের দুজনের মধ্যে। আমি দেখা করতে কোনভাবে রাজি ছিলাম না। কেননা এটা আমার জন্য খুবই লজ্জার একটা বিষয়, কারণ আগে কখনো কারো সাথে এভাবে দেখা করিনি। এটা আমার জীবনের প্রথম।

আমি অনেকবার তাকে বলেছি যে আমরা দেখা না করি, কারণ আমার কাছে দেখা করার বিষয়টা খুবই আনইজি মনে হচ্ছে। সে থাকতো ঢাকা শহরে আর তার থেকে আমি প্রায় একশো বিশ কিলোমিটার দুরুত্বে অন্য একটি জেলার শহরে। সেই শহরের কোনো একটা হোস্টেলে থেকে আমি পড়াশুনা করতাম। সে আমার কোনো কথাতেই রাজি হলো না, তার কথা সে রাতে ঢাকা থেকে আসবে ও আমার আশেপাশে কোনো হোটেলে রাত পার করে সকালে আমার সাথে দেখা করবে আর তার বড় একটা ইচ্ছা হলো প্রথম বার প্রথম দেখাতেই সে আমাকে ঢাকায় নিয়ে যাবে ঘুরতে।

আমি এর আগে কখনো ঢাকা যাইনি, তাই ঢাকা যাওয়ার কথা শুনে যেন আমার মাথায় বাজ পড়ল। এত দূরের রাস্তা তাও আবার একজন অচেনা মানুষের সাথে অসম্ভব। আমি মনে মনে ডিসিশন নিয়ে রেখেছিলাম দেখা করবো কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসবো এর বেশি কিছুই না। সে রাতেই চলে আসে ঢাকা থেকে আমাদের শহরের। আর শহরের নরমাল একটা হোটেলে এসে উঠে, আর এই রাতের কাহিনী না বললেই না। আমার সাথে তার প্রতিটা মুহূর্তেই ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। কি করছে না করছে সবকিছু।

তার হোটেলে এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় সাড়ে বারোটা একটা। দোকানপাট সব বন্ধ, খাবারের কোন ব্যবস্থা করা সম্ভব না। শুধু এক বোতল পানি কিনে নিয়ে যাই আর সারারাতের ক্ষুধা পানি দিয়ে নিবারন করে। তবে পানি খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া যায় যদি ঘুমটা ভালো হয়, কিন্তু এটাও সম্ভব হলো না বেচারার, সারারাত ছারপোকার কামড় খেয়ে চোখের ব্যাটারিগুলো খুলে বসে থাকতে হয়েছিল। আর এদিকে বেচারি আমি সবকিছু শুনছি, মায়া আর আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ছি। আহা বেচারা এত কষ্ট করে ঢাকা থেকে এসেছে আর সারারাত না খেয়ে ছারপোকার কামড় খেয়ে রাত কাটাচ্ছে দেখা না করে ফিরিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।

কি আর করা, পরদিন সকালে হোস্টেল ফাঁকি দিয়ে বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে বেরিয়ে পরি দেখা করতে। ভয়ে যেন আমার হাত-পা জমে আসছিল। শহরের মেইন রোডে গিয়েই ফোন দেই নাম্বারে, প্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দেখতে পায় একজন ব্যক্তি পরনে সাদা একটি ঢিলেঢালা শার্ট, পিছনের কাঁধব্যাগটা সামনে ঝোলানো, চোখে কালো চশমা, হাতে একটা ঘড়ি আর চুলের সাইজ কিছুটা ভদ্র টাইপের। দেখেই আমার হার্টবিট যেন বেড়ে গিয়েছিল। চেনা আবার অচেনা লাগছিল আসলেই কি সেই মানুষটাই এটা নাকি অন্য কেউ, সেইম তার সাথে একি ঘটনা ঘটেছে, তার একটু দূরে বোরখা পরা একটি মেয়ে, হাতে ব্যাগ, মুখে মাক্স শুধু দুটো চোখ দেখা যাচ্ছে, চিনেও অচেনা মনে হচ্ছিল। তাই কনফ্রাম হওয়ার জন্য নাম্বারে ফোন দেই, এতটা কাছে থেকেও কারো সাথে কেউ কথা বলার কোনো সাহস পাচ্ছিলাম না। নাম্বারে ফোন দিতেই ফোন রিসিভ করাতে এগিয়ে গেলাম সামনে। আর এই ছিল আমাদের প্রথম দেখার দারুন মুহুর্ত।

(চলবে..........)

1.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

_

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এত সুন্দর একটি মুহূর্তেই আপনার গল্পটা শেষ হয়ে গেল আপু। যে দেখা হওয়ার পর আগ্রহ নিয়ে নিচের লাইনটুকু পড়তে গেলাম সেই দেখে আপনি চলবে লিখে রেখেছেন। ভীষণ ইন্টারেস্টইং পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু।

এক কথায় দারুন হয়েছে আপু। দুজন তাহলে প্রথমবারের মতই দেখা করতে গেল।তবে এটা ইন্টারেস্টিং লাগলো যে রিলেশনের প্রথম থেকেই কেউ কাউকে দেখেনি। যাইহোক গল্পটা মনে হচ্ছে খুব ইন্টারেস্টিং হবে। প্রথম পর্বটা তো পড়লাম, পরবর্তী পর্বগুলো তাড়াতাড়ি দিবেন আপু। এরকম গল্প গুলো পড়তে খুব ভালো লাগে। আর আপনিও খুব দারুণ লেখেন।

ওয়াও ওয়াও আমি তো বলবো আপনি একজন পরিচালক হয়ে গেছেন ৷ আমি নিশ্চিত একটা নাটক বানালে দারুন হবে ৷

ভাবা যায় প্রথম দেখা এটা চারটি খানি কথা ৷ আসলে না দেখা কথা বলার মাঝে অন্যরকম একটা অনুভুতি কাজ করে ৷ যা দেখে প্রেমে পাওয়া যায় না ৷ আমি তো গল্পটি পড়তে পড়তে ভাবছি কখনো দেখা হবে ৷ শেষ মেষ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেই ১২০ কিলোমিটার অতিক্রম করে ৷ আসলে প্রেম ভালোবাসা ছাড়া এটা কখনই সম্ভব না ৷
সর্বোপরি অনেক অনেক ভালো লাগলো ৷ এভাবেই নতুন নতুন গল্প উপস্থাপনা করবেন এমনটাই প্রতার্শা ৷

এত সুন্দর একটি মুহূর্তের গল্পটা এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। পরবর্তী পর্বের জন্য খুবই আগ্রহে আছি আপু। দুজনের প্রথম দেখা কেমন হবে তা খুবই জানতে ইচ্ছা করছে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

অসাধারণ আপু। কিছু লেখার ভাষাই তো খুঁজে পাচ্ছি না। শুধু গল্পের কাহিনী গুলো মনে হচ্ছে বার বার। তাহলে প্রথমেই প্রেমের ‍শুরু হয়ে গেল। ভালবাসা না থাকলে কেউ কি আর ১২০ কিঃ মিঃ অতিক্রম করতে পারে। আগামীর অপেক্ষয় রইলাম।